শিক্ষার মূল ভিত্তি হচ্ছে তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ব। মানুষের জন্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল শাখাই তাওহীদের ভিত্তিতে গড়তে হবে। তাওহীদ বিরোধী কোন কিছুই মানুষের জন্য শিক্ষার বিষয় হ’তে পারে না। কুরআন ও হাদীছের আলোকে ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের প্রয়োজনীয় শিক্ষাই হ’ল প্রকৃত শিক্ষা। এ শিক্ষা অর্জন করা প্রত্যেকের জন্য একান্ত প্রয়োজন। আক্ষরিক জ্ঞান থাকার সাথে সাথে যে শিক্ষা মানুষের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন সাধন করে, আল্লাহর বিধিনিষেধ মেনে চলতে সহায়তা করে, সেটাই হ’ল প্রকৃত শিক্ষা।[1] প্রত্যেক ব্যক্তি মাতৃক্রোড় থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নিয়মিত ও অনিয়মিত যে সকল জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে তা সবই শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত। মানুষ হিসাবে যাবতীয় দায়িত্ব পালনের যোগ্য হ’তে হ’লে দৈহিক, মানসিক ও নৈতিক দিক দিয়ে যে জ্ঞান ও গুণাবলী প্রয়োজন তা অর্জনের সুব্যবস্থা করার উদ্দেশ্যে যে প্রচেষ্টা চালাতে হয় তার নামই শিক্ষা।[2] শিক্ষা হ’ল শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক প্রশিক্ষণ। অন্য কথায় শিক্ষা হচ্ছে, একটি সর্বব্যাপক প্রক্রিয়া, যা শিক্ষার্থীর সামগ্রিক জীবনকে প্রভাবিত করে। এ কারণেই একটি উন্নত সভ্যতা ও জাতীয় জীবন যার উপর অধিক নির্ভরশীল তাই হ’ল প্রকৃত শিক্ষা।[3]

আল্লামা ইকবালের মতে, ‘মানুষের রূহকে উন্নত করার প্রচেষ্টার নামই শিক্ষা’।[4] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে, ‘মানুষের অন্তর্নিহিত গুণাবলীর উন্নতি ও বিকাশ সাধনই শিক্ষা’।[5] মহাকবি মিল্টন-এর মতে, Education is the harmonious development of body, mind and soul. ‘শিক্ষা হচ্ছে শরীর, মন ও আত্মার সুষম উন্নয়ন’।[6] Harbert বলেন, Education is the development good moral character. ‘শিক্ষা হচ্ছে উত্তম নৈতিক চরিত্রের উন্নয়ন’।[7] সুতরাং প্রকৃত শিক্ষা হ’ল মানুষের সার্বিক জীবন পরিচালনার জন্য সামগ্রিক উপাদান সমৃদ্ধ একটি সমন্বিত শিক্ষার নাম। যে শিক্ষার দ্বারা আল্লাহ প্রদত্ত নির্দেশনার আলোকে শিক্ষার্থীর দৈহিক, মানসিক ও আত্মিক পূর্ণ বিকাশ সাধিত হয় অথবা যে শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ হিসাবে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা থাকে তা-ই শিক্ষা। অন্য কথায় মানুষকে আল্লাহর সৃষ্ট জীব হিসাবে মনুষ্যত্ব ও মানবিক মূল্যবোধে বিকশিত করে তোলার পাশাপাশি দুনিয়াবী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে আঞ্জাম দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি করার জন্য পরিচালিত প্রয়াসের নামই শিক্ষা। আর এ শিক্ষা অর্জনই আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্য হওয়া উচিত।

