পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । শেষ পর্ব ।

সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি তাঁর রাসূলকে সত্য পথের দিশা ও সত্য দ্বীন সহ প্রেরণ করেছেন। যাতে তিনি এ দ্বীনকে অন্য সকল (বাতিল) দ্বীনের উপরে বিজয়ী করতে পারেন। আর সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট। সেই সাথে করুণা ও শান্তি বর্ষিত হোক সর্বশেষ নবী ও রাসূল মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর উপর। যিনি সত্য দ্বীনের পথে প্রমাণসহ আহবানকারী এবং মানব কল্যাণে নিবেদিত একটি শ্রেষ্ঠ জাতি গঠনের জন্য একটি দ্বীন (জীবনব্যবস্থা) ও তার কার্যধারার নির্মাণকারী। আল্লাহর দিকে আহবান এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করাই সে জাতির কর্তব্য। আল্লাহর প্রশংসা এজন্যও যে, তিনি এই উম্মতের একটি দলকে হকের উপর প্রতিষ্ঠিত রেখেছেন, যারা আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং তাঁর পথে জিহাদ করে বিজয়ী হয়। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করতে তারা কোন ভৎর্সনাকারীর ভৎর্সনার বিন্দুমাত্র পরোয়া করে না। এমনি করে এই হকপন্থীদের মধ্যকার শেষ যুগের একজন দাজ্জালকে হত্যা করবে। আল্লাহ তা‘আলার নিকট আমাদের সকাতর প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদেরকে এই বিজয়ী সাহায্যপ্রাপ্ত দলের অন্তর্ভুক্ত রাখেন।

প্রিয় পাঠক! আমি ইতিপূর্বে মহান আল্লাহর সাহায্য ও সহযোগিতায় ‘শরী‘আতের আলোকে জামা‘আতবদ্ধ প্রচেষ্টা’ (مشروعية العمل الجماعي) নামে একটি বই লিখেছি। তাতে আমি দলগত কাজের শারঈ বৈধতার পিছনে বাস্তবমুখী অনেক দলীল-প্রমাণ উপস্থাপন করেছি, যা চিন্তাশীলদের জন্য যথেষ্ট হবে বলে আমি আশাবাদী। এসকল দলগত কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে বহু ফরযে কিফায়া বাস্তবায়ন সম্ভব। এরূপ ফরযে কিফায়ার উদাহরণ হিসাবে আমি আল্লাহর পথে যুদ্ধ, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ, শিক্ষা-শিখন ব্যবস্থা, ইসলাম প্রচারের কাজ, মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ ও পরিচালনা ইত্যাদির কথা উল্লেখ করেছি। এ কাজগুলো করা কেন বৈধ আমি সে কথাও আলোচনা করেছি। যা জানলে চোখ-কান খোলা প্রতিটি মুসলিম তাতে লিপ্ত হ’তে সহসাই পিছপা হবে না। যেখানে মুসলিমদের ইয্যত-আব্রু নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে, কুরআনের বিধি-বিধান অকার্যকর করে দেওয়া হচ্ছে, মুসলিম সন্তানেরা অনৈসলামী পরিবেশে বেড়ে উঠছে, শত্রুরা আমাদের মাতৃভূমি দখলে নিতে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, আমাদের নারী, শিশু ও পবিত্র ভূমিগুলোর  দখলকে  বৈধ  ভাবছে,  সেখানে   মুসলমানদের  নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকার কোন সুযোগ নেই। তাদের জন্য এখন আবশ্যিক হয়ে দাঁড়িয়েছে দলবদ্ধ হয়ে মুসলিম জাতির উপর কাফির বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করা। নচেৎ তারা সকলেই পাপী ও অপরাধী গণ্য হবে। কিন্তু মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের এই আক্রমণ প্রতিহত করা পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা ও জামা‘আতবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া মোটেও সম্ভব হবে না। এজন্যই ‘যা ব্যতীত কোন ওয়াজিব বাস্তবায়ন করা যায় না তা করা ওয়াজিব’ (مالا يتم الواجب إلا به فهو واجب) সূত্রে জামা‘আত গঠন করা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি এ আলোচনাও করেছি যে, মুসলিমদের দুঃখ-কষ্টে মর্মপীড়া অনুভবকারী কিছু মানুষ তাদের উদ্ধারকল্পে কেউ কেউ প্রচারমূলক দল, আবার কেউবা সেবামূলক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। এসব দল ও সংস্থার কোন কোনটি মাশাআল্লাহ আমভাবে উপকার ও কল্যাণপ্রদ ভূমিকা রাখছে। আবার অনেকগুলো ভালো-মন্দের মিশেলে কাজ করছে। আশা করা যায় যে, আল্লাহ তাদেরও ক্ষমা করবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল দয়াময়।

