জান্নাত লাভের কতিপয় উপায়

ভূমিকা : ইহকালীন জীবনে মানুষের কৃতকর্মের মাধ্যমে অর্জিত নেকী পরকালীন জীবনে পরিত্রাণ লাভের অসীলা হবে। তাই দুনিয়াতে অধিক নেক আমলের দ্বারা বেশী বেশী ছওয়াব লাভের চেষ্টা করা মুমিনের কর্তব্য। কিন্তু পার্থিব জীবনের মায়াময়তায় জড়িয়ে আমলে ছালেহ থেকে দূরে থাকলে পরকালীন জীবনে কষ্টভোগ করতে হবে। এজন্য রাসূল (ছাঃ) বলেন, حُلْوَةُ الدُّنْيَا مُرَّةُ الآخِرَةِ وَمُرَّةُ الدُّنْيَا حُلْوَةُ الآخِرَةِ- ‘পৃথিবীর মিষ্টতা পরকালের তিক্ততা। আর পৃথিবীর তিক্ততা পরকালের মিষ্টতা’।[1] তাই পরকালীন জীবনে আল্লাহর শাস্তির ভয়ে গোনাহ পরিহার করতে হবে এবং অফুরন্ত নে‘মত সমৃদ্ধ অমূল্য জান্নাত লাভে নেক আমল বেশী বেশী করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ خَافَ أَدْلَجَ وَمَنْ أَدْلَجَ بَلَغَ الْمَنْزِلَ أَلاَ إِنَّ سِلْعَةَ اللهِ غَالِيَةٌ أَلاَ إِنَّ سِلْعَةَ اللهِ الْجَنَّةُ ‘যে ব্যক্তি ভয় করেছে, সে পালিয়েছে। আর যে পালিয়েছে সে গন্তব্যস্থলে পৌঁছেছে। জেনে রাখ আল্লাহর সম্পদ অত্যন্ত মূল্যবান, জেনে রাখ আল্লাহর সম্পদ অত্যন্ত মূল্যবান’।[2] জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রত্যাশী ও জান্নাত লাভে আকাঙ্ক্ষী মুমিন সারারাত ঘুমিয়ে কাটাতে পারে না। এজন্য রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَا رَأَيْتُ مِثْلَ النَّارِ نَامَ هَارِبُهَا وَلَا مِثْلَ الْجَنَّةِ نَامَ طَالِبُهَا ‘আমি জাহান্নাম থেকে পলায়নকারী ব্যক্তিকে কখনো ঘুমাতে দেখিনি, আর জান্নাত অন্বেষণকারীকেও কখনো ঘুমাতে দেখিনি’।[3] তাই জান্নাত লাভের জন্য নেকীর কাজ বেশী বেশী করার যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।

আর জান্নাত লাভের জন্য বহু নেক আমল রয়েছে। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় নেক আমল এখানে উদ্ধৃত হ’ল, যাতে পাঠক সেসব পালন করার মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভে সচেষ্ট হ’তে পারেন।

১. তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ব :

আল্লাহর একত্বের স্বীকৃতি প্রদান ও তদনুযায়ী আমল করা মানুষের জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভের প্রথম শর্ত। মু‘আয (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-এর পিছনে ‘উফায়র’ নামক একটি গাধায় আরোহী ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন,

يَا مُعَاذُ، هَلْ تَدْرِى حَقَّ اللهِ عَلَى عِبَادِهِ وَمَا حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللهِ. قُلْتُ اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ. قَالَ فَإِنَّ حَقَّ اللهِ عَلَى الْعِبَادِ أَنْ يَعْبُدُوهُ وَلاَ يُشْرِكُوْا بِهِ شَيْئًا، وَحَقَّ الْعِبَادِ عَلَى اللهِ أَنْ لاَ يُعَذِّبَ مَنْ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا. فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ، أَفَلاَ أُبَشِّرُ بِهِ النَّاسَ قَالَ لاَ تُبَشِّرْهُمْ فَيَتَّكِلُوْا-

‘হে মু‘আয! তুমি কি জান বান্দার উপরে আল্লাহর হক কি এবং আল্লাহর নিকটে বান্দার হক কি? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (ছাঃ) অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেন, বান্দার উপরে আল্লাহর হক হ’ল সে আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে না। আর আল্লাহর নিকটে বান্দার হক হচ্ছে আল্লাহ তাকে শাস্তি দিবেন না, যে তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি কি মানুষকে এর সুসংবাদ দিব না? তিনি বললেন, না, তাদেরকে সুসংবাদ দিও না, তাহ’লে তারা এর উপরেই নির্ভর করবে’।[4] তিনি আরো বলেন, مَنْ قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ وَأَنَّ عِيسَى عَبْدُ اللهِ وَابْنُ أَمَتِهِ وَكَلِمَتُهُ أَلْقَاهَا إِلَى مَرْيَمَ وَرُوحٌ مِنْهُ وَأَنَّ الْجَنَّةَ حَقٌّ وَأَنَّ النَّارَ حَقٌّ أَدْخَلَهُ اللهُ مِنْ أَىِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ الثَّمَانِيَةِ شَاءَ. ‘যে ব্যক্তি বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তিনি এক তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল; ঈসা তাঁর বান্দা ও তাঁর বান্দীর পুত্র, তাঁর কালিমা (বাক্য) যা তিনি মারিয়ামের প্রতি নিক্ষেপ করেছেন ও তাঁর পক্ষ থেকে নির্দেশ (রূহ), জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। জান্নাতের আটটি দরজার যে কোনটি দিয়ে ইচ্ছা’।[5] অন্য বর্ণনায় এসেছে, أَدْخَلَهُ اللهُ الْجَنَّةَ عَلَى مَا كَانَ مِنْ عَمَلٍ ‘আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, তার আমল যাই থাকুক’।[6]

২. আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করা :

আল্লাহর আযাব থেকে পরিত্রাণ লাভ ও জান্নাতে প্রবেশের জন্য আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করা অত্যাবশ্যক। কেননা ঈমান ব্যতিরেকে মানুষের কোন নেক আমল আল্লাহর নিকটে কবুল হয় না। তেমনি কারো অন্তরে অণু পরিমাণ ঈমান থাকলে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَالَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أُوْلَئِكَ أَصْحَابُ الْجَنَّةِ هُمْ فِيْهَا خَالِدُوْنَ ‘যারা ঈমান আনে ও নেককর্ম করে তারাই জান্নাতের অধিবাসী, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে’ (বাক্বারাহ ২/৮২)। অন্যত্র তিনি বলেন,إِنَّ الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَانَتْ لَهُمْ جَنَّاتُ الْفِرْدَوْسِ نُزُلًا ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও নেককর্ম করেছে, জান্নাতুল ফিরদাউসে তাদের জন্য রয়েছে আপ্যায়ন’ (কাহফ ১৮/১০৭)।

তিনি আরো বলেন,تُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَرَسُوْلِهِ وَتُجَاهِدُوْنَ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ بِأَمْوَالِكُمْ وَأَنْفُسِكُمْ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ إِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُونَ، يَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَيُدْخِلْكُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ وَمَسَاكِنَ طَيِّبَةً فِيْ جَنَّاتِ عَدْنٍ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ ‘তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন, আর নিজের ধন-মাল ও আত্মার দ্বারা আল্লাহর পথে জিহাদ কর। এটাই তোমাদের জন্য অতীব উত্তম, যদি তোমরা জান। এতে আল্লাহ তোমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার নিম্নে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান রয়েছে এবং চিরকাল বসবাসের জন্য জান্নাতে অতীব উত্তম ঘর দান করবেন। আর এটাই হচ্ছে বড় সফলতা’ (ছফ ৬১/১১-১২)। তিনি আরো বলেন,وَمَنْ يُؤْمِنْ بِاللهِ وَيَعْمَلْ صَالِحًا يُكَفِّرْ عَنْهُ سَيِّئَاتِهِ وَيُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِيْنَ فِيْهَا أَبَدًا ذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ ‘যে ব্যক্তি ঈমান আনে এবং নেক আমল করে আল্লাহ তার পাপ মুছে ফেলেন এবং তাকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান রয়েছে। এরা সেখানে চিরকাল থাকবে। আর এটাই হচ্ছে বড় সফলতা’ (তাগাবূন ৬৪/৯)।

তিনি আরো বলেন,إِنَّ الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ جَنَّاتٌ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ذَلِكَ الْفَوْزُ الْكَبِيْرُ ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে তাদের জন্য এমন জান্নাত রয়েছে, যার তলদেশে ঝর্ণাধারা প্রবহমান। আর এটাই হচ্ছে বড় সফলতা’ (বুরূজ ৮৫/১১)।

তিনি আরো বলেন, وَعَدَ اللهُ الَّذِيْنَ آمَنُوْا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَهُمْ مَغْفِرَةٌ وَأَجْرٌ عَظِيْمٌ- ‘যারা ঈমান আনে এবং নেক আমল করে তাদের প্রতি আল্লাহর ওয়াদা এই যে, আল্লাহ তাদের ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা করবেন এবং তাদের বড় প্রতিফল দিবেন’ (মায়েদাহ ৫/৯)।

৩. তাক্বওয়া অর্জন করা :

জান্নাত লাভের অন্যতম উপায় হচ্ছে তাক্বওয়াশীল হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,وَلِمَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهِ جَنَّتَانِ ‘আর যে স্বীয় প্রতিপালকের সম্মুখে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্য রয়েছে দু’টি উদ্যান’ (আর-রহমান ৫৫/৪৬)।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,أتَدْرُوْنَ مَا أَكْثَرُ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ الْجَنَّةَ فَقَالَ تَقْوَى اللهِ وَحُسْنُ الْخُلُقِ، أتَدْرُوْنَ مَا أَكْثَرُ مَا يُدْخِلُ النَّاسَ النَّارَ فَقَالَ الْفَمُ وَالْفَرْجُ- ‘তোমরা কি জান কোন জিনিস মানুষকে সবচেয়ে বেশী জান্নাতে প্রবেশ করায়? তা হচ্ছে আল্লাহর ভয় বা তাক্বওয়া ও উত্তম চরিত্র। তোমরা কি জান মানুষকে সবচেয়ে বেশী জাহান্নামে প্রবেশ করায় কোন জিনিস? তিনি বললেন, মুখমন্ডল ও লজ্জাস্থান’।[7] তিনি আরো বলেন,لاَ يَلِجُ النَّارَ رَجُلٌ بَكَى مِنْ خَشْيَةِ اللهِ حَتَّى يَعُوْدَ اللَّبَنُ فِى الضَّرْعِ وَلاَ يَجْتَمِعُ غُبَارٌ فِىْ سَبِيْلِ اللهِ وَدُخَانُ جَهَنَّمَ. ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ভয়ে কাঁদে তার জাহান্নামে যাওয়া অসম্ভব, দুধ যেমন গাভীর ওলানে ফিরে যাওয়া অসম্ভব। আর আল্লাহর পথের ধুলা এবং জাহান্নামের ধোঁয়া কখনো একত্রিত হবে না’।[8]

৪. রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ করা :