প্রকৃত জ্ঞান অর্জন একটি জাতিকে সর্বতোভাবে জাতীয় জীবনে সকল দিক ও বিভাগে এবং সকল শাখা ও প্রশাখায় সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনের যোগ্য করে গড়ে তোলে। তাকে সকল প্রকার পাশবিক চিন্তা, বিশ্বাস, আচার-আচরণ, স্বভাব-চরিত্র ও কাজ-কর্ম থেকে বিরত রাখে। প্রকৃত শিক্ষা মানব মনে বিশ্বলোক নিহিত সকল শক্তি ও উপকরণ, মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য সৃষ্টি হয়েছে বলে বিশ্বাস জন্মায় এবং তা সন্ধান ও আহরণ করে সকল মানুষের কল্যাণে প্রয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করে। এ শিক্ষাই মানব মনের যাবতীয় জিজ্ঞাসার নির্ভুল জওয়াব দিয়ে তার অন্তরে দৃঢ় প্রত্যয় সৃষ্টি করে, যা অন্য কোন শিক্ষা দ্বারা সম্ভব নয়। এ শিক্ষা মানুষের জীবনকে সকল অবস্থায় এক আল্লাহর আনুগত্যে উদ্বুদ্ধ করার সামর্থ্য দান করে, তাকে পূর্ণাঙ্গ দাসে পরিণত করে এবং অন্য সকল শক্তি ও ব্যক্তির দাসত্ব থেকে তাকে মুক্ত করে। এ শিক্ষা মানুষকে আল্লাহর একান্ত অনুগত বান্দা হ’তে সহায়তা করে। এ শিক্ষাই মানুষের জন্য মুক্তির সনদ। তাই মুসলিম জাতির ঐক্য গড়ে তোলা এবং মুসলিম জাতিরূপে তাকে রক্ষা করা কেবল এ শিক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব।

ইবাদতের ক্ষেত্রে ধর্মীয় শিক্ষার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। এ শিক্ষা ব্যবস্থা একই সাথে দ্বীন ও দুনিয়ার উভয়বিধ প্রয়োজন পূরণে সক্ষম। জাগতিক প্রয়োজনকে উপেক্ষা করে কেবলমাত্র ব্যক্তি জীবনে ছালাত, ছিয়াম ইত্যাদি পালন করার উপযোগী শিক্ষাকে পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা বলা যায় না। বরং দুনিয়ায় সুষ্ঠুভাবে জীবনযাপনের প্রয়োজনে মানুষের জন্য যে শিক্ষা অপরিহার্য, তাকে যদি ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবেশন করা যায়, তবে তা-ই হবে প্রকৃত শিক্ষা। মহানবী (ছাঃ) বলেন, اَلنَّاسُ مَعَادِنُ كَمَعَادِنِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ فَخِيَارُهُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ خِيَارُهُمْ فِي الْإِسْلَامِ إِذَا فَقِهُوْا- ‘সোনা-রূপার খনির মত মানুষও (বিভিন্ন প্রকারের) খনি। তাদের মধ্যে যারা ইসলাম গ্রহণের পূর্বে উত্তম, দ্বীনের সঠিক জ্ঞান লাভ করতে পারলে ইসলাম গ্রহণের পর তারাই উত্তম হয়ে থাকে’।[8] আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, إِنَّمَا يَخْشَى اللهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ- ‘তাঁর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে’ (ফাতির ২৮)। তিনি আরো বলেন, وَمَا يَعْقِلُهَا إِلاَّ الْعَالِمُوْنَ ‘কেবল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই উহা অনুধাবন করে থাকে’ (আনকাবূত ৪৩)। তিনি আরো বলেন, اَلَّذِيْنَ آمَنُوْا مِنْكُمْ وَالَّذِيْنَ أُوتُوْا الْعِلْمَ دَرَجَاتٍ وَاللهُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ خَبِيْرٌ- ‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনয়ন করেছে এবং যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে উন্নীত করবেন, তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত’ (মুজাদালাহ ১১)।