কিন্তু আমি খুবই বিস্ময় বোধ করছি তাদের কথায়, যারা জিহাদ ও দাওয়াতের জন্য দল গঠন এবং সেবা ও কল্যাণের নিমিত্ত সংস্থা প্রতিষ্ঠা সাইয়েদুল মুরসালীনের আদর্শের পরিপন্থী গণ্য করে তা করা অবৈধ বলে ফৎওয়া দিচ্ছে। তাদের দাবী, এ কাজ না করেছেন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ), না উম্মতের পূর্বসূরী পূত-পবিত্রজনেরা, না সৎকর্মশীল আলেমরা। এমনকি ইসলামী সরকারও যদি কোথাও কায়েম থাকে তবুও তাদের হিসাবে ঐ সরকারের ছত্রছায়ায় এগুলো করা জায়েয হবে না। তাদের কথা মতে, এসব কাজ বিচ্ছিন্নতা ও অনৈক্য টেনে আনে। আর বিচ্ছিন্নতা ও অনৈক্য তো সাক্ষাৎ আযাব। তারা দাওয়াতদাতা এরূপ কিছু দলের দোষ-ত্রুটি খুঁজে খুঁজে বের করে তা সব জায়গায় প্রচার করছে। আর বলছে, দেখ, এই হচ্ছে আল্লাহর পথে দাওয়াত ও দ্বীনের সাহায্যের নামে দলবাজির কুফল।

মহান আল্লাহরই সকল প্রশংসা। মাশাআল্লাহ আমি তাদের কথিত সকল সন্দেহের খোলাখুলি জবাব দিয়েছি। তন্মধ্যে একটি জবাব এই যে, মুসলমানরা কোন সেবামূলক কিংবা কল্যাণধর্মী অথবা তাক্বওয়ার কাজে জামা‘আত গঠন করে তার অধীনে একতাবদ্ধ হ’তে পারবে না মর্মে কোন নিষেধাজ্ঞা না কুরআনে এসেছে, না হাদীছে, না পূর্বসূরী নেককার কোন ব্যক্তির যবানে। তাহ’লে কীভাবে তোমরা এমন সিদ্ধান্ত দিতে পারলে যার পিছনে না কুরআনের, না সুন্নাহর, না পূর্বসূরী কোন নেককার ব্যক্তির কথার সনদ রয়েছে? বরং কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমার সবগুলোই তো কল্যাণ ও তাক্বওয়াধর্মী কাজে পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা এবং জামা‘আতবদ্ধ প্রচেষ্টার দিকে জোরালো আহবান জানিয়েছে। যাতে করে দ্বীন বুলন্দ হয় এবং ধরা পৃষ্ঠে আল্লাহর কথা সবার উপরে স্থান পায়। আর বাতিল ও তার অনুসারীরা দূর হয়ে যায়।

