পটুয়াখালীর
বাউফল সদরের বিলবিলাস গ্রামের মৃত নূর মুহাম্মাদ হাওলাদারের ছোট ছেলে
শাহজাহান হাওলাদার (৬৮)। ৩ বছর বয়সে মা ও ৭ বছর বয়সে পিতৃহারা এবং সাধারণ
শিক্ষায় (এইচএসসি) শিক্ষিত এই মানুষটি সারাজীবন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি শিক্ষার প্রসারে কাজ করে সময় পার করছেন। তার হাতে
বাউফল, বরিশাল ও ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ৮টি হাফেযিয়া মাদরাসা। এসব
মাদরাসায় কুরআনের হাফেয বানিয়েছেন নিজের ছেলেমেয়েসহ তৃতীয় প্রজন্মের
নাতি-নাতনীদেরও। বর্তমানে তার পরিবারে হাফেযের সংখ্যা ৪৬ জন। আর সব
আত্মীয়-স্বজন মিলিয়ে তাদের বংশে কুরআনে হাফেযের সংখ্যা শতাধিক।
নিজের পরিবারে হাফেযদের সংখ্যা বিষয়ে তিনি বলেন, পিতা ছিলেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। তিনি হাফেযদের অত্যধিক সম্মান করতেন। পিতা-মাতা ও বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর পিতার কিছু সম্পদ বিক্রি করে বাড়ির পাশে একটি মাদরাসা নির্মাণ করেন। বাকী সম্পদের আয় দিয়ে মাদরাসার ব্যয় নির্বাহ করতে থাকেন। সেই সঙ্গে নিজের ১০ ছেলে-মেয়েদের হাফেযী পড়ান এবং সবাইকে বিবাহ দেন হাফেয ও হাফেযাদের সঙ্গে। ফলে ৩০-এর অধিক নাতি-নাতনীর মধ্যে অধিকাংশই হাফেয।
তিনি বলেন, নানা প্রতিকূলতা, আর্থিক সংকট সত্ত্বেও মাদরাসাগুলো টিকে আছে। সরকারী সহায়তা পেলে এগুলো আরও ভালোভাবে চালানো সম্ভব। এখনো মানুষের মধ্যে আরবী শিক্ষার প্রতি প্রচুর আগ্রহ রয়েছে।
তিনি বলেন, পিতার ইচ্ছা আমি পূরণ করেছি। আমি আমার ১০ সন্তানকেই হাফেযে কুরআন বানিয়েছি। ছেলে-মেয়েদের বিবাহ দিয়েছি হাফেয-হাফেযাদের সাথে। আমার ইচ্ছা পূরণে তারাও তাদের সন্তানদের হাফেযী পড়াচ্ছে। এখন আমার পরিবারে ৪৬ জন হাফেয রয়েছে। পাশাপাশি আরও ৪ জন হাফেয হওয়ার পথে। বিষয়টি আমার কাছে অনেক গর্বের ও প্রশান্তির।
তার প্রতিষ্ঠিত মাদরাসাগুলির তিনটি ছেলেদের ও তিনটি মেয়েদের। এগুলো সন্তানরা পরিচালনা করলেও পুরো দেখভাল তিনিই করেন। পরিবারের হাফেযের সংখ্যা প্রসঙ্গে শাহজাহান হাওলাদার বলেন, এসব ঘটনা ও কথা এতো বছর চাপিয়ে রাখলেও কিভাবে যে প্রকাশ পেল, তা আমি জানি না। আমি তো মানুষকে শোনানোর জন্য এসব করিনি। আল্লাহ যেন এ কারণে নারায না হন এবং পরিবারে হাফেযে কুরআনের সংখ্যা যেন না কমে যায়- সেজন্য দো‘আ করবেন।