শিক্ষার সাথে ধর্মের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। ইসলামের একমাত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন। এর আভিধানিক অর্থ আবৃত্তি করা বা পাঠ করা।[9] মানুষ হিসাবে মানবিক গুণাবলীর বিকাশ সাধনের মাধ্যমে মহান প্রভু আল্লাহ তা‘আলার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা, তাঁর প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করা, পার্থিব জগতে সুখ-শান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং আখিরাতে চিরন্তন শান্তি হাছিল করার জন্য ইসলামী জ্ঞানার্জন করা আবশ্যক। মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্যই আল্লাহর ইবাদত করা বা তাঁর নির্দেশ মেনে চলা। আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُوْنِ- ‘আমি জিন ও মানুষকে একমাত্র আমার ইবাদতের উদ্দেশ্যেই সৃষ্টি করেছি’ (যারিয়াত ৫৬)। দু’টি কারণে জ্ঞানকে ইবাদতে ইলাহীর উপরে স্থান দেয়া যরূরী। ১. এর দ্বারাই ইবাদতের পথ নির্দিষ্ট করা হয়; ২. এর দ্বারাই প্রতিবন্ধকতা ও বাধা সৃষ্টিকারী বস্ত্তসমূহ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখা যায়। প্রথমে প্রকৃত মা‘বূদকে জানতে হবে। তারপর তাঁর ইবাদত করা ওয়াজিব ও যরূরী।[10]

আবু হামেদ মুহাম্মাদ গাযযালী তাঁর মিনহাজুল আবেদীন গ্রন্থে বলেন, ‘আল্লাহর কসম! ইলম ব্যতীত যারা আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত, তাদের জন্য সত্যিই এটা মারাত্মক বিপদের স্থান, হতাশা এবং আফসোসের স্থান’।[11] তাই আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলার জন্য ইসলামী জ্ঞানার্জনের প্রয়োজন সর্বাধিক। বিশ্বের অমুসলিম বরেণ্য শিক্ষাবিদ, মনীষী এবং শিক্ষা বিজ্ঞানীরা ধর্মকে শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করার পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছেন। বিশিষ্ট শিক্ষা বিজ্ঞানী স্ট্যানলী হল (Stanly Hall) দ্ব্যর্থহীনভাবে ধর্মীয় জ্ঞানার্জনের পক্ষে মত দিয়ে বলেন, ‘If you teach their the three 'R's, Reading, Writing and Arithmetic and don't teach the fourth 'R' Religion, they are sure to become fifth 'R' Rascal. ‘যদি তুমি তাদেরকে (শিশুদেরকে) তিনটি ‘আর’ তথা পড়া, লেখা ও গণিত শিক্ষা দাও এবং ৪র্থ ‘আর’ তথা ধর্ম শিক্ষা না দাও, তাহ’লে অবশ্যই তারা পঞ্চম ‘আর’ তথা ‘বেয়াদব’ হবে’।[12] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত দার্শনিক ও চিন্তাবিদ Albert Scezer তাঁর একটি গ্রন্থে শিক্ষার সাথে ধর্মের সম্পর্ক নির্ণয় করতে গিয়ে বলেন, Three kinds of progress are significant; progress of knowledge and technology, progress in socialigation of man, progress in spiritualilty.[13]

