জীবন তো গলা বরফ
আতিয়ার রহমান
মাদরা, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
জীবন সে তো বরফ গলা
টপটপিয়ে হচ্ছে ক্ষয়,
বিকিকিনির ব্যবসাতে তাই
সব সময়ে শঙ্কা রয়।
দিনটি ধরে বিক্রি করে
তবু যদি না হয় শেষ,
লাভের আশা? নেই ভরসা
আসল পুঁজি নিরুদ্দেশ!
তখন তো সে ব্যবসাদারের
বক্ষ ভাসে কান্নাতে,
ভরবে না তার শূন্য গৃহ
হীরা, চুনি, পান্নাতে।
বিকেল বেলায় দরাজ গলায়
বলছে হেঁকে কিনবে কে?
আমার দরদ বুঝে মদদ
করতে হেথায় আসবে কে?
সবটি বেলায় হেলায় ফেলায়
হেথায় সেথায় কাটল দিন,
দিনের শেষে সন্ধ্যা এসে
আকাশ যখন হয় রঙিন।
তখন কি আর বিকায় বরফ
যতই মারো জোরসে হাঁক?
জীবন খেলার অস্তবেলায়
প্রভুকে তুমি দিচ্ছ ডাক!
***
মা
এফ.এম. নাছরুল্লাহ
কাঠিগ্রাম, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।
মা আমার মা
আমার চেনা ঠিকানা,
কারো সাথে মা জননীর
হয় না তুলনা।
তোমার কোলে জন্ম মাগো
তুমি নয়নমণি,
তুমি মাগো এই জগতে
শ্রেষ্ঠ সোনার খনি।
তোমার কোলে মাগো আমার
শীতল পাটির বিছানা,
তোমার পায়ের নীচে মাগো
জান্নাতের ঠিকানা।
তোমার বুকের দুগ্ধ মাগো
করছি কত পান,
তুমি মাগো আল্লাহ তা‘আলার
শ্রেষ্ঠ অনুদান।
ঐ বিধাতার কোমল মাটি
দিয়ে সৃষ্টি তুমি,
তোমার বুকে মাগো আমার
প্রিয় জন্মভূমি।
আজকের শিশু
আব্দুল মুনায়েম
সোনাডাঙ্গা, বাগমারা, রাজশাহী।
আজকের শিশু-
উৎসুক চোখে টোকা মারে আকাশে
নেই কোন সাড়া; শিশু বলে-
অহংকার কর ভাই! আমার আকাশ তুমি,
হ’তেও তো পার কারো যমীন।
ডুব দেয় সাগরে,
কুঁড়ে আনে মণি-মুক্তা-জহরত;
দেখে ইতিহাস, আজগুবি কথা সব
মিল নেই কোনখানে।
আমি বলি, চেয়ে দেখ বাস্তবে
অপসংস্কৃতি আর বিদেশী সজ্জায়
গালভরা গল্পে ছুটে চলে লুটেরা
চিনে রাখ আজকের শিশুরা।
শান্তি কোথায়?
যাকওয়ান হুসাইন
শালিখা, সোনাতলা, বগুড়া।
অশান্তি আর অরাজকতায়
ভরে গেছে দেশটা,
জনদুর্ভোগ কমাতে
কেউ করে না চেষ্টা।
মিছিল-মিটিং-হরতাল
চলছে প্রতিদিন,
খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি
নিত্যদিনের রুটিন।
শান্তি নামের সোনার হরিণ
নাইকো আর দেশে,
অশান্তি আর দুর্নীতিতে
দেশটা ছেয়ে গেছে।
মারছে মানুষ, মরছে মানুষ
অশান্তিরই কালো থাবায়,
নেতা-নেত্রীর কাছে প্রশ্ন আমার-
শান্তি মোরা পাব কোথায়?
মাটির ঘর
ডাঃ মুহাম্মাদ গোলাপ উদ্দীন মিয়া
ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর।
থাকব পড়ে মাটির ঘরে, শয্যাবিহীন অন্ধকার
কীট-পতঙ্গ খাবে দেহ
করবে না কেউ প্রতিকার।
পাপ-পুণ্যের হিসাব হবে, নিখুঁত নিক্তি-বাটখারা
জ্বলতে হবে জাহান্নামে
পড়বে হাতে হাতকড়া।
বাঁচার উপায় আছে জানি
যতক্ষণ এই দেহে আছে দম,
আয়রে ভাই, বন্ধু সবাই
তওবা করি হই শোধন।
***