পর্ব ১ পর্ব ২ পর্ব ৩পর্ব ৪ পর্ব ৫পর্ব ৬পর্ব ৭ ।  পর্ব ৮ ।

আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে আশরাফুল মাখলূকাত তথা সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। আর তাদের সার্বিক জীবন পরিচালনার জন্য ইসলামকে একমাত্র দ্বীন হিসাবে মনোনীত করে তার যাবতীয় বিধি-বিধান অহী মারফত জানিয়ে দিয়েছেন এবং তা বাস্তবায়ন করার জন্য যুগে-যুগে নবী-রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন। অতএব আল্লাহর মনোনীত ইসলাম ধর্ম পরিচালিত হবে একমাত্র আল্লাহর বিধান অনুযায়ী। আর তা বাস্তবায়িত হবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রদর্শিত পদ্ধতিতে। সুতরাং মানব রচিত কোন বিধান ও পদ্ধতি ইসলামের মধ্যে প্রবেশ করানোর বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জীবদ্দশাতেই আল্লাহ তা‘আলা দ্বীন-ইসলামকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। যার মধ্যে সামান্যতম সংযোজন-বিয়োজন করার অধিকার পৃথিবীর কোন মানুষকে দেওয়া হয়নি। দুঃখের বিষয় হ’ল বর্তমানে ইসলামের মধ্যে এমন কতগুলি কাজ ইবাদত হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে যার কোন ভিত্তি পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে না থাকলেও মানুষ সেগুলিকে ইসলামের বিধান হিসাবেই গ্রহণ করেছে। আর এরূপ আমলকেই ইসলামী শরী‘আতের পরিভাষায় বিদ‘আত বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে, যার পরিণাম জাহান্নাম।

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান

আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে সৃষ্টি করে তাদের জন্য ইসলামকেই একমাত্র দ্বীন হিসাবে মনোনীত করেছেন। তিনি বলেন,إِنَّ الدِّيْنَ عِنْدَ اللهِ الْإِسْلاَمُ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকটে একমাত্র মনোনীত দ্বীন হ’ল ইসলাম’ (আলে ইমরান ৩/১৯)। আর ইসলামের যাবতীয় বিধি-বিধান অহী মারফত মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর উপর নাযিল করেছেন। সুতরাং অহি-র বিধানই একমাত্র চূড়ান্ত জীবন বিধান এবং তার মধ্যেই নিহিত রয়েছে সকল সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান। আর এই অহি-র মাধ্যমে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর জীবদ্দশাতেই দ্বীন-ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে। রাসূলুল্ল­াহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুর তিন মাস পূর্বে ১০ম হিজরীর ৯ই যিলহজ্জে আরাফাতের ময়দানে ছাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে যখন তিনি বিদায় হজ্জ পালন করেছিলেন তখন আল্ল­াহ তা‘আলা এই আয়াতটি অবতীর্ণ করেন, اَلْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمُ الْإِسْلاَمَ دِيْنًا- ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার নে‘মত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসাবে মনোনীত করলাম’ (মায়েদা ৫/৩)

অত্র আয়াত প্রমাণ করে যে, রাসূলুলল্লাহ (ছাঃ)-এর জীবদ্দশাতেই অহি-র বিধানের মাধ্যমে দ্বীন-ইসলাম পূর্ণতা লাভ করেছে, যাতে মানুষের সার্বিক জীবনের সকল দিক ও বিভাগ পূর্ণাঙ্গরূপে বর্ণিত হয়েছে। আল্ল­াহ তা‘আলা বলেন, مَا فَرَّطْنَا فِيْ الْكِتَابِ مِنْ شَيْءٍ ‘আমি এই কিতাবে (কুরআনে) কোন বিষয়ই লিপিবদ্ধ করতে ছাড়িনি’ (আন‘আম ৬/৩৮)

তিনি অন্যত্র বলেন,وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِكُلِّ شَيْءٍ ‘আর আমরা তোমার উপরে প্রত্যেক বিষয়ের স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বরূপ কিতাব (কুরআন) নাযিল করেছি’ (নাহল ১৬/৮৯)। অত্র আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন,لَوْ ضَاعَ لِيْ عِقَالُ بَعِيْرٍ لَوَجَدْتُهُ فِيْ كِتَابِ اللهِ ‘আমার উট বাঁধার একটি দড়িও যদি হারিয়ে যায়, তাহ’লে আমি তা আল্লাহর কিতাবের মধ্যে খুঁজে পাব’।[1]

অতএব বুঝা গেল, মহান আল্লাহ কুরআনকে আমাদের নিকট পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হিসাবে প্রেরণ করেছেন এবং তাকে বাস্তবে রূপদান করার জন্য মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে নবী ও রাসূল করে পাঠিয়েছেন। আর তিনিও আল্লাহ তা‘আলার বিধানের যথাযথ বাস্তবায়ন করেছেন। এক্ষেত্রে সামান্যতম ত্রুটি করেননি। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَا تَرَكْتُ شَيْئًا مِمَّا أَمَرَكُمُ اللهُ بِهِ إِلاَّ وَقَدْ أَمَرْتُكُمْ بِهِ وَلاَ تَرَكْتُ شَيْئًا مِمَّا نَهَاكُمُ اللهُ عَنْهُ إِلاَّ وَقَدْ نَهَيْتُكُمْ عَنْهُ- ‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন এমন কোন জিনিসই আমি (বর্ণনা করতে) ছাড়িনি। আর আমি তার হুকুম তোমাদেরকে অবশ্যই দিয়েছি। আর আমি এমন কোন জিনিসই ছাড়িনি যা আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন। কিন্তু আমি তোমাদেরকে তা অবশ্যই নিষেধ করেছি’।[2]

