সূচনা :
কুরআন মাজীদের আয়াত ও হাদীছে নববী দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় যে, মানুষের ইবাদত ও সৎ আমল কবুল হওয়ার প্রথম ও প্রধান শর্ত হচ্ছে ঈমান-আক্বীদা বিশুদ্ধ হওয়া। আর তা হচ্ছে শিরক মুক্ত নির্ভেজাল তাওহীদ ভিত্তিক আক্বীদা হওয়া। নানা কারণে অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে আক্বীদা ও আমলে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। ফলে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ মানুষ ধর্মভীরু হওয়া সত্তেবও আক্বীদা নির্ভুল না হওয়ার কারণে পরকালীন জীবনে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে চলেছেন। তাই আমল করার পূর্বে সঠিক আক্বীদা পোষণ করা ও তা ব্যাপকভাবে চর্চা করা প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
দেশে প্রচলিত কতিপয় ভ্রান্ত আক্বীদা :
বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে প্রচলিত ভ্রান্ত আক্বীদা সমূহের প্রধান বিষয় হচ্ছে আল্লাহর সত্তা এবং তাঁর নাম ও গুণাবলী সম্পর্কে ভুল বিশ্বাস। দ্বিতীয় বিষয়টি হ’ল মহানবী শেষ নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) সম্পর্কে ভুল ধারণা ও বিশ্বাস। যুগ যুগ ধরে প্রচলিত ভুল ধারণা ও বিশ্বাসের মূল কারণগুলি নিম্নরূপ :
১. দেশের ধর্মীয় ও সাধারণ শিক্ষা ব্যবস্থার পাঠ্যক্রমে কুরআন ও ছহীহ হাদীছ ভিত্তিক সঠিক আকাইদ শিক্ষার ব্যবস্থা না থাকা।
২. তাক্বলীদে শাখছী বা অন্ধ ব্যক্তিপূজা। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে বর্ণিত সঠিক আক্বীদা গ্রহণ না করে মাযহাবের দোহাই দিয়ে তার অপব্যাখ্যা করা।
৩. আলেম ও বক্তাদের মুখে শোনা কথা বাছ-বিচার না করে গ্রহণ করা ও তা প্রচার করা।
৪. দলীল-প্রমাণ ছাড়া আলেমগণ ধর্মীয় বই-পুস্তকে জাল-যঈফ বর্ণনা ও ভিত্তিহীন বানোয়াট কথা লিখে থাকেন। সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত কবি-সাহিত্যিকগণ আলেম লেখকদের পদাংক অনুসরণ করে নিজ রচিত কবিতা, ইসলামী গান ও গযল, প্রবন্ধ এবং সিরাতুন্নবী গ্রন্থে সেসব ভ্রান্ত আক্বীদা প্রচার করেন।
প্রসঙ্গ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য :
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্রমবিকাশের ইতিহাসে কাব্য সাহিত্যে ইসলামী ভাবধারা ও ঐতিহ্য সৃষ্টিতে মুসলিম কবি-সাহিত্যিকগণের অসামান্য অবদান রয়েছে। বলতে গেলে মুসলিম বাংলা সাহিত্যের যাত্রা শুরু হয় আমাদের প্রিয় নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর প্রশংসামূলক নানা কথা নিয়ে। বিশেষ করে পুঁথি-সাহিত্যের মাধ্যমে না‘ত বা রাসূল প্রশস্তি ব্যাপক আকারে প্রকাশিত হয়। ষোড়শ শতকের শেষার্ধ থেকে মুসলিম কবিগণ মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কাব্য রচনা শুরু করেন। কিন্তু লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে, সেই শুরুকাল থেকেই কবিগণ কাব্য রচনার সূচনাতেই রাসূল (ছাঃ)-এর প্রশস্তি গাইতে গিয়ে আবেগ তাড়িত হয়ে অথবা জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে অতিমাত্রায় ভক্তিভরে ‘অতিমানব’ অথবা আল্লাহর ‘সমকক্ষ’ জ্ঞান করেছেন। বিশেষত বাংলা কবিতা ও কাব্য সাহিত্যে ‘নূরনবী’ প্রসঙ্গটি বারবার উল্লেখ করা হয়েছে।
