সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতন ঘটেছে। তিনি পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের আপাত অবসান ঘটেছে বিদ্রোহীদের ঐতিহাসিক বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছে ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হাইআতু তাহরীরিশ শাম (এইচটিএস)। সিরিয়ায় টানা ৫৪ বছর স্বৈরশাসন চলেছে হাফেয আল-আসাদ ও তার পরিবারের। যিনি ১৯৭১ সালে ক্ষমতায় এসে আমৃত্যু প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ২০০০ সালে তার পুত্র বাশার আল-আসাদ প্রেসিডেন্ট হন। তিনি পিতার মতই ঘাতক, নির্যাতক, মানবতাবৈরী, একনায়ক ও যালেম হিসাবে কুখ্যাত ছিলেন। ২০১১ সাল থেকে দীর্ঘ গৃহযুদ্ধে সিরিয়া কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এর অর্থনীতি, অবকাঠামো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সাড়ে ৭ লক্ষাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। ২ কোটি ২০ লাখ অধিবাসীর অর্ধেক বাস্ত্তচ্যুত হয়েছে।

যুলুম নির্যাতনের কিছু চিত্র : সরকার পতনের পরই খুলে দেওয়া হয়েছে ৫০টিরও অধিক কারাগার ও টর্চার সেল। ফলে ছাড়া পেয়েছেন বছরের পর বছর ধরে বন্দী হয়ে থাকা বিরোধী মতের মযলূম কারাবন্দীরা। এসব আটক কেন্দ্রে অগণিত বন্দীর বিরুদ্ধে ৭২টিরও বেশি ভিন্নধর্মী নির্যাতন পদ্ধতি ব্যবহার হ’ত বলে জানিয়েছে সিরিয়ান নেটওয়ার্ক ফর হিউম্যান রাইটস। সিরিয়ার দামেস্কের কাছে অবস্থিত সেদনায়া কারাগারকে বলা হ’ত মানব কসাইখানা। এখানে প্রতিদিন বন্দীদের উপর চালানো হ’ত এমন অমানবিক অত্যাচার, যা কল্পনাতেও আনা সম্ভব নয়।

নির্যাতনের মধ্যে রয়েছে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। সেই সাথে ছিল যৌন নির্যাতন এবং ছোট কক্ষে একাকী বন্দিত্ব। বন্দীদের শরীরে ফুটন্ত পানি ঢালা, ডুবিয়ে শ্বাসরোধ করা, বৈদ্যুতিক শক দেওয়া, নাইলন ব্যাগ পুড়িয়ে তা শরীরে প্রয়োগ করা, সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া, আঙুল ও চুলের গোড়া বা কানসহ সংবেদনশীল অংশ পোড়ানো এবং জোরপূর্বক চুল উপড়ে ফেলা বা ধারালো যন্ত্র দিয়ে অঙ্গহানি করা। বন্দি হওয়া নারীদের ওপর ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের নিপীড়ন চালাতো আসাদ সেনারা। এসব নারী বন্দিদের মুক্তি দেয়ার সময় অনেক শিশুকেও দেখা যায়। পিতৃ-পরিচয়হীন এসব শিশু জন্মের পর থেকেই বন্দি জীবন পার করে আসছিল মায়ের সাথেই।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বলছে, সিরিয়ার বিভিন্ন কারাগারে বন্দী থাকা ১ লাখ ৩৭ হাযারের অধিক মানুষ মুক্তি পেয়েছেন। বন্দীরা কেউ কেউ প্রথমে এটি বিশ্বাসই করতে পারেননি। অনেকেই ভুলে গেছেন নিজের নাম। অনেক বন্দী জানেনই না গত ২০ বছরে কি ঘটেছে পৃথিবীতে।

এক গণকবরেই ১ লাখ মানুষের লাশ : সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের বাইরে এক গণকবরে অন্তত এক লাখ লোককে কবর দেওয়া হয়েছে। সিরিয়া নিয়ে কাজ করা সংস্থা সিরিয়ান ইমার্জেন্সি টাস্কফোর্স এ দাবী করেছে। সংস্থাটির প্রধান মু‘আয মুছতফা বলেন, গণকবরটি এ পর্যন্ত চিহ্নিত পাঁচটি গণকবরের একটি। তবে এই গণকবরে যে এক লাখ লোককে কবর দেওয়া হয়েছে, এটি কম অনুমান। এই সংখ্যা আরও অনেক অধিক হ’তে পারে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, তাদের চিহ্নিত পাঁচটি গণকবরের চেয়ে আরও অনেক গণকবর আছে।

[শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের ‘আয়নাঘর’ ও খালেদা জিয়ার আমলে ‘অপারেশন ক্লিনহার্ট’-এর নির্যাতন কাহিনী পুরাপুরি প্রকাশ পেলে সিরিয়ার লোমহর্ষক নির্যাতনের কাছাকাছি হওয়াটাও বিচিত্র নয়। শেখ হাসিনা আশ্রয় নিয়েছেন তার মদদদাতা ভারতের নিকট। আর বাশার আল-আসাদ আশ্রয় নিয়েছেন তার মদদদাতা রাশিয়ার নিকট। এতে বুঝা যায়, এসব যুলুমের জন্য এদের মদদদাতারাও কম দায়ী নয়। আমরা তাদেরকেও ধিক্কার জানাই (স.স.)]







মসজিদে নববীর জ্যেষ্ঠ ইমাম শায়খ আইয়ূবের মৃত্যু
শিশু ধর্ষক ও হত্যাকারীদের প্রকাশ্যে ফাঁসির আহবান জানিয়ে প্রস্তাব পাস করেছে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট
মুসলিম জাহান
বিশ্বের ভয়াবহতম কলেরার শিকার ইয়ামন
ইসলামী শরী‘আহ আইন আরও যোরদার করছে মালয়েশিয়া
খলীফা ওমর ইবনু আব্দুল আযীয (রহঃ)-এর কবর শী‘আদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত
মালয়েশিয়ার শাসনক্ষমতায় আবারো মাহাথির মুহাম্মাদ
নিউইয়র্কের মসজিদে জুম‘আর খুৎবা ও ইমামতি করলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী
৩৬০ ভারতীয়কে মুক্তি দিচ্ছে পাকিস্তান
মালয়েশিয়ায় কুরআন হেফযকে জাতীয় শিক্ষার অর্ন্তভুক্ত করা হচ্ছে
মুখ খুলছে না বিশ্বের শত কোটি মুসলিম (আল-আক্বছায় ইহূদীবাদী পুলিশের ভয়াবহ হামলা)
সঊদী-রাশিয়া নযীরবিহীন চুক্তি : সম্ভাব্য ফলাফল
আরও
আরও
.