জ্ঞান অর্জনের জন্য ইসলামের প্রাথমিক যুগে তেমন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। ইসলামের আদি শিক্ষাগার ছিল মসজিদ। আদম (আঃ) দুনিয়াতে অবতীর্ণ হয়ে বায়তুল্লাহ বা পবিত্র কা‘বা গৃহ নির্মাণ করেন। এটিই মানব জাতির প্রথম শিক্ষাগার।[14] ইসলাম প্রচারের সূচনা থেকেই মহানবী (ছাঃ) মানব জাতির মহান শিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন এবং ইসলামী শিক্ষার নিয়মনীতি প্রবর্তন করেন। তিনি নবুঅত লাভের পর কা‘বাকে প্রথম শিক্ষায়তন হিসাবে ব্যবহার করেন। পরে তিনি মক্কা নগরীর ছাফা পাহাড়ের পাদদেশে আরকাম বিন আবুল আরকামের বাড়ীতে ‘দারুল আরকাম’ নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। রাসূল (ছাঃ) নিজেই এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ছিলেন। এ স্থানে তিনি আবুবকর (রাঃ), ওমর (রাঃ), ওছমান (রাঃ), আলী (রাঃ) সহ নবদীক্ষিত শিষ্যদের ইসলামের বিধিবিধান শিক্ষা দিতেন।[15] ৬২২ খৃষ্টাব্দে হিজরতের পর মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ইসলামী শিক্ষার ব্যাপক প্রচার-প্রসার শুরু হয়। মদীনায় শিক্ষার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠার সাথে সাথে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকে। নবী করীম (ছাঃ)-এর জীবদ্দশায়ই মদীনা এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় ৯টি মসজিদ তৈরি হয়। মহানবী (ছাঃ) সর্বপ্রথম মদীনা থেকে ৬ মাইল উত্তরে ‘কুবা’ নামক স্থানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন।[16] মদীনা থেকে আনুমানিক ৯ মাইল দক্ষিণে ‘নাকিউল খাজামাত’ নামক স্থানে আসাদ বিন যুরারাহ (রাঃ)-এর বাড়ীতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মসজিদ-ই বনি যুরায়েখ নামে মদীনায় একটি মসজিদ ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন। মদীনা নগরীর প্রাণকেন্দ্র ‘কালব’ নামক স্থানে এটি অবস্থিত। রাফে‘ বিন মালিক জারকী আনছারী (রাঃ) এ প্রতিষ্ঠানের ইমাম ও শিক্ষক ছিলেন। এখানে কুরআন পঠন-পাঠন ও ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলী শিক্ষা দেওয়া হ’ত।[17] এরপর মহানবী (ছাঃ) মদীনায় মসজিদে নববী প্রতিষ্ঠা করেন।[18] এ সকল মসজিদে ছালাত আদায়ের পাশাপাশি ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হ’ত। ফলে ইসলামের বুনিয়াদ শক্তিশালী হয় এবং ইসলামী জ্ঞানার্জনের পথ সুগম হয়।

মহানবী (ছাঃ) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মসজিদে নববী অল্পদিনের মধ্যেই মুসলমানদের কেন্দ্রীয় শিক্ষায়তনে রূপ লাভ করে। রাসূল (ছাঃ) মসজিদে নববীর ‘সতুনে আবু লুবাবা’ নামক থামের গোড়ায় বসে কুরআনের দরস পেশ করতেন।[19] ছাহাবায়ে কেরাম ছালাত আদায় ছাড়াও কুরআন, হাদীছ অধ্যয়ন করতেন এবং ধর্মীয় বিধান, বিভিন্ন জাতির ইতিহাস ও ভাষা শিক্ষা গ্রহণ করতেন।[20] পরবর্তীতে মদীনার ছোট-বড় মসজিদ-মাদরাসা সমূহ এ কেন্দ্রের সাথে সম্পৃক্ত হয়। প্রথমদিকে মসজিদই শিক্ষাদান ও শিক্ষা গ্রহণের জন্য ব্যবহৃত হ’ত। পরবর্তীতে মসজিদের পাশে মক্তব, মাদরাসা, গ্রন্থাগার, ছাত্র-শিক্ষকদের বাসস্থান ইত্যাদি নির্মিত হয়। অনেক প্রাচীন মসজিদের ধ্বংসাবশেষে ছাত্র-শিক্ষকদের পৃথক কক্ষের নিদর্শন এখনো পাওয়া যায়।[21] আল্লামা শিবলী নো‘মানী বলেন, মদীনার তৎকালীন মসজিদে নববী ইসলামের পূর্ণাঙ্গ দরসগাহ ছিল এবং এটিই আল্লাহ তা‘আলার ইবাদতের স্থান ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রাণকেন্দ্র ছিল।

