দৃষ্টিশক্তি অন্তরের মূল চালিকাশক্তি। দৃষ্টিই হৃদয়ের উপর নযরদারী করে। চোখের মাধ্যমে আমরা যা দেখি, তার নকশা সরাসরি অন্তরে অঙ্কন করি। দর্শনকৃত বস্ত্ত, ব্যক্তি বা ঘটনা অন্তরের ক্যানভাসে জায়গা করে নেয়। এটি যদি নিষিদ্ধ বা হারাম দৃষ্টিপাত দ্বারা হয় তাহলে এরচেয়ে ভয়াবহ আর দ্বিতীয় কোন অস্ত্র নেই। এর মাধ্যমে আঘাত ছাড়াই একজন আহত ও অপরজন ঘাতকে পরিণত হয়। এর কারণে নফস বিভ্রান্ত হয়, অন্তরে রোগের উৎপত্তি ঘটে ও হৃদয় দিশেহারা হয়ে পড়ে। আরামের ঘুম হারাম হয়ে যায়। এর মাধ্যমে বীর বাহাদুরও সহজে পরাস্ত হয়; মালিক দাসে পরিণত হয়। আজীবন এর প্রতিক্রিয়া অব্যাহত থাকে। আলোচ্য নিবন্ধে হারাম দৃষ্টিপাতের ভয়াবহতা সম্পর্কে আলোকপাত করার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।
ইসলামে দৃষ্টিপাতের সীমারেখা : দৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে বৈধ ও অবৈধ নির্ধারণ করে দিয়েছে ইসলাম। আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি, নিদর্শন ও নে‘মতের প্রতি দৃষ্টিপাত করা এবং তা নিয়ে চিন্তা-গবেষণার মাধ্যমে স্রষ্টার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়। এই গবেষণার মাধ্যমে অশেষ ছওয়াবও হাছিল হয়। আল্লাহ বলেন,إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاخْتِلَافِ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ لَآيَاتٍ لِأُولِي الْأَلْبَابِ، الَّذِينَ يَذْكُرُونَ اللهَ قِيَامًا وَقُعُودًا وَعَلَى جُنُوبِهِمْ وَيَتَفَكَّرُونَ فِي خَلْقِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذَا بَاطِلًا سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ، ‘নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিবসের আগমন-নির্গমনে জ্ঞানীদের জন্য (আল্লাহর) নিদর্শন সমূহ রয়েছে। যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আসমান ও যমীনের সৃষ্টি বিষয়ে চিন্তা-গবেষণা করে এবং বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি এগুলিকে অনর্থক সৃষ্টি করোনি। মহা পবিত্র তুমি। অতএব তুমি আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও’! (আলে ইমরান ৩/১৯০-৯১)। এভাবে আল্লাহর সৃষ্টি সমূহ দেখার ব্যাপারে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেন,قُلْ سِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانْظُرُوا كَيْفَ بَدَأَ الْخَلْقَ، ‘তুমি বল, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ কিভাবে তিনি সৃষ্টির সূচনা করেছেন’ (আনকাবূত ২৯/২০)। দুনিয়াতে পাপীদের পরিণতি কিরূপ হয়েছে, তা দেখার জন্যও আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন,قُلْ سِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَانْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُجْرِمِينَ، ‘বল, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ অপরাধীদের পরিণতি কেমন হয়েছে?’।[1]