যেমন সপ্তদশ শতকের শ্রেষ্ঠ কবি সৈয়দ আলাওল তাঁর ‘পদ্মাবতী’ কাব্যের সূচনা করেছেন এভাবে-
‘পূর্বেতে আছিল প্রভু নৈরূপ আকার।
ইচ্ছিলেক নিজ সখা করিতে প্রচার।
নিজ সখা মহাম্মদ প্রথমে সৃজিলা।
সেই যে জাতির মূলে ভূবন নিরমিলা।
তাহার পিরিতে প্রভু সৃজিল সংসার।
আপনে কহিছে প্রভু কোরান মাঝার।[1]
এখানে কবি আল্লাহকে নিরাকার সত্তা হিসাবে বর্ণনা করেছেন। অথচ সঠিক আক্বীদা হল আল্লাহর আকার আছে। তিনি নিরাকার নন। তবে তাঁর সাথে অন্য কিছুর সাদৃশ্য নেই (শূরা ৪২/১১)।
কবি মুহাম্মাদ খান ‘মকতুল হুসেইন’ কাব্যের শুরুতে মহানবী (ছাঃ)-এর প্রশস্তি এভাবে বর্ণনা করেছেন :
মুহাম্মাদ নবী নাম হৃদয়ে গাঁথিয়া
পাপীগণ পরিণামে যাইবে তরিয়া।
দয়ার অাঁধার নবী কৃপার সাগর
বাখান করিতে তার সাধ্য আছে কার।
যার প্রেমে মুগ্ধ হইয়া আপে নিরঞ্জন
সৃষ্টি স্থিতি করিলেক এ চৌদ্দ ভূবন।[2]
অষ্টাদশ শতকের কবি সৈয়দ হামজা পুঁথিকাব্যে রাসূল প্রশস্তি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
মোহাম্মদ নামে নবী সৃজন করিয়া
আপনার নূরে তাঁকে রাখিলা ছাপাইয়া।[3]
আধুনিক বাংলা কাব্য সাহিত্যে ‘নূরনবী’ প্রসঙ্গ :
মুসলিম জাগরণ ও ইসলামী চেতনা সৃষ্টির দিশারী রূপে আধুনিক বাংলা কাব্য-সাহিত্যে কবি গোলাম মোস্তফা (১৮৯৭-১৯৬৪), জাতীয় কবি কাযী নজরুল ইসলাম এবং কবি ফররুখ আহমদ (১৯১৮-১৯৭৪) স্মরণীয় হয়ে আছেন। ইসলাম ও মুসলিম ঐতিহ্যের বিচিত্র রূপ তাঁরা ইসলামী গান ও কবিতার মধ্য দিয়ে সুনিপুণভাবে দক্ষ শিল্পীর মত চিত্রিত করেছেন। তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য। তা সত্তেবও প্রচলিত ভুল কথার অন্ধানুসরণ করে তাঁরাও ভুল আক্বীদা কাব্যাকারে লিখে গেছেন। এখানে কয়েকজন প্রথিতযশা কবির লিখিত কবিতার কিছু চরণ উল্লেখ করছি।
কবি গোলাম মোস্তফা (১৮৯৭-১৯৬৪) :
কবি গোলাম মোস্তফা মুসলিম নবজাগরণের কবি। তাঁর সাহিত্যকর্ম ও চিন্তাধারায় ইসলামী তাহযীব ও তামাদ্দুন এবং মুসলিম ঐতিহ্যের প্রকাশ ঘটেছে। মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর প্রতি গভীর অনুরাগ ও ভালবাসা থেকেই তিনি ‘বিশ্বনবী’ রচনায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বলে মনে হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ‘বিশ্বনবী’ গ্রন্থে তিনি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে ‘নূরের তৈরী নবী’ রূপে আখ্যায়িত করে মিথ্যা কথা প্রচারে ভূমিকা রেখেছেন এবং বিশ্বনবীর সুমহান মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করেছেন।
তাছাড়া তার রচিত না‘তে রাসূল-
নিখিলের চির সুন্দর সৃষ্টি
আমার মুহাম্মাদ রাসূল,
আমার ....।
নূরের রবি যে আমার নবী
পূর্ণ করুণা ও প্রেমের ছবি
আমার ...।[4]
তারপর আরো অগ্রসর হয়ে কবি গীত রচনা করলেন এভাবে-
তুমি যে নূরের রবি
নিখিলের ধ্যানের ছবি
তুমি না এলে দুনিয়ায়
অাঁধারে ডুবিত সবি।
ইয়া নবী সালাম আলাইকা
ইয়া হাবীব সালাম আলাইকা
সালাওয়া তুল্লা আলাইকা।
চাঁদ সুরুয আকাশে আসে
সে আলোয় হৃদয় না হাসে
এলে তাই হে নব রবি
মানবের মনের আকাশে
ইয়া নবী সালাম আলাইকা
.....।