জান্নাত লাভের জন্য রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণ ও আনুগত্য করা যরূরী। তাঁর অনুসরণ ব্যতীত যেমন কোন আমল কবুল হয় না, তেমনি তাঁর আনুগত্য ব্যতিরেকে জান্নাত লাভ করাও যায় না। আল্লাহ বলেন, وَمَنْ يُّطِعِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّتٍ تَجْرِىْ مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِيْنَ فِيْهَا وَذَالِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيْمُ، وَمَنْ يَّعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَيَتَعَدَّ حُدُوْدَهُ يُدْخِلْهُ نَارًا خَالِدًا فِيْهَا وَلَهُ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ- ‘যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ মান্য করে চলে তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশ দিয়ে নদী সমূহ প্রবাহিত। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এ হল বিরাট সাফল্য। আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অবাধ্যতা করে এবং তাঁর সীমা অতিক্রম করে তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে চিরকাল থাকবে। তার জন্য রয়েছে অপমানজনক শাস্তি’ (নিসা ৪/১৩-১৪)।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, كُلُّ أُمَّتِى يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ إِلاَّ مَنْ أَبى، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ وَمَنْ يَأْبى؟ قَالَ: مَنْ أَطَاعَنِى دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ عَصَانِى فَقَدْ أَبَى- ‘আমার উম্মতের সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে, একমাত্র তারা ব্যতীত, যারা (যেতে) অস্বীকার করে। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! কারা অস্বীকার করে? তিনি বললেন, যারা আমার আনুগত্য করবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যারা আমার অবাধ্যতা করবে তারাই অস্বীকার করে’।[9]

৫. ছালাত আদায় করা :

ছালাত আদায় করা ইসলামের রুকন, যা জান্নাত লাভের অন্যতম উপায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন,الصَّلَوَاتُ الخَمْسُ، وَالجُمُعَةُ إِلَى الجُمُعَةِ، وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ مُكَفِّراتٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ إِذَا اجْتُنِبَتِ الكَبَائِرُ- ‘পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত, এক জুম‘আ হ’তে অপর জুম‘আ পর্যন্ত, এক রামাযান হ’তে অপর রামাযান পর্যন্ত কাফফারা হয় সে সমস্ত গুনাহের, যা এর মধ্যবর্তী সময়ে সংঘটিত হয়। যখন সে কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে’।[10] তিনি আরো বলেন, مَنْ صَلَّى سَجْدَتَيْنِ لاَ يَسْهُو فِيْهِمَا غَفَرَ اللهُ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ- ‘যে ব্যক্তি কোন ভুল না করে মনোযোগ সহকারে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করবে, আল্লাহ তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন’।[11]

ফরয ছালাতের পাশাপাশি সুন্নাত-নফল ছালাতও জান্নাত লাভের উপায়। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন,

مَنْ صَلَّى اِثْنَتَا عَشْرَةَ رَكْعَةً فِيْ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ بُنِيَ لَهُ بِهِنَّ بَيْتٌ فِي الْجَنَّةِ أَرْبَعًا قَبْلَ اَلظُّهْرِ وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَهَا، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ اَلْمَغْرِبِ، وَرَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعِشَاءِ، وَرَكْعَتَيْنِ قَبْلَ صَلاَةِ الْفَجْرِ-

‘যে ব্যক্তি দিন-রাতে বার রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করবে, তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করা হবে। চার রাক‘আত যোহরের পূর্বে, দুই রাক‘আত যোহরের পরে, দুই রাক‘আত মাগরিবের পরে, দুই রাক‘আত এশার পরে এবং দুই রাক‘আত ফজরের পূর্বে’।[12] তিনি আরো বলেন, مَنْ حَافَظَ عَلَى أَرْبَعِ رَكَعَاتٍ قَبْلَ اَلظُّهْرِ وَأَرْبَعٍ بَعْدَهَا حَرَّمَهُ اَللهُ عَلَى اَلنَّارِ- ‘যে ব্যক্তি বরাবর যোহরের পূর্বে চার রাক‘আত এবং যোহরের পরে চার রাক‘আত ছালাত আদায় করবে আল্লাহ তাকে জাহান্নামের প্রতি হারাম করে দিবেন’।[13]

৬. ছিয়াম পালন করা :

যে সকল আমলের মাধ্যমে জান্নাত লাভ করা যায়, ছিয়াম তন্মধ্যে সর্বোত্তম। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ صَامَ يَوْمًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ بَعَّدَ اللهُ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য একদিন ছিয়াম পালন করবে, আল্লাহ জাহান্নামকে তার নিকট হ’তে সত্তর বছরের পথ দূরে করে দিবেন’।[14] তিনি আরো বলেন,مَنْ صَامَ يَوْمًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ بَاعَدَ اللهُ مِنْهُ جَهَنَّمَ مَسِيْرَةَ مِائَةِ عَامٍ- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে একদিন ছিয়াম পালন করবে, আল্লাহ তার নিকট হ’তে জাহান্নামকে একশত বছরের পথ দূরে করে দিবেন’।[15] অন্যত্র তিনি বলেন,مَنْ صَامَ يَوْمًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ جَعَلَ اللهُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ النَّارِ خَنْدَقًا كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে একদিন ছিয়াম পালন করবে, আল্লাহ তার মাঝে এবং জাহান্নামের মাঝে একটি গর্ত খনন করবেন, যার ব্যবধান হবে আসমান-যমীনের ব্যবধানের সমান’।[16]

ছিয়াম পালনকারীর জন্য জান্নাতে বিশেষ দরজা থাকবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,فِي الْجَنَّةِ ثَمَانِيَةُ أَبْوَابٍ، مِنْهَا بَابٌ يُسَمَّى الرَّيَّانُ لاَ يَدْخُلُهُ إِلاَّ الصَّائِمُوْنَ- ‘জান্নাতের আটটি দরজা রয়েছে। তার একটি দরজার নাম রাইয়ান। ছিয়ামপালনকারী ব্যতীত ঐ দরজা দিয়ে আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না’।[17]  তিনি আরো বলেন,