অতএব ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হওয়া সত্ত্বেও যারা ভাল কাজের দোহাই দিয়ে ইসলামের মধ্যে নতুন নতুন ইবাদতের জন্ম দিয়েছে ও তাকে লালন করছে তাদের ভাবখানা এমন যেন ইসলাম অপূর্ণাঙ্গ। আর এরূপ বিশ্বাস আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর মিথ্যারোপ করার শামিল। ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন,

مَن اِبْتَدَعَ فِي الإِسْلاَمِ بِدْعَةً يَرَاهَا حَسَنَةً فَقَدْ زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا خَانَ الرِّسَالَةَ، لِأَنَّ اللهَ تَعَالَى يَقُوْلُ (الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ) فَمَا لَمْ يَكُنْ يَوْمَئِذٍ دِيْنًا فَلَيْسَ الْيَوْمَ دِيْنًا-

‘যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে বিদ‘আত সৃষ্টি করল এবং তাকে উত্তম আমল মনে করল, সে ধারণা করল যে, মুহাম্মাদ (ছাঃ) রিসালাতে খিয়ানত করেছেন। কেননা আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে (ইসলাম) পূর্ণাঙ্গ করলাম’ (মায়েদাহ ৫/৩)। সুতরাং সে যুগে (রাসূল ছাঃ ও ছাহাবায়ে কেরামের যুগ) যা দ্বীন হিসাবে গণ্য ছিল না, বর্তমানেও তা দ্বীন হিসাবে পরিগণিত হবে না’।[3]

সুতরাং বিশ্বাস, কথা ও কর্মে একমাত্র অহি-র বিধানের কাছেই আত্মসমর্পণ করতে হবে। মানব রচিত কোন বিধানকে সে কখনোই তোয়াক্কা করবে না। আর তা হবে একমাত্র মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর নির্দেশিত পদ্ধতিতে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِيْ رَسُوْلِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللهَ كَثِيْرًا- ‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখেরাতকে ভয় করে এবং আল্লাহ্কে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ’ (আহযাব ৩৩/২১)। তিনি অন্যত্র বলেন, ‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকেই ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর’ (হাশর ৫৯/৭)

মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য

আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। উদ্দেশ্য হ’ল, তারা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ ‘আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এজন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে’ (যারিয়াত ৫১/৫৬)। তিনি অন্যত্র বলেন, لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوْحًا إِلَى قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوا اللهَ مَا لَكُمْ مِنْ إِلَهٍ غَيْرُهُ إِنِّيْ أَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيْمٍ- ‘আমরা তো নূহকে পাঠিয়েছিলাম তার সম্প্রদায়ের নিকটে এবং সে বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহর ইবাদত কর, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ নেই। আমি তোমাদের জন্য মহাদিবসের শাস্তির আশংকা করছি’ (আ‘রাফ ৭/৫৯)

এই আহবান শুধুমাত্র নূহ (আঃ)-ই তাঁর কওমকে করেননি। বরং আল্লাহ প্রেরিত প্রত্যেক নবী-রাসূলই তাদের কওমকে আল্লাহর ইবাদত করার আহবান জানিয়েছেন। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَسُوْلٍ إِلاَّ نُوحِيْ إِلَيْهِ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنَا فَاعْبُدُوْنِ- ‘(হে মুহাম্মাদ!) আমরা তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল প্রেরণ করিনি যার প্রতি আমরা এই অহী অবতরণ করিনি যে, ‘আমি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত কর’ (আম্বিয়া ২১/২৫)। তিনি অন্যত্র বলেন, وَاعْبُدْ رَبَّكَ حَتَّى يَأْتِيَكَ الْيَقِيْنُ ‘তোমার মৃত্যু উপস্থিত হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার প্রতিপালকের ইবাদত কর’ (হিজর ১৫/৯৯। অতএব আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে একমাত্র তাঁর ইবাদত করার উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন। সে উদ্দেশ্য পূরণে কাজ করা সকল মানুষের উপর ওয়াজিব।

ইবাদত কবুলের শর্তাবলী

আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে ইবাদতের সকল নিয়ম-পদ্ধতি তাঁর প্রিয় রাসূল মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মাধ্যমে দেখিয়ে দিয়েছেন। ফলে মানুষের ইচ্ছামত ইবাদত করার কোন অধিকার নেই। অতএব ইবাদত কবুলের মৌলিক শর্ত হ’ল দু’টি। যথা-

(১) একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে ইবাদত করা : ইবাদত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে না হয়ে কোন পীর, দরবেশ, বুযুর্গানে দ্বীনের সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হ’লে তা আল্লাহর নিকট কবুল হবে না। বরং তা শিরকে পরিণত হবে। আর শিরক এমন একটি মহাপাপ যার কারণে জীবনের অর্জিত সকল নেক আমল ধ্বংস হয়ে যায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلَوْ أَشْرَكُوْا لَحَبِطَ عَنْهُمْ مَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ ‘যদি তারা শিরক করে তবে তারা যা কিছু করেছে, সবই ধ্বংস হয়ে যাবে’ (আন‘আম ৬/৮৮)। তিনি অন্যত্র বলেন,وَلَقَدْ أُوْحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ- ‘তোমার প্রতি ও তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবশ্যই (এ মর্মে) অহী হয়েছে যে, যদি তুমি শিরক কর তবে অবশ্যই তোমার কর্ম নিষ্ফল হয়ে যাবে এবং অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (যুমার ৩৯/৬৫)। আর মৃত্যুর পরে তার জন্য জাহান্নাম নিশ্চিত হয়ে যায়। কেননা শিরককারীর জন্য আল্লাহ জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন। তিনি বলেন,إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ أَنْصَارٍ- ‘কেউ আল্লাহর সাথে শিরক করলে অবশ্যই আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করবেন এবং তার আবাসস্থল হবে জাহান্নাম। বস্ত্ততঃ যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই’ (মায়েদাহ ৫/৭২)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শরীক করে মৃত্যুবরণ করবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’।[4]