অপরদিকে বেগানা নারীর প্রতি দৃষ্টিপাত করা, নাচগান, সিনেমা বা অশ্লীল দৃশ্য অবলোকন করা ইসলামে নিষিদ্ধ। আল্লাহ বলেন,قُلْ لِلْمُؤْمِنِيْنَ يَغُضُّوْا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوْا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللهَ خَبِيْرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ، ‘তুমি মুমিন পুরুষদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। এটা তাদের জন্য পবিত্রতর। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ সে বিষয়ে ভালভাবে খবর রাখেন’ (নূর ২৪/৩০)। পরবর্তী আয়াতে মুমিন নারীদের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ বলেন,وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ، ‘আর তুমি মুমিন নারীদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থান সমূহের হেফাযত করে। আর তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে’ (নূর ২৪/৩১)। অতএব নিষিদ্ধ বস্ত্তর দিকে তাকানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
রাস্তার হক সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে রাসূল (ছাঃ) বলেন, غَضُّ الْبَصَرِ، وَكَفُّ الأَذَى، وَرَدُّ السَّلاَمِ، وَأَمْرٌ بِالْمَعْرُوفِ، وَنَهْىٌ عَنِ الْمُنْكَرِ، ‘তা হচ্ছে দৃষ্টি নিম্নগামী রাখা, (মানুষকে) কষ্ট না দেওয়া, সালামের জবাব দেওয়া, সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ করা’।[2]
নেক ছুরতে ধোঁকা :
শয়তান মানবজাতির প্রকাশ্য শত্রু। সে মহান আল্লাহর নিকট অবকাশ নিয়েছে কর্মফল দিবস পর্যন্ত। যাতে করে সে মানুষের শিরা-উপশিরায় চলাফেরা করতে পারে। দিতে পারে কুমন্ত্রণা। নিপতিত করতে পারে ধোঁকায়।
শয়তান কোন আলেম কিংবা আবেদের নিকটে সরাসরি আসে না। আসে না দ্বীনহীন কিংবা নগ্ন বেশে। কারণ সে জানে যে, একজন মুমিনা নারীকে যেমন বখাটে ঈমানহীন যুবকের খপ্পরে নিপতিত করা সহজসাধ্য নয়, তেমনি একজন মুমিন যুবককে অর্ধনগ্ন নারীর দ্বারা ফিৎনায় জড়ানো ও সহজ নয়। কেননা দ্বীনদার নারী-পুরুষ উভয়েই তাদের থেকে দৃষ্টিকে ফিরিয়ে রাখেন। তারা অসৎসঙ্গ পরিহার করেন এবং অবাধ মেলামেশা থেকে বিরত থাকেন। তাদের এড়িয়ে চলেন ঈমান ও ব্যক্তিত্ব বহাল রাখতে। তাছাড়া তাদের প্রতি দৃষ্টিপাতে থাকে না তেমন আকর্ষণ; বরং চেহারায় ফুটে ওঠে একরাশ ঘৃণা ও বিরক্তির ভাব।
পক্ষান্তরে একজন মুমিনা, পর্দানশীনা নারীর প্রতি যেমন একজন ঈমানদার যুবকের সম্মান-শ্রদ্ধা এবং বিশেষ আকর্ষণ থাকে, তেমনি একজন দ্বীনদার, পরহেযগার যুবকের প্রতিও একজন মুমিনা নারীর অন্তরে সম্মান-শ্রদ্ধা এবং বিশেষ আকর্ষণ তৈরী হয়।
শয়তান এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে দ্বীনদার নারীর নিকট দাড়ি বিশিষ্ট, জুববা-টুপি পরিহিত অবস্থায় মুমিন যুবকের বেশে সাক্ষাৎ করে। তাকে বুঝানোর চেষ্টা করে এ ধরনের যুবকদের দিকে দৃষ্টিপাত করা দোষের নয়। ফলে অনেক দ্বীনি বোন ধোঁকায় পতিত হন। বখাটে যুবকদের দিকে না তাকালেও দাড়ি-টুপি ওয়ালা যুবকের দিকে নযর দিতে দ্বিধা করেন না।