إنَّ فِي الجَنَّةِ بَاباً يُقَالُ لَهُ الرَّيَّانُ، يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُوْنَ يَوْمَ القِيَامَةِ، لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ، فَإِذَا دَخَلُوْا أُغْلِقَ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ- وزاد وَمَنْ دَخَلَهُ لَمْ يَظْمَأْ أَبَدًا-  

‘জান্নাতে এমন একটি দরজা রয়েছে, যাকে ‘রাইয়্যান’ বলা হয়। ক্বিয়ামতের দিন ছিয়াম পালনকারীগণ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। অন্য কেউ তাতে প্রবেশ করবে না। ছিয়াম পালনকারীগণ প্রবেশ করলে, ঐ দরজা বন্ধ করা হবে। অন্য কেউ ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘যে ব্যক্তি সেখানে প্রবেশ করবে, সে কখনো পিপাসিত হবে না’।[18]

ছিয়াম পালন করলে মানুষের কৃত গোনাহ সমূহ মাফ হয়ে যায়। ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করার সৌভাগ্য অর্জন করে। যেমন রাসূল (ছাঃ) বলেন,

مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيْمَانًا وَّاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَنْ قَامَ رَمَضَانَ إِيْمَانًا وَّاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ، وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيْمَانًا وَّاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ-

‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও ছওয়াবের আশায় রামাযানের ছিয়াম পালন করে, তার পূর্বের গুনাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হয়। যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও ছওয়াবের আশায় রামাযানের রাত্রি ইবাদতে কাটায় তার পূর্বের গুনাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও ছওয়াবের আশায় কদরের রাত্রি ইবাদাতে কাটায় তার পূর্ববর্তী গুনাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হয়’।[19]

এছাড়া ছিয়াম বান্দার জন্য জাহান্নাম থেকে রক্ষার মাধ্যম। রাসূল (ছাঃ) বলেন, الصِّيَامُ جُنَّةٌ وَحِصْنٌ حَصِيْنٌ مِنَ النَّار، ‘ছিয়াম হচ্ছে ঢাল স্বরূপ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার একটি স্থায়ী দুর্গ’।[20]

৭. যাকাত আদায় করা :

ইসলামের মৌলিক পাঁচটি ফরযের মধ্যে যাকাত অন্যতম। নিছাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী ব্যক্তিকে যাকাত আদায় করতে হয়। এর ফলে জান্নাত লাভ করা যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন,اتَّقُوا اللهَ رَبَّكُمْ وَصَلُّوْا خَمْسَكُمْ وَصُوْمُوْا شَهْرَكُمْ وَأَدُّوْا زَكَاةَ أَمْوَالِكُمْ وَأَطِيْعُوْا ذَا أَمْرِكُمْ تَدْخُلُوْا جَنَّةَ رَبِّكُمْ- ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় কর। পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত আদায় কর, রামাযান মাসের ছিয়াম পালন কর, তোমাদের সম্পদের যাকাত প্রদান কর, তোমাদের নেতাদের আনুগত্য কর, তাহ’লে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের জান্নাতে প্রবেশ করবে’।[21] অপর একটি হাদীছে এসেছে, জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাকে এমন একটি আমলের কথা বলুন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। লোকেরা বলল, তার কি হয়েছে? তার কি হয়েছে? তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন,أَرَبٌ مَالَهُ، فَقَالَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم تَعْبُدُ اللهَ، وَلاَ تُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا، وَتُقِيمُ الصَّلاَةَ، وَتُؤْتِى الزَّكَاةَ، وَتَصِلُ الرَّحِمَ ‘তার একটি বিশেষ প্রয়োজন আছে। অতঃপর তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না; ছালাত কায়েম করবে, যাকাত আদায় করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করবে’।[22]

৮. হজ্জব্রত পালন করা :

হজ্জ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফরয ইবাদত। অর্থিক সচ্ছলতা ও দৈহিক শক্তি-সামর্থ্য থাকলে হজ্জ করা ফরয। কবুল হজ্জের প্রতিদান একমাত্র জান্নাত। হাদীছে এসেছে, আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, একদা রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কোন আমল শ্রেষ্ঠ? তিনি বলেলেন,إِيْمَانٌ بِاللهِ وَرَسُوْلِهِ قِيْلَ: ثُمَّ مَاذَا قَالَ: الْجِهَادُ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ قِيْلَ: ثُمَّ مَاذَا قَالَ: حَجٌّ مَبْرُوْرٌ- ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে বিশ্বাস করা। অতঃপর জিজ্ঞেস করা হ’ল, তারপর কি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। পুনরায় জিজ্ঞেস করা হ’ল, তারপর কি? তিনি বললেন, কবুল হজ্জ’।[23] তিনি আরো বলেন, الْعُمْرَةُ إِلَى الْعُمْرَةِ كَفَّارَةٌ لِّمَا بَيْنَهُمَا، وَالْحَجُّ الْمَبْرُوْرُ لَيْسَ لَهُ جَزَاءٌ إِلاَّ الْجَنَّةُ- ‘এক ওমরা অপর ওমরা পর্যন্ত মধ্যবর্তী গোনাহের কাফফারা  স্বরূপ  এবং  কবুল  হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া

অন্য কিছু নয়’।[24]

৯. দান-ছাদাক্বাহ করা :

ছাদাক্বাহ করা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অন্যতম মাধ্যম। যার দ্বারা জান্নাত লাভ করা যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন,

مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ مِنْ شَيْءٍ مِنْ الْأَشْيَاءِ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ دُعِيَ مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ وَلِلْجَنَّةِ أَبْوَابٌ فَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّلاَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّلَاةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجِهَادِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الْجِهَادِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصَّدَقَةِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الصَّدَقَةِ وَمَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الصِّيَامِ دُعِيَ مِنْ بَابِ الرَّيَّانِ-