(২) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাত অনুযায়ী ইবাদত করা : আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বিধানকে বাস্তবায়ন করার জন্য মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে প্রেরণ করেছেন এবং পৃথিবীর সকল মানুষকে একমাত্র তাঁরই আনুগত্য করার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا أَطِيْعُوا اللهَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَأُوْلِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ فَإِنْ تَنَازَعْتُمْ فِيْ شَيْءٍ فَرُدُّوْهُ إِلَى اللهِ وَالرَّسُوْلِ- ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্ল­াহর ও আনুগত্য কর রাসূলের এবং তোমাদের মধ্য থেকে কর্তৃত্বের অধিকারীদের। অতঃপর কোন বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ কর তাহ’লে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যর্পণ কর’ (নিসা ৪/৫৯)। তিনি অন্যত্র বলেন,

قُلْ أَطِيعُوا اللهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُوْلَ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّمَا عَلَيْهِ مَا حُمِّلَ وَعَلَيْكُمْ مَا حُمِّلْتُمْ وَإِنْ تُطِيْعُوْهُ تَهْتَدُوْا وَمَا عَلَى الرَّسُوْلِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِيْنُ-

‘বল, তোমরা আল্ল­াহর আনুগত্য কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর। তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে সে শুধু তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী। আর যদি তোমরা তার আনুগত্য কর তবে তোমরা হেদায়াতপ্রাপ্ত হবে। আর রাসূলের দায়িত্ব শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া’ (নূর ২৪/৫৪)। তিনি অন্যত্র বলেন, وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُوْلٍ إِلَّا لِيُطَاعَ بِإِذْنِ اللهِ ‘আর আমরা যে কোন রাসূল প্রেরণ করেছি তা কেবল এজন্য যে, যেন আল্ল­াহর অনুমতিক্রমে তাদের আনুগত্য করা হয়’ (নিসা ৪/৬৪)। তিনি অন্যত্র বলেন, مَنْ يُطِعِ الرَّسُوْلَ فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ وَمَنْ تَوَلَّى فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيْظًا- ‘যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে আল্ল­াহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হ’ল, তবে আমি তোমাকে তাদের উপর তত্তবাবধায়ক করে প্রেরণ করিনি’ (নিসা ৪/৮০)। তিনি অন্যত্র বলেন,

تِلْكَ حُدُوْدُ اللهِ وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِيْنَ فِيْهَا وَذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ، وَمَنْ يَعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُوْدَهُ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيْهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُهِيْنٌ-

‘এগুলো আল্ল­াহর সীমারেখা। আর যে আল্ল­াহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে আল্ল­াহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর এটা মহা সফলতা। আর যে আল্ল­াহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্ল­াহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক শাস্তি’ (নিসা ৪/১৩-১৪)। তিনি অন্যত্র বলেন,

وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَأُولَئِكَ مَعَ الَّذِيْنَ أَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِحِيْنَ وَحَسُنَ أُولَئِكَ رَفِيْقًا

‘আর যে আল্লাহ এবং রাসূলের আনুগত্য করবে সে নবী, সত্যনিষ্ঠ, শহীদ ও সৎকর্মপরায়ণ- যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন, তাদের সঙ্গী হবে এবং তারা কত উত্তম সঙ্গী!’ (নিসা ৪/৬৯)। তিনি অন্যত্র বলেন,وَأَقِيْمُوْا الصَّلَاةَ وَآتُوْا الزَّكَاةَ وَأَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ- ‘আর তোমরা ছালাত ক্বায়েম কর, যাকাত দাও এবং রাসূলেরে আনুগত্য কর যাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হ’তে পার’ (নূর ২৪/৫৬)

উপরোল্লি­খিত আয়াত সমূহ ছাড়াও আরো অনেক আয়াতে আল্ল­াহ তা‘আলা বার বার নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা রাসূলুল্ল­াহ (ছাঃ)-এর আনুগত্য কর। তাঁকে ছাড়া অন্য কোন পীর-মাশায়েখের আনুগত্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়নি ইমাম আবু হানীফা, শাফেঈ, মালেক ও আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ)-এর অনুসরণের নির্দেশ। এছাড়াও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,

فَمَنْ أَطَاعَ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ أَطَاعَ اللهَ، وَمَنْ عَصَى مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ عَصَى اللهَ وَمُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرْقٌ بَيْنَ النَّاسِ-

‘যে মুহাম্মাদের আনুগত্য করল, সে আল্ল­াহরই আনুগত্য করল। আর যে মুহাম্মাদের অবাধ্যতা করল, সে আসলে আল্ল­াহরই অবাধ্যতা করল। আর মুহাম্মাদ হ’লেন মানুষের মাঝে পার্থক্যের মাপকাঠি’।[5]