আমি এ কথাও বলেছি যে, আমাদের পূর্বসূরীগণ দলেবলে ব্যতীত একাকী যুদ্ধ-জিহাদ করা যায় বলে জানতেন না। চাই সে যুদ্ধে অংশগ্রহণ রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন সর্বজনমান্য শাসকের অধীনে হোক- যার পিছনে জোটবদ্ধ হ’তে তারা এক পায়ে খাড়া কিংবা বিশেষ কোন নেতার দ্বারা সংগঠিত দলের কর্মী হিসাবে হোক। অবশ্য নেতার অধীনে যুদ্ধ কেবল তখন হবে, যখন কোন শাসক থাকবে না অথবা থাকলেও তিনি দায়িত্ব পালনে অক্ষম হবেন। আমি দলবিশেষের অধীনে যুদ্ধ করার ক্ষেত্রে দু’জনের উদাহরণ দিয়েছি। এক. শায়খুল ইসলাম ইবনু তায়মিয়াহ (রহঃ), যার নেতৃত্বে কিভাবে তাতারদের বিরুদ্ধে একটি মুসলিম বাহিনী যুদ্ধ করেছিল এবং কিভাবে আল্লাহ তা‘আলা তার জিহাদের মাধ্যমে মুসলিম জাতিকে বহুসংখ্যক বিপদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। তারা তাঁর আদেশ ও পরামর্শ অনুযায়ী যুদ্ধ করত। (এ সম্পর্কে শায়খুল ইসলামের উক্তিসমূহ  আমি একটি স্বতন্ত্র গ্রন্থে আলোচনা করেছি)।

শায়খুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব আধুনিক সালাফী চিন্তাধারা ও জামা‘আতবদ্ধভাবে কাজ করার ইমাম :

এই শায়খুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব, যিনি বর্তমান যুগের সালাফী চিন্তাধারার ইমাম পদে বরিত। তিনি আল্লাহর পথে দাওয়াত দেওয়ার জন্য একটি কর্মীবাহিনী গঠন করেছিলেন। এজন্য তিনি তৎকালীন ইস্তাম্বুলের মুসলিম খলীফা কিংবা মক্কাস্থ তার প্রতিনিধি শরীফ পাশা অথবা নজদ ও জাযীরা অঞ্চলের কোন আমীরের অনুমতি গ্রহণের কোন তোয়াক্কা করেননি। তখনকার দিনে আরবে অজ্ঞতা, শিরক, ব্যভিচার ইত্যাদি পাপাচার ছেয়ে গিয়েছিল এবং ইসলামী বিধি-বিধান রাষ্ট্র ও সমাজে পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছিল। তাইতো শায়খুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আবদুল ওয়াহ্হাব একটি জামা‘আত বা দল গঠন করেছিলেন। তিনি তাদের থেকে আনুগত্যের অঙ্গীকার ও বায়‘আত গ্রহণ করেছিলেন। বলতে গেলে তিনি ছোট্ট পরিসরে পরিপূর্ণ একটি রাষ্ট্রীয় নিয়ম-নীতি খাড়া করেছিলেন। যার সূচনা করেছিলেন তাওহীদের প্রতি দাওয়াত এবং ইসলাম প্রচার ও তার বিধি-বিধান শিক্ষাদানের মাধ্যমে। আর শেষ করেছিলেন ঈমান-আক্বীদা ও জান-প্রাণ রক্ষার্থে আল্লাহর পথে যুদ্ধের মাধ্যমে। তিনি কিন্তু তার কর্মতৎপরতার কোন পর্যায়েই সমসাময়িক খলীফার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেননি এবং তিনি একাই একটি ইসলামী দলও ছিলেন না। যদিও তার শত্রুরা তার বিরুদ্ধে তেমন অভিযোগই করে থাকে। তিনি এসব অভিযোগ থেকে আসলেই মুক্ত ছিলেন। তিনি তো ছিলেন জাগ্রত জ্ঞান সহকারে যুক্তি-প্রমাণ সহ আল্লাহর পথে দাওয়াতদাতা। কুরআন ও সুন্নাহতে যেভাবে দলবদ্ধভাবে দাওয়াত দেওয়ার কথা আছে তিনি সেভাবেই দাওয়াতী কাজ করেছিলেন। ইসলামের স্বার্থ রক্ষা এবং আল্লাহর যমীনে আল্লাহর কথা সবার ঊর্ধ্বে তুলে ধরার নিয়তে তিনি সংগ্রাম করেছিলেন। আল্লাহ তার ইচ্ছা পূরণ করেছিলেন। আজ আমরা তার দাওয়াতী কাজ ও জিহাদের ফল ভোগ করছি। কিন্তু যদি তিনি আজকের যুগের শিক্ষকদের মত তার গ্রাম হুরাইমালা অথবা দিরইয়াতে মসজিদের একজন ইমাম কিংবা কোন দরবারের শায়খ বা পীর সেজে বসে থাকতেন, তাহ’লে আজকের ইসলামী বিশ্ব শিরক-কুফরে ছেয়ে যেত, ধ্বংস ও বরবাদী ইসলামের গলা টিপে ধরত। প্রিয় পাঠক! আপনারা এ ইতিহাস ভালোভাবে পড়ুন, তাহ’লে জানতে পারবেন কি সাংঘাতিক অবস্থার মধ্য দিয়ে তিনি ইসলামী দেশে একেবারে জেঁকে বসা জাহিলী তথা অনৈসলামী ব্যবস্থাকে ইসলামী ব্যবস্থায় রূপান্তর ঘটিয়েছিলেন! কিন্তু তা কখনই সম্ভব হ’ত না, যদি তিনি একটা জামা‘আতবদ্ধ দাওয়াতী উদ্যোগ গ্রহণ না করতেন।