রাসূলকে ‘নূরনবী’ আখ্যায়িত করে ভ্রান্ত আক্বীদাপূর্ণ উপরোক্ত গীত কবিতাটি গীতিকার কবি গোলাম মোস্তফা ও বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পী আববাস উদ্দীন আহমদ-এর দ্বৈত কণ্ঠে কলিকাতায় তৎকালীন গ্রামোফোন কোম্পানীতে রেকর্ড হয়।[5] তৎপর তা ‘বাংলা মীলাদ’ নাম ধারণ করে বাংলা মুলুকে ‘মৌলুদ’ অনুষ্ঠানে ‘কিয়াম’ কালে বাংলা ‘দরূদ ও সালাম’ রূপে পাঠ করার কিংবদন্তীর মর্যাদা (?) অর্জন করেছে। আজও বাংলা অঞ্চলের সর্বত্র সমানভাবে নবীর উপর সালাম পৌঁছানোর নামে বাংলা কবিতার সুর মূর্ছনা মীলাদ প্রেমিকদের হৃদয়তন্ত্রীতে ঝংকার তোলে। ভাবতে অবাক লাগে, একজন বাঙালী কবি রচিত গীত কবিতা দরূদ ও সালাম রূপে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অংশ ও উপকরণে পরিণত হ’তে পারে কিভাবে? এ দেশের আলেমগণ কিভাবে দ্বীন ইসলামের এই বিকৃতি চোখ বুঁজে মেনে নিয়েছেন, সেটাই প্রশ্ন।
কাযী নজরুল ইসলাম (মৃঃ বাংলা ১৩০৬/১৯৭৮ইং) :
জাতীয় কবি কাযী নজরুল ইসলাম আমাদের গর্ব। তাঁর কবিতা, ইসলামী গান ও গযল এবং না‘তে রাসূল পাঠে আমরা মুগ্ধ ও বিমোহিত হই। নব জাগরণে অনুপ্রাণিত হই। আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি বাংলা কাব্য সাহিত্যের বিশাল আঙিনায় তাঁর রচিত ইসলামী কবিতা ও না‘তে রাসূল নিজস্ব মহিমায় ভাস্বর হয়ে আছে। তা সত্তেবও কবির অনেক না‘তে রাসূল ও ইসলামী গান ভুল আক্বীদায় কলুষিত হয়েছে। নিম্নে কয়েকটি না‘তে রাসূলের দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হ’ল-
১. মুহাম্মাদ নাম যতই জপি ততই মধুর লাগে
ঐ নামে এত মধু থাকে কে জানিত আগে
মুহাম্মাদ নাম যতই জপি.....।
২. আমার মুহাম্মাদ নামের ধেয়ান হৃদয়ে যার রয়।
৩. নাম মুহাম্মাদ বোলরে মন, নাম আহমদ বোল।
৪. মুহাম্মাদ নাম জপেছিলি বুলবুলি তুই আগে
তাই কিরে তোর কণ্ঠেরি গান এতই মধুর লাগে।
৫. মুহাম্মাদ মোর নয়নমণি মুহাম্মাদ নাম জপমালা
মুহাম্মাদ নাম শিরে ধরি, মুহাম্মাদ নাম গলে পরি।[6]
ফররুখ আহমাদ (১৯১৮-১৯৭৪) :
বাংলা সাহিত্যের আধুনিক কাব্যধারায় ইসলামের গৌরব মহিমা পুনরুদ্ধার ও মুসলিম পুনর্জাগরণের স্বপ্ন ও সম্ভাবনার শ্রেষ্ঠ রূপকার ছিলেন কবি ফররুখ আহমদ। তাঁকে বলা হয় ‘মুসলিম রেঁনেসার কবি’। সকল জড়তা পায়ে দলে জেগে উঠার হাতছানি রয়েছে তাঁর কাব্য ও কবিতায়। এতদসত্তেবও সমাজের চলমান ধ্যান-ধারণা দ্বারা কবি কিছুটা বিচ্যুৎ-বিভ্রান্ত হয়েছেন। যেমন একটি না‘তে রাসূল লিখতে গিয়ে কথিত ‘নূরনবী’ নামে ভ্রান্ত আক্বীদা তিনিও প্রকাশ করেছেন এভাবে-
ওগো নূরনবী হযরত
আমরা তোমারি উম্মত।
তুমি দয়াল নবী,
তুমি নূরের রবি,
তুমি বাসলে ভাল জগত জনে
দেখিয়ে দিলে পথ।
আমরা তোমার পথে চলি
আমরা তোমার কথা বলি
তোমার আলোয় পাই যে খুঁজে
ঈমান, ইজ্জত।
সারা জাহানবাসী
আমরা তোমায় ভালবাসি,
তোমায় ভালবেসে মনে
পাই মোরা হিম্মত।[7]
বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে সরকারীভাবে শিক্ষার প্রাথমিক স্তরে শিশু-কিশোরদের জন্য পাঠ্যপুস্তকে মহানবী (ছাঃ) সম্পর্কে মারাত্মক এক মিথ্যা আক্বীদা পরিবেশন করা খুবই পরিতাপের বিষয়। মানব জীবনে প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম ও সুদূরপ্রসারী। আজকের শিশু-কিশোরগণ আগামী দিনে মুসলিম সমাজের কান্ডারী। শিশু-কিশোরদের মন কাদামাটির মত কোমল। এ সময় তাদেরকে যেমন খুশি তেমন করে গড়ে তোলা যায়। এ সময়ের শিক্ষা পাথরে খোদিত নকশার ন্যায়। তাই শিক্ষার প্রাথমিক স্তরে কোমলমতি কিশোর মনের গহীন কোণে আমাদের প্রিয় রাসূল মুহাম্মাদ (ছাঃ) সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদা-বিশ্বাস শিখিয়ে ‘বিষ বৃক্ষের’ উপর তাদের অনাগত ভবিষ্যত জীবনের ভিত রচনা করা হচ্ছে। সরকার ও পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কমিটির সম্মানিত সদস্যগণের প্রতি আবেদন, ভবিষ্যতে কোন কবিতা ও প্রবন্ধ পাঠ্যপুস্তকের জন্য নির্বাচন করার প্রাক্কালে ভুল-শুদ্ধ যাচাই-বাছাই করবেন।
বিল্লালের গযল, চরমোনাইয়ের গযল, আমার প্রিয় ইসলামী গান, শাহী গযল প্রভৃতি নামকরণে বাজারে প্রচুর ইসলামী গযলের বই-পুস্তক পাওয়া যায়। এ সকল বই-পুস্তকে হাম্দ ও না‘তের নামে আল্লাহ ও রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে নানা প্রকার ভ্রান্ত ও শিরক মিশানো আক্বীদা বিস্তার লাভ করছে। স্কুল ও মাদরাসার কচিকাঁচা বালক-বালিকারা সেইসব বই থেকে গযল মুখস্থ করে মীলাদুন্নবী-সীরাতুন্নবী অনুষ্ঠানে, ওয়ায-মাহফিলে গাইতে থাকে। ওয়ায়েযীন ও বক্তাগণ ইসলামী জালসায় সুর করে গযল গেয়ে থাকেন। বিশেষ বিশেষ দিবসে রেডিও এবং টেলিভিশনে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নাম দিয়ে নামজাদা কণ্ঠ শিল্পীগণ ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। পথে-প্রাপ্তরে, ফসলের মাঠে কৃষক-শ্রমিক কাজ করতে করতে ইসলামী গান গায়। নদীর বুকে নৌকার মাঝিরা এসব গান গায়। কবি-সাহিত্যিকরা কেউ বুঝে কেউ না বুঝে সেগুলো লিখেছেন। মানুষ তা কণ্ঠে তুলে নিয়ে দিবা-রাত্রি গাইছে। কেউ বুঝে, কেউ না বুঝে। সকলেই নিজেকে তাওহীদী আক্বীদায় বিশ্বাসী খাঁটি মুসলিম বলে ধারণা করে। যদিও তার কণ্ঠে গাওয়া সঙ্গীতটি তাকে ইসলাম থেকে দূরে নিয়ে যায়।
আল্লাহ তা‘আলা এবং রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কিত ভ্রান্ত আক্বীদার বিষমিশ্রিত কয়েকটি ইসলামী সঙ্গীতের দৃষ্টান্ত নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল-
১. নবী মোর পরশমণি, নবী মোর সোনার খনি
নবী নাম জপে যে জন সেই তো দোজাহানের ধনী।
নবী মোর নূরে খোদা তার তরে সকল পয়দা
আদমের কলবেতে তারই নূরের রওশনী...
নবী মোর পরশমণি, নবী মোর সোনার খনি।[8]
প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী আব্দুল আলীমের কণ্ঠে এই সঙ্গীতটি সরকারী প্রচার মাধ্যমে সর্বদাই প্রচারিত হয়। গণমানুষের নিকট সঙ্গীতখানি খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু এর ভিতর এমন সব বিষয় রয়েছে, যার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করলে শিরকে আকবর (বড় শিরক) হয় এবং মানুষকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়।
২. সব মানুষের সেরা মানুষ নবীজি আমার
নূরের বাতি দাও জ্বেলে দাও নয়নে আমার।
তোমার দয়ার কাঙাল আমি
কাঁদি সারা দিবস যামী।
দূর কর দূর কর মনে মিটাও অাঁধিয়ার।[9]
৩. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদ রাসুল
......