অতএব মুহাম্মাদ (ছাঃ)-ই আমাদের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় ইমাম, যার প্রতিটি কথা ও কর্ম আল্লাহ প্রদত্ত অহী। তিনি ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোন মানুষের অনুসরণ ও অনুকরণ করা সিদ্ধ নয়। উল্লেখ্য যে, ইবাদত কবুলের তৃতীয় শর্তটি হ’ল হালাল রূযী।[6]

ইত্তিবায়ে সুন্নাতের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

মুমিনের জন্য ইত্তেবায়ে সুন্নাতের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা সুন্নাতী তরীকা ব্যতীত কোন আমল কবুল হয় না; রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ না করলে পরকালে তাঁর শাফা‘আত মিলবে না। ফলে জাহান্নামে যেতে হবে। তাই ইত্তেবায়ে সুন্নাতের গুরুত্ব অত্যধিক। এ বিষয়ে নিম্নে আলোচনা পেশ করা হ’ল।-

(ক) ইবাদত কবুলের মাধ্যম : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, فَمَنْ كَانَ يَرْجُوْ لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا- ‘যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে ও তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরীক না করে’ (কাহফ ১৮/১১০)। অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইবাদত কবুলের দু’টি শর্ত উল্লেখ করেছেন, যার অন্যতম হ’ল, সৎ আমল। আর ঐ আমলই কেবল সৎ আমল হিসাবে গণ্য হবে, যা কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা সাব্যস্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوْا وَاتَّقُوا اللهَ إِنَّ اللهَ شَدِيْدُ الْعِقَابِ- ‘রাসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর’ (হাশর ৫৯/৭)

এ আয়াতে আল্লাহর স্পষ্ট নির্দেশ হ’ল, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যতটুকু নিয়ে এসেছেন ততটুকুই গ্রহণীয় হবে। তাঁর আনীত বিধানের বাইরে কোন ভাল কাজও গ্রহণীয় হবে না। আল্লাহ বলেন,فَلْيَحْذَرِ الَّذِيْنَ يُخَالِفُوْنَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيْبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيْبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيْمٌ- ‘যারা তাঁর (রাসূলের) আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা এ ব্যাপারে সতর্ক হেŠক যে, বিপর্যয় তাদের উপর আপতিত হবে অথবা আপতিত হবে মর্মন্তুদ শাস্তি’ (নূর ২৪/৬৩)

অত্র আয়াতের ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, যারা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাতের বিরুদ্ধাচরণ করবে তাদের উপর বিপর্যয় ও আযাব নেমে আসবে। অতএব মানুষ যেন তার প্রতিটি কথা ও কর্ম রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কথা ও কর্মের নিকট পেশ করে। যেগুলো তাঁর কথা ও কর্মের সাথে মিলে যাবে সেগুলো কেবল গ্রহণীয় হবে। আর যা মিলবে না তা প্রত্যাখ্যাত হবে।[7] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, مَنْ عَمِلَ عَمَلاً لَيْسَ عَلَيْهِ أَمْرُنَا فَهُوَ رَدٌّ ‘যে ব্যক্তি এমন কোন আমল করল যাতে আমাদের নির্দেশনা নেই তা প্রত্যাখ্যাত’।[8] তিনি আরো বলেন, مَنْ أَحْدَثَ فِيْ أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ فِيْهِ فَهُوَ رَدٌّ‘যে ব্যক্তি আমাদের শরী‘আতে এমন কিছু নতুন সৃষ্টি করল, যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত’।[9] অতএব রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যতটুকু ইবাদত করেছেন, করতে বলেছেন এবং সমর্থন করেছেন, আমাদের জন্য ঠিক ততটুকু ইবাদতই পালনীয়। আর রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত বহির্ভূত আমল মানুষের নিকট যত ভাল কাজ হিসাবেই বিবেচিত হোক না কেন তা অবশ্যই বর্জনীয়।

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, একদা এক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আপনি আমাকে এমন কিছু আমলের কথা বলে দিন, যে আমলগুলি করলে আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। ফরয ছালাত সমূহ আদায় করবে। নির্ধারিত যাকাত প্রদান করবে এবং রামাযান মাসে ছিয়াম পালন করবে। লোকটি বলল, ঐ সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ (আপনি যতটুকু ইবাদতের কথা বললেন) আমি কখনো এর চেয়ে সামান্যতম বেশী করব না এবং সামান্যতম কমও করব না। অতঃপর লোকটি চলে গেলে রাসূল (ছাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি কোন জান্নাতী লোককে দেখতে চায় সে যেন এই লোকটিকে দেখে’।[10]

অত্র হাদীছে উল্লিখিত রাসূল (ছাঃ)-এর কাছে আগমনকারী বেদুঈন লোকটি পূর্বে তেমন কোন আমল করেনি। হঠাৎ এসে কিছু আমলের কথা জানতে চাইল। যে আমলগুলোর মাধ্যমে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে সক্ষম হবে। রাসূল (ছাঃ) তাকে কিছু আমলের কথা বলে দিলেন। লোকটি চলে যাওয়ার সাথে সাথে রাসূল (ছাঃ) তাকে জান্নাতী বলে ঘোষণা দিলেন। অথচ লোকটি সেই আমলগুলো শুরুই করতে পারেনি। এর কারণ হ’ল, লোকটি বলেছিল, আল্লাহর কসম! রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাকে যতটুকু আমলের কথা বললেন, আমি ততটুকুই পালন করব। এর থেকে সামান্যতম বেশী করব না এবং কমও করব না। এই একটি কথার কারণে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে জান্নাতী বলে ঘোষণা দিলেন।

