পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ 

. কেবল সনদের ভিত্তিতে হুকুম প্রদান :

শু‘আইব আরনাঊত্ব সহ সমসাময়িক কিছু বিদ্বান আলবানীর ব্যাপারে উক্ত অভিযোগ পেশ করেছেন। শু‘আইব আরনাঊত্ব আলবানীর বিরুদ্ধে শায ও ইল্লতের প্রতি গভীরভাবে দৃকপাত না করার অভিযোগ এনেছেন। যেমন তিনি বলেন, ‘হাদীছের উপরে হুকুম লাগানোর ক্ষেত্রে তিনি শুযূয ও ‘ইল্লতের প্রতি মনোযোগ দেননি এবং হাদীছের মতনের সমালোচনা করতে গিয়ে সতর্কতাও অবলম্বন করেননি’। ...সেকারণ তিনি এমন অসংখ্য হাদীছকে ছহীহ বলেছেন, যেগুলোর মতনের ব্যাপারে আলেমগণ সমালোচনা করেছেন। দলীল হিসাবে তিনি মিশকাতুল মাছাবীহ (হা/১১২) ও (ছহীহুল জামে‘ আছ-ছাগীর (হা/৭১৪২)-কে উদাহরণ হিসাবে পেশ করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে, الْوَائِدَةُ وَالْمَوْءُودَةُ فِي النَّارِ ‘সন্তানকে জীবিত দাফনকারী মহিলা ও প্রোথিত কন্যা উভয়েই জাহান্নামে যাবে’।

আরনাঊত্ব বলেন, ‘এই হাদীছটি কুরআনের আয়াতوَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ ‘যেদিন জীবন্ত প্রোথিত কন্যা জিজ্ঞাসিত হবে’ (সূরা তাকভীর ৮১/৮)-এর স্পষ্ট বিরোধী। যদিও আলবানী এর অগ্রহণযোগ্য তাবীল করার প্রয়াস পেয়েছেন।[1] 

তিনি এ হাদীছের মতনের সমালোচনার প্রতি দৃষ্টি না দিয়ে ছহীহ সাব্যস্ত করার কারণে আলবানীর বিরুদ্ধে উক্ত অভিযোগ পেশ করেছেন। এ ব্যাপারে দু’টি দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করা যেতে পারে।- 

প্রথমতঃ আলবানী শায হাদীছ প্রত্যাখ্যান করাকে মূলনীতি হিসাবে উল্লেখ করেছেন। ইবনুছ ছালাহ-এর ‘মুক্বাদ্দিমা’ ও হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী-এর ‘শরহে নুখবা’র টীকায় এবং ‘তামামুল মিন্নাহ’ গ্রন্থের ভূমিকায় পরিষ্কারভাবে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, হাদীছের বিশুদ্ধতার জন্য শর্ত হ’ল, তা শায ও মু‘আল্লাল (ত্রুটিযুক্ত) হবে না।[2]

একইভাবে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যখন কোন হাদীছের সনদ ছহীহ হবে, তখন আমরা স্রেফ তার বর্ণনাকারীদের ছিক্বাহ হওয়ার কারণে সেটাকে (ছহীহ) বলব না। কারণ এতে সূক্ষ্ম গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে যে, হয়ত এর সনদের কোথাও কোন ত্রুটি থাকতে পারে। যদি যথাযথভাবে তাহক্বীক্ব করার পর তার নিকট স্পষ্ট হয়ে যায় যে, এতে মারাত্মক ত্রুটি নেই, তখনই কেবল তার জন্য এ কথা বলা সঠিক হবে যে, এর সনদ ছহীহ। ...অধিকাংশ হাদীছের ক্ষেত্রে আমাদের কর্মপন্থা এটাই’।[3]

আলবানীর এই সুস্পষ্ট বক্তব্য দ্বারা বুঝা যায় যে, তিনি নীতিগতভাবে হাদীছের বিশুদ্ধতার জন্য ‘শায ও ‘ইল্লত’ না থাকার শর্তারোপ করেছেন।