নূরের নবী প্রেমের ছবি নাইকো তাহার তুল,
ও ভাই নাইকো তাহার তুল
লা ইলাহা.....।[10]
৪. দূর আরবে ফুটেছিল একটি নূরের ফুল (২ বার)
সে ফুল আমার কমলীওয়ালা রাসূলে মাকবুল
......
নূর নবীজীর দরূদ তাকে করে যে আকুল...
রাসূলে মাকবুল, আমার রাসূলে মাকবুল।[11]
৫. দিবা নিশি জপি আমি আল্লাহ নবীর নাম
ঐ নামের গুণে পুরবে জানি (২ বার) আমার মনস্কাম
আল্লাহ নবীর নাম
......
ঐ নামে যে পরবে মালা, জীবন হবে তার উজালা
.... আল্লা নবীর নাম।[12]
৬. ডেকে লও রাসূলুল্লাহ, রওজা পাকের কিনারে
আমি সহিতে পারি না বিরহ জ্বালা, ধন্য কর দীদারে
আমি কেঁদে কেঁদে হইগো সারা, ধন্য কর দীদারে।
আজো রওজায় শুয়ে থেকে হায়,
কাঁদেন তিনি উম্মাতের মায়ায়।[13]
৭. নূরুন আলা নূর মুহাম্মাদ নূরের খাজিনা
তোমার নূরের বদন দেখতে আমি দেওয়ানা।
তোমার নূরে জগৎ জাহান সৃজিয়াছেন আল্লাহ মহান
........
তোমার নূরের লোভে লোভী তামাম দুনিয়া।
তোমার নূরে পয়দা হয়ে ফেরেশতাদের সিজদা লয়ে
পাইল তাজীম আদম নবী তারই উছিলায়
তোমার নূরের তাজাল্লীর ঐ ইশকে দেওয়ানা।[14]
-মাওলানা আ.জ.ম. অহিদুল আলম।
৮. মরণকালে দিও গো দেখা হে প্রিয় রাসূল আমায়
হৃদয় মাঝে তোমারি নাম জপি সারাক্ষণ।[15]
৯. নবী রাসূলকে মুর্দা বলে কোন সে অবুঝ দল
......
নবী রাসূলগণ কবর শরীফে জিন্দা আছেন হায়
মূসা নবীকে একদা রাসূল নামাজ হালে পায়।
মোদের নবী হায়াতুন্নবী আছেন জিন্দা হালে
মোদের লাগি দোয়ায় রত আছেন সাঁঝ সকালে।
উম্মতেরা করছে কি কাজ নবী দেখতে পায়
সেই নবীকে মুর্দা বলা কাদের শোভা পায়।
......
মাযহাব মানা ফরজ বলে সঠিক আলেমেরা
মাযহাব যারা ছাড়িবে তারা হবে যে গোমরা
কোন বাতিল দল মাযহাব মানে না মোদের জামানায়
সত্য আলোর রশ্নি ছেড়ে অাঁধারে কাতরায়।[16]
.... মাঃ হায়দার হুসাইন
১০. ও গো নবী সরোয়ার তুমি হাবীব আল্লার
.......
সৃষ্টি করে নূরকে তোমার অতি তাজীমে
সবার আগে রাখেন খোদা আরশে আজীমে
সে পাক নূরেতে তোমার
গড়েন তামাম সংসার
সৃষ্টি হল আরশ, কুরসি, জমিন ও আসমান।
.....
পেলে দিদার প্রভুর
নূরে মিলে গেল নূর।[17]
-মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান।
১১. সব নবীদের সেরা তুমি আখেরী রাসূল,
........
পয়দা হল নিখিল জাহান তোমারি পাক নূরে
ধরা হতে অাঁধার কালো পালিয়ে গেল দূরে।[18]
- মাওলানা আ.জ.ম. ওবায়দুল্লাহ
১২. নূর মুহাম্মাদ ছল্লাল্লাহু সব নবীর সুলতান
তুমি লাহুতের মেহমান,
.............