অন্য হাদীছে এসেছে, আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা তিন জনের একটি দল রাসূল (ছাঃ)-এর স্ত্রীদের বাড়ীতে আসল। তারা (রাসূল (ছাঃ)-এর) ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। (রাসূল (ছাঃ)-এর স্ত্রীরা) যখন তাদেরকে তাঁর ইবাদত সম্পর্কে সংবাদ দিলেন তখন তারা এটিকে কম মনে করল। অতঃপর বলল, রাসূল (ছাঃ) কোথায় আর আমরা কোথায়। তাঁর পূর্বের ও পরের সকল পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। তারপর তিনজনের একজন বলল, আমি প্রত্যহ সারা রাত জেগে ছালাত আদায় করব। অপর ব্যক্তি বলল, আমি প্রতিদিন ছিয়াম পালন করব, কখনো ছিয়াম ত্যাগ করব না। অপর ব্যক্তি বলল, আমি কোন নারীর নিকটবর্তী হব না এবং বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হব না। অতঃপর রাসূল (ছাঃ) তাদের নিকট আসলেন এবং বললেন, তোমরাই কি তারা, যারা এরূপ এরূপ মন্তব্য করেছ? সাবধান! নিশ্চয়ই আমি তোমাদের চাইতে আল্লাহকে বেশী ভয় করি এবং আমি সবচেয়ে বেশী পরহেযগার। কিন্তু আমি রাত্রের কিছু অংশে (নফল) ছালাত আদায় করি এবং কিছু অংশ ঘুমাই। কোন কোন দিন (নফল) ছিয়াম পালন করি এবং কোন কোন দিন ছিয়াম ত্যাগ করি। আর আমি বিবাহ করেছি। অতএব যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত হ’তে বিমুখ হবে (সুন্নাত পরিপন্থী আমল করবে) সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়’।[11]

অত্র হাদীছে উল্লিখিত তিন জন ছাহাবীর কারো উদ্দেশ্যই খারাপ ছিল না। ছালাত আদায় করা, ছিয়াম পালন করা অবশ্যই ভাল কাজ। আরেকজন বিবাহ না করে সর্বদা আল্লাহর ইবাদত করতে চেয়েছিল, তার উদ্দেশ্যও ভাল ছিল। কুরআন ও ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত নয় এমন কোন ভাল কাজ ইসলামী শরী‘আতে বৈধ হ’লে, সেদিন রাসূল (ছাঃ) উল্লিখিত তিন ব্যক্তিকে হুঁশিয়ার করতেন না। বরং তাদেরকে আরো উৎসাহিত করে বলতেন, তোমরা খুব ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছ। তোমরা আরো বেশী বেশী ইবাদত করে যাও। কিন্তু রাসূল (ছাঃ) তাদেরকে এরূপ উৎসাহ না দিয়ে তাদেরকে হুঁশিয়ার করে দিলেন যে, তোমাদের ইবাদত যদি আমার সুন্নাত পরিপন্থী হয় তাহ’লে তোমরা আমার উম্মত থেকে খারিজ হয়ে যাবে। অত্র হাদীছে রাসূল (ছাঃ) কোন চোর, ডাকাত কিংবা ব্যভিচারীকে তাঁর উম্মত থেকে খারিজ বলেননি। বরং অধিক ইবাদত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীকে উম্মত থেকে খারিজ বলছেন, যার ইবাদত সুন্নাত অনুযায়ী হয় না।

অতএব শুধুমাত্র মানুষের বিবেকের মানদন্ডে ভাল কাজ হ’লেই তা ভাল কাজ হিসাবে গণ্য হবে না। বরং কোন কাজ ভাল কাজ হিসাবে গণ্য হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে। ১. কাজটি পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী হওয়া ২. কুরআন ও সুন্নাহর ব্যাখ্যা রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের বুঝ অনুযায়ী হওয়া ৩. বিদ‘আত মুক্ত হওয়া।[12] আর কুরআন ও ছহীহ হাদীছ পরিপন্থী কোন আমল ইসলামী শরী‘আতের মানদন্ডে ভাল কাজ নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قُلْ هَلْ نُنَبِّئُكُمْ بِالْأَخْسَرِيْنَ أَعْمَالاً، الَّذِيْنَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِيْ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُوْنَ أَنَّهُمْ يُحْسِنُوْنَ صُنْعًا-

‘আপনি বলে দিন, আমরা কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে খবর দেব? দুনিয়ার জীবনে যাদের সমস্ত আমল বরবাদ হয়েছে। অথচ তারা ভাবে যে, তারা সুন্দর আমল করে যাচ্ছে’ (কাহফ ১৮/১০৩-১০৪)

অত্র আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা একজন ভাল আমলকারীকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারী বলে আখ্যা দিয়েছেন। কেননা তা মানুষের দৃষ্টিতে ভাল আমল হিসাবে বিবেচিত হ’লেও ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে ভাল আমল নয়।

(খ) জান্নাত লাভের মাধ্যম : ইত্তিবায়ে সুন্নাত তথা রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাত অনুযায়ী ইবাদত করার মাধ্যমে মানুষ জান্নাত লাভ করতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَوْمَ تَبْيَضُّ وُجُوْهٌ وَتَسْوَدُّ وُجُوْهٌ فَأَمَّا الَّذِيْنَ اسْوَدَّتْ وُجُوْهُهُمْ أَكَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيْمَانِكُمْ فَذُوقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُوْنَ- ‘সেদিন কতক মুখ উজ্জ্বল হবে এবং কতক মুখ কাল হবে; যাদের মুখ কাল হবে তাদেরকে বলা হবে, ঈমান আনার পরে কি তোমরা কুফরী করেছিলে? সুতরাং তোমরা শাস্তি ভোগ কর, যেহেতু তোমরা কুফরী করতে’ (আলে-ইমরান ৩/১০৬)

অত্র আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনু আববাস (রাঃ) বলেন, ক্বিয়ামতের দিন যাদের মুখ উজ্জ্বল হবে তাঁরা হ’লেন, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত তথা সুন্নাতের অনুসারীগণ। আর যাদের মুখ কাল হবে তারা হ’ল, বিদ‘আতীরা।[13]

রাসূল (ছাঃ) বলেন, كُلُّ أُمَّتِيْ يَدْخُلُوْنَ الْجَنَّةَ إِلاَّ مَنْ أَبَى قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَمَنْ يَأْبَى قَالَ مَنْ أَطَاعَنِيْ دَخَلَ الْجَنَّةَ، وَمَنْ عَصَانِيْ فَقَدْ أَبَى- ‘আমার সকল উম্মতই জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু অস্বীকারকারী ব্যতীত। তারা বললেন, কে অস্বীকার করে। তিনি বললেন, যারা আমার অনুসরণ করে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার অবাধ্য হয় সে-ই অস্বীকার করে’।[14]

(গ) আল্লাহ্কে ভালবাসার মাধ্যম : আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قُلْ إِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ فَاتَّبِعُوْنِيْ يُحْبِبْكُمُ اللهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوْبَكُمْ وَاللهُ غَفُوْرٌ رَحِيْمٌ- قُلْ أَطِيعُوْا اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَإِنْ تَوَلَّوْا فَإِنَّ اللهَ لَا يُحِبُّ الْكَافِرِيْنَ-

‘বল, যদি তোমরা আল্ল­াহ্কে ভালোবাস তবে আমার অনুসরণ কর, আল্ল­াহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আল্ল­াহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। বল, তোমরা আল্ল­াহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখ আল্ল­াহ্ তো কাফেরদেরকে পসন্দ করেন না’ (আলে ইমরান ৩/৩১-৩২)

অত্র আয়াতের ব্যাখ্যায় হাফেয ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন,

هَذِهِ الْآيَةُ الْكَرِيْمَةُ حَاكِمَةٌ عَلَى كُلِّ مَنِ ادَّعَى مَحَبَّةَ اللهِ، وَلَيْسَ هُوَ عَلَى الطَّرِيْقَةِ الْمُحَمَّدِيَّةِ فَإِنَّهُ كَاذِبٌ فِيْ دَعْوَاهُ فِيْ نَفْسِ الْأَمْرِ، حَتَّى يَتَّبِعَ الشَّرْعَ الْمُحَمَّدِيَّ وَالدِّينَ النَّبَوِيَّ فِيْ جَمِيْعِ أَقْوَالِهِ وَأَحْوَالِهِ-

‘অত্র আয়াতটি ঐ সকল ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফায়ছালাকারী, যারা আল্লাহকে ভালবাসার দাবী করে, অথচ মুহাম্মাদী তরীকার উপরে নেই। ঐ ব্যক্তি তার দাবীতে নিরেট মিথ্যাবাদী, যতক্ষণ না সে তার প্রত্যেকটি কথায় ও কর্মে মুহাম্মাদী শরী‘আতের আনুগত্য করে’।[15]

(ঘ) পূর্ণ মুমিন হওয়ার মাধ্যম :

عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُوْنَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ-

আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত প্রকৃত মুমিন হ’তে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার পিতা-মাতা, তার সন্তান-সন্ততি ও সকল মানুষ অপেক্ষা প্রিয়তর হব’।[16] একদা ওমর ফারূক (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-কে বললেন,

يَا رَسُوْلَ اللهِ لَأَنْتَ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ إِلاَّ مِنْ نَفْسِيْ فَقَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم لاَ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ حَتَّى أَكُوْنَ أَحَبَّ إِلَيْكَ مِنْ نَفْسِكَ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ فَإِنَّهُ الآنَ وَاللهِ لأَنْتَ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنْ نَفْسِيْ فَقَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم الآنَ يَا عُمَرُ-

‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমার জীবন ছাড়া আপনি আমার নিকট সবকিছু অপেক্ষা অধিক প্রিয়। তখন নবী (ছাঃ) বললেন, না, যাঁর হাতে আমার প্রাণ ঐ সত্তার কসম! তোমার কাছে আমি তোমার প্রাণের চেয়েও প্রিয় না হওয়া পর্যন্ত (পূর্ণ মুমিন হ’তে পারবে না)। তখন ওমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! এখন আপনি আমার কাছে আমার প্রাণের চেয়েও বেশী প্রিয়। নবী করীম (ছাঃ) বললেন, হে ওমর! এখন (তুমি সত্যিকার ঈমানদার হ’লে)’।[17]

আর দুনিয়ার সবকিছুর চেয়ে রাসূল (ছাঃ)-কে অধিক ভালবাসার প্রমাণ হ’ল, তাঁর সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণ করা। রাসূল (ছাঃ)-এর কথা শুনা মাত্রই তার অনুসরণ করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

إِنَّمَا كَانَ قَوْلَ الْمُؤْمِنِيْنَ إِذَا دُعُوْا إِلَى اللهِ وَرَسُوْلِهِ لِيَحْكُمَ بَيْنَهُمْ أَنْ يَقُوْلُوْا سَمِعْنَا وَأَطَعْنَا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ- وَمَنْ يُطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَيَخْشَ اللهَ وَيَتَّقْهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْفَائِزُوْنَ-