দ্বিতীয়তঃ আলবানী উক্ত হাদীছটিকে এককভাবে ছহীহ বলেননি। বরং হাদীছটি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে আবূদাঊদ (হা/৪৭১৭), ছহীহ ইবনু হিববান (হা/৭৪৩৭), ত্বাবারাণী ও ইমাম বুখারীর আত-তারীখুল কাবীর গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। ছহীহ ইবনু হিববানে সংকলিত হওয়ার মাধ্যমে বুঝা যায় যে, হাদীছটি তাঁর নিকটে ছহীহ। ইমাম আবূদাঊদ ও মুনযিরী এ ব্যাপারে নীরব থেকেছেন। সুয়ূত্বী ‘আল-জামেউছ ছগীর’ গ্রন্থে একে হাসান বলেছেন। মুনাবী বলেন, ‘সুয়ূত্বী হাদীছটি হাসান হওয়ার দিকে ইশারা করেছেন। তবে তা অনুরূপ বা তার চেয়ে উঁচু স্তরের’।[4]

উপরন্তু এই বর্ণনাটি মুসনাদে আহমাদ (হা/১৫৯৬৫), নাসাঈর আস-সুনানুল কুবরা (হা/১১৬৪৯), ত্বাবারাণী (হা/৬৩১৯) প্রভৃতি গ্রন্থসমূহেও বর্ণিত আছে। ইবনু আব্দিল বার্র বলেছেন যে, لَيْسَ لِهَذَا الْحَدِيثِ إِسْنَادٌ أَقْوَى وَأَحْسَنُ مِنْ هَذَا الْإِسْنَاد ‘এই সনদের চেয়ে এ হাদীছের অধিক উত্তম ও অধিক শক্তিশালী সনদ আর নেই’।[5] হায়ছামী এ সম্পর্কে বলেছেন, رجاله رجال الصحيح -এর রাবীগণ ছহীহ গ্রন্থের রাবী’।[6]

স্বয়ং শায়খ শু‘আইবও মুসনাদে আহমাদ-এর তাহক্বীক্বে বলেছেন যে, ‘এই হাদীছের রাবী ছিক্বাহ (বিশ্বস্ত) ও শায়খাইনের (ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিমের) রাবী, দাঊদ ইবনু আবী হিন্দ ব্যতীত। তিনি কেবলমাত্র ছহীহ মুসলিমের রাবী।[7]

এ আলোচনার মাধ্যমে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, সনদের দিক থেকে এই বর্ণনাটি ছহীহ। এক্ষণে মতনগত দিক দিয়ে আরনাঊত্ব হাদীছটিকে মুনকার সাব্যস্ত করেছেন। কারণ যেসব হাদীছে জীবন্ত দাফনকৃত কন্যার জান্নাতী হওয়ার উল্লেখ রয়েছে, সেগুলো এর বিপরীত। আর এই হাদীছটি

কুরআনের আয়াতوَإِذَا الْمَوْءُودَةُ سُئِلَتْ এরও বিরোধী।

এই অভিযোগটি মূলতঃ হানাফী মাযহাবের মূলনীতির আলোকে করা হয়েছে। দু’টি পরস্পর বিরোধী বর্ণনার ক্ষেত্রে তাঁদের মূলনীতিটি হ’ল (১) উভয়ের মধ্যে কোন্টি পূর্বের ও কোন্টি পরের, তা প্রতীয়মান হওয়ার শর্তে একটিকে রহিত করা যাবে। (২) তা সম্ভব না হ’লে একটিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। (৩) অগ্রাধিকারের উপায় না থাকলে, উভয়ের মধ্যে সমতা বিধান করতে হবে। (৪) যদি সমতা বিধানেরও কোন পথ না থাকে, তবে উভয়ের হুকুম বাতিল হয়ে যাবে। শায়খ শু‘আইব এখানে দু’টি বর্ণনার মধ্যে পরস্পর বৈপরীত্যের কারণে প্রোথিত কন্যার জান্নাতী হওয়ার বর্ণনাগুলোকে তারজীহ বা অগ্রাধিকার দিয়েছেন।

কিন্তু এটি মুহাদ্দিছীনে কেরামের মূলনীতি নয়। তাঁরা প্রথমে সমন্বয় সাধনের চেষ্টা করেন। যদি সমন্বয় সাধন সম্ভব না হয় তবে দ্বিতীয় পন্থা হিসাবে উভয়টির মধ্যে শেষ বর্ণনা কোনটি তা জানা গেলে সর্বশেষ বর্ণনাটিকে নাসেখ (রহিতকারী) সাব্যস্ত করেন। আর তা সম্ভব না হ’লে একটিকে অগ্রাধিকার প্রদানের চেষ্টা করেন। যদি তারও পথ না থাকে তবে সিদ্ধান্ত প্রদান থেকে বিরত থাকেন।[8]