চাঁদ-সুরুজে তোমার দ্যুতি
গ্রহ তারায় তোমার জ্যোতি
আরশ ফালাক সকল তোমার
নূরেতে রৌশন।[19]
-মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান।
জনৈক কবি লিখেছেন,
আকার কি নিরাকার সেই রববানা
আহমদ আহাদ বিচার হলে যায় জানা
আহমদ নামেতে দেখি
মিম হরফে লেখেন নবী
মিম গেলে আহাদ বাকী
আহমদ নাম থাকে না।
আরেকজন কবি লিখেছেন,
আহমদের ঐ ‘মিম’-এর পর্দা
উঠিয়ে দেখরে মন
দেখবি সেথা বিরাজ করে
আহাদ নিরঞ্জন।[20]
একজন মুসলিম গীতিকারের রচিত কথিত ভক্তিমূলক গান দেশের বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পীরা সরকারী প্রচার মাধ্যমে সর্বদাই গেয়ে থাকেন। যার কথাগুলি খুবই আপত্তিজনক। কথাগুলি হ’ল-
ছায়া বাজি পুতুল রূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি পুতুলের কি দোষ
তুমি হাকিম হইয়া হুকুম কর,
পুলিশ হইয়া ধর
সর্প হইয়া দংশন কর
ওঝা হইয়া ঝাড়।
তুমি মার তুমি বাঁচাও
তুমি খাওয়াইলে আমি খাই, আল্লাহ...
এই যে দুনিয়া কিসের লাগিয়া
এত যত্নে গড়াইলেন সাঁই
এই যে দুনিয়া......।
হিন্দু ধর্মাবলম্বী পন্ডিত শ্রীমৎ শংকরাচার্য্য অদ্বৈতবাদ মতবাদ প্রচার করেছেন। যার সারকথা হ’ল সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টি অভিন্ন বস্ত্ত। জগতে যা কিছু বিদ্যমান তার সবকিছুই স্রষ্টার অংশ বিশেষ। যার আরেক নাম সর্বেশ্বরবাদ। যার অর্থ সব জড় ও জীব জগতের মধ্যেই ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে। এই বিশ্বাস থেকেই হিন্দুরা সকল সৃষ্ট বস্ত্তর পূজা করার মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করার দাবী করে।
খৃষ্টানরা
দাবী করে যে, ঈশ্বর সর্বপ্রথম তার নিজের ‘যাত’ বা সত্তা থেকে ‘কালেমা’ বা
পুত্র যীশু খৃষ্টকে সৃষ্টি করেন এবং তার থেকে সকল সৃষ্টিকে তিনি সৃষ্টি
করেন। খৃষ্ট ধর্মের ‘সৃষ্টিতত্ত্বের’ আদলে সপ্তম হিজরী শতকের ছূফী
মহিউদ্দীন ইবনুল আরাবী (৫৬০-৬৩৮ হিঃ) বলেন, ‘আল্লাহ সর্বপ্রথম ‘নূরে
মুহাম্মাদী’ সৃষ্টি করেন এবং তার থেকে সকল সৃষ্টি জগতকে পয়দা করেন। জাবির
(রাঃ)-এর নাম জড়িয়ে- ‘সর্বপ্রথম আল্লাহ তোমার নবীর নূরকে তার নূর থেকে
সৃষ্টি করেন’- এই মিথ্যা কথাটি সর্বপ্রথম ইবনুল আরাবী তার রচিত বই-পুস্তকে
‘হাদীছ’ নাম দিয়ে উল্লেখ করেন।[21]
আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাই যে, হিন্দু ধর্মের ‘অদ্বৈতবাদ’, খৃষ্টান ধর্মের ‘বহু ঈশ্বরবাদ’ এবং ইবনুল আরাবী উদ্ভাবিত মুসলমানদের ‘নূরে মুহাম্মাদী তত্ত্ব’-এর মধ্যে কোনই প্রভেদ নেই। বরং চমৎকার মিল রয়েছে। তিন ধর্মের তিনটি মতবাদের মৌলিক কথা একটিই। আর তা হচ্ছে জগতের সকল সৃষ্টিই হিন্দুর ‘ঈশ্বর’, খৃষ্টানের ‘খোদা’ এবং মুসলমানের ‘আল্লাহর’ সত্তা থেকে সৃজিত হয়েছে।
‘আল্লাহর নূরে নবী পয়দা, নবীর নূরে জগত পয়দা’ যার সংক্ষিপ্ত রূপ ‘নূরনবী’, এই বচন যারা হাদীছ নামে প্রচার করেন এবং এ আক্বীদা পোষণ করেন তাদের কথার অর্থ দাঁড়ায় যে, ‘আল্লাহর সত্তা’ বা ‘যাত’ একটি ‘নূর’ বা নূরানী বস্ত্ত এবং আল্লাহ স্বয়ং নিজের সেই যাতের বা ‘সত্তার’ অংশ থেকে তাঁর নবীকে পয়দা করেছেন (নাঊযুবিল্লাহ)। অথচ আল্লাহ তা থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র।