অনুরূপভাবে শয়তান দ্বীনদার যুবকের নিকটে বোরক্বা পরিহিতা হয়েই সাক্ষাৎ করে। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে এতো তোমারই সমগোত্রীয়। সুতরাং বোরক্বা পরিহিতা নারীর প্রতি দৃষ্টিপাত করা দোষের কিছু নয়। ফলে অনেক দ্বীনি ভাই ধোঁকায় পতিত হন। অর্ধনগ্ন নারীদের দিকে না তাকালেও বোরক্বাওয়ালীর অাঁখিজোড়ার দিকে নযর বুলাতে ভোলেন না।
হারাম দৃষ্টিপাতের অপকারিতা :
চক্ষু অন্তরের আয়না স্বরূপ। কেউ যখন তার চক্ষুকে অবনত রাখে, তখন তার অন্তর প্রবৃত্তিকে দমিয়ে রাখে। আর যখন সে চক্ষুকে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেয়, এদিক সেদিক তাকায়, তখন অন্তরও দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে। কামনা বাসনার তাড়নায় নানান জায়গায় ঢু মারে। ফলে একপর্যায়ে সে অপরাধে লিপ্ত হয়ে পড়ে। এজন্য রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِنَّ اللهَ كَتَبَ عَلَى ابْنِ آدَمَ حَظَّهُ مِنَ الزِّنَا، أَدْرَكَ ذَلِكَ لاَ مَحَالَةَ، فَزِنَا الْعَيْنِ النَّظَرُ، وَزِنَا اللِّسَانِ الْمَنْطِقُ، وَالنَّفْسُ تَمَنَّى وَتَشْتَهِى، وَالْفَرْجُ يُصَدِّقُ ذَلِكَ كُلَّهُ وَيُكَذِّبُهُ. ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আদম সন্তানের উপর যিনার একটা অংশ লিখে দিয়েছেন; তা সে অবশ্যই পাবে। সুতরাং চোখের যিনা হ’ল (হারাম বস্ত্তর দিকে) তাকানো এবং জিহবার যিনা হ’ল কথা বলা। মন কামনা ও আকাঙ্ক্ষা করে, লজ্জাস্থান তাকে সত্য অথবা মিথ্যা প্রমাণ করে’।[3]
আল্লামা খাত্তাবী (রহ.) এ হাদীছের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, দেখা ও কথা বলাকে যিনা বলার কারণ এই যে, দু’টোই হচ্ছে প্রকৃত যিনার ভূমিকা বা যিনার মূল কাজের পূর্ববর্তী স্তর। কেননা দৃষ্টি হচ্ছে মনের গোপন জগতের উদ্রেককারী আর জিহবা হচ্ছে বার্তা বাহক। যৌনাঙ্গ হচ্ছে বাস্তবায়নের হাতিয়ার- সত্য প্রমাণকারী।[4]
হাফেয ইবনুল ক্বাইয়িম (রহ.) লিখেছেন, দৃষ্টিই হয় যৌন লালসা উদ্রেককারী, বার্তা বাহক। কাজেই এ দৃষ্টির নিয়ন্ত্রণ ও সংরক্ষণ মূলত যৌনাঙ্গেরই হেফাযত। যে ব্যক্তি দৃষ্টিকে অবাধ, উন্মুক্ত ও সর্বগামী করে সে নিজেকে নৈতিক পতন ও ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়। মানুষ নৈতিকতার ক্ষেত্রে যত বিপদ ও পদস্খলনেই নিপতিত হয়, দৃষ্টিই হচ্ছে তার সব কিছুর মূল কারণ। কেননা দৃষ্টি প্রথমত আকর্ষণ জাগায়, আকর্ষণ মানুষকে চিন্তা-ভাবনায় নিমজ্জিত করে। আর এই চিন্তাই মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করে লালসার উত্তেজনা। এ যৌন উত্তেজনা ইচ্ছা শক্তিকে উদ্বুদ্ধ করে। আর ইচ্ছা ও প্রবৃত্তি শক্তিশালী হয়ে দৃঢ় সংকল্পে পরিণত হয়। এ দৃঢ় সংকল্প অধিকতর শক্তি অর্জন করে বাস্তবে ঘটনা সংঘটিত করে। বাস্তবে যখন কোন বাধাই থাকে না, তখন এ বাস্তব অবস্থার সম্মুখীন না হয়ে কারো কোন উপায় থাকে না।[5]
দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ)-এর নির্দেশغُضُّوا أَبصارَكم، وكُفُّوا أَيديَكم، واحفَظوا فُروجَكم، ‘তোমাদের দৃষ্টিকে নীচু কর, হস্তদ্বয় নিয়ন্ত্রণ কর এবং তোমাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করো’।[6]
এ হাদীছে আলাদা আলাদা নির্দেশ এসেছে। কিন্তু প্রথমটির অনিবার্য পরিণতি হচ্ছে শেষেরটি। অর্থাৎ দৃষ্টি নিয়ন্ত্রিত হ’লেই লজ্জাস্থানের সংরক্ষণ সম্ভব। অন্যথা তাকে চরম নৈতিক অধঃপতনে নিমজ্জিত হ’তে হবে।
নবী করীম (ছাঃ) আলী (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, يَا عَلِيُّ لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ، فَإِنَّ لَكَ الْأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الْآخِرَةُ، ‘হে আলী! একবার কোন পরনারীর প্রতি দৃষ্টি পড়লে পুনরায় তার প্রতি চোখ তুলে তাকাবে না। কেননা তোমার জন্যে প্রথম দৃষ্টিই (ক্ষমার যোগ্য), দ্বিতীয়বার নয়’।[7]
আকস্মিকভাবে কারো প্রতি চোখ পড়ে যাওয়া আর ইচ্ছাকৃত কারো প্রতি তাকানো সমান কথা নয়। প্রথমবার দৃষ্টি কারো উপর পড়ে গেলে, তার জন্য ব্যক্তির ইচ্ছা থাকে না; কিন্তু পুনর্বার তাকে দেখা নিজ ইচ্ছায় হয়ে থাকে। এজন্যেই প্রথমবারের দেখায় কোন দোষ হবে না; কিন্তু দ্বিতীয়বার তার দিকে তাকানো ক্ষমাযোগ্য নয়। কারণ দ্বিতীয়বারের দৃষ্টির পিছনে মনের লালসা থাকাই স্বাভাবিক।
এর অর্থ এই নয় যে, পরস্ত্রীকে একবার দেখা জায়েয। বরং পরস্ত্রীকে দেখা জায়েয নয় বলেই কুরআন ও হাদীছে দৃষ্টি অবনত করে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল পরনারীর প্রতি আকস্মিক দৃষ্টি পড়া সম্পর্কে। তিনি বললেন, اصْرِفْ بَصَرَكَ ‘তোমার চোখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নাও’।[8]
সম্মানিত পাঠক! মনে রাখবেন সব বিজলী চমকানোই কিন্তু কল্যাণের লক্ষণ নয়; কিছু কিছু বিজলির চমক অকল্যাণেরও কারণ হয়। আপনি দৃষ্টিকে অবনমিত রাখুন। তাকে নিয়ন্ত্রণ করুন। আনুগত্য ও বাধ্যতার কাপড় পরিয়ে রাখুন। কেননা নফসের বাসনা অনুপাতে চলাই আমাদের বিপদের কারণ। চোখের লালসা কামনা থেকেই প্রবৃত্তির তাড়নার সূচনা এবং তা উন্মুক্ত করে নানান অশ্লীলতার দরজা। এজন্য আরবী কবি বলেছেন,
كل الحوادث مبداها من النظر+ ومعظم النار من مستصقر الشرر
كم نظرة فتك في قلب صاحبها + فتك السهام بلا قوس ولا وتر
والمرء ما دام ذا عين يقلبها + في اعين الغيد موقوف على الخطر
يسر مقلته ما ضر مهجته + لا مرحبا بسرور عاد بالضرر،
অর্থাৎ সমস্ত (যৌন) দুর্ঘটনার সূত্রপাত দৃষ্টি থেকেই হয়। অধিকাংশ অগ্নিকান্ড ঘটে ছোট অঙ্গার থেকেই। কত দৃষ্টি তার কর্তার হৃদয়কে ধ্বংস করেছে, ধনুক ও তারহীন তীরের মত। চোখওয়ালা মানুষ যতক্ষণ কামিনীদের চোখে চোখ রেখে বারবার দৃষ্টিপাত করে, ততক্ষণ সে বিপদের উপর দন্ডায়মান থাকে। যে জিনিস তার আত্মার জন্য ক্ষতিকর, তাই দিয়ে সে নিজের চক্ষুকে তুষ্ট করে। অথচ সেই খুশিকে কোন স্বাগতম নয়, যার পরিণাম হ’ল ক্ষতি’।[9]
এজন্য রাসূল (ছাঃ) আলী (রাঃ)-কে লক্ষ্য করে বলেন, (হে আলী) তুমি একবার দৃষ্টি দেওয়ার পর দ্বিতীয়বার দৃষ্টি দিও না। অনিচ্ছাকৃত প্রথম দৃষ্টিতে তোমার অনুমতি রয়েছে। তবে দ্বিতীয়বার দৃষ্টি দেওয়ার অবকাশ নেই।[10]