‘যে ব্যক্তি কোন জিনিসের এক জোড়া আল্লাহর রাস্তায় দান করে তাকে ক্বিয়ামতের দিন জান্নাতের সকল দরজা হ’তে আহবান করা হবে, অথচ জান্নাতের দরজা অনেক (আটটি)। সুতরাং যে ব্যক্তি ছালাত আদায়কারী হবে তাকে ছালাতের দরজা হ’তে আহবান করা হবে এবং যে ব্যক্তি দানকারী হবে তাকে দানের দরজা হ’তে আহবান করা হবে’।[25] তিনি আরো বলেন,إِنَّ الصَّدَقَةَ لَتُطْفِئُ عَنْ أَهْلِهَا حَرَّ الْقُبُوْرِ، وَإِنَّمَا يَسْتَظِلُّ الْمُؤْمِنُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِيْ ظِلِّ صَدَقَتِهِ- ‘নিশ্চয়ই দান কবরের শাস্তিকে মিটিয়ে দেয় এবং ক্বিয়ামতের দিন মুমিন তার দানের ছায়াতলে ছায়া গ্রহণ করবে’।[26] অন্যত্র তিনি আরো বলেন, صَدَقَةُ السِّرِّ تُطْفِيُ غَضَبَ الرَّبِّ- ‘গোপন দান প্রতিপালকের ক্রোধকে মিটিয়ে দেয়’।[27]

১০. কুরআন তেলাওয়াত করা :

কুরআন তেলাওয়াত করলে বহু ছওয়াব অর্জিত হয় এবং জান্নাত লাভ করা যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,يُقَالُ لِصَاحِبِ الْقُرْآنِ اقْرَأْ وَارْتَقِ وَرَتِّلْ كَمَا كُنْتَ تُرَتِّلُ فِي الدُّنْيَا فَإِنَّ مَنْزِلَكَ عِنْدَ آخِرِ آيَةٍ تَقْرَؤُهَا- ‘ক্বিয়ামতের দিন কুরআন তেলাওয়াতকারীকে বলা হবে কুরআন তেলাওয়াত করতে থাক এবং উপরে উঠতে থাক। অক্ষর অক্ষর ও শব্দ শব্দ স্পষ্টভাবে পাঠ করতে থাক, যেভাবে দুনিয়াতে স্পষ্টভাবে পাঠ করছিলে। কেননা তোমার জন্য জান্নাতে বসবাসের স্থান হচ্ছে তোমার তেলাওয়াতের শেষ আয়াতের নিকট’।[28]

রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,الْمَاهِرُ بِالْقُرْآنِ مَعَ السَّفَرَةِ الْكِرَامِ الْبَرَرَةِ وَالَّذِيْ يَقْرَؤُهُ يَتَتَعْتَعُ فِيْهِ وَهُوَ عَلَيْهِ شَاقٌّ لَهُ أَجْرَانِ- ‘কুরআন পাঠে দক্ষ ব্যক্তি সম্মানিত লেখক ফেরেশতাদের সাথে থাকবেন। আর যে কুরআন পড়ে কিন্তু আটকায় এবং কুরআন পড়া তার পক্ষে খুব কষ্টদায়ক হয় তার জন্য দুইগুণ নেকী রয়েছে’।[29]

(ক) সূরা বাক্বারাহ ও আলে ইমরান পাঠ করা :

সূরা বাক্বারাহ ও আলে ইমরান তার তেলাওয়াতকারীর জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,يُؤْتَى يَوْمَ القِيَامَةِ بِالقُرْآنِ وَأَهْلِهِ الَّذِيْنَ كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ بِهِ فِي الدُّنْيَا تَقْدُمُهُ سُوْرَةُ البَقَرَةِ وَآلِ عِمْرَانَ، تُحَاجَّانِ عَنْ صَاحِبِهِمَا- ‘ক্বিয়ামতের দিন কুরআনকে এবং যারা দুনিয়াতে কুরআন অনুযায়ী আমল করত তাদেরকে আনা হবে। কুরআনের আগে আগে থাকবে সূরা বাক্বারাহ ও সূরা আলে ইমরান। আর এ সূরা দু’টি তাদের তেলাওয়াতকারীদের পক্ষ থেকে জবাবদিহি করবে’।[30] তিনি আরো বলেন,

اقْرَءُوْا الْقُرْآنَ فَإِنَّهُ يَأْتِيْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ شَفِيْعًا لِأَصْحَابِهِ اقْرَءُوا الزَّهْرَاوَيْنِ الْبَقَرَةَ وَسُوْرَةَ آلِ عِمْرَانَ فَإِنَّهُمَا تَأْتِيَانِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَأَنَّهُمَا غَمَامَتَانِ أَوْ كَأَنَّهُمَا غَيَايَتَانِ أَوْ كَأَنَّهُمَا فِرْقَانِ مِنْ طَيْرٍ صَوَافَّ تُحَاجَّانِ عَنْ أَصْحَابِهِمَا اقْرَءُوْا سُوْرَةَ الْبَقَرَةِ فَإِنَّ أَخْذَهَا بَرَكَةٌ وَتَرْكَهَا حَسْرَةٌ وَلاَ تَسْتَطِيْعُهَا الْبَطَلَةُ-