গুরুত্বের সাথে বিবেচনার দাবী রাখে যে, কোন হাদীছ গ্রন্থেই ছহীহ, যঈফ, হাসান কোন সূত্রেই রাসূল (ছাঃ) থেকে তিনি ‘নূর নবী’ বা ‘নূর দ্বারা তৈরী’ এমন একটি হাদীছও বর্ণিত হয়নি। হিজরী সাতশত শতাব্দীর পূর্ব পর্যন্ত ছাহাবী, তাবেঈ, তাবে তাবেঈ, সালাফে ছালেহীন, চার ইমাম সহ কোন মুসলিম আলেম ‘নূরনবী’ সংক্রান্ত কিছুই জানতেন না। যদি তাঁরা জানতেন তাহ’লে অবশ্যই ইতিহাস ও সীরাত গ্রন্থে তা লিপিবদ্ধ করে যেতেন। কিন্তু তা নেই। এমনকি ইসলামের ইতিহাসের প্রথম পাঁচশত বছরে কোন দল-উপদল বা বাতিল ফের্কার পক্ষ হ’তেও ‘নূর নবী’ বিষয়ক কিছু আলোচিত হয়নি।
কিন্তু বিচিত্র এই দেশ। বিচিত্র এ দেশের মানুষ। কবির ভাষায়- এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাক তুমি...। সব সম্ভবের এই দেশে কে শোনে কার কথা। প্রমাণবিহীন বাংলা বই-পুস্তক আর ওয়ায-মাহফিলে বক্তাদের মুখে শোনা কথার উপর নির্ভরশীল হয়ে কবি-সাহিত্যিক, শিল্পী, গীতিকার সকলেই বিভ্রান্ত আক্বীদায় বিশ্বাস স্থাপন করে বা না করে অভ্যাসগত শিরকের পঙ্কিলে আটকে গেছে। যার শেষ পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। কারণ আল্লাহ শিরকের ফলাফল সম্পর্কে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘যদি তারা শিরক করে তাহ’লে তাদের আমল সমূহ নষ্ট হয়ে যাবে’ (আন‘আম ৬/৮৮)।
সঠিক আক্বীদা :
ইহুদীরা ওযায়ের (আঃ), খৃষ্টানরা ঈসা (আঃ) ও আরবের মুশরিকরা হযরত ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আঃ) সম্পর্কে অতি ভক্তি ও বাড়াবাড়ি করে শিরকে নিপতিত হয়েছিল। এজন্য পবিত্র কুরআন ও হাদীছে আবদিয়াত (বান্দা), বাশারিয়াত (মানবত্ব), গায়েবি খবর সম্পর্কে না জানা প্রভৃতি বিষয়ে বারবার আলোচনা করা হয়েছে। যাতে ঈমানদারগণ রাসূলের আনুগত্য ও ভালবাসার পাশাপাশি তাঁর প্রতি অতি ভক্তি থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারে। মহান আল্লাহ তাঁর প্রেরিত রাসূলের পরিচিতি বর্ণনা করে বলেন, ‘বল, আমি তোমাদের মতই মানুষ; আমার প্রতি অহী হয় যে, তোমাদের ইলাহ একমাত্র ইলাহ’ (হামীম সাজদা ৪১/৬)।
রাসূল (ছাঃ) নিজেই নিজের বৈশিষ্ট্য পেশ করে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। আমি ভুলে যাই, যেমনভাবে তোমরা ভুলে যাও। সুতরাং আমি ভুলে গেলে তোমরা আমাকে স্মরণ করিয়ে দিবে’।[22] সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘সকল ফেরেশতা নূর থেকে এবং জ্বিন জাতিকে আগুন থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর আদমকে (মানব জাতি) সৃষ্টি করা হয়েছে সেই সব ছিফাত দ্বারা, যে ছিফাতে তোমাদের ভূষিত করা হয়েছে (অর্থাৎ মানব জাতিকে মাটি ও পানি দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে)।[23] এ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, কেবলমাত্র ফেরেশতাগণ ‘নূর’-এর তৈরী। মানব জাতি কিংবা তার মধ্য হ’তে নবী-রাসূলগণ নূরের তৈরী নয়।
আলেমগণের উচিত, পবিত্র কুরআনের আয়াত ও ছহীহ হাদীছগুলির উপর নির্ভর করা এবং সেই মুতাবিক সঠিক ও বিশুদ্ধ আক্বীদা গ্রহণ ও প্রচার করা। সঠিক আক্বীদা গ্রহণের কথা বলা হ’লে যদি আপনি বলেন, ‘এগুলি ওহাবীদের কথা। ওহাবীদের নিকট থেকে আক্বীদা শিখতে হবে না। এদেশে ইসলাম প্রচার করেছে ওলী-আউলিয়াগণ। এতদিন পর ওহাবীরা এসেছে নতুন করে আক্বীদা শিখাতে’? এসব উক্তি করে আপনি নিজেকে দলীয় সংকীর্ণতার কুটিল পঙ্কিলে নিমজ্জিত করলেন। পবিত্র কুরআনের আয়াত ও রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ ‘ওহাবী’ অথবা ‘সুন্নী’ এ রকম বিভাজন করে বর্ণিত হয়নি। এক্ষেত্রে আপনি ঈমানদার কি-না সেটাই বিবেচ্য বিষয়। বিদ‘আতী ও কুফরী আক্বীদা-আমল সমর্থন করা হ’লে তিনি পাক্কা ‘সুন্নী’। আর তার বিরোধিতা করলে কা‘বা মসজিদের ইমাম ছাহেব হ’লেও তিনি ওহাবী। কি চমৎকার অভিধা! এসব গোঁড়ামি ছেড়ে পরকালীন নাজাতের লক্ষ্যে সকলকে কুরআন ও হাদীছে বর্ণিত ছহীহ আক্বীদা গ্রহণ করতে হবে। ভ্রান্ত আক্বীদা ও শয়তানী পথ ছাড়তে হবে। এছাড়া কোন গত্যন্তর নেই।
উপসংহার :
বাংলা ভাষায় রচিত কাব্য ও কবিতায়, গযল ও গানে আল্লাহ ও রাসূল (ছাঃ) সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদা আবহমান কাল থেকে প্রচার হয়ে আসছে। প্রচলিত শত শত গযল ও ইসলামী সঙ্গীতের মধ্য থেকে কয়েকটি মাত্র দৃষ্টান্ত স্বরূপ উল্লেখ করা হয়েছে। সকল দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে থেকে পরকালীন মুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে অতীতের ভুল সংশোধন করে নেওয়া মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
আসুন! সে লক্ষ্য সামনে রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি আমাদের দায়-দায়িত্ব পালন করি। নির্ভুল আক্বীদা প্রতিষ্ঠায় পারস্পরিক সহযোগিতা দান করি। আল্লাহ তাওফীক দান করুন- আমীন!
মুহাম্মাদ আব্দুল হামীদ
সহকারী অধ্যাপক, ফজিলা রহমান মহিলা কলেজ, কৌরিখাড়া, পিরোজপুর।
[1]. মুহাম্মদ শাহাব উদ্দীন, সাহিত্য সাধনায় কয়েকজন মুসলিম প্রতিভা (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ডিসেম্বর ২০০৪), পৃঃ ১৭।
[2]. ঐ, পৃঃ ১৮।
[3]. তদেব।
[4]. ঐ, পৃঃ ৩৪।
[5]. ঐ, পৃঃ ৩৫।
[6]. ঐ, পৃঃ ২০।
[7]. বাংলা সহজপাঠ, পঞ্চম শ্রেণী, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা, পুনর্মুদ্রণ: নভেম্বর, ২০১২, পৃঃ ৯৬-৯৭; ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা ৪র্থ শ্রেণী, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্য পুস্তক বোর্ড,ঢাকা।
[8]. ডাঃ এম.এ. সামাদ, আমার প্রিয় ইসলামী গান, পৃঃ ৭৮, প্রথম প্রকাশ : মার্চ ২০০৫। প্রকাশক : সাহিত্য সোপান, বগুড়া।
[9]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১৪।
[10]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ১১০।
[11]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ৭১।
[12]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৭।
[13]. শাহী গযল বা হিযবুল্লাহ জাগরণী, পৃঃ ১৭; ছারছীনা দারুচ্ছুন্নাত লাইব্রেরী, নেছারাবাদ, পিরোজপুর।
[14]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৭।
[15]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৯।
[16]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ৪৭।
[17]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ৬৭।
[18]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ১৬২।
[19]. প্রাগুক্ত, পৃঃ ৭০।
[20]. মোঃ আবু তাহের বর্ধমানী, অধঃপতনের অতল তলে, পৃঃ ৬৪।
[21]. ড. খন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, হাদীসের নামে জালিয়াতি, পৃঃ ২৫৯ তৃতীয় প্রকাশ : সেপ্টেম্বর ২০০৮।
[22]. ছহীহ বুখারী হা/৪০১।
[23]. মুসলিম; মিশকাত হা/৫৭০১।