আলোচ্য হাদীছে রাসূল (ছাঃ) হঠাৎ দৃষ্টি পড়ার পর দ্বিতীয়বার তাকাতে নিষেধ করেছেন। কেননা পরপর দৃষ্টিপাতের ফলে মনের মাঝে ভাবাবেগ সৃষ্টি হয়। অন্তরে কামনা জাগ্রত হয়। এই উত্তেজনা শিরা-উপশিরায় ছড়িয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় নফসকে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
আর প্রথম দৃষ্টির ব্যাপারটিও মূলত যমীনে কোন বীজ বপন করার ন্যায়। যদি এই বীজের প্রতি কোন গুরুত্ব প্রদান না করা হয় এবং পরিচর্যা না করা হয়, তাহ’লে এটি শুকিয়ে যাবে। কিন্তু যদি এই বীজের দিকে খেয়াল রাখা হয় এবং সেচ দেওয়া হয়, তাহ’লে এটি বেড়ে উঠতে থাকবে। দৃষ্টির উদাহরণ এটাই। প্রথম দৃষ্টির পর দ্বিতীয় দৃষ্টি দেওয়ার অর্থ হ’ল সেচ দেওয়ার মতো। এই সেচ পেয়ে প্রথম দৃষ্টির মাধ্যমে যে সামান্য আগ্রহ তার মাঝে সৃষ্টি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। সুতরাং দ্বিতীয় দৃষ্টি দেওয়ার কোন অবকাশ নেই।
সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) وخلق الانسان ضعيفا ‘মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে’- এই আয়াতের তাফসীরে বলেন, ‘একজন নারী পুরুষের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছে। পুরুষ লোকটি ঐ নারীর দিকে তাকানো থেকে বিরত থাকতে অক্ষম হয় এবং কুদৃষ্টি দেয়। অথচ সে ঐ নারীর মাধ্যমে নিজের ফায়দা হাছিল করতে পারে না। এর চেয়ে দুর্বলতা ও অক্ষমতা কি হ’তে পারে?[11]
প্রকৃতপক্ষে পুরুষ বড় কোন দুর্ঘটনায়ও ভেঙ্গে পড়ে না অথচ নারীর এক চাহনিতে জ্ঞান লোপ পায়। মনের গহীনে সুপ্ত বাসনা পূরণের জন্য সে সচেষ্ট হয়। আর এর পরিণতি হয় অত্যন্ত ভয়াবহ। এজন্য আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا ‘তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। নিশ্চয়ই এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট পথ’ (বানী ইসরাঈল ১৭/৩২)।
উল্লেখিত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা সরাসরি যেনা করতে নিষেধ নয় বরং তার সূত্রপাত ঘটে এমন দরজা বন্ধ রাখার আদেশ করেছেন। কেননা কোন ব্যক্তি প্রথম ধাপে সরাসরি ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না। বরং এর সূচনা হয় চাহনি, হাসি, মোহনীয় কথা ইত্যাদির মাধ্যমে। প্রথমে দৃষ্টি, তারপর মুচকি হাসি, তারপর সালাম, তারপর বাক্যালাপ, তারপর সাক্ষাতের ওয়াদা, তারপর ব্যভিচার। সুতরাং হে জ্ঞানী ব্যক্তি! স্বীয় নফসকে নিয়ন্ত্রণ করুন! আর প্রকৃত মহাবীর সেই ব্যক্তি, যে নিজেকে সংবরণ করে দৃষ্টিকে হেফাযত করতে পারে।