‘তোমরা কুরআন তেলাওয়াত কর। কেননা কুরআন ক্বিয়ামতের দিন তেলাওয়াতকারীর জন্য সুপারিশ করতে আসবে। তোমরা দুই উজ্জ্বল সূরা বাক্বারাহ ও আলে ইমরান তেলাওয়াত কর। কেননা ক্বিয়ামতের দিন সূরা দু’টি দু’টি মেঘখন্ড অথবা দু’টি সামিয়ানা অথবা দু’টি পাখা প্রসারিত পাখির ঝাঁকরূপে আসবে এবং পাঠকদের পক্ষে আল্লাহর সামনে জোরাল দাবী জানাবে। বিশেষভাবে তোমরা সূরা বাক্বারাহ পড়। কারণ সূরা বাক্বারাহ পড়ার বিনিময় হচ্ছে বরকত আর না পড়ার পরিণাম হচ্ছে আক্ষেপ। অলস ব্যক্তিরাই এ সূরা পড়তে অক্ষম’।[31]

(খ) আয়াতুল কুরসী পাঠ করা :

নিয়মিত আয়াতুল কুরসী পাঠ করলে জান্নাত অবধারিত হয়ে যায়। রাসূল (ছাঃ) বলেন,مَنْ قَرَأَ آيَةَ اَلْكُرْسِيِّ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ لَمْ يَمْنَعْهُ مِنْ دُخُوْلِ اَلْجَنَّةِ إِلاَّ اَلْمَوْتُ- ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ছালাতের পর আয়াতুল কুরসী পড়বে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ব্যতীত কোন কিছু প্রতিবন্ধক থাকবে না’।[32] অন্য বর্ণনায় এসেছে, مَنْ قَرَأَ آيَةَ اَلْكُرْسِيِّ دُبُرَ كُلِّ صَلاَةٍ لَمْ يُحِلْ بَيْنَهُ وَبَيْنَ دُخُوْلِ الْجَنَّةِ إَلاَّ الْمَوْتُ   ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ছালাতের পর আয়াতুল কুরসী পড়বে, তার জান্নাতে প্রবেশে মৃত্যু ব্যতিরেকে কোন প্রতিবন্ধক থাকবে না’।[33] অন্য বর্ণনায় প্রত্যেক ফরয ছালাতের পরে উল্লিখিত হয়েছে।[34]

(গ) সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা :

সূরা কাহফ তেলাওয়াত করলে জ্যোতি লাভ হয় এবং দাজ্জালের ফেৎনা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নবী করীম (ছাঃ) বলেন,مَنْ قَرَأَ سُوْرَةَ الْكَهْفِ فِىْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ أَضَاءَ لَهُ النُّوْرُ مَا بَيْنَ الْجُمُعَتَيْنِ- ‘যে ব্যক্তি জুম‘আর দিন সূরা কাহফ পড়বে তার ঈমানী আলো এক জুম‘আ হ’তে অপর জুম‘আ পর্যন্ত চমকিতে থাকবে’।[35] তিনি আরো বলেন, مَنْ قَرَأَ ثَلاَثَ آيَاتٍ مِنْ أَوَّلِ الْكَهْفِ عُصِمَ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ- ‘যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম তিন আয়াত পড়বে তাকে দাজ্জালের ফেতনা হ’তে নিরাপদে রাখা হবে’।[36] অন্যত্র তিনি বলেন,  مَنْ حَفِظَ عَشْرَ آيَاتٍ مِنْ أَوَّلِ سُورَةِ الْكَهْفِ عُصِمَ مِنْ فِتْنَةِ الدَّجَّالِ- ‘যে ব্যক্তি সূরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করবে তাকে দাজ্জাল হ’তে নিরাপদে রাখা হবে’।[37]

(ঘ) সূরা মুলক পাঠ করা :

সূরা মুলক তেলাওয়াতকারীর জন্য সে সুপারিশ করে এবং এ সূরা তেলাওয়াতকারী কবরের আযাব থেকে নিরাপত্তা লাভ করে। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ سُوْرَةً مِنْ الْقُرْآنِ ثَلَاثُوْنَ آيَةً شَفَعَتْ لِرَجُلٍ حَتَّى غُفِرَ لَهُ وَهِيَ تَبَارَكَ الَّذِيْ بِيَدِهِ الْمُلْكُ- ‘কুরআনে ত্রিশ আয়াতের একটি সূরা আছে, যা এক ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করেছিল ফলে তাকে মাফ করা হয়েছে। সে সূরাটি হচ্ছে ‘তাবারাকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুলক’।[38] তিনি আরো বলেন,

مَنْ قَرَأَ {تَبَارَكَ الَّذِي بِيَدِهِ الْمُلْكُ} كُلَّ لَيْلَةٍ مَنَعَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ بِهَا مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ، وَكُنَّا فِيْ عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ نُسَمِّيْهَا الْمَانِعَةَ، وَإنَّهَا فِيْ كِتَابِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ سُوْرَةٌ مَنْ قَرَأَ بِهَا فِيْ لَيْلَةٍ فَقَدْ أَكْثَرَ وَأَطَابَ-

‘যে ব্যক্তি প্রতি রাতে তাবারাকাল্লাযী অর্থাৎ সূরা মুলক পড়বে, এর জন্য আল্লাহ তাকে কবরের আযাব থেকে মুক্ত রাখবেন। আর আমরা রাসূল (ছাঃ)-এর আমলে একে (কবর আযাব) প্রতিরোধকারী বলে অভিহিত করতাম। নিশ্চয়ই আল্লাহর কিতাবে (কুরআনে)  একটি  সূরা  আছে,  যে ব্যক্তি রাতে তা

পাঠ করল, সে অধিক করল ও উত্তম কাজ করল।[39]

(ঙ) সূরা ইখলাছ পাঠ করা :

