বিজ্ঞানীরা
বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমিত পারমাণবিক যুদ্ধ হ’লে বিশ্বব্যাপী
আবহাওয়া বিপর্যয় ও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হ’তে পারে। আঞ্চলিক উত্তেজনা এমনিতেই
যথেষ্ট উদ্বেগজনক। গত ১৪ই ফেব্রুয়ারী’১৯ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক আত্মঘাতী
বোমা হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হয়। পাকিস্তান ভিত্তিক সংগঠন
জইশ-ই-মোহাম্মাদ এ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে। ভারত ২৬শে ফেব্রুয়ারী
পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলা চালিয়ে তার জবাব দেয়। পরদিন ২৭শে
ফেব্রুয়ারী পাকিস্তান জানায়, তারা তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘনকারী ২টি ভারতীয়
জঙ্গী বিমান ভূপাতিত ও একজন পাইলটকে আটক করে। এরই মধ্যে আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা
হুঁশিয়ারী দিয়েছেন যে, দু’দেশের কেউ যদি তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের
অংশমাত্রও ব্যবহার করে, তাহ’লে তা সারা বিশ্বে পরিবেশ ও মানবিক বিপর্যয়ের
কারণ হ’তে পারে। দু’দেশের কাছে ১৪০ থেকে ১৫০টি করে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।
রাজনৈতিক ভাষ্যকার বেন রোডস ২৬ ও ২৭শে ফেব্রুয়ারীর ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে বলেন, এটি বিশে^র প্রধান পারমাণবিক সঙ্ঘাতস্থল। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলেছেন, দু’দেশের মধ্যে ‘সীমিত আঞ্চলিক যুদ্ধ’ হ’লে সারা পৃথিবীর উপরেই তা প্রভাব ফেলবে। বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তর পঙ্গু হয়ে যেতে পারে এবং বিশে^র আবহাওয়া কয়েক বছর শীতল থাকতে পারে।
গবেষকগণ বলেন, পারমাণবিক বিস্ফোরণের পরের পাঁচ বছরে বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা প্রায় ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস হ্রাস পাবে। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের মত জনবহুল অঞ্চলগুলিতে পরিবর্তনের ধাক্কা হবে মারাত্মক। এসব অঞ্চলে প্রায় ২.৫ ডিগ্রী বেশী ঠান্ডা হবে এবং গ্রীষ্মগুলোর তাপমাত্রা ১ থেকে ৪ ডিগ্রী শীতল হবে।
গবেষকগণ বলেছেন, সমুদ্রের তাপমাত্রায় পরিবর্তন সামুদ্রিক প্রাণীকুল ও বিশ্বের অধিকাংশ অংশের মানুষ যার উপর নির্ভরশীল, সেই মৎস্য সম্পদ ধ্বংস করে দিতে পারে। খাদ্য সরবরাহের প্রতি এ ধরনের আকস্মিক আঘাত এবং ঘনায়মান আতঙ্ক বৈশি^ক পারমাণবিক দুর্ভিক্ষের কারণ হ’তে পারে। তাপমাত্রা ২৫ বছরেরও বেশী সময়ে স্বাভাবিক হবে না। অতএব ক্ষুদ্র পারমাণবিক যুদ্ধ পৃথিবী ধ্বংস করতে পারে।