চোখ আল্লাহ পাকের দেয়া অনেক বড় নে‘মত। নিষিদ্ধ জিনিস যেমন বেগানা নারী ও অশ্লীল দৃশ্য দেখার মাধ্যমে এ নে‘মতের অপব্যবহার করা হয়। এতে চোখের জ্যোতি কমে যায়। তাই ইসলামে এসব জিনিস দেখা হারাম করা হয়েছে। বেগানা নারীর প্রতি দৃষ্টিপাত করলে শয়তান অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। ধীরে ধীরে বড় গুনাহের দিকে অগ্রসর হয়। এমনকি যেনার প্রতি প্রলুব্ধ করতে থাকে। তাই বাঁচতে হ’লে নযর হেফাযত করতে হবে। অন্যথা অগণিত নেক আমল করা সত্ত্বেও আল্লাহর সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হ’তে হবে। হাফেয ইবনে কাছীর (রহঃ) এ প্রসঙ্গে লিখেছেন,النظرة سهم سم إلى القلب ‘দৃষ্টি হচ্ছে এমন একটি তীর, যা মানুষের হৃদয়ে বিষের উদ্রেক করে’।[12] সুতরাং কেবল পরকালে নয়, দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ ও পবিত্রতা রক্ষা না করলে দুনিয়াতেও অত্যন্ত খারাপ পরিণতির সম্মুখীন হ’তে হবে। আর তা হচ্ছে পারিবারিক ও দাম্পত্য জীবনে আশু বিপর্যয় ও ভাঙন। দৃষ্টির চাহনি সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলাও মানুষকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ ‘তিনি জানেন তোমাদের চোখের চোরাচাহনি এবং অন্তর সমূহ যা লুকিয়ে রাখে’ (মুমিন ৪০/১৯)। এ আয়াতাংশের ব্যাখ্যায় ইমাম বায়যাবী লিখেছেন, চোরাচাহনী হ’ল গায়ের মাহরাম নারীর প্রতি বারবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করা, চোরা দৃষ্টি নিক্ষেপ করা অথবা দৃষ্টির কোন বিশ্বাসঘাতকতামূলক আচরণ’।[13]
অনিয়ন্ত্রিত দৃষ্টিপাতের ব্যাপারে অবহেলা :
বর্তমানে চোখের হেফাযত না করা একটি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চোখের গুনাহকে গুনাহ মনে হয় না। অবাধে এ দিক সে দিক তাকিয়ে চোখের যিনায় লিপ্ত হচ্ছে মানুষ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, নিশ্চয়ই চোখের যিনা হচ্ছে দেখা।[14] ফেসবুক, ইউটিউব ও অনলাইন-অফলাইনে সর্বত্রই আজ বেগানা নারীদের সয়লাব। সবধরনের বিজ্ঞাপনেও নারীদের ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে স্পষ্ট হারাম জিনিসকে কতটা হালকা করে দেখা হচ্ছে। পর্নোগ্রাফিকে খারাপ ও হারাম মনে করলেও মানুষ গায়রে মাহরাম নারীর প্রতি দৃষ্টিপাত হারাম মনে করে না। এজন্যই মানুষ ছালাতে ও অন্যান্য ইবাদতের স্বাদ পায় না। ইবাদত করাটা বোঝা মনে হয়। না‘ঊযুবিল্লাহ। তাই রবের সান্নিধ্য লাভ করতে হ’লে এবং ইবাদতের স্বাদ পেতে হ’লে দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চোখের হেফাযত করতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক দান করুন- আমীন!
দৃষ্টিকে অবনমিত রাখার উপকারিতা :
দৃষ্টিকে অবনমিত রাখার অনেক ফায়দা রয়েছে। নিম্নে কতিপয় ফায়দা উল্লেখ করা হ’ল।-
১. আফসোসের যন্ত্রণা থেকে আত্মাকে মুক্ত রাখা : যে ব্যক্তি যত্রতত্র দৃষ্টিপাত করে, তার আফসোস ও আত্মদংশন বাড়তেই থাকে। কেননা দৃষ্টি এমন জিনিস দেখাবে, যার প্রতি আকর্ষণ ও আগ্রহ বাড়তেই থাকবে। কিন্তু সেই চাহিদা না নিয়ন্ত্রণ করা যায়, আর না পসন্দনীয় বিষয়টা নাগালে পাওয়া যাবে। আর এটা নিশ্চয়ই অত্যধিক পীড়াদায়ক!
আছমাঈ বলেন, ‘তাওয়াফের মধ্যে এক বাঁদীকে দেখলাম গাভীর মতই হৃষ্টপুষ্ট। আমি বারবার তার দিকে তাকাচ্ছিলাম, আর তার কমনীয়তা ও কান্তিময়তা উপভোগ করছিলাম। বাঁদীটি আমাকে জিজ্ঞেস করল, আপনার কী হয়েছে? বললাম, তাকালে তোমার সমস্যা কী?