সূরা ইখলাছ পাঠ করা এবং তার সাথে মহববত রাখা জান্নাত লাভের মাধ্যম। আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, একবার নবী করীম (ছাঃ) এক ব্যক্তিকে এক সেনাদলের সেনাপতি করে পাঠালেন। সে তার সঙ্গীদের ছালাত আদায় করাত এবং ক্বিরাআত শেষে সূরা ইখলাছ পড়ত। যখন তারা মদীনায় ফিরলেন, নবী করীম (ছাঃ)-এর নিকট বিষয়টি পেশ করলেন। রাসূল (ছাঃ) বললেন, سَلُوْهُ لِأَيِّ شَيْءٍ يَصْنَعُ ذَلِكَ فَسَأَلُوْهُ فَقَالَ لِأَنَّهَا صِفَةُ الرَّحْمَنِ وَأَنَا أُحِبُّ أَنْ أَقْرَأَ بِهَا فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخْبِرُوْهُ أَنَّ اللهَ يُحِبُّهُ- ‘তোমরা তাকে জিজ্ঞেস কর সে কি কারণে এরূপ করে। তারা তাকে জিজ্ঞেস করল। সে বলল, এই সূরাতে আল্লাহর গুণাবলী আছে। আর আমি আল্লাহর গুণাবলী পাঠ করতে ভালবাসি। তখন নবী করীম (ছাঃ) বললেন, তোমরা তাকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তাকে ভালবাসেন’।[40] আনাস (রাঃ) বলেন, একদা এক ব্যক্তি বলল,يَا رَسُولَ اللهِ إنِّيْ أُحِبُّ هذِهِ السُّوْرَةَ {قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ} قَالَ: إنَّ حُبَّاكَ اِيَّاهَا أدْخَلَكَ الجَنَّةَ- ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি এই সূরা ‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ ভালবাসি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘তার প্রতি তোমার ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে পৌঁছে দেবে’।[41]

১১. উত্তমরূপে ওযূ করা :

ওযূর গুরুত্ব ও ফযীলত অনেক। এটাও জান্নাত লাভকারী আমল। রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,ألاَ أَدُّلُكُمْ عَلَى مَا يَمْحُو اللهُ بِهِ الخَطَايَا، وَيَرْفَعُ بِهِ الدَّرَجَاتِ؟ قَالُوْا بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ، قَالَ : إسْبَاغُ الوُضُوْءِ عَلَى المَكَارِهِ، وَكَثْرَةُ الخُطَا إِلَى المَسَاجِدِ، وَانْتِظَارُ الصَّلاَةِ بَعْدَ الصَّلاَةِ؛ فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ، فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ، فَذَلِكُمُ الرِّبَاطُ- ‘আমি কি তোমাদের বলে দিব না যে কিসের দ্বারা আল্লাহ মানুষের গুনাহ মুছে দেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন? ছাহাবীগণ বললেন, হ্যাঁ বলুন, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, কষ্ট সত্ত্বেও পূর্ণভাবে ওযূ করা, অধিক পদক্ষেপে মসজিদে যাওয়া এবং এক ছালাত শেষ হওয়ার পর আর এক ছালাতের প্রতীক্ষায় থাকা। আর এটাই হচ্ছে রিবাত বা প্রস্ত্ততি (তিনবার তিনি একথা বললেন)’।[42]

তিনি আরো বলেন,مَنْ تَوَضَّأ فَأَحْسَنَ الوُضُوْءَ، خَرَجَتْ خَطَايَاهُ مِنْ جَسَدِهِ حَتَّى تَخْرُجَ مِنْ تَحْتِ أَظْفَارِهِ- ‘যে ওযূ করে এবং সুন্দর করে ওযূ করে, তার গুনাহ সমূহ তার শরীর হ’তে বের হয়ে যায়। এমনকি তার নখের নীচ হ’তেও বের হয়ে যায়’।[43] অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,

إِذَا تَوَضَّأ العَبْدُ الْمُسْلِمُ، أَوِ الْمُؤْمِنُ فَغَسَلَ وَجْهَهُ خَرَجَ مِنْ وَجْهِهِ كُلُّ خَطِيْئَةٍ نَظَرَ إِلَيْهَا بِعَيْنَيْهِ مَعَ الْمَاءِ، أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ، فَإِذا غَسَلَ يَدَيْهِ خَرَجَ مِنْ يَدَيْهِ كُلُّ خَطِيْئَةٍ كَانَ بَطَشَتْهَا يَدَاهُ مَعَ الْمَاءِ، أَوْ مَعَ آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ، فَإِذَا غَسَلَ رِجْلَيْهِ خَرَجَتْ كُلُّ خَطِيْئَةٍ مَشَتْهَا رِجْلاَهُ مَعَ الْمَاءِ أَوْ مَعَ

آخِرِ قَطْرِ الْمَاءِ حَتَّى يَخْرُجَ نَقِيًّا مِنَ الذُّنُوْبِ-

‘যখন কোন মুসলমান অথবা মুমিন বান্দা ওযূ করে এবং মুখমন্ডল ধৌত করে তখন তার মুখমন্ডল হ’তে পানির সাথে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে সে সমস্ত গুনাহ বের হয়ে যায়, যা তার দু’চোখের মাধ্যমে হয়েছে। আর যখন সে দু’হাত ধৌত করে তখন পানির সাথে কিংবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে সে সমস্ত গুনাহ বের হয়ে যায়, যা তার দু’হাত দ্বারা অর্জিত হয়েছে। যখন সে পা ধৌত করে তখন পানির সাথে কিংবা পানির শেষ বিন্দুর সাথে সে সমস্ত গুনাহ বের হয়ে যায়, যা করতে তার পা অগ্রসর হয়েছে। এমনকি সে গুনাহ হ’তে পাক-পবিত্র, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়’।[44]

রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إنَّ أُمَّتِيْ يُدْعَوْنَ يَوْمَ القِيَامَةِ غُرًّا مُحَجَّلِيْنَ مِنْ آثَارِ الوُضُوْءِ، فَمَنِ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ أنْ يُطِيْلَ غُرَّتَهُ فَلْيَفْعَلْ- ‘ক্বিয়ামতের দিন আমার উম্মতকে জান্নাতের দিকে ডাকা হবে তাদের ওযূর বিশেষ চিহ্ন দেখে যা হবে অতীব উজ্জ্বল ধবধবে সাদা। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তার উজ্জ্বলতাকে দীর্ঘ করতে চায় সে যেন তা করে’।[45]

