ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিদের রায়ে এক সাথে তিন তালাক প্রথা ‘অসাংবিধানিক’ বলে ঘোষণা করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। তিন তালাক প্রথাটি ইসলাম ধর্ম পালনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত নয় বলেও জানিয়েছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত।
পাঁচ সদস্যের ঐ সাংবিধানিক বেঞ্চের দুই সদস্য আপাতত তিন তালাক প্রথা বন্ধ রেখে নির্দিষ্ট আইন তৈরীর জন্য সরকারকে নির্দেশ দিলেও অন্য তিন বিচারক এই প্রথাকে সরাসরি অসাংবিধানিক বলে রায় দেন। তাঁরা একে অনৈসলামিক বলেও ঘোষণা করেন। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকের রায়ের ভিত্তিতে এখন থেকে ভারতে একত্রে তিন তালাক প্রথা নিষিদ্ধ হয়ে গেল।
ভারতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষ বেঞ্চ এই মামলার বিচার করেছে। যদিও বিচারপতিদের ধর্মীয় পরিচয় ভারতের আইন ও বিচারব্যবস্থায় আলাদা কোন প্রভাব ফেলে না, তবুও এই পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বেঞ্চটিতে পাঁচ জন ভিন্ন ধর্মী বিচারক ছিলেন। একজন করে মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, পার্শি ও হিন্দু ধর্মের বিচারক ছিলেন এখানে।
একত্রে তিন তালাক প্রথা নিয়ে ভারতে বিতর্ক অনেকদিনের। দেশটির ‘মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড’ বলছে, একসঙ্গে তিনবার তালাক উচ্চারণ করে বিবাহ বিচ্ছেদ শরী‘আত বিরোধী।
তবে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি মুসলিম নারী সংগঠন এবং কয়েকজন তালাক প্রাপ্তা মুসলিম নারীর দায়ের করা মামলাগুলোর কারণে একত্রে তিন তালাক প্রথা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। যদিও মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত একটি প্রথা নিয়ে এই মামলা। কিন্তু এক হিন্দু নারীর দায়ের করা একটি মামলা চলাকালে এর সূত্রপাত হয়েছিল।
[আমরা এই রায়কে স্বাগত জানাই। তিন মাসে তিন তালাক দেওয়াই হ’ল কুরআনী বিধান। সেই শাশ্বত বিধান লংঘন করে হানাফী মাযহাবের নামে চলছে এক মজলিসে একত্রে তিন তালাক দেওয়ার বিদ‘আতী প্রথা। ফলে এরই মন্দ প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে ‘হিল্লা’ নামক আরেকটি নোংরা জাহেলী প্রথা। আদালতের উচিৎ এই সাথে হিল্লা প্রথা নিষিদ্ধ করা। বাংলাদেশের পারিবারিক আইনে ১৯৬১-এর বিধান অনুযায়ী তিন মাসে তিন তালাকের কুরআনী বিধান চালু আছে। অতঃপর ১.১.২০০১ সালে হাইকোর্ট হাদীছের বিধান অনুযায়ী ‘হিল্লা’ নিষিদ্ধ করে। কিন্তু মাযহাবের দোহাই দিয়ে এখনও সমাজে এগুলি চালু আছে। অতএব সচেতন নাগরিকদের উচিৎ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া (স.স.)]