অথচ অবাক হ’তে হয় যে, এই মহান শায়খেরই কিছু করিৎকর্মা ছাত্র যারা একদিন তার দাওয়াতের আলোয় আলোকিত হয়েছিল এবং আল্লাহর ফযলে ও তার জিহাদের কল্যাণে তাওহীদপন্থী হ’তে পেরেছিল। তারাই তাদের দাওয়াতের  দুশমনদের ন্যায় বলে বেড়াচ্ছে যে, যে কেউই দাওয়াত ও জিহাদের জন্য দল গঠন করবে সেই খারেজী-মু‘তাযিলা হয়ে যাবে। সংগঠনের নিয়ম-নীতি আল্লাহর দ্বীনে নেই এবং দল গঠনও ইসলামের আওতায় পড়ে না।

বিস্মিত না হয়ে পারা যায় না যে, এসব ছাত্রের কেউ কেউ সমকালীন শাসকদেরকে এমন সব অধিকার প্রদান করেছে, যা না ছিদ্দীকে আকবর ও ফারূকে আযমকে প্রদান করা হয়েছে, না ইতিহাসের যুগ পরিক্রমায় মুসলিম জনগণের কেউ তা জানতে পেরেছে এবং না নির্ভরযোগ্য বিদ্বানদের বই-পুস্তকে তা সন্নিবেশিত হয়েছে। আর তা এই যে, ‘সমকালীন ইমাম বা শাসকের অনুমতি না নিয়ে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করা জায়েয নেই এবং অমুসলিম বাহিনী যদি কোন ইসলামী দেশ আক্রমণ করে বসে তবুও শাসনকর্তার অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা জায়েয হবে না’।

আফসোস! এরা শাসনকর্তাকে স্বয়ং প্রভুর আসনে বসিয়ে দিয়েছে! ফলে তাদের মতে, শাসক যা আইনসম্মত বলবে, তাই হক এবং যা বেআইনী ও নিষিদ্ধ বলবে, তাই বাতিল। আর যেসব বিষয়ে সে নীরব থাকবে সে সম্পর্কে  নিশ্চুপ থাকতে হবে- কোন কথা বলা যাবে না। তাদের দৃষ্টিতে মুসলিম শাসনকর্তা যদি দ্বীনের কোন বিধান কিংবা মুসলিমদের জনকল্যাণকর কোন কাজ পরিত্যাগ করে তাহলে মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য তা আমলের যোগ্য ভাবা যাবে না এবং তা থেকে পুরোপুরি চোখ বন্ধ করে থাকতে হবে, যাতে  আমীরুল মুমিনীনের (?) মনে ক্রোধের উদ্রেক না হয়।

