চট্টগ্রামের
সীতাকুন্ডে ঘোর বর্ষাতে ঝুঁকি নিয়ে শিম চাষ করে শীতের চেয়েও অধিক ফলন
ফলিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছে ৬০ চাষী। এতদিন এ এলাকার চাষীরা শুধু শীতকালেই
শিম চাষ করতেন। বর্ষা বা অন্য ঋতুতে এখানে শিম চাষ করে সাফল্য পাওয়া দুরূহ
ব্যাপার মনে করে কেউ এই ঝুঁকি নেয়নি। কিন্তু এবার সেই চিরাচরিত ধারা থেকে
বেরিয়ে এসে তারা চাষ করলেন বর্ষাকালীন শিম। প্রাথমিক পর্যায়ে পৌর সদরের
বিভিন্ন গ্রাম মুরাদপুর, সৈয়দপুর ও বাড়বকুন্ড ইউনিয়নে কিছু কিছু এলাকায় এই
শিম চাষের খবর পাওয়া গেছে। তবে পৌর সদরের ইদিলপুর গ্রামের চাষী আবুল
বাশারের জমিতে শিমের ফলন খুবই ভাল হয়েছে। তিনি স্থানীয় বাজার থেকে বারমাসি
শিমের বীজ সংগ্রহ করে বৈশাখ মাসে ৭০ শতক জমিতে বীজ লাগিয়েছেন। এ জমিতে
চাষাবাদকালে সার কীটনাশক, শ্রমিক মজুরিসহ তার খরচ পড়েছে প্রায় ১৬ হাযার
টাকা। প্রথম দফায় এক কেজি শিম ৬০ টাকা হিসাবে ১০ কেজি বিক্রি হয়েছে।
পরবর্তীতে শিমের মূল্য আরো বেড়ে কেজি ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হ’তে পারে।
বড় কোন প্রাকৃতিক সমস্যা না হ’লে এই জমি থেকে ৩ লাখ টাকার শিম বিক্রি হ’তে
পারে। তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে বর্তমানে এই এলাকার আরো অনেকেই
বর্ষাকালীন শিম চাষ করছেন।
শীত মৌসুমে সীতাকুন্ডে বাটা, ছুরি, লইট্টাসহ আরো কয়েক প্রকার শিম চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ছুরি শিমের সুখ্যাতি তো দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও চলে গেছে বহু আগে। শিমের বীচি ইউরোপ-আমেরিকায় রপ্তানি করেও লাখ লাখ ডলার আয় করেছেন স্থানীয় চাষীরা। এবার বর্ষাকালীন শিম চাষে সাফল্য আসায় কৃষিতে সম্ভাবনার নতুন আরো একটি দ্বার উন্মোচিত হ’ল। এই এলাকায় দিন দিন বারমাসি শিমের চাষ বাড়ছে। উপযেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সীতাকুন্ডে গতবছর থেকে এই শিম চাষ শুরু হয়েছে। গতবার মোটামুটি সাফল্য আসায় এবার ৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৬০ চাষী চাষ করেছে। এই বীজের পানি সহ্য ক্ষমতা অনেক বেশী বলেই বর্ষাতে ভাল ফলন হচ্ছে। তাই যারা কর্মহীনভাবে বসে থেকে অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা অবশ্যই এই শিম চাষ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হ’তে পারেন।
\ সংকলিত \