‘মুমিনদের উক্তি তো এই যে, যখন তাদের মধ্যে ফায়ছালা করে দেওয়ার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয় তখন তারা বলে, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। আর তারাই সফলকাম। যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে ও তাঁর অবাধ্যতা হ’তে সাবধান থাকে তারাই সফলকাম’ (নূর ২৪/৫১-৫২)

(ঙ) তাকওয়া অর্জনের মাধ্যম : আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ذَلِكَ وَمَنْ يُعَظِّمْ شَعَائِرَ اللهِ فَإِنَّهَا مِنْ تَقْوَى الْقُلُوْبِ ‘এটাই আল্লাহর বিধান এবং কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে সম্মান করলে এটাতো তার হৃদয়ের তাকওয়ারই বহিঃপ্রকাশ’ (হজ্জ ২২/৩২)। অত্র আয়াতে বর্ণিত شَعَائِرَ اللهِ বলতে আল্লাহর নির্দেশকে বুঝানো হয়েছে, যার অন্যতম হ’ল রাসূল (ছাঃ)-এর আনুগত্য করা। অর্থাৎ রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতের যথাযথ অনুসরণ করা।

উল্লিখিত আলোচনায় প্রমাণিত হয় যে, মানুষের জন্য একমাত্র অনুসরণীয় বিধান হ’ল অহি-র বিধান এবং একমাত্র অনুকরণীয় ইমাম হ’লেন মুহাম্মাদ (ছাঃ)। আর রাসূলুল্ল­াহ (ছাঃ) অহি-র বিধান হিসাবে একমাত্র কুরআন ও সুন্নাতকেই আমাদের মাঝে রেখে গেছেন। তিনি বলেন, تَرَكْتُ فِيْكُمْ أَمْرَيْنِ، لَنْ تَضِلُّوْا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهِ- ‘আমি তোমাদের মাঝে দু’টি বস্ত্ত রেখে যাচ্ছি। যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা সে দু’টিকে অাঁকড়ে ধরে থাকবে ততক্ষণ তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। তা হ’ল, আল্লাহর কিতাব (কুরআন) ও তাঁর রাসূলের সুন্নাত’।[18] তিনি আরো বলেন, قَدْ تَرَكْتُكُمْ عَلَى الْبَيْضَاءِ لَيْلُهَا كَنَهَارِهَا، لاَ يَزِيْغُ عَنْهَا بَعْدِيْ إِلاَّ هَالِكٌ- ‘আমি তোমাদেরকে একটি উজ্জ্বল পরিষ্কার দ্বীনের উপর রেখে গেলাম। যার রাত দিনের মত (উজ্জ্বল)। ধ্বংসশীল ব্যক্তি ছাড়া আর কেউই তা থেকে সরে আসতে পারে না’।[19]

অতএব মানুষের সার্বিক জীবন পরিচালিত হবে একমাত্র অহি-র বিধান তথা পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ অনুযায়ী। অহি-র বিধানকে বাদ দিয়ে অন্য কোন পথের অনুসরণ করলে মানুষ সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হবে। হাদীছে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন,

خَطَّ لَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَطًّا ثُمَّ قَالَ هَذَا سَبِيْلُ اللهِ ثُمَّ خَطَّ خُطُوْطاً عَنْ يَمِيْنِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ ثُمَّ قَالَ هَذِهِ سُبُلٌ مُتَفَرِّقَةٌ عَلَى كُلِّ سَبِيْلٍ مِنْهَا شَيْطَانٌ يَدْعُوْ إِلَيْهِ-

‘আমাদেরকে (বুঝানোর জন্য) রাসূল (ছাঃ) একটি সরল রেখা টানলেন এবং বললেন, এটা আল্লাহর রাস্তা। অতঃপর এর ডানে-বামে আরো কতগুলি রেখা টানলেন এবং বললেন, এগুলিও রাস্তা; তবে এর প্রত্যেক রাস্তার উপর একটি করে শয়তান দাঁড়িয়ে আছে; সে লোকদেরকে সেদিকে আহবান করে। অতঃপর (এর প্রমাণে কুরআনের এই আয়াতটি) তেলাওয়াত করলেন, وَأَنَّ هَذَا صِرَاطِيْ مُسْتَقِيْماً فَاتَّبِعُوْهُ وَلاَ تَتَّبِعُوْا السُّبُلَ فَتَفَرَّقَ بِكُمْ عَنْ سَبِيْلِهِ ‘এটাই আমার সরল-সঠিক পথ। সুতরাং তোমরা এটারই অনুসরণ করবে এবং অন্যান্য পথগুলোর অনুসরণ করবে না, করলে এটা তোমাদেরকে তাঁর পথ হ’তে বিচ্ছিন্ন করে দেবে’ (আন‘আম ৬/১৫৩)[20]

অন্য হাদীছে এসেছে, জাবের (রাঃ) বলেন, একদা একদল ফেরেশতা নবী (ছাঃ)-এর নিকট আসলেন। নবী (ছাঃ) তখন ঘুমাচ্ছিলেন। ফেরেশতাগণ পরস্পরে বললেন, তোমাদের এই বন্ধুর জন্য একটি উদাহরণ রয়েছে। তাঁর নিকট উদাহরণটি পেশ কর। তখন কেউ বললেন, তিনি ঘুমন্ত।