সারকথা, শায়খুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আবদুল ওয়াহ্হাব ইসলামের সাহায্য করার মানসে যে নীতিমালা গ্রহণ করেছিলেন তা ছিল একটি জামা‘আতবদ্ধ প্রচেষ্টা। তিনি এবং ইমাম মুহাম্মাদ বিন সাউদ মিলে দাওয়াত ও জিহাদের এক বরকতময় বীজ রোপণ করেছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে আরব উপদ্বীপ শিরক ও বাতিলের আবর্জনা মুক্ত হয়েছিল এবং সেখান থেকে সারা বিশ্বে শারঈ অনুশাসন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু এ কাজে তিনি সমকালীন খলীফার অনুমতির অপেক্ষা করেননি। তৎকালে যার খিলাফত পশ্চিমে মধ্য ইউরোপ ও আটলান্টিক মহাসাগর, পূর্বে ইরান, উত্তরে মধ্য এশিয়ার ক্রিমিয়া ও কৃষ্ণ সাগর এবং দক্ষিণে আরব সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এবং যার পতাকাতলে তৎকালে বিশ কোটির অধিক লোক তলোয়ার হাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রস্ত্তত ছিল।

শায়খুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আবদুল ওয়াহ্হাব তার ইসলামী কাজের তৎপরতা নজদের এমন একটি গ্রাম থেকে শুরু করেছিলেন, যার জনসংখ্যা দেড় হাযারের ঊর্ধ্বে ছিল না। এই গ্রামের চার পাশে যারা বাস করত তাদের সকলেই তাদের দৃষ্টিতে এই নতুন ব্যবস্থার বিরোধী ছিল এবং তার শত্রুতা করেছিল। তারা এ ধারাকে মুসলিম উম্মাহ থেকে বেরিয়ে যাওয়া এবং মুসলমানদের কাফির আখ্যায়িত করণ বলে অভিহিত করেছিল। এই দাওয়াতকে নস্যাৎ করার জন্য তারা একের পর এক আক্রমণ করেছিল। অথচ এতে কোন সন্দেহ নেই যে, মুসলিম জাতির উপকার সাধনে ঐ সময় থেকে আমাদের যুগ পর্যন্ত শায়খুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আবদুল ওয়াহ্হাবের কার্যধারা থেকে মহৎ কোন কার্যধারা দ্বিতীয়টি দেখা যায়নি। অদ্যাবধি আমরা এই দাওয়াতের বরকতের মাঝে বসবাস করছি।

এই ছিল আমার কথার ভূমিকা, যার মাধ্যমে আমি আমার মূল আলোচনার সূত্রপাত ঘটানো ভালো মনে করেছি। সেই আলোচনা হ’ল নিম্নোক্ত প্রশ্নের জবাব প্রদান : দ্বীনের সাহায্যার্থে মুসলমানদের উপর জামা‘আত বা সংঘবদ্ধ হয়ে দ্বীনী কাজ করা যখন বিগত দিনের ন্যায় আজও ফরয আছে, তখন কি হবে এই কার্যধারার মূলনীতি এবং কী হবে তার ক্বয়েদা-কানূন। সম্মুখপানে আমরা মহান আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে সে আলোচনা শুরু করছি।

[চলবে]







ধবংসলীলা - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাশিক্ষার বৈষম্য - ড. মুহাম্মাদ কামরুয্যামান
দ্বীনের পথে ত্যাগ স্বীকার (৪র্থ কিস্তি) - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
মহামনীষীদের পিছনে মায়েদের ভূমিকা (৪র্থ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
১৬ মাসের মর্মান্তিক কারা স্মৃতি (৭ম কিস্তি) - মাওলানা মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম
আক্বীদা ও আহকামে হাদীছের প্রামাণ্যতা (৬ষ্ঠ কিস্তি) - মীযানুর রহমান মাদানী
তাহরীকে জিহাদ : আহলেহাদীছ ও আহনাফ (৩য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
দাওয়াতের ক্ষেত্র ও আধুনিক মাধ্যম সমূহ (২য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
ভুল সংশোধনে নববী পদ্ধতি (৬ষ্ঠ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
আল্লামা আলবানী সম্পর্কে শায়খ শু‘আইব আরনাঊত্বের সমালোচনার জবাব (২য় কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
মানব জাতির প্রতি ফেরেশতাদের দো‘আ ও অভিশাপ - মুহাম্মাদ আবু তাহের, পরিচালক, কিউসেট ইনস্টিটিউট, সিলেট।
আলেমগণের মধ্যে মতভেদের কারণ (শেষ কিস্তি) - আব্দুল আলীম বিন কাওছার
আরও
আরও
.