মদীনায় ইসলামী তা‘লীম প্রদানের বিভিন্ন রূপ পদ্ধতি প্রচলিত ছিল। তন্মধ্যে একটি পদ্ধতি ছিল এই যে, বিভিন্ন গোত্রের কিছু লোক ১০ কিংবা ২০ দিন অথবা ১ বা ২ মাস ধরে মদীনাতে অবস্থান করতেন এবং ইসলামী আক্বীদাহ ও যরূরী মাসআলাসমূহ শিখে নিজেদের গোত্রের লোকদের নিকট ফিরে গিয়ে তাদেরকে তা শিক্ষা দিতেন। আরেকটি পদ্ধতি ছিল, কিছু সংখ্যক লোক মদীনায় স্থায়ীভাবে অবস্থান করে শরী‘আতের বিধি-বিধান ও হুকুম-আহকাম বিষয়ে তা‘লীম গ্রহণ করতেন এবং তা লোকদেরকে শিক্ষা দিতেন।[22] মসজিদে নববীর সাথে আছহাবে ছুফফার ব্যবস্থা ছিল। আবু হুরায়রা (রাঃ)-এর বর্ণনা থেকে জানা যায় যে, আছহাবে ছুফফার শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ৭০ জন। তাঁরা সার্বক্ষণিক শিক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত থেকে কুরআন পাঠ, ইসলামের বিধিবিধান এবং প্রাত্যহিক জীবন বিধানের খুঁটিনাটি বিষয় রাসূল (ছাঃ) থেকে শিক্ষা লাভ করতেন। আবু হুরায়রা (রাঃ), মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ), আবু যর গিফারী (রাঃ) প্রমুখ বিদ্যোৎসাহী ছাহাবী ছিলেন এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম ছাত্র।[23]

মহানবী (ছাঃ) শুধু মক্কা ও মদীনাতেই শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলেননি; বরং তিনি ছাহাবীগণকে ইসলামী শিক্ষা বিস্তারের জন্য দূর দূরান্তে অবস্থিত বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দিতেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি মক্কায় ২৬ জন, কুফায় ৫১ জন, মিসরে ১৬ জন, খুরাসানে ৬ জন ও জাযীরায় ৩ জন ছাহাবীকে প্রেরণ করেন।[24] জ্ঞান বিস্তারের জন্য তিনি বিভিন্ন মসজিদে শিক্ষিত ব্যক্তিদের প্রেরণ করতেন। যেমন-প্রখ্যাত ছাহাবী মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ)-কে তিনি সিরিয়ায় প্রেরণ করেন। তিনি সেখানে মসজিদে মসজিদে বক্তৃতাদানের মাধ্যমে অশিক্ষিত মানুষকে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতেন।[25] মহানবী (ছাঃ) প্রবর্তিত শিক্ষার এ ধারা তাঁর তিরোধানের পরও অব্যাহত থাকে।

ওমর (রাঃ) (৬৩৪-৪৪ খৃঃ) মসজিদ ভিত্তিক প্রাথমিক শিক্ষাদানের সাথে সাথে লিখনীরও ব্যবস্থা করেন। তিনি সপ্তম শতাব্দীতে সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে কুরআন বিশেষজ্ঞদের প্রেরণ করেন। তাঁরা মসজিদে কুরআন-হাদীছের বক্তৃতা দিতেন। এসব বক্তৃতাকে ‘মাওইযা’ বলা হ’ত।[26] এ সকল বক্তৃতা শ্রবণের জন্য খলীফা ওমর (রাঃ) জনগণকে কঠোরভাবে নির্দেশ দিতেন। তিনি রাজ্যের সর্বত্র মক্তব প্রতিষ্ঠা করে তাতে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিযুক্ত করেন এবং বায়তুলমাল থেকে তাদের ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করেন। এমনকি তিনি আরবী সাহিত্য ও আরবী ভাষা শিক্ষা করাকে বাধ্যতামূলক করে ফরমান জারী করেন।[27] তিনি প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অতি প্রয়োজনীয় সূরাগুলি শিক্ষা করা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেন। তাছাড়া প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের নির্দেশ প্রদান করেন যেন প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।[28] ইসলামী শিক্ষার প্রচার-প্রসারের জন্য মদীনায় আয়েশা (রাঃ), আব্দুল্লাহ্ ইব্ন ওমর (রাঃ), আবু হুরায়রা (রাঃ); মক্কায় আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ); কূফায় আলী (রাঃ), আব্দুল্লাহ্ বিন মাসউদ (রাঃ), আনাস ইবনু মালিক (রাঃ); বসরায় আবু মূসা আল-আশ‘আরী (রাঃ); সিরিয়ায় আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ); মিসরে আমর ইবনুল আছ (রাঃ); দামিষ্কে আবুদ দারদা (রাঃ) প্রমুখ ছাহাবীগণকে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।[29]