আবার কেউ বললেন, তাঁর চক্ষু ঘুমন্ত হ’লেও তাঁর অন্তর জাগ্রত। তখন তাদের কেউ বললেন, তাঁর উদাহরণ এই যে, এক ব্যক্তি একটি ঘর প্রস্ত্তত করেছেন এবং খাদ্য প্রস্ত্তত করে রেখেছেন। অতঃপর (লোকদেরকে আহবান করার জন্য) একজন আহবায়ক পাঠালেন। এখন যে ব্যক্তি আহবায়কের আহবানে সাড়া দিল, সে ঘরে প্রবেশ করতে পারল এবং খাদ্য খেতেও পেল। আর যে আহবায়কের আহবানে সাড়া দিল না, সে ঘরেও প্রবেশ করতে পারল না, খেতেও পেল না। অতঃপর তারা পরস্পরে বললেন, তাঁকে এ উদাহরণের তাৎপর্য বলে দাও, যাতে তিনি বুঝতে পারেন। তারা বললেন, ঘরটি হচ্ছে জান্নাত, আর আহবায়ক হচ্ছেন মুহাম্মাদ (ছাঃ)। সুতরাং ‘যে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর আনুগত্য করল, সে আল্ল­াহর আনুগত্য করল। আর যে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর অবাধ্যতা করল, সে আল্লাহরই অবাধ্যতা করল। মুহাম্মাদ (ছাঃ) হ’লেন মানুষের মাঝে সত্য-মিথ্যার পার্থক্যের মানদন্ড’।[21]

[চলবে]

মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম

লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব।

[1]. মুহাম্মাদ আল-আমীন আশ-শানক্বীত্বী, তাফসীরে আযওয়াউল বায়ান, সূরা নাহল ৮৯ আয়াতের ব্যাখ্যা।

[2]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৮০৩; আস-সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী হা/১৩৮২৫, ইমাম শাফেঈ, কিতাবুর রিসালাহ, পৃঃ ১৫।

[3]. আশরাফ ইব্রাহীম কাতকাত, আল-বুরহানুল মুবীন ফিত তাছাদ্দী লিল বিদ্ই ওয়াল আবাতীল ১/৪২ পৃঃ।

[4]. বুখারী হা/১২৩৮; মুসলিম হা/৯২; মিশকাত হা/৩৮।

[5]. বুখারী হা/৭২৮১, ‘কুরআন ও সান্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/১৪৪।

[6]. মুসলিম; মিশকাত হা/২৭৬০; বায়হাক্বী; মিশকাত হা/২৭৮৭

[7]. তাফসীর ইবনু কাছীর ৩/৩০৮ পৃঃ, উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

[8]. মুসলিম হা/১৭১৮।

[9]. বুখারী হা/২৬৯৭; মুসলিম হা/১৭১৮; মিশকাত হা/১৪০।

[10]. বুখারী হা/১৩৯৭; মুসলিম হা/১৪; মিশকাত হা/১৪।

[11]. বুখারী হা/৫০৬৩; মিশকাত হা/১৪৫, ‘কিতাব ও সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।

[12]. তাফসীরুল কুরআন (রাজশাহী : হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ২য় সংষ্করণ, মে ২০১৩), পৃঃ ৪৬৪

[13]. তাফসীর ইবনু কাছীর ২/৯২ পৃঃ; উল্লিখিত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

[14]. বুখারী হা/৭২৮০, ‘কুরআন ও সান্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/১৪৩।

[15]. তাফসীর ইবনু কাছীর ২/৩২ পৃঃ; উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য।

[16]. বুখারী হা/১৫, ‘ঈমান’ অধ্যায়; মুসলিম হা/৪৪; মিশকাত হা/৭।

[17]. বুখারী হা/৬৬৩২, ‘শপথ ও মানত’ অধ্যায়।

[18]. মুওয়াত্তা মালেক হা/৩৩৩৮, মিশকাত হা/১৮৬, ‘কিতাব ও সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ, বঙ্গানুবাদ (এমদাদিয়া) ১/১৩২ পৃঃ; আলবানী, সনদ হাসান।

[19]. ইবনু মাজাহ হা/৪৩, ‘খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতের অনুসরণ’ অনুচ্ছেদ; সিলসিলা ছহীহা হা/৯৩৭।

[20]. মুসনাদে আহমাদ হা/৪১৪২; মিশকাত হা/১৬৬, ‘কিতাব ও সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অধ্যায়, বঙ্গানুবাদ (এমদাদিয়া) ১/১২৩ পৃঃ; আলবানী, সনদ হাসান।

[21]. বুখারী হা/৭২৮১, ‘কুরআন ও সান্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছে; মিশকাত হা/১৪৪।






ধবংসলীলা - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ কি চায়, কেন চায় ও কিভাবে চায়? - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
দ্বীন প্রচারে ওয়ায-মাহফিল : প্রাসঙ্গিক কিছু কথা - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
মহামনীষীদের পিছনে মায়েদের ভূমিকা (৬ষ্ঠ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
সফল মাতা-পিতার জন্য যা করণীয় - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
মানব জাতির সাফল্য লাভের উপায় (ফেব্রুয়ারী’১৩ সংখ্যার পর) - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
হাদীছ আল্লাহর অহী - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
হাদীছ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ পরিক্রমা (৩য় কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
মহামনীষীদের পিছনে মায়েদের ভূমিকা (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
সার্ভকোয়াল মডেলের আলোকে শিক্ষা পরিষেবার গুণমান নির্ণয় - প্রফেসর ড. শহীদ নকীব ভূঁইয়া
রামাযানকে আমরা কিভাবে অতিবাহিত করব? - ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম
মানবাধিকার ও ইসলাম (৭ম কিস্তি) - শামসুল আলম
আরও
আরও
.