স্বদেশ
বাংলাদেশ ও নেপাল ভারতের চেয়ে শান্তিপূর্ণ
এ বছরের বিশ্বশান্তি সূচক (জিপিআই) অনুযায়ী, নেপাল ও বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ। আর বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ হচ্ছে আইসল্যান্ড। গত ১৩ জুন এই সূচক প্রকাশ করা হয়। বিশ্বের ১৫৮টি দেশের পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে। ‘ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিসে’র প্রকাশ করা সূচক অনুযায়ী গত বছরও বিশ্বের শান্তিপূর্ণ দেশের শীর্ষে ছিল আইসল্যান্ড। বিশ্বের শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে এ বছর দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ডেনমার্ক ও নিউজিল্যান্ড। চতুর্থ স্থানটি দখল করেছে কানাডা। পঞ্চম স্থানে রয়েছে জাপান। এই সূচকে বাংলাদেশের স্থান হয়েছে ৯১ নম্বরে। এছাড়া তালিকায় ভুটান ১৯, যুক্তরাজ্য ২৯, নেপাল ৮০, ভারত ১৪২ ও পাকিস্তান ১৪৯তম স্থানে রয়েছে। সর্বশেষ স্থানে রয়েছে সোমালিয়া।
ইন্টারনেটে আয়ের নামে প্রতারণা
ইন্টারনেটভিত্তিক আউটসোর্সিং কাজ এখন এমএলএম ব্যবসায় রূপান্তর করেছে অসাধু একটি চক্র। কমপক্ষে ৭-৮টি কোম্পানী এই ব্যবসায় প্রতারণার ফাঁদ পেতে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সারা দেশে প্রায় অর্ধকোটি মানুষকে ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে তারা সর্বনাশ করছে। বিশেষ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাসহ বেকাররা এই ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
‘পেইড টু ক্লিক’ করেই ডলার আয়ের লোভনীয় ফাঁদ পেতে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে যেসব কোম্পানী সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- স্কাইল্যান্সার, ডোল্যান্সার, অনলাইন অ্যাড ক্লিক, বিডিএস ক্লিক সেন্টার, অনলাইন নেট টু ওয়ার্ক, বিডি অ্যাডক্লিক, শেরাটন বিডি, ইপেল্যান্সার। এরা মূলত এই ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে এন্ট্রি ফি বাবদ সাড়ে সাত হাযার টাকা সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে প্রতি মাসে ২১৫০ টাকা হারে আয় করা যায়। আর প্রতিষ্ঠান ভেদে নিয়ম অনুযায়ী একজন সদস্য আরেকজন সদস্য ভর্তি করাতে পারলে তাকে সদস্য প্রতি নিবন্ধন ফির কমবেশি ১০ শতাংশ টাকা দেওয়া হয়। অতি সম্প্রতি ডোল্যান্সার নামক কোম্পানীটি উধাও হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে তারা সাড়ে তিন লক্ষ গ্রাহকের নিকট থেকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
কেইস স্টাডি :
(১) প্রতারণার শিকার ঢাকার ইয়াসমীন আঁখি ২০১১-এর নভেম্বরে ডোল্যান্সারের সদস্য হন। দেড় শতাধিক আইডি কেনেন সাড়ে তিন লাখ টাকায় এবং ইনভেস্টর সদস্য হন পাঁচ লাখ টাকায়। প্রথম দুই মাসে পান প্রায় এক লাখ টাকা। কিন্তু পরের সাত মাসে একটি টাকাও পাননি।
(২) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র সুমন ঘোষ বলেন, ‘আমার ঢাকায় থাকার জায়গা হারিয়েছি, গ্রামেও যেতে পারছি না। গ্রামের বাড়িতে আত্মীয়স্বজনদের দুই শতাধিক আইডি কিনে দিয়েছি। আমার কথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাঁচশর বেশি আইডি কিনেছে। কোথাও এখন মুখ দেখানোর জায়গা পাচ্ছি না’।
(৩) উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের মুহাম্মাদ শাওন ডোল্যান্সারের স্টার সদস্য। চাকরি করতেন টঙ্গীর বেলা টেক্সটাইলের ডায়িং এক্সিকিউটিভ হিসাবে। চাকরি ছেড়ে দিয়ে বেশি উপার্জনের আশায় গত জানুয়ারী মাসে সাড়ে আট লাখ টাকায় ডোল্যান্সারের ইনভেস্টর সদস্য হন। তাঁর আইডি আছে ২৪টি। কিন্তু প্রথম মাসে টাকা পেলেও আজ পর্যন্ত আর কোনো টাকা পাননি তিনি। শাওন বলেন, ‘ডোল্যান্সার আমাকে রাস্তার ফকির বানিয়েছে। এখন আমার মরা ছাড়া কোনো গতি নাই’।