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আরো বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি উত্তমরূপে ওযূ করবে অতঃপর বলবে, أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ ‘আমি ঘোষণা করছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মা‘বূদ নেই এবং আমি আরও ঘোষণা করছি যে মুহাম্মাদ (ছাঃ) তাঁর বান্দা ও রাসূল। এমন ব্যক্তির জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে, সে ইচ্ছানুযায়ী যে কোন দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে’।[46]

(ক্রমশঃ)



[1]. মুসনাদে আহমাদ, ছহীহাহ হা/১৮১৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৩১৫৫।

[2]. তিরমিযী হা/২৪৫০; ছহীহাহ হা/৯৫৪, ২৩৩৫; ছহীহুল জামে‘ হা/৬২২২।

[3]. তিরমিযী হা/২৬০১; ছহীহাহ হা/৯৫৩; ছহীহুল জামে‘ হা/৫৬২২।

[4]. বুখারী হা/২৮৫৬; মুসলিম হা/৩০; মিশকাত হা/২৪।

[5]. মুসলিম হা/২৮।

[6]. মুসলিম হা/২৮; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৩২০।

[7]. তিরমিযী, মিশকাত হা/৪৬২১, হাদীছ ছহীহ।

[8]. তিরমিযী হা/১৬৩৩; নাসাঈ হা/৩১০৮; ছহীহ তারগীব হা/১২৬৯, ৩৩২৪; মিশকাত হা/৩৮২৮।

[9]. বুখারী হা/৬৭৩৭, ‘কুরআন-সুন্নাহ অাঁকড়ে ধরা’ অধ্যায়।

[10]. মুসলিম, মিশকাত হা/৫৬৪।

[11]. আহমাদ, মিশকাত হা/৫৭৭, হাদীছ ছহীহ।

[12]. তিরমিযী, মিশকাত হা/১১৫৯, হাদীছ ছহীহ।

[13]. আহমাদ, মিশকাত হা/১১৬৭, হাদীছ ছহীহ।

[14]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/২২৬৭, ২৫৬৫।

[15]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/২২৬৭,২৫৬৫।

[16]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/২২৬৮।

[17]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৫৭।

[18]. আত-তারগীব হা/১৩৮০।

[19]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৫৮।

[20]. আত-তারগীব হা/১৩৮২।

[21]. তিরমিযী হা/৬১৬; ইবুন হিববান হা/৭৯৫।

[22]. বুখারী হা/৫৯৫৩; মুসলিম হা/১১।

[23]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৫০৬।

[24]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৫০৮।

[25]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৭৯৭।

[26]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৮১৬/৩৪৮৪।

[27]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৮৪০।

[28]. আহমাদ, মিশকাত হা/২১৩৪, হাদীছ ছাহীহ।

[29]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২১১২।

[30]. মুসলিম হা/৮০৫; মিশকাত হা/২১২১।

[31]. মুসলিম, মিশকাত হা/২১২০।

[32]. ছহীহুল জামে‘ হা/৬৪৬৪; মিশকাত হা/৯৭৪।

[33]. ছহীহাহ হা/৯৭২।

[34]. ছহীহুল জামে‘ হা/৬৪৬৪।

[35]. বায়হাকবী, মিশকাত হা/২১৭৫, হাদীছ ছহীহ।

[36]. তিরমিযী, মিশকাত হা/২১৪৬, হাদীছ ছহীহ।

[37]. মুসলিম, মিশকাত হা/২১২৬।

[38]. আহমাদ, মিশকাত হা/২১৫৩, হাদীছ ছহীহ।

[39]. হাকেম, আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/১৫৮৯, সনদ হাসান।

[40]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২১২৮।

[41]. বুখারী হা/৩১৩০।

[42]. মুসলিম হা/২৫৩; মিশকাত হা/২৮২।

[43]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৮৪।

[44]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৮৫।

[45]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/২৯০।

[46]. মুসলিম, মিশকাত হা/২৬৯।





এলাহী তাওফীক্ব লাভ করবেন কিভাবে? - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
ছাহাবায়ে কেরামের প্রতি আমাদের কর্তব্য (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - আব্দুল আলীম বিন কাওছার
শবেবরাত - আত-তাহরীক ডেস্ক
ইসলামে তাক্বলীদের বিধান (২য় কিস্তি) - আহমাদুল্লাহ - সৈয়দপুর, নীলফামারী
সৃজনশীল প্রশ্ন, অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাস - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ : একটি পর্যালোচনা (জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারী সংখ্যার পর) - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
মৌলবাদের উত্থান - মুহাম্মাদ হাবীবুর রহমান
নিভে গেল ছাদিকপুরী পরিবারের শেষ দেউটি - ড. নূরুল ইসলাম
ইসলাম ও গণতন্ত্র - ডাঃ মুহাম্মাদ আব্দুল হাফীয, চাঁপাই নবাবগঞ্জ
দ্বীনের উপর অবিচলতা - আব্দুর রাক্বীব মাদানী, শিক্ষক, জামে‘আতুল ইমাম আল-বুখারী, কিষাণগঞ্জ, ভারত
প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার : ইসলামী দৃষ্টিকোণ - মুহাম্মাদ শাহাদত হোসাইন, বসুন্ধরা গ্রুপ, ঢাকা
ভূমিকম্পের টাইম বোমার ওপর ঢাকা : এখনই সচেতন হ’তে হবে - কামরুল হাসান দর্পণ
আরও
আরও
.