ঈদ উৎসব
আতিয়ার রহমান
মাদরা, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।
আজকে খুশীর বসল মেলা
ঈদগাহের ঐ ময়দানে।
সাজলো নতুন ভূষণে সব
লাগলো দোলা সব মনে।
ছিয়াম সাধনা শেষ হ’লে পর
আসলো দ্বারে ঈদের দিন,
নাইতো কারো দুঃখ-ব্যথা
সবটা মনে খুশীর দিন।
ঈদের খুশী সবার তরে
সমানভাবে বণ্টনে?
ছিয়াম সাধনায় নিঃস্ব-গরীব
নিচ্ছে তারা কোন মনে?
যার পরিধানে ছিন্ন কাপড়
তৈল বিহীন মাথায় চুল,
নাই পাদুকা চরণ দু’টোয়
সব নিরাশা শূন্য কূল।
বাচ্চাগুলোর পোষাক দিতে
পড়ছে যারা লজ্জাতে,
নাই টাকা তাই উপোষ থেকে
যাচ্ছে যারা ঈদগাহতে।
হাত পাতে যে অন্য দ্বারে
অল্প কিছুর দরকারে,
ঈদের খুশীর দিনটি তারা
কেমনভাবে পার করে?
তাদের তরে হয় না কভু
ঈদের খুশীর ফুর্তিটা,
দুঃখ-ব্যথা সবটি দিনে
তাদের সঠিক পাওনাটা।
রবের দ্বীনের বিজয় কেতন
উড়বে যে দিন এই ধরায়,
ঈদের খুশীর সুখ লহরী
ভরবে সে দিন পূর্ণতায়।
***
আবূ যর! আমার প্রিয় আবূ যর!
মুহাম্মাদ আহসান
সভাপতি
আহলেহাদীছ আন্দোলন, ঢাকা যেলা।
এই সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে তুমি সম্মুখে তাকাও
অসীম শূন্যতা তোমার দৃষ্টিকে ঝাপসা করে তুলবে।
আবূ যর! আমার প্রিয় আবূ যর! তোমরা গাফিল হয়ো না,
পার্থিব জীবন ক্ষয়িঞ্চু এবং দ্রুত ফুরিয়ে যায়,
ধাবমান ঘোড়ার জিন শক্ত হাতে অাঁকড়ে থেকো।
সমুদ্রগামী জাহাজের নির্ভুল নকশা, অভঙ্গুর কাঠামো
ইস্পাত দৃঢ় একটি জাহাজ তৈরী করো সত্বর, দেরি করো না।
তুমি সৈকতে দাঁড়িয়ে-উত্তাল সাগর সম্মুখে
গভীর তলদেশে অপার শূন্যতা এবং ভয়ংকর রুদ্রতা,
মনে রেখো অসীম সাগরে তোমাদের যিন্দেগানীর সফর।
ভুলে যেয়ো না আবূ যর! জীবন সফর পারাপার ভীষণ কঠিন।
সুদীর্ঘ এই সফরে নোঙর কর জাহাজ বন্দরে, সামান বোঝাই কর
বোঝা হালকা নাও, রসদ বোঝাই কর, দীর্ঘ তোমার পারাপার।
বক্ষে তোমার ইখলাছ সমুন্নত রেখো সারাক্ষণ আমলে
দৃষ্টি রয়েছে তোমার আমলনামায় প্রতিক্ষণ সর্বদ্রষ্টার।
সর্বজ্ঞানী নির্ভরতা তুমি ভুলে যেয়ো না একটি মুহূর্তও
আবূ যর! আমার প্রিয় আবু যর! তুমি প্রস্ত্তত?
এবার নোঙর তোল পাল উড়াও কামিয়াব হও সফরে।
***
ঈদের শিক্ষা
আলাউদ্দীন বিন আলীমুদ্দীন
বাঁকড়া, চারঘাট, রাজশাহী।
শুধু ঈদের দিন হাসি-খুশী
ক্ষণিকের ভাল বাসা বাসি,
ছিয়াম রাখনি অতিভোজী মানুষ
অন্তরে অতি হিংসা রেষাষেশি।
ছালাত-ছিয়াম ছাড়াই বেশি খুশী
রাজকীয় পোষাক দেহে অহংকারী হাসি,
অসহায় অনাথ খাদ্য-বস্ত্রহীন কাঁদে বসি
তবুও ধনীর আনন্দ রাশি রাশি।
মুখে তোমার মধু মাখা কথা
দীল-কলিজা ভরা হিংসা শঠতা,
একটু সুযোগ পেলেই দাও ব্যথা
তব মনে কেন এত শত্রুতা?
হিংসা-বিদ্বেষ বিভেদ ভুলতে হবে
মুসলিমকে শুধু দু’ঈদের দিনে,
আর আমরণ অসহ্য যন্ত্রণা দেবে
কেন মানুষকে অকথ্য নির্যাতনে?
ঈদের দিনে যেমন হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে
ছালাত কায়েম করতে হবে সকলে,
সবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বন্ধুত্বের দীলে।
তেমনি আজীবন ভুলে বিভেদ অহংকার
মায়া-মমতা আর প্রীতির বন্ধনে,
গড়তে হবে তোমায় ব্যক্তি-পরিবার
আর এ সমাজ অহীর বিধানে।
ঈদের দিনের এই মহান শিক্ষা
মোরা জীবনে ভুলি না যেন কভু,
এই ফরিয়াদ কবুল কর
ওহে! বিশ্ব ভ্রমান্ডের মহান প্রভু।
***