ওছমান (রাঃ) (৬৪৪-৬৫৩) ইসলামী সাম্রাজ্যে কুরআনিক শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে পূর্ববর্তী খলীফাদের অনুকরণে মসজিদে মসজিদে সুনির্দিষ্ট নিয়মে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেন। তিনি মক্কা, মদীনা, কূফা, বসরা প্রভৃতি স্থানে দারস দানের নতুন নতুন কেন্দ্র গড়ে তোলেন। কুরআন-হাদীছের জ্ঞানে প্রসিদ্ধ ব্যক্তিদের দ্বারা বক্তৃতার ব্যবস্থা করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান বিস্তারের আয়োজন করেন। তিনি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মসজিদ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। মদীনায় মাদরাসা-ই ওছমান (রাঃ) আজও তাঁর স্মৃতি বহন করে চলেছে। তিনি বহু সংখ্যক ছাহাবীকে শিক্ষকতার কাজে নিয়োজিত করেন। তাঁর আমলের শিক্ষা ব্যবস্থা ইসলামের ইতিহাসে ভাস্বর হয়ে আছে। মানুষ যাতে সঠিকভাবে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন পড়তে পারে সেজন্য মহানবী (ছাঃ)-এর সংরক্ষিত কুরআনের পান্ডুলিপি হাফছা (রাঃ)-এর নিকট থেকে সংগ্রহ করে তা সাজিয়ে সংকলন করেন এবং অন্যান্য পান্ডুলিপি পুড়িয়ে ফেলেন; যাতে করে অন্যান্য আসমানী কিতাবের মত আল-কুরআনের কোন রকম সংযোজন-বিয়োজন কিংবা পরিবর্তন-পরিবর্ধন করার সুযোগ না থাকে।[30]

ইসলামের চতুর্থ খলীফা আলী (রাঃ) (৬৫৬-৬৬৯)-এর শাসনামলে মুসলিম সাম্রাজ্যে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটে। তিনি নিজেই মদীনার মসজিদে সাপ্তাহিক বক্তৃতা দিতেন।[31] তিনি আরবী গদ্যের জনক ছিলেন। তাঁর রচিত ‘দীওয়ান-ই আলী’ আরবী সাহিত্যের এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন। তাঁর আমলে মসজিদই শিক্ষার শ্রেষ্ঠ কেন্দ্র ছিল। তিনি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে শিক্ষা প্রসারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। তন্মধ্যে মসজিদে মসজিদে কুরআন শিক্ষার কর্মসূচী ছিল অন্যতম। তিনি মক্কা, মদীনা, কূফা, বসরা প্রভৃতি স্থানে নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছিলেন। কূফায় আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ), তায়েফে আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ), মদীনায় আবু হুরায়রা (রাঃ), আয়েশা (রাঃ) ও মক্কায় আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।[32]

এভাবে সম্মুখে অগ্রসর হয় উম্মতে মুহাম্মাদীর শিক্ষার ইতিহাস। অতঃপর ধীরে ধীরে সমগ্র পৃথিবীতে তা ছড়িয়ে পড়ে। ছাহাবায়ে কেরাম এবং তাদের উত্তরসূরীরা পৃথিবীর সকল মানবতার দুয়ারে দুয়ারে নিয়ে যান ইসলামের সুমহান শিক্ষা। যেখানেই তারা গেছেন সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মানুষ গড়ার কেন্দ্র, প্রজ্জ্বলিত হয়েছে জ্ঞানের আলো; এক নতুন সভ্যতা-সংস্কৃতি মানুষের মধ্যে জাগিয়ে তুলেছে প্রাণচাঞ্চল্য।