(৪) প্রতারিত আবু সাঈদ মাহিন ডোল্যান্সারের স্টার সদস্য। তিনি বলেন, ‘ক্লিক করে ডলার উপার্জনের জন্য এক লাখ পাঁচ হাজার টাকায় ১৬টি আইডি কিনেছিলাম। আমার কথামতো বাবা ও বড় বোনও ছয় লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ করে আইডি কেনেন এবং লিজ ইনভেস্টর সদস্য হন। এখন আমাদের পুরো পরিবার টাকা হারিয়ে পাগলের মতো। বাবার পেনশনের পুরো টাকাটাই শেষ হয়ে গেছে।
চট্টগ্রাম নার্সিং কলেজে হিজাব নিয়ে তুলকালাম; অবশেষে অনুমতি প্রদান
চট্টগ্রাম সরকারী নার্সিং কলেজে হিজাব নিয়ে তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কলেজের শিক্ষিকাদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় এবং শিক্ষার্থীদের একটি কক্ষে আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে। প্রায় শতাধিক হিজাব পরিধানকারী ছাত্রী হিজাব এবং ছালাত আদায়ের কারণে তাদেরকে ক্লাস, পরীক্ষা এবং ওয়ার্ডে ডিউটিসহ সকল ক্ষেত্রে পদে পদে বাধা দেয়ার নজিরবিহীন নির্যাতনের কথা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরে।
ছাত্রীরা জানান, পূর্বে তাদের হিজাব নিয়ে সমস্যা করলেও এবার তাদের ছালাত আদায় এবং ছালাত ঘরের জায়গা নিয়েও কলেজ কর্তৃপক্ষ নতুনভাবে ঝামেলা করছে। গত ২রা জুলাই সকালে অধ্যক্ষের নেতৃত্বে একদল শিক্ষিকা হোস্টেলের একটি কক্ষে শিক্ষার্থীদের ছালাত ঘরে রীতিমত হামলে পড়ে। তারা সেখানে রাখা বিভিন্ন ধর্মীয় পুস্তক নিয়ে কটাক্ষ করে এবং ছাত্রীদের ধর্ম পালন নিয়ে কটূক্তি করে। এ সময় অঞ্জলী দেবী নামে এক শিক্ষিকা জুতা পরে ছালাত ঘরে প্রবেশ করে ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘নামাজ ঘরে জুতা নিয়ে ঢুকেছি, কই আল্লাহ আমাকে কি করেছে’? এছাড়া অধ্যক্ষ তাদের বলেন, ‘ছালাত আদায় করলে কে দেখে? সেবা করলে ছালাত আদায় করতে হয় না’। অবশেষে ৫ই জুলাই ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে কলেজ কর্তৃপক্ষ হিজাব পরিধান ও ছালাত আদায়ের জন্য অনুমতি প্রদান করেছে।
উল্লেখ্য, নার্সিং অধিদফতরের অধীনে ৪ বছর মেয়াদী বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স নিয়ে চট্টগ্রাম সরকারী নার্সিং কলেজ ২০০৮ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে। শুরু থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন অন্যায় আচরণ এবং সেশন জটের কারণে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কলেজটি একাধিকবার বন্ধ ঘোষিত হয়।
দ্রব্যমূল্যের চাপে চিড়ে-চ্যাপ্টা সাধারণ মানুষ
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। গত অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতির হার সাড়ে ৭ শতাংশে রাখার ঘোষণা দেয়া হলেও বছর শেষে এর হার দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৬২ শতাংশে। এদিকে দ্রব্যমূল্য ধারাবাহিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। খাদ্যদ্রব্যের উচ্চমূল্য তো রয়েছেই, এর মধ্যে বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের খরচও যেন সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর খানা আয়-ব্যয় জরিপে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালে গড় জাতীয় পারিবারিক আয় ছিল ৭ হাজার ২০৩ টাকা। ২০১০ সালে তা দাঁড়ায় ১১ হাজার ৪৭৯ টাকায়। বৃদ্ধির হার ৫৯ শতাংশ। ব্যয়ের হিসাবে দেখানো হয়েছে, পরিবারপ্রতি গড় মাসিক খরচ ২০০৫ সালের তুলনায় বেড়েছে ৮৪.৫ শতাংশ। ৫ বছর আগে মাসিক আয় ৫ হাজার ৯৬৪ টাকা হলে একটি পরিবারের চলে যেত। এখন সেখানে লাগছে ১১ হাজার ৩০০ টাকা।
ওষুধের দাম বাড়ছে, বাড়ছে ভেজালও
ওষুধের দাম শুধু বাড়ছেই। ওষুধ কোম্পানীগুলো বাড়তি লাভের জন্য ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে। ওষুধের বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি বলছে, গত ছয় মাসে এক হাজার ২০০টির বেশি ওষুধের দাম বেড়েছে। ওষুধ ভেদে দাম ২০ থেকে ১০০ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে ওষুধের দাম বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে ভেজাল ওষুধ। বাজার ছেয়ে গেছে নকল ওষুধে। জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়লেও রহস্যজনক কারণে নীরব ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে ২৫৮টি অ্যালোপ্যাথ, ২২৪টি আয়ুর্বেদ, ২৯৫টি ইউনানী ও ৭৭টি হোমিওপ্যাথসহ মোট ৮৫৪টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বছরে ওষুধ বিক্রি হচ্ছে আট হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে ৫৫০ কোটি টাকার ওষুধ ভেজাল হচ্ছে। ওষুধ কোম্পানীগুলোর মধ্যে বড়জোর ৪০টি ছাড়া বাকী প্রতিষ্ঠানগুলো নকল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সাভারে ডেসটিনি সদস্যের আত্মহত্যা
‘আমি হেরে গেলাম, পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলাম’
গ্রাহকের টাকা ফিরিয়ে দিতে না পেরে সাভারে মোয়াজ্জেম হোসেন শাহীন নামে ডেসটিনি-২০০০-এর এক সদস্য আত্মহত্যা করেছে। সাভার উপযেলা চত্বরে তার ‘শাহীন স্টোর’ নামে একটি স্টেশনারি দোকান ছিল। এর পাশাপাশি বেশ কিছুদিন ধরে তিনি ডেসটিনি-২০০০ প্রাইভেট লিমিটেড’র সদস্য সংগ্রহের কাজ করতেন। নিহতের স্ত্রী রোকেয়া আক্তার জানান, হঠাৎ ডেসটিনির কার্যক্রম বন্ধ হওয়ায় তার সংগ্রহ করা সদস্যরা জমা রাখা টাকা ফেরত দিতে চাপ দেয়। এছাড়া ব্যবসা করতে গিয়েও কয়েক লাখ টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এতে বেশ কিছুদিন ধরে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরিবারেও অশান্তি চলছিল।
নিহতের বড় বোন নাসিমা আক্তার বলেন, ২২ জুন শুক্রবার রাত সোয়া ১২টার দিকে ভাইয়ের মোবাইল থেকে একটি ম্যাসেজ আসে। তাতে লেখা ছিল- আমি হেরে গেলাম, আমি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলাম, আমাকে মাফ করে দিয়েন’।
বিনা দোষে ১২ বছর ভারতের জেলে
যাত্রা দেখতে গিয়ে বিনা দোষে প্রায় ১২ বছর ভারতের কারাগারে কাটাতে হল কুড়িগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনের ছেলে আশিক ইকবাল মিল্টনকে। গত ৭ই জুলাই দেশে ফিরে মিল্টন সাংবাদিকদের জানায়, ভুরুঙ্গামারী ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়াকালীন ২০০০ সালের ১১ ডিসেম্বর রাতে বন্ধুদের সাথে সে ভারতের কুচবিহারের দিনহাটা থানার ছাহেবগঞ্জ বাজারে যাত্রা পালা দেখতে যায়। ফেরার পথে আরো ৩০ জনের সঙ্গে ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী বিএসএফ-এর হাতে আটক হয় মিল্টন। তবে ক্যাম্প থেকে বিএসএফ অন্যদের ছেড়ে দিলেও মিল্টনকে আটকে রাখে। এরপর মুক্তি পেলেও পুনরায় গ্রেপ্তার হয়। এরপর ভারতের বিভিন্ন কারাগারে কেটে যায় তার ১২টি বছর।
সে বলে যে, ভারতের একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় এক নেতার নাম মিহির দাস ওরফে মিল্টন। তাকে ধরতে ব্যর্থ হওয়ায় ভারতীয় পুলিশ অন্যায়ভাবে তার নামে চার্জশীট দেয়। সেই বিচারেই এতদিন সে আটকে ছিল।
বিদেশ
ভারতীয় তরুণদের ১৪ এবং তরুণীদের ১৬ শতাংশ আত্মহত্যা করে
ভারতে তরুণদের ১৪ ও তরুণীদের ১৬ শতাংশ আত্মহত্যা করে। এটা ভারতীয় তরুণদের মৃত্যুর দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণে পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক বিখ্যাত সাময়িকী ল্যান্সেটের এক জরিপের ফলাফলে এ তথ্য উঠে এসেছে । এ জরিপে আরো বলা হয়েছে, ভারতে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় যত ব্যক্তি মারা যায়, ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তত সংখ্যক তরুণ দেশটিতে আত্মহত্যা করে।
১৫ বছরের বেশি ভারতীয়দের মধ্যে তিন শতাংশ আত্মহত্যা করে বলে ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেলের হিসাবে বলা হয়েছে। জাতিসংঘের মৃত্যু সংক্রান্ত পূর্বাভাসকে ভিত্তি করে এ জরিপের গবেষকরা বলছেন, ২০১০ সালে ভারতে এক কোটি ৮৭ লাখ ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছে। তাদের মধ্যে ৪০ শতাংশ ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী এবং ঐ একই বয়সের নারীদের ৫৬ শতাংশ আত্মহত্যা করে।
মরেও শান্তি নেই!
হংকংয়ে জমির দাম এতই বেড়েছে যে জনগণ এখন মরেও শান্তি পাচ্ছে না। সেখানে মারা যাওয়ার পর একজন মানুষকে সমাহিত করতে দরকারী এক টুকরা জমির দাম আড়াই লাখ হংকং ডলার। যা ৩২ হাজার ২০০ মার্কিন ডলারের সমান। জমির এই উচ্চমূল্যের কারণে হংকংয়ে এখন মরদেহ ভস্ম করার পর তা সাগরে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। তবে শুরুর দিকে এ বিষয়টি মেনে নিতে পারছিল না হংকংবাসী। বাস্তবতার কারণে ধীরে ধীরে সাগরে সৎকারের বিষয়টি মেনে নিচ্ছে তারা।
সরকারীভাবে সমাহিত করার জমি পেতে ছয় বছরের চুক্তিতে এমন এক টুকরা জমি পাওয়া যায় তিন হাজার ১৯০ হংকং ডলারে। আর বেসরকারী পর্যায়ে এর জন্য খরচ করতে হয় অন্তত দশগুণ অর্থ।
বিশ্বে বছরে ১৩০ কোটি টন খাবার অপচয় হয়
সারা বিশ্বে প্রতি বছর যে পরিমাণ খাদ্য উৎপাদিত হয়, এর তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ খেতে পারে না। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরবরাহের সময় নষ্ট হয় বা ভোক্তারাই তা অপচয় করে। এভাবে প্রতি বছর প্রায় ১৩০ কোটি টন খাদ্যের অপচয় হয়। সম্প্রতি জাতিসংঘের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
ঐ প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপের ভোক্তা সাধারণ প্রতি বছর প্রায় ২২ কোটি ২০ লাখ টন খাবার ভালো ও তাজা অবস্থায় ফেলে দেয়। যা গোটা সাব-সাহারান অঞ্চলে প্রতি বছরে উৎপাদিত খাদ্যের (২৩ কোটি টন) কাছাকাছি। প্রকৃতপক্ষে বেশির ভাগ খাবার নষ্ট হয় মধ্য ও উচ্চ আয়ের দেশে। সেখানকার ভোক্তারা ভালো ও তাজা খাবারও ফেলে দেয়। নিম্ন আয়ের দেশের মানুষ খাবার কম অপচয় করে, তবে পরিবহনের সময় খাবার নষ্ট হয় বেশি।
[আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার প্রতিপালকের প্রতি নিতান্তই অকৃতজ্ঞ’ (ইসরা ২৭)]
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কারণে হিন্দু জঙ্গীদের বর্বর নির্যাতনের শিকার ভারতের এক নারী সংসদ সদস্য
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কারণে প্রায় ১০০ হিন্দু জঙ্গীর হাতে বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভারতের আসামের ৩৩ বছর বয়সী রুমি নাথ নামের একজন নারী সংসদ সদস্য। এক মাস আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে একজন মুসলমানকে বিয়ে করা এই সংসদ সদস্য জানান, ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রতিশোধ নিতেই তারা এ হামলা চালিয়েছে। এমনকি তারা তাকে ধর্ষণ করার এবং কাপড়-চোপড় খুলে ফেলার চেষ্টা করে। তিনি এ হামলার পেছনে মৌলবাদী বিজেপিকে দায়ী করেছেন। বর্বরোচিত এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে রুমি নাথের দল কংগ্রেস পার্টি।
[অথচ এদেশে যখন বিদেশী এনজিওরা টাকার লোভে ফেলে শত শত মানুষকে খৃষ্টান বানাচ্ছে তখন আমাদের নেতৃবৃন্দ ধর্মনিরপেক্ষতার দোহাই দিয়ে চুপ করে থাকছে (স.স.)]
ইউরোপে সংসার চলছে শরীরের অঙ্গ বিক্রি করে
ইউরোপে দারিদ্র্য এমন চরম সীমায় উপনীত হয়েছে যে, বর্তমানে সেখানে মানুষ অঙ্গ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চরম দারিদ্রে্যর শিকার হয়ে অনেক ইউরোপীয় এখন তাদের কিডনি, ফুসফুস অথবা চোখের কর্নিয়া বিক্রি করছে। স্পেন, ইতালী, গ্রিস ও রাশিয়ার নাগরিকরা বিজ্ঞাপন দিয়ে অদরকারী অঙ্গ বিক্রি করছে। এছাড়া চুল, শুক্রাণু এবং বুকের দুধও বিক্রি হচ্ছে। ইন্টারনেটে ফুসফুসের দাম হাঁকা হচ্ছে আড়াই লাখ ডলার পর্যন্ত। মূলতঃ বেকারত্ব চরম আকার ধারণ করায় অনেকে অঙ্গ বিক্রি করতে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
সার্বিয়ার বেলগ্রেডের বাশিন্দা মিরকভ ৪০ হাজার ডলারে তার কিডনি বিক্রি করার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছে। তার দাবী, ‘আমার অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমি চাকরি হারিয়েছি এবং আমার দুই সন্তানের স্কুলের জন্য টাকা দরকার’। তিনি বলেন, ‘যখন আপনার টেবিলে খাবার রাখাটাই বড় কথা তখন কিডনি বিক্রি খুব বড় ধরনের ত্যাগের ব্যাপার নয়।’
[হে আল্লাহ! তুমি পুঁজিবাদের অভিশাপ থেকে মানুষকে বাঁচাও! আমাদের দেশের পুঁজিবাদীরা সাবধান হবেন কি? (স.স.)]
বাবরী মসজিদ ধ্বংসের সময় পূজোয় ব্যস্ত ছিলেন নরসিমা রাও
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় কয়েক হাজার উগ্র হিন্দুর তান্ডবে যখন ধীরে ধীরে গুঁড়িয়ে যাচ্ছিল সাড়ে চারশ’ বছরের পুরনো বাবরী মসজিদ, তখন দিল্লীতে নিজের সরকারী বাসভবনে পূজা-অর্চনায় ব্যস্ত ছিলেন নরসিমা রাও। ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার কুলদীপ নায়ারের সদ্য প্রকাশিত বই ‘বেয়ন্ড দ্য লাইনস’ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাবরী মসজিদ ধ্বংসে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের পুরোপুরি মদদের অভিযোগটা আগেও উঠেছে। আদালতের কাছে অযোধ্যার বিতর্কিত রাম জন্মভূমি এলাকার বাইরে প্রতীকী করসেবার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও যখন গেরুয়া ঝান্ডাধারীরা পুলিশি বেষ্টনী অতিক্রম করে বাবরী মসজিদের গম্বুজের উপর উঠে পড়ে, তখনই নয়াদিল্লীতে সে খবর পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু উত্তর প্রদেশের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের কথায় ভরসা রেখে (?) নিরুদ্বেগ ছিলেন নরসিমা রাও। সময়োচিত কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের পরিবর্তে দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে বাবরী মসজিদ ধূলিস্যাৎ হওয়ার প্রতীক্ষা করছিলেন তিনি। আর স্বাধীন ভারতবর্ষের অন্যতম কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর নেহাতই আইওয়াশের জন্য কল্যাণ সরকারকে তিনি বরখাস্ত করেন।
কুলদীপ নায়ারের অভিযোগ, ৬ ডিসেম্বর দুপুরে অযোধ্যায় বাবরী মসজিদ ধ্বংস শুরু হওয়ার খবর পেয়েই নিজের বাসভবনে পূজোয় বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাও। বিকেলে প্রথম মোগল সম্রাটের সেনাপতি মীর বাঁকির তৈরি এই ঐতিহাসিক মসজিদের তৃতীয় গম্বুজটির পতনের পরই পূজো ছেড়ে উঠেছিলেন তিনি। ভারতের পরলোকগত সোশ্যালিস্ট নেতা মধু লিমায়েকে উদ্ধৃত করে কুলদীপ নায়ার লিখেছেন, পূজো চলাকালীন বারবারই প্রধানমন্ত্রীর কানে বাবরী মসজিদ ধ্বংসের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর অনুচররা। কিন্তু তিনি ছিলেন নিরুদ্বেগ, নিরুত্তাপ ও নিশ্চুপ।
[জি হাঁ! ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষতার জন্ম। অতএব মুসলমান ও মসজিদ হত্যা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের কাছে পুণ্যকর্ম হিসাবে বিবেচিত। বাংলাদেশীদের চোখ খুলবে কি? (স.স.)]
খরার কবলে যুক্তরাষ্ট্রের ৫৬ শতাংশ এলাকা
যুক্তরাষ্ট্রের ৫৬ শতাংশ এলাকা খরার কবলে পড়েছে এবং ক্রমেই পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। জানা গেছে, নিমণাঞ্চলীয় ৪৮টি অঙ্গরাজ্যের অর্ধেকের বেশি অঞ্চলে খরা পরিস্থিতি চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। গত এক যুগের মধ্যে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ খরা। এর আগে ভয়াবহ খরা দেখা দিয়েছিল ২০০৩ সালে। সে সময় নিমণাঞ্চলীয় ৪৮টি রাজ্যের ৫৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ খরার কবলে পড়েছিল।
[সারা বিশ্বের নিরপরাধ হাযার হাযার আদম সন্তানকে হত্যার ইলাহী শাস্তি এগুলো। একদিকে চলছে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস। অন্যদিকে দাবানল এবং এখন খরা। একটার পর একটা গযব নাযিল হচ্ছেই। এর পরেও শান্তিতে নোবেল জয়ী নেতাদের ড্রোন হামলা ও অমানবিক কর্মকান্ড বন্ধ হচ্ছে না। বিশ্ব যখন অসহায়, আল্লাহ তখন তাঁর শাস্তি নামিয়ে দিয়েছেন। আমরা মানুষের হেদায়াত কামনা করি (স.স.)]
অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করছে ইসলাম
অস্ট্রেলিয়ায় ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা ব্যাপকহারে কমলেও অন্যান্য ধর্মের তুলনায় ইসলাম সবচেয়ে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ছে বলে এক জরিপ থেকে জানা গেছে। অস্ট্রেলিয়ায় ১৯৭৬ সালে মুসলমানের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪৪ হাযার ৭১ জন। কিন্তু এখন দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা চার লাখ ৭৬ হাযার ২৯১ জন। অর্থাৎ তখন থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মুসলমানের সংখ্যা দশ গুণ বেড়েছে। মুসলমানরা এখন অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার শতকরা ২ দশমিক ২ ভাগ। গত ৫ বছরে তাদের সংখ্যা বেড়েছে শতকরা ৪০ ভাগ।
মূলতঃ দেশে ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে। কমে আসছে খ্রিস্টানের সংখ্যাও। ১৯১১ সালে দেশটির শতকরা ৯৬ ভাগ নাগরিক ছিলেন খ্রিস্টান। ১৯৭৬ সালে এ হার ছিল শতকরা ৮৯ ভাগ। ৩৫ বছর পর এখন দেশটিতে এ হার ৬১ শতাংশ। বর্তমানে দেশের ২২% বা প্রায় ৪৮ লাখ নাগরিক বলছেন, তারা কোন ধর্মে বিশ্বাস করেন না। অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী কয়েকটি ধর্ম রয়েছে। এসব ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ৭ হাযার ৩৬৩।