যুদ্ধবিধ্বস্ত
ইয়ামনের নাগরিক ওসামা হাসানের পরিবার এক কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি। তিলে
তিলে নিঃশেষ হ’তে যাওয়া ২ বছর বয়সী হাসানকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে
যাবে? নাকি অন্য শিশুদের মুখে জীবন রক্ষায় দু’মুঠো খাবার তুলে দেবে?
হাসানের পরিবারটির মতো এমন অবস্থা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়ামনের হাযারো পরিবারের। দেশটির অধিকাংশ শিশুই এখন যুদ্ধের করাল থাবার শিকার। নিরুপায় হয়ে ওসামার জীবনের চেয়ে একবেলা খাবারকেই গুরুত্ব দিচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়ামেনের পরিবারটি। সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী সরেযমীনে গিয়ে দেখা যায়, একটি কাঠের খাটিয়ায় শুয়ে আছে অপুষ্টি ও অনাহারে শীর্ণ ওসামা। দু’পায়ে হাঁটার শক্তি নেই। জীর্ণ ঘরের কোণে পড়ে থাকা ওসামাকে অশ্রুসিক্ত চোখে দেখছিলেন দাদা আহমাদ ছাদেক। তিনি বলেন, ‘আমরা তার জন্য কিছুই করতে পারছি না। আমি জানি সে মারা যাচ্ছে’।
গল্পটি ওসামার একার নয়। ইয়ামনের গ্রামাঞ্চলের সব শিশুই এখন এই বাস্তবতার মুখোমুখি। গ্রামগুলোর কবরস্থানে মৃত শিশুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এখন আর তাদের কবরগুলো চিহ্নিত করে রাখাও হচ্ছে না। জানানো হচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে গরীব দেশ ইয়ামন। ২০১১ সালে আরব বসন্তের পর দেশটির অবস্থা আরো খারাপ হ’তে থাকে। এরপর ২০ মাসের গৃহযুদ্ধ দেশটিতে একপ্রকার দুর্ভিক্ষ ডেকে আনে। জাতিসংঘের এক জরিপ মতে, ইয়ামনে ৩ লাখ ৭০ হাযার শিশু অপুষ্টিতে ভুগে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে সাহায্যের প্রয়োজন আরো ২০ লাখ শিশুর।
[জাহেলী আরবে ইয়ামন ছিল এক সমৃদ্ধ ব্যবসাকেন্দ্র। কুয়ায়েশগণ ব্যবসার জন্য শীতকালে ইয়ামন ও গ্রীষ্মকালে শামে তথা সিরিয়ায় যেতেন। দু’টি দেশই এখন আধুনিক জাহেলিয়াতের হামলায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। আল্লাহ তুমি মযলূমদের সাহায্য কর (স.স.)]