উপরের আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, মানবজীবনে নৈতিক গুণাবলী অর্জনের জন্য কুরআন ও হাদীছের যথার্থ শিক্ষা অর্জন করা অপরিহার্য। ইসলামের দৃষ্টিতে শিক্ষা জীবনের সকল দিক ও বিভাগ সংক্রান্ত হ’তে হবে। এক্ষেত্রে দ্বীন ও দুনিয়া বা অন্য কোন দিক দিয়েও কোন ব্যবধান থাকবে না। জীবন ও জগতের সমগ্র দিকই শিক্ষার আওতার মধ্যে আনতে হবে। তাকে বৈষয়িক ও নৈতিক জীবনে সর্বপ্রকার সমস্যার সমাধান হ’তে হবে। মানুষের জন্য এমন একটি যুগোপযোগী ও বৈশিষ্ট্যমন্ডিত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন যার মাধ্যমে জাতি একই সাথে মানবিক ও আত্মিক উৎকর্ষতায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠতে পারে। এ দিকটি সামনে রেখে জাতিকে শিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত করে তুলতে হ’লে প্রথমেই প্রয়োজন একটি সুসমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন ও উন্নয়ন। এর মাধ্যমেই সম্ভব জাতিকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা।

প্রকৃত শিক্ষায় তৈরি হয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ। আবুবকর, ওমর, ওছমান, আলী (রাঃ) সহ অসংখ্য মানুষ এ শিক্ষার ফসল। এ শিক্ষা খালিদ বিন ওয়ালীদ, মূসা বিন নুসাইর, তারিক বিন যিয়াদ, মুহাম্মাদ বিন কাসিমের মত বহু বীর সেনানী ও শিক্ষাবিদ তৈরি করেছে, যারা ছিলেন যুগের শ্রেষ্ঠ পন্ডিত অথচ সৃষ্টিকর্তার প্রতি নিবেদিত। এ শিক্ষায় তরুণ হয় দায়িত্বশীল, কুরআন তার মন ও মননের পরিপূর্ণ ও পরিশুদ্ধ বিকাশের সঠিক ব্যবস্থা করে থাকে।

পরিশেষে বলতে চাই, সকল জ্ঞানের মূল হ’ল আল্লাহর প্রতি নিরংকুশ আনুগত্য। আর আনুগত্য সৃষ্টি হবে সঠিক জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে। তাই ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির স্বার্থে এবং দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণের জন্য আমাদের প্রকৃত জ্ঞান চর্চায় সচেষ্ট হওয়া উচিত। যে জ্ঞান আমাদেরকে ছিরাতে মুস্তাকীমের পথ দেখাবে নিরন্তর। মহান আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন- আমীন!

 ড. মুহাম্মাদ আজিবার রহমান

সহকারী অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, দারুল ইহসান ইউনিভার্সিটি, বারিধারা ক্যাম্পাস, ঢাকা।


[1]. ড. মুহাম্মদ মুজীবুর রহমান, ‘শিক্ষা ব্যবস্থা ইসলামীকরণ’, মাসিক পৃথিবী, বর্ষ ২৫, সংখ্যা-১, অক্টোবর-২০০৫ (ঢাকা : বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার), পৃঃ ৩৬।

[2]. তদেব।

[3]. তদেব।

[4]. মুহাম্মদ আবদুর রব মিয়া আল-বাগদাদী, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা: একটি পর্যালোচনা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকা, ৪১ বর্ষ, ৪র্থ সংখ্যা, এপ্রিল-জুন ২০০২ (ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), পৃঃ ২১।

[5]. তদেব।

[6]. মুহা. হাফিজুর রহমান ফয়সাল, ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা : সময়ের অপরিহার্য দাবি, মাসিক মাদরাসা, বর্ষ ৫, সংখ্যা ১০ম (ঢাকা: ২০০১), পৃঃ ৪২।

[7]. তদেব।

[8]. মুসলিম, মিশকাত হা/২০১।

[9]. সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ, ১ম খন্ড, (ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৯৮৬), পৃ. ৩৩০।

[10]. মিনহাজুল আবেদীন, পৃ. ৩।

[11]. ঐ, পৃ. ৭।

[12]. তদেব।

[13]. তদেব।

[14]. ইতিহাসের আলোকে আমাদের শিক্ষার ঐতিহ্য ও প্রকৃতি, পৃ. ১১।

[15]. ড. মো. আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষা ও সমাজ জীবনে তার প্রভাব, (ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ২০০৪), পৃ. ৪৩।

[16]. ড. আবদুল ওয়াহিদ, বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষা প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি, (ঢাকা : ইসলামী সাংস্কৃতিক পরিষদ, ২০০১), পৃ.২৭।

[17]. বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষা ও সমাজ জীবনে তার প্রভাব, পৃ. ৪৫-৪৬।

[18]. মিহাজুল আবেদীন, পৃ. ৩।

[19]. ঐ, পৃ. ৫০।

[20]. M. Mohar Ali, History of Muslims of Bengal, Vol-1 (Riyad: Imam Muhammad Ibn Sa’ud Islamic University, 1985), P. 828.

[21]. আবদুল হক ফরিদী, মাদ্রাসা শিক্ষা বাংলাদেশ, (ঢাকা: বাংলা একাডেমী, ১৯৮৫), পৃ. ১৩।

[22]. বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষা ও সমাজ জীবনে তার প্রভাব, পৃ. ৫১।

[23]. ঐ, পৃ. ৫২।

[24]. গোলাম আহমদ মোর্তজা, চেপে রাখা ইতিহাস, (বর্ধমান: বিশ্ববঙ্গীয় প্রকাশন, ৭ম সংস্করণ, ১৯৯৮), পৃ. ৩০।

[25]. মোঃ ইসমাইল মিয়া, খুলাফা-ই-রাশেদীনের আমলে শিক্ষা ব্যবস্থা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকা, ৪৩ বর্ষ, ২য় সংখ্যা, অক্টোবর-ডিসেম্বর, (ঢাকা: ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, ২০০৩), পৃ. ১৩৫-৩৬।

[26]. ইতিহাসের আলোকে আমাদের শিক্ষার ঐতিহ্য ও প্রকৃতি, পৃ. ২৮।

[27]. বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষা ও সমাজ জীবনে তার প্রভাব, পৃ. ৫৮।

[28]. ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকা, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৩৫-৩৬।

[29]. বাংলাদেশে মাদরাসা শিক্ষা ও সমাজ জীবনে তার প্রভাব, পৃ. ৫৮।

[30]. ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকা, পৃ. ১৩৭-৩৮।

[31]. ইতিহাসের আলোকে আমাদের শিক্ষার ঐতিহ্য ও প্রকৃতি, পৃ. ২৯।

[32]. ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকা, প্রাগুক্ত, পৃ. ১৩৮-৩৯।






মানব সৃষ্টি : ইসলাম ও বিজ্ঞানের আলোকে - লিলবর আল-বারাদী - যশপুর, তানোর, রাজশাহী
ওশর : দারিদ্র্য বিমোচনের অন্যতম হাতিয়ার - ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম
ইয়াতীম প্রতিপালন (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
কুরবানীর মাসায়েল - আত-তাহরীক ডেস্ক
মানব জাতির সাফল্য লাভের উপায় (৩য় কিস্তি) - হাফেয আব্দুল মতীন - পিএইচ.ডি গবেষক, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মালয়েশিয়া
রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আয় শামিল হওয়ার উপায় - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
কুরআন-হাদীছের আলোকে ক্ষমা - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য শিখন ফলাফলের গুরুত্ব - প্রফেসর ড. শহীদ নকীব ভূঁইয়া
হাদীছের অনুবাদ ও ভাষ্য প্রণয়নে ভারতীয় উপমহাদেশের আহলেহাদীছ আলেমগণের অগ্রণী ভূমিকা - ড. নূরুল ইসলাম
পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার কারণ সমূহ (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
বক্তার আধিক্য ও আলেমের স্বল্পতা - আছিফ রেযা, ছাত্র, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব।
মানবাধিকার ও ইসলাম (৮ম কিস্তি) - শামসুল আলম
আরও
আরও
.