আলবানী মুহাদ্দিছীনের মূলনীতি অনুসরণ করেছেন। তিনি প্রথমে দু’টি ছহীহ হাদীছের মধ্যে সমতা বিধানের চেষ্টা করেছেন। তার বক্তব্য হ’ল, ‘ছহীহ হাদীছকে তার চাইতে অধিক বিশুদ্ধ হাদীছের সাথে বিরোধী হওয়ার কারণে প্রত্যাখ্যান করা জায়েয নয়। বরং উভয়ের মাঝে সমন্বয় সাধন করা ওয়াজিব’।[9]

এই মূলনীতি অনুসরণ করতে গিয়ে শায়খ আলবানী যে হাদীছগুলোকে পরস্পর বিপরীত বলা হচ্ছে, সেগুলোর মধ্যে সমতা বিধানের চেষ্টা করেছেন। যেমন উক্ত হাদীছটির ব্যাপারে বলেছেন, ‘হাদীছটির বাহ্যিক দাবী এই যে, প্রোথিত কন্যা জাহান্নামে যাবে। যদিও সে বালেগা না হয়। কিন্তু এই বাহ্যিক মর্ম শারঈ ঐ দলীলের বিরোধী যে, বালেগা হওয়ার পূর্বে কেউ শরী‘আতের বিধান মানতে আদিষ্ট নয়। তবে এই হাদীছটির বিভিন্ন জবাব প্রদান করা হয়েছে। তন্মধ্যে আমার নিকট সর্বাধিক নিকটবর্তী জবাব হ’ল, এই হাদীছটি একজন নির্দিষ্ট প্রোথিত কন্যা সম্পর্কে প্রযোজ্য। আর তখন الْمَوْءُودَة এর মধ্যে ال ইসতিগরাক্ব (সমষ্টিবাচক)-এর জন্য নয়। বরং ‘আহদে যিহনী’ বা নির্ধারিত একজনের জন্য খাছ হিসাবে গণ্য হবে। মুলায়কার পুত্রদের ঘটনার হাদীছটি দ্বারা এর সমর্থন পাওয়া যায় (যা সালামাহ ইবনু ইয়াযীদ জু‘ফী হ’তে বর্ণিত)। এজন্য এ কথা বলা সিদ্ধ যে, সেই প্রোথিত কন্যাটি বালেগা তথা প্রাপ্তবয়স্কা ছিল। আর এভাবেই এই হাদীছটির উপর উত্থাপিত অভিযোগ দূরীভূত হয়ে যায়। আল্লাহই সর্বাধিক অবগত[10]

আলবানীর উক্ত সমন্বয় সাধনকে শু‘আইব আরনাঊত্ব ‘অপসন্দনীয় তাবীল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। অথচ এখানে আলবানী মুহাদ্দিছগণের অনুসরণে সমন্বয় করেছেন এবং আরনাঊত্ব হানাফী মাযহাবের মূলনীতি অনুসরণ করে একটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। অতএব এটি আদৌ ‘অপসন্দনীয় তাবীল’ নয়। বরং ছহীহ হাদীছকে বাতিল গণ্য করার চাইতে বহু গুণে উত্তম।

জানা আবশ্যক যে, হাদীছের ব্যাখ্যাকারগণ উক্ত বর্ণনাটির আরো অনেকগুলো ব্যাখ্যা দিয়েছেন। যেমন একটি ব্যাখ্যা এই যে, وائدة দ্বারা উদ্দেশ্য دائيه বা দাফনকারী। আর اَلْمَوْءُودَة দ্বারা তার মা উদ্দেশ্য। আর لها اَلْمَوْءُودَة -এর উহ্য ছিলাহ। আরেকটি ব্যাখ্যা এসেছে যে, اَلْمَوْءُودَة দ্বারা নির্দিষ্ট দাফনকৃত কন্যা উদ্দেশ্য। সে বালেগা হোক বা নাবালেগা। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ওহীর মাধ্যমে তার সম্পর্কে আল্লাহ্র নির্ধারিত ফায়ছালা ও তাক্বদীরের সংবাদ দিয়েছেন। আর اَلْمَوْءُودَة-এর اَلْ সমষ্টিবাচকের জন্য নয়। বরং নির্দিষ্টভাবে দাফনকৃত কন্যা সম্পর্কে। এই ব্যাখ্যাগুলোর বিস্তারিত আলোচনা মিরক্বাত (/১৮২, ১৮৩), মির‘আতুল মাফাতীহ (/২০০), ‘আওনুল মা‘বূদ (/৩৬৬), ছান‘আনী আত-তানবীর শরহে জামে‘ ছগীর (১১/১১০), ফায়যুল ক্বাদীর (/৩৭১), শারহুত ত্বীবী (/২৬৩, ২৬৪), ইবনুল মালিক রূমীর শারহু মাছাবীহিস সুন্নাহ (/১২৯), বায়যাবীর তুহফাতুল আবরার শারহি মাছাবীহিস সুন্নাহ (/১১০) প্রভৃতি গ্রন্থসমূহে এসেছে।

উক্ত আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, আলবানীর মত বহু বিদ্বান اَلْمَوْءُودَة-এর সাথে সম্পর্কিত বর্ণনাগুলোর ক্ষেত্রে জমাকরণ ও সমন্বয় সাধনের পন্থাটি-ই অবলম্বন করেছেন। অতএব এককভাবে আলবানীর বিরুদ্ধে উক্ত অভিযোগ করা যথার্থ নয়।

জানা আবশ্যক যে, কোন হাদীছের হুকুম পেশ করার ক্ষেত্রে মুহাদ্দিছগণ মূলতঃ সনদের উপর নির্ভর করেন। তারপর তারা মতনের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আল-কাত্ত্বান বলেন, ‘তোমরা হাদীছের প্রতি দৃষ্টি দিয়ো না। বরং তার সনদের দিকে লক্ষ্য কর। যদি সনদ ছহীহ হয় (তাহ’লে তা গ্রহণ কর)। অন্যথায় সনদ বিশুদ্ধ নয়, এমন হাদীছ দ্বারা তোমরা প্রতারিত হয়ো না।[11]

এক্ষণে ঢালাওভাবে মতনের সমালোচনার ব্যাপারে দৃকপাত না করার অভিযোগের ব্যাপারে বলা যায় যে, শায়খ আলবানী রচিত সিলসিলা ছহীহাহ, যঈফাহ, ইরওয়াউল গালীল, গায়াতুল মারাম, তামামুল মিন্নাহ সম্পর্কে যারা ধারণা রাখেন, তারা খুব ভালোভাবেই জানেন যে, মতনের সমালোচনার প্রতি তিনি কতটা গভীর দৃষ্টি রেখেছেন। উক্ত গ্রন্থসমূহ ছাড়াও তাঁর বহু গ্রন্থে তিনি মতনের সমালোচনায় সূক্ষ্ম ও দীর্ঘ আলোচনা পেশ করেছেন। তাঁর অন্যতম বৈশিষ্ট্যই ছিল সনদের সাথে সাথে মতনেরও তুলনামূলক

বিচার করা। নিম্নে তাঁর কিছু দৃষ্টান্ত পেশ করা হ’ল।-

(১) সিলসিলা যঈফাহ ৮৭ নং হাদীছ- إذا صعد الخطيب المنبر، فلا صلاة ولا كلام ‘খত্বীব যখন মিম্বরে আরোহণ করবেন, তখন আর কোন ছালাত চলবে না, কথাবার্তাও চলবে না’। হাদীছটির সনদগত দুর্বলতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার পর আলবানী বলেন, ‘আমি হাদীছটি বাতিলযোগ্য হওয়ার সিদ্ধান্ত পেশ করছি। কেননা সনদগত দুর্বলতার সাথে সাথে হাদীছটি দু’টি ছহীহ হাদীছের বিপরীত। আর তা হ’ল-

(ক) রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَقَدْ خَرَجَ الإِمَامُ فَلْيُصَلِّ رَكْعَتَيْنِ ‘যখন তোমাদের কেউ জুম‘আর দিনে এমন সময় মসজিদে আসে যে, ইমাম (খুৎবা দেওয়ার জন্য) বের হয়ে এসেছেন, তবে সে যেন দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে নেয়’। হাদীছটি জাবের থেকে ছহীহুল বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে। অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন,إذا جاء أحدكم يوم الجمعة والإمام يخطب فليركع ركعتين وليتجوز فيهما ‘তোমাদের কেউ জুম‘আর দিন ইমাম খুৎবারত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন সংক্ষেপে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করে নেয়।[12]

(খ) রাসূল (ছাঃ)-এর বাণী, إذا قلت لصاحبك: أنصت، يوم الجمعت والإمام يخطب فقد لغوت ‘তুমি যদি জুম‘আর দিন ইমাম খুৎবারত অবস্থায় তোমার সাথীকে চুপ থাকতেও বল, তবুও তুমি অনর্থক কথা বললে’।[13]

প্রথম হাদীছটি সুস্পষ্টভাবে খুৎবার জন্য ইমাম বের হয়ে আসার পর দু’রাক‘আত ছালাত আদায়ের ব্যাপারে তাকীদ দিচ্ছে। অথচ উক্ত যঈফ হাদীছটি তা থেকে নিষেধ করছে। অতএব খুৎবা চলাকালীন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করে যে ব্যক্তি দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করতে চায়, তাকে নিষেধ করা চূড়ান্ত অজ্ঞতার পরিচায়ক। আমার ভয় হয় যে, তারা রাসূলের হাদীছের বিরোধিতা করার কারণে নিম্নোক্ত আয়াত দু’টিতে বর্ণিত শাস্তির অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় কি না। যেখানে আল্লাহ বলেছেন, أَرَأَيْتَ الَّذِي يَنْهَى عَبْدًا إِذَا صَلَّى ‘তুমি কি দেখেছ ঐ ব্যক্তিকে যে নিষেধ করে এক বান্দাকে, যখন সে ছালাত আদায় করে?’।[14] তিনি বলেন,فَلْيَحْذَرِ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَن تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ ‘যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সাবধান হৌক যে, ফিৎনা তাদেরকে গ্রাস করবে অথবা মর্মন্তুদ শাস্তি তাদের উপর আপতিত হবে’।[15] সেকারণ নববী বলেন, ‘এটা এমন একটি নছ, যে ব্যাপারে তাবীলের আশ্রয় নেওয়া যাবে না। যে ব্যক্তি এটা জানে ও ছহীহ হিসাবে বিশ্বাস করে, অথচ এর বিপরীত করে আমি তাকে আলেম মনে করি না’।

দ্বিতীয় হাদীছটি একটি বুঝের প্রতি ইঙ্গিত করছে। তা হ’ল والإمام يخطب বাক্যটি দ্বারা বুঝা যায় যে, ইমাম খুৎবা শুরু না করলে কথা বলায় বাধা নেই। আর ওমর (রাঃ)-এর সময়কালে এরূপ আমলের প্রচলন বিষয়টিকে আরো শক্তিশালী করে। যেমন ছা‘লাবা ইবনু আবী মালিক বলেন, ওমর (রাঃ) খুৎবার জন্য বসার পর থেকে ইমাম আযান শেষ করা পর্যন্ত তারা পরস্পরে কথা বলতেন। তারপর যখন তিনি মিম্বরে দাঁড়িয়ে যেতেন, তারপর খুৎবা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত কেউ আর কোন কথা বলত না। হাদীছটি ইমাম মালিক ও ত্বাহাবী এভাবেই বর্ণনা করেছেন। এছাড়া আবু হাতিমও হাদীছটি স্বীয় ‘ইলাল’ গ্রন্থে সংকলন করেছেন। প্রথম দু’টির সনদ ছহীহ। এতে প্রমাণিত হয় যে, মিম্বারে আরোহন নয় বরং ইমামের বক্তব্য সকল কথাবার্তার সমাপ্তি টানবে। তাই খুৎবার জন্য তার বের হওয়া তাহিইয়াতুল মাসজিদ দু’রাক‘আত ছালাত আদায়ের ক্ষেত্রে কোন বাধা নয়। অতএব আলোচ্য যঈফ হাদীছটি বাতিলযোগ্য। আল্লাহই সঠিক সিদ্ধান্তের পথপ্রদর্শক।[16]

অন্যদিকে একাধিক ছহীহ হাদীছের মধ্যে মতনে ভিন্নতা থাকলে মুহাদ্দিছগণ সনদ ছহীহ হওয়ার কারণে কোনটিকে অগ্রাধিকার না দিয়ে সামঞ্জস্য বিধানের প্রয়াস পেয়েছেন। আলবানী মুহাদ্দিছগণের অনুসরণে মতনে নাকারাত (অপরিচিতি) থাকা সত্ত্বেও সামঞ্জস্য বিধানের মাধ্যমে তা দূর করার প্রয়াস পেয়েছেন। নিম্নে তার কিছু দৃষ্টান্ত পেশ করা হ’ল-

(১) সিলসিলা ছহীহাহ ৩৭ নং হাদীছে এসেছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন,إِذَا وَقَعَ الذُّبَابُ فِيْ شَرَابِ أَحَدِكُمْ فَلْيَغْمِسْهُ ثُمَّ لِيَنْزِعْهُ (لِيَنْتَزِعْهُ) فَإِنَّ فِيْ إِحْدَى جَنَاحَيْهِ دَاءً وَالْأُخْرَى شِفَاءً ‘যখন তোমাদের কারো পানীয় দ্রব্যে মাছি পড়বে, তখন তাকে সম্পূর্ণ ডুবিয়ে দিবে। তারপর তাকে বাইরে ফেলে দিবে। কারণ তার দু’টি ডানার মধ্যে একটিতে আছে রোগ এবং অপরটিতে আছে আরোগ্য’। হাদীছটি ছহীহুল বুখারীতে সংকলিত হয়েছে। আলবানী বলেন, ‘হাদীছটি বিভিন্ন ছহীহ সনদে তিনজন ছাহাবী থেকে বর্ণিত হয়েছে। যথা : আবু হুরায়রা, আবু সাঈদ খুদরী ও আনাস (রাঃ)। হাদীছটি এমনভাবে প্রমাণিত যে, একে অস্বীকার করা বা এতে সন্দেহ পোষণ করার কোন সুযোগ নেই। অতঃপর তিনি একে বৈজ্ঞানিক বাস্তবতার বিরোধী বলে দাবীকারী এবং এ ব্যাপারে আবু হুরায়রাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্তকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘... তারা একজন ছাহাবীকে মিথ্যাবাদী বলে আঘাত করছে। তারা রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছকে কেবলমাত্র তাদের দুর্বল জ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ার কারণে অস্বীকার করছে। অথচ হাদীছটি রাসূল (ছাঃ) থেকে কেবল আবু হুরায়রা নয়, বরং একদল ছাহাবী বর্ণনা করেছেন। হায় যদি তারা জানত যে আবু হুরায়রা হাদীছটি এককভাবে বর্ণনা করেননি।

তিনি বলেন, ‘... বহু মানুষ ধারণা করে যে, হাদীছটি চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের বিপরীত। কেননা মাছি তার ডানায় জীবাণু বহন করে। যদি তা খাদ্য বা পানীয়তে পড়ে যায় তাহ’লে তা দূষিত হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হ’ল, হাদীছটি চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের বিপরীত নয়। বরং এটা তাদেরকে এ তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে যে, তার একটি ডানায় রোগ রয়েছে। কিন্তু তার অপর ডানায় রয়েছে ঐ রোগের আরোগ্য। যে ব্যাপারটি এখনো তারা জানতে পারেনি। অতএব মুসলিম চিকিৎসকদের জন্য আবশ্যক হ’ল এর উপর ঈমান আনা। আর অমুসলিম হলেও তিনি যদি জ্ঞানী ও বিজ্ঞ ব্যক্তি হন, তবে এর উপর নির্ভর করা...’।

তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্র হাদীছটি ছহীহ হওয়ার ব্যাপারে সাক্ষ্য দেয় না। এ ব্যাপারে চিকিৎসকদের বহু মত রয়েছে। আমি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় এর পক্ষে-বিপক্ষে লিখিত অনেক প্রবন্ধ পাঠ করেছি। কিন্তু আমরা আমাদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এ হাদীছের বিশুদ্ধতার ব্যাপারে পূর্ণ বিশ্বাসী। কেননা রাসূল (ছাঃ) নিজ খেয়াল-খুশীমত কোন কথা বলেননি। তিনি কেবল তাই বলেন, যা তার নিকট অহী করা হয়। আর হাদীছটি ডাক্তারী দৃষ্টিকোণ থেকে প্রমাণিত হওয়া বা না হওয়ার ব্যাপারে আমরা মোটেও চিন্তিত নই। কেননা দলীল হিসাবে হাদীছ স্বয়ংসম্পূর্ণ। এর জন্য বাইরের কোন সমর্থন প্রয়োজন হয় না। তবে বিশুদ্ধ হাদীছ বিশুদ্ধ বিজ্ঞানের সাথে যখন সামঞ্জস্যপূর্ণ দেখা যায়, তখন আত্মিক জগতে ঈমান বৃদ্ধি পায়...।

অতঃপর আলবানী উক্ত হাদীছের পক্ষে-বিপক্ষে একাধিক চিকিৎসক ও বিজ্ঞজনের বক্তব্য তুলে ধরেছেন এবং হাদীছটি নিয়ে সন্দেহ পোষণকারীদের বিভিন্নভাবে জবাব দিয়েছেন।[17]

(২) ইবনু আববাস থেকে বর্ণিত একটি হাদীছে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর পিছনে অনিন্দ্য সুন্দরী একজন নারী ছালাত আদায় করতেন। পুরুষদের কাতারের সর্বশেষ কাতারে একদল পