ঘুমের কতিপয় সুন্নাতী পদ্ধতি ও আধুনিক বিজ্ঞান

পৃথিবীতে সকল প্রাণী ঘুমায়। এমন কোন প্রাণীর সন্ধান পাওয়া যায়নি যারা ঘুমায় না। কিন্তু প্রত্যেকের ঘুমের আলাদা ধরন এবং পদ্ধতি রয়েছে। যেমন ঘোড়া দঁাড়িয়ে ঘুমায়, বাদুর উল্টো ঝুলে থেকে ঘুমায়, সুইফট পাখি উড়ন্ত অবস্থায় ঘুমায়, ডলফিন ঘুমানোর সময় তার অর্ধ মস্তিষ্ক জেগে থাকে এবং একচোখ খোলা থাকে ইত্যাদি। সাধারণত পশু-পাখিরা তাদের ঘুমানোর ধরন পরিবর্তন করে না। কিন্তু মানুষের ঘুমানোর পদ্ধতি বিভিন্ন ধরনের। যেমন- কেউ ডান পাশ ফিরে ঘুমায়, কেউ বাম পাশ ফিরে ঘুমায়, কেউ উপুড় হয়ে ঘুমায়, কেউ চিত হয়ে ঘুমায়। পশু-পাখিদের ঘুমানোর পদ্ধতি শেখার প্রয়োজন হয় না। কারণ পশু-পাখির ভাল-মন্দ কর্মের কোন হিসাব হবে না। কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন তাদের পরীক্ষা করার জন্য। কে কর্মে উত্তম এই পরীক্ষা মানুষকে দিতে হবে। আল্লাহ বলেন,الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ، ‘যিনি মৃত্যু ও জীবনকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য, কে তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক সুন্দর আমলকারী? আর তিনি মহাপরাক্রান্ত ও ক্ষমাশীল’ (মূলক ৬৭/২)

মানুষের চলাফেরা, উঠাবসা, ঘুম-বিশ্রাম সবকিছুরই শরী‘আত নির্ধারিত রীতি পদ্ধতি রয়েছে। যা পালনে নেকী লাভ এবং লংঘনে নেকী থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক নানা ক্ষতির সম্মুখীন হ’তে হয়। তেমনি একটি বিষয় হ’ল ঘুম। আল্লাহ বলেন, وَجَعَلْنَا نَوْمَكُمْ سُبَاتًا، ‘এবং তোমাদের জন্য নিদ্রাকে করেছি ক্লান্তি দূরকারী’ (নাবা ৭৮/৯)

একজন মানুষ যখন ঘুমায় তখন তার শরীরে বিবিধ কার্যক্রম সংঘটিত হয়। যেমন-

ঘুমানোর ফলে শরীরের Immune cell এবং প্রোটিন বিভিন্ন রোগবালাই যেমন- ঠান্ডা, সর্দি ইত্যাদির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য বিশ্রাম পায়। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমালে ক্ষুধা ও স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং অল্প ঘুমের কারণে Cortisol নামক এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়, যা হার্টের ক্রিয়া জটিল করে দেয়।[1] আলোচ্য নিবন্ধে আমরা ঘুমের রীতি-পদ্ধতি এবং এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা উপস্থাপনের প্রয়াস পাব।-

ঘুমানোর সময় বাতি নিভিয়ে ঘুমানো :

আমরা স্বাভাবিকভাবে রাতের বেলায় ঘুমাই। রাতের বেলা ঘুমানোর সুন্নাতী পদ্ধতি হ’ল বাতি নিভিয়ে ঘুমানো অর্থাৎ অন্ধকার পরিবেশ তৈরী করা। জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, أَطْفِئُوا الْمَصَابِيحَ عِنْدَ الرُّقَادِ ‘ঘুমানোর সময় বাতি নিভিয়ে দাও’।[2] কিন্তু আমাদের অনেকে রাতের বেলা আলো জ্বালিয়ে ঘুমায়। যা সুন্নাতসম্মত নয়।

ঘুমানোর জন্য অন্ধকার কেন যরূরী?

মানুষের মস্তিষ্ক খুবই সংবেদনশীল। মস্তিষ্ক খুব সামান্য পরিমাণ আলোও বুঝতে পারে। যদি ঘুমানোর সময় অন্ধকার না থাকে তবে মস্তিষ্ক মেলাটনিন নামক হরমোন উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এই মেলাটনিন হরমোন শরীরের Circadian rhythms (শারীরিক, মানসিক এবং আচরণের স্বাভাবিক চক্র যা ২৪ ঘন্টায় শরীরে মধ্য দিয়ে যায়) নিয়ন্ত্রণ করে।[3]

উপুড় হয়ে ঘুমানো নিষেধ :

অনেকে উপুড় হয়ে ঘুমায় যা পেটের উপর ঘুমানো নামে পরিচিত। এ ধরনের ঘুমের ব্যাপারে হাদীছের নির্দেশনা হ’ল- আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জনৈক ব্যক্তিকে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে দেখে বললেন, هَذِهِ ضَجْعَةٌ لاَ يُحِبُّهَا اللهُ ‘এ ধরনের শয়ন আল্লাহ তা‘আলা পসন্দ করেন না।[4] অর্থাৎ যে কাজ আল্লাহ তা‘আলা অপসন্দ করেন তা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।

এক্ষণে আমরা দেখব বিজ্ঞান এই ধরনের ঘুমের ব্যাপারে কি বলে? কেউ যদি উপুড় হয়ে ঘুমায় তবে তার পেট এবং বুকে চাপ পড়ে। ফলে সে ডায়াফ্রাম্যাটিক শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগবে। ডায়াফ্রাম হ’ল শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রধান গম্বুজ আকৃতির পেশী যা ফুসফুসের নীচে অবস্থিত। নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় এটি সংকুচিত হয় এবং চ্যাপ্টা হয়ে যায় ও বুকের গহবর বড় হয়ে যায়। এই সংকোচন একটি শূন্যস্থান তৈরী করে, যা ফুসফুসে বাতাস টানে। যখন নিঃশ্বাস ছাড়ে তখন ডায়াফ্রাম পূর্বের গম্বুজ আকৃতিতে ফিরে আসে এবং বল প্রয়োগে ফুসফুস থেকে বাতাস বের করে দেয়। দীর্ঘ সময় উপুড় হয়ে ঘুমালে তার মাথা ডান বা বাম দিকে ঘুরিয়ে রাখতে হয়। ফলে তাতে ঘাড়ের পেশীগুলোতে চাপ পড়ে, যা মস্তিষ্কের রক্ত প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটায়। উপুড় হয়ে ঘুমালে পিঠ এবং মেরুদন্ডে চাপ পড়ে। কারণ হ’ল, একজন মানুষের অধিকাংশ ওযন শরীরের মধ্য অংশে বিদ্যমান থাকে। এই অবস্থায় মেরুদন্ড তার ভারসাম্য সঠিকভাবে রাখতে পারে না। মেরুদন্ডের উপর চাপ শরীরের অন্যান্য অংশে চাপ বাড়ায়। উপরন্তু, যেহেতু মেরুদন্ড স্নায়ুর জন্য একটি পাইপলাইন, তাই মেরুদন্ডের চাপ শরীরের যে কোন জায়গায় ব্যথার কারণ হ’তে পারে। ফলে একজন মানুষ ঝঁাকুনি এবং অসাড়তাও অনুভব করতে পারে। এই কারণে উপুড় হয়ে ঘুমানো শরীরের জন্য ক্ষতিকর।[5]

ঘুমানোর আগে বিছানা ঝেড়ে ফেলা এবং ডান কাতে শোয়া :

ঘুমানোর সুন্নাতী পদ্ধতি হ’ল ঘুমানোর পূর্বে বিছানা ঝেড়ে ফেলা। এরপর ডান দিকে কাত হয়ে শোয়া। অর্থাৎ ডান কঁাধের উপর ভর দিয়ে ঘুমানো।

আবু হুরায়রাহ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,إِذَا أَوَى أَحَدُكُمْ إِلَى فِرَاشِهِ فَلْيَنْفُضْ فِرَاشَهُ بِدَاخِلَةِ إِزَارِهِ، فَإِنَّهُ لاَ يَدْرِى مَا خَلَفَهُ عَلَيْهِ ‘তোমাদের কেউ বিছানায় শয়ন করলে সে যেন তার পরিধেয় বস্ত্রের ভিতর দিক দিয়ে বিছানাটা ঝেড়ে নেয়। কেননা সে জানে না যে, তার অনুপস্থিতিতে তার বিছানায় কি পতিত হয়েছে। অতঃপর সে ডান কাতে শুয়ে বলবে, بِاسْمِكَ رَبِّ وَضَعْتُ جَنْبِى وَبِكَ أَرْفَعُهُ ، إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِى فَارْحَمْهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ الصَّالِحِينَ ‘তোমার নামে আমার পার্শ্বদেশ (বিছানায়) রাখলাম। তুমি আমার আত্মা আটক করে রেখে দিলে তার প্রতি দয়া করো, আর তাকে ছেড়ে দিলে তাকে হেফাযত করো, যেভাবে তুমি হেফাযত করে থাকো তোমার সৎকর্মপরায়ণ লোকদের’।[6]

আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, إِذَا صَلَّى رَكْعَتَىِ الْفَجْرِ اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ، ‘নবী করীম (ছাঃ) ফজরের দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করার পর ডান কাতে শয়ন করতেন’।[7]

বিছানা ঝাড়তে হয় কেন? আমরা সকলে ছারপোকার সাথে পরিচিত। অন্যান্য পোকার ন্যায় ছারপোকা নোংরা বা অপরিষ্কার পরিবেশে নয়, বরং মানুষের কাছাকাছি উষ্ণ জায়গায় বসবাস করে এবং এদের সবচেয়ে পসন্দের জায়গা হ’ল বিছানা। রাতেরবেলা যখন মানুষ ঘুমায় তখন এরা আসে এবং মানুষের রক্ত খায়। তাই ঘুমানোর পূর্বে ভাল করে বিছানা ঝেড়ে ফেলতে হবে, যাতে ছারপোকা এবং তাদের ডিম থাকলে তা অপসারিত হয়।

একজন মানুষ প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ত্বকের কোষ শরীর থেকে ফেলে দেয় এবং মানুষ যখন বিছানায় গড়াগড়ি করে তখন এই মৃত কোষগুলো বিছানায় লেগে যায় এবং এদের মধ্যে ধুলো গিয়ে জমা হয়। ত্বকের মৃত কোষ, ঘাম, লালা এবং আরও অনেক কিছু বিছানাকে জীবাণু বৃদ্ধির জন্য একটি অণুঘটক হিসাবে কাজ করতে পারে।

এই সকল কারণে রাতে ঘুমানোর পূর্বে কাপড় বা অন্যকিছু দিয়ে বিছানা ঝেড়ে ফেলতে হবে।

ডান কাতে হয়ে শয়নের উপকারিতা :

হজমের তৃপ্তি : ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমালে অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স বা বুক জ্বালার লক্ষণগুলি উপশম করতে পারে।

শ্বাস নেওয়া এবং নাক ডাকা : ডান দিকে ঘুমানো তাদের জন্য উপকারী যারা নাক ডাকে বা হালকা সিলপ অ্যাপনিয়া আছে। এটি এক ধরনের রোগ যার লক্ষণ হ’ল: জোরে নাক ডাকা, হঠাৎ জেগে ওঠার সাথে দম বন্ধ হওয়া বা হাঁপাতে থাকা এবং দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম হওয়া ইত্যাদি। এটি শ্বাসনালী খোলা রাখতে এবং চিত হয়ে ঘুমানোর তুলনায় নাক ডাকা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

শয়তানের গিট : আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,يَعْقِدُ الشَّيْطَانُ عَلَى قَافِيَةِ رَأْسِ أَحَدِكُمْ إِذَا هُوَ نَامَ ثَلاَثَ عُقَدٍ، يَضْرِبُ كُلَّ عُقْدَةٍ عَلَيْكَ لَيْلٌ طَوِيلٌ فَارْقُدْ، فَإِنِ اسْتَيْقَظَ فَذَكَرَ اللهَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ تَوَضَّأَ انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ، فَإِنْ صَلَّى انْحَلَّتْ عُقْدَةٌ فَأَصْبَحَ نَشِيطًا طَيِّبَ النَّفْسِ، وَإِلاَّ أَصْبَحَ خَبِيثَ النَّفْسِ كَسْلاَنَ، ‘তোমাদের মধ্যে কেউ যখন নিদ্রা যায় তখন শয়তান তার মাথার শেষ প্রান্তে অর্থাৎ ঘাড়ে তিনটা গিঁট দেয়। প্রত্যেকটা গিঁটেই সে ফুঁক দিয়ে বলে, এখনো অনেক রাত আছে (ঘুমিয়ে থাক)। তাই যখন সে ঘুম থেকে জেগে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে তখন একটি গিঁট খুলে যায়। এরপর ওযূ করলে আরো একটি গিঁট খুলে যায়। আর যখন সে ছালাত আদায় করে তখন আরেকটি গিঁট খুলে যায়। এভাবে সে কর্মতৎপর ও প্রফুল্ল মনের অধিকারী হয়ে সকালে জেগে উঠে। অন্যথায় মানুষ বিমর্ষ ও অলস মন নিয়ে জেগে উঠে’।[8]

শয়তান মানুষের ঘাড়ে তিনটা গিঁট দেয়। অর্থাৎ শয়তান কিছু একটা বন্ধ করার জন্য এই গিরাগুলো দেয়। এখন প্রশ্ন হ’ল ঘাড়ে তিনটা কি আছে এবং শয়তান কি বন্ধ করতে চায়? বর্তমান বৈজ্ঞানিক গবেষণার আলোকে জানা যায় যে, মানুষের মস্তিষ্ক এবং হার্ট তিনটি শিরা দ্বারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে। এরা হ’ল : Exterior jugular veins, Anterior jugular veins এবং Anterior jugular veins. এই শিরাগুলোর সাহায্যে মস্তিষ্ক এবং হার্টের মধ্যে রক্ত চলাচল অব্যাহত থাকে। ১৯৯০ সালে Dr. Armour আবিষ্কার করেন যে, হার্টের মধ্যে ছোট একটি ব্রেন রয়েছে। যার মধ্যে ৪০ হাযার নিউরণ বিদ্যমান, যা ব্রেনের নিউরনের অনুরূপ। তাই বলা হয়, হার্টের নিজস্ব নার্ভাস সিস্টেম রয়েছে। হার্ট বিভিন্নভাবে মস্তিষ্কের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। যেমন Neurologically, Biochemically, Biophysically এবং Energetically. হার্টের সিগনালগুলো সরাসরি ব্রেইনের বিভিন্ন অংশগুলোতে পৌঁছে যায়। যথা Medulla, Hypothalamus, Thalamus, Amygdala, Cerebral cortex.[9]

অর্থাৎ হার্ট এবং মস্তিষ্কের মধ্যে মেসেজের আদান-প্রদান ঘটে। আমরা হাদীছ হ’তে জানতে পারি যে, শয়তান মানুষকে এই বলে প্ররোচনা দেয় যে, রাত এখনো অনেক বাকী আছে, তুমি ঘুমাও। অধিকাংশ মুসলিমের এই অভিজ্ঞতা রয়েছে যে, শেষ রাতে তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য বা ফযরের ওয়াক্তে যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন তার মনে হয় সময়তো আছে আরেকটু ঘুমিয়ে নেই। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর হাদীছ এবং বিজ্ঞানীদের গবেষণার আলোকে আমরা বলতে পারি যে, শয়তান ঐ তিনটা শিরাতে গিঁট দেওয়ার মাধ্যমে মস্তিষ্ক হ’তে হার্টে মেসেজ আদান-প্রদান বন্ধ করার চেষ্টা করে এবং সে তার নিজের বানানো মেসেজ ‘এখনো অনেক রাতে আছে’ হার্টের মধ্যে পাঠিয়ে দেয়, যাতে ঐ ব্যক্তি ছালাত আদায় করার জন্য উঠতে না পারে।

হাদীছের শেষাংশে বলা হচ্ছে, যদি একজন মুসলিম ছালাত আদায় না করে ঘুমিয়ে থাকে তবে সে যখন জেগে উঠে তখন বিমর্ষ এবং অলস মনে জেগে উঠে। গবেষণা বলছে, সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার বিবিধ উপকার রয়েছে। ঐ সময় পরিবেশ শান্ত এবং কম বিশৃঙ্খল থাকে। তাই এটি মানসিক বিকাশ এবং সচ্ছতার জন্য অনুকূল। সূর্যোদয়ের পূর্বে ঘুম থেকে ওঠার জন্য প্রায়শই আগে ঘুমাতে হয়, যার ফলে ঘুমের পরিচ্ছন্নতা এবং সামগ্রিকভাবে ঘুমের গুণমান উন্নত হ’তে পারে। সূর্যোদয়ের পূর্বে ঘুম থেকে উঠলে দৈনন্দিন কাজ করার জন্য অধিক সময় পাওয়া যায়, যা মানসিক প্রশান্তি তৈরি করে। অতএব আমাদেরকে হয় শেষ রাতে ঘুম থেকে জাগ্রত হ’তে হবে নতুবা ফজর হওয়ার সাথে সাথে জাগ্রত হ’তে হবে।

উপরোক্ত আলোচনা হ’তে আমরা বলতে পারি যে, আল্লাহ তঁার রাসূল (ছাঃ)-এর মাধ্যমে আমাদের কেবল জাহান্নাম থেকে বঁাচার এবং জান্নাত লাভের পদ্ধতি শেখাননি, বরং কিভাবে জীবন-যাপন করলে আমরা এই দুনিয়াতেও ভালো থাকব তাও শিখিয়েছেন। অতএব কেবল ঘুমের ক্ষেত্রে নয়, বরং সর্বক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর সুন্নাত মেনে চললে দুনিয়া এবং আখেরাতে সফলতা লাভ সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।


[1]. সূত্র: OASH, Healthy Living.

[2]. বুখারী হা/৩০৮২

[3]. Myisense, Marie Ysais, Mar 21, 2021.

[4]. তিরমিযী হা/২৭৬৮

[5]. Healthline,by Suzanne Falck, M.D., FACP, 28 sept 2018.

[6]. আল-আদাবুল মুফরাদ হা/১২২২।

[7]. বুখারী হা/১১৬০

[8]. মুসলিম হা/১৭০৪

[9]. J. ANDREW ARMOUR M.D., Ph.D., August 1991, wiley library.






পৃথিবীতে মানুষের আগমন নিয়ে আল-কুরআনের পথে বিজ্ঞান - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
ঘুমের কতিপয় সুন্নাতী পদ্ধতি ও আধুনিক বিজ্ঞান - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
রক্ত ও মৃত জন্তুর গোশত ভক্ষণ হারাম হওয়ার বৈজ্ঞানিক কারণ - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
আছহাবে কাহফের ঘটনায় বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
ভাষা জ্ঞান মানবজাতির জন্য আল্লাহর অনন্য নিদর্শন - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
কুরআন বলছে আসমানে কোন ফাটল নেই; বিজ্ঞান কি বলে? - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
আসমান ও যমীনের মাঝে বিদ্যমান পরিমাপ সমূহ - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
চন্দ্র দিয়ে মাস এবং সূর্য দিয়ে দিন গণনা : মহান আল্লাহর এক অনন্য বিধান - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
সূর্যের চারিদিকে গ্রহের সুশৃংখল গঠন - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
আসমান হ’তে লোহা নাযিলের বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও বৃষ্টির পানির উপকারিতা - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
আল-কুরআনে কার্বন, নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পানি ও সূর্যের তরঙ্গচক্র - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
মানুষ কি কৃত্রিম বৃষ্টি (ক্লাউড সিডিং) ঘটাতে সক্ষম? - ইঞ্জিনিয়ার আসিফুল ইসলাম চৌধুরী
আরও
আরও
.