সে বলল, আপনি প্রবৃত্তির তাড়নায় বারবার আমার দিকে দৃষ্টি ফেরাচ্ছেন। আপনি কি জানেন, এই লাগামহীন দৃষ্টি আপনাকে ক্লান্ত করে তুলবে? কেননা আপনি এমন কিছু দেখছেন, যা আপনি না অর্জন করতে পারবেন, আর না ভুলে থাকতে পারবেন![15]
লাগামহীন দৃষ্টি আত্মাকে ঠিক সেভাবে ছেদন করে, যেভাবে তীর শিকারকে বধ করে। কখনো যদি তা আত্মাকে পুরোপুরি বদ নাও করে, তবু কিছুটা ক্ষত তো অবশ্যই তৈরি করে। কেননা অন্যায় দৃষ্টিপাত শুকনো ঘাসে আগুনের ফুলকি ছোড়ার মত। তা সম্পূর্ণ ঘাসের স্তূপকে ভস্ম না করতে পারলেও কিদয়াংশ তো অবশ্যই জ্বালিয়ে দেয়। বস্ত্তত অন্যায় দৃষ্টিপাত বিষাক্ত তীরের মতো। প্রতিবার দৃষ্টিপাতের মধ্য দিয়ে মানুষ অবচেতনেই সেই বিষাক্ত তীর দ্বারা তার চিন্তা-চেতনা ও অন্তরাত্মাকে ক্ষতবিক্ষত করে।
২. লজ্জাস্থানের হেফাযত :
দৃষ্টিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার ফলে অন্তরে প্রবৃত্তির চাহিদার উৎপত্তি ঘটে। তখনই হালাল হারামের গন্ডি ভেদ করে দৃষ্টিপাত করে নিষিদ্ধ বস্ত্তর প্রতি এবং জড়িয়ে পড়ে অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে। যা পরকালের ভাবনা থেকে গাফেল রাখে। ক্রমেই বেড়ে চলে হতাশা আর দুশ্চিন্তা। সাথে লজ্জাস্থানের হেফাযত না করতে পারার হাহাকার। এইসব হতাশা, দুশ্চিন্তা আর হাহাকার নিরসনের প্রয়াসে দয়াময় রব নারী পুরুষ উভয়কে উদ্দেশ্য করে বলেন,قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ، وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ، ‘তুমি মুমিন পুরুষদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। আর তুমি মুমিন নারীদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থান সমূহের হেফাযত করে’ (নূর ২৪/৩০-৩১)।
৩. জান্নাত লাভ :
আবু উমামা (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,اكفلوا لي بست اكفل لكم بالجنة... غضوا ابصارهم ‘তোমরা ছয়টি বিষয়ে আমাকে নিশ্চয়তা দাও। তাহ’লে আমি তোমাদের জান্নাতের যিম্মাদার হব। (তার মধ্যে একটি হ’ল) তোমরা তোমাদের দৃষ্টিকে নিম্নগামী কর’।[16]
প্রতিকার :
পুরুষের মাঝে যেমন নারীর প্রতি আকর্ষণ থাকে, অনুরূপ নারীরও পুরুষের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ থাকে। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি এই আকর্ষণ স্বাভাবিক বিষয়। তবে একে অপরের প্রতি বারবার নযর দেয়া নিষিদ্ধ। তাই নারী যেমন চলার পথে নিজের শালীনতা বজায় রাখবে, তেমনি পুরুষও নিজের দৃষ্টিকে হেফাযত করার চেষ্টা করবে। নযর হেফাযত করা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সমানভাবে যরূরী। কুদৃষ্টির গুনাহ সকলের জন্য সমান ক্ষতিকর। কোন কারণে আকস্মিক দৃষ্টিপাত নিজের মনের মাঝে কামনা-বাসনা সৃষ্টি করলে সত্তর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং ইস্তেগফার পাঠ করা বাঞ্ছনীয়।
এক্ষেত্রে বিবাহিত ব্যক্তির দৃষ্টিপাতের কারণে মনে কোন কুচিন্তা আসলে সে নিজ স্বামী কিংবা স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করবে, তাহ’লে এই দৃষ্টিপাতের কারণে মনের কুচিন্তা দূর হবে।
জাবির (রাঃ) বলেন, ‘একবার হঠাৎ জনৈক নারীর প্রতি রাসূল (ছাঃ)-এর দৃষ্টি পড়ে এবং তাঁর মাঝে কামভাব সৃষ্টি হয়। তিনি তখন স্বীয় স্ত্রী যয়নাব (রাঃ)-এর নিকট আসলেন। তখন যয়নাব (রাঃ) চামড়া পাকা (প্রক্রিয়াজাত) করছিলেন এবং তার সাথে কিছু মহিলা ছিলেন। রাসূল (ছাঃ)-এর আগমনে তারা প্রত্যাগমন করলে, তিনি স্বীয় প্রয়োজন পূরণ (সহবাস) করলেন। অতঃপর তিনি বের হয়ে ছাহাবীদের লক্ষ্য করে বললেন, নারীরা সামনে আসে শয়তান বেশে এবং ফিরে যায় শয়তান বেশে। অতএব তোমাদের কেউ কোন নারীকে দেখতে পেলে (আকৃষ্ট হ’লে) সে যেন স্বীয় স্ত্রীর নিকট চলে আসে। কারণ এতে তার মনের ভিতর যা আছে তা দূর হবে’।[17]
আর অবিবাহিতদের বেশী সংযমী হ’তে হবে। কেননা নিজে পাপাচারে লিপ্ত থেকে কলঙ্কমুক্ত সঙ্গী কামনা করা অবান্তর বৈ কিছুই নয়। এজন্য কবি বলেছেন,
‘মুমিনে মুমিন মিলে কমিনে কমিন
মিলিতে পারে না কভু কমিনে মুমিন’
আপনি সৎ সঙ্গী পাওয়ার প্রয়াসে হারাম দৃষ্টিপাত থেকে বিরত থাকুন। আর আল্লাহর নিকট দো‘আ করতে থাকুন, প্রতিপালক! আমার নাগালেই রয়েছে কমনীয় সৌন্দর্য। তুমি যদি জেনে থাকো যে, আমার সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কেবল তোমার ভয়ে এবং তোমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলাম, তাহ’লে আমাকে সৎ সঙ্গী দান করো। এভাবে আপনি দৃষ্টিকে অবনত রাখতে পারবেন। আকস্মিক দর্শনে যদি মনের মাঝে কামনা সৃষ্টি হয়, তাহ’লে মহান আল্লাহকে ভয় করে নিজেকে সংযত রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করুন এবং আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করুন। কেননা আল্লাহ তা‘আলা আপনার সকল কর্ম দর্শন করে থাকেন। তিনি বলেন,وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا وَهُوَ مَعَكُمْ أَيْنَ مَا كُنْتُمْ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ ‘তিনি তোমাদের সাথে আছেন (জ্ঞানের মাধ্যমে), যেখানেই তোমরা থাক। আর তোমরা যা কিছু কর সবই আল্লাহ দেখেন’ (হাদীদ ৫৭/৪)।
অতএব হারাম দৃষ্টিপাত থেকে আল্লাহ আমাদের সবাইকে বেঁচে থাকার তাওফীক দিন- আমীন!
সুরাইয়া বিনতে মামূনুর রশীদ
বিরামপুর, দিনাজপুর।
[1]. নামল ২৭/৬৯।
[2]. বুখারী হা/২৪৬৫, ৬২২৯; আবূদাঊদ হা/৪৮১৫; মিশকাত হা/৪৬৪০।
[3]. বুখারী হা/৬২৪৩; মুসলিম হা/২৬৫৭; আহমাদ হা/৮২২২।
[4]. মা‘আলিমুস সুনান, ৩/২২৩ পৃঃ।
[5]. আল-জাওয়াবুল কাফী, পৃঃ ২০৪।
[6]. মু‘জামুল কাবীর, ৮/২৬২ পৃঃ, হা/৮০১৮; ছহীহুল জামে‘ হা/১২২৫, ২৯৭৮।
[7]. আবূদাউদ হা/২১৪৯; তিরমিযী হা/২৭৭৭; মিশকাত হা/৩১১০; ছহীহুল জামে‘ হা/৭৯৫৩।
[8]. আবূ দাউদ হা/২১৪৮; ছহীহুল জামে‘ হা/১০১৪; ইরওয়া হা/১৭৮৮।
[9]. আব্দুল হামীদ ফাইযী, পাপ তার শাস্তি ও মুক্তির উপায়, পৃঃ ৪০।
[10]. মুসনাদে আহমাদ হা/২২৯৭৪, ২২৯৯১; আবু দাঊদ হা/২১৪৯; ছহীহুল জামে‘ হা/৭৯৫৩।
[11]. যাদুল মাসীর ২/৬০।
[12]. তাফসীর ইবনে কাছীর ৩/৩৭৬ পৃঃ।
[13]. তাফসীরে বায়যাবী ২/২৬৫।
[14]. মুসলিম হা/৬৬৪৭।
[15]. রওযাতুল মুহিববীন ওয়া নুযহাতুল মুশতাকিন, পৃ. ৯৭।
[16]. আহমাদ হা/২২৭৫৭।
[17]. মুসলিম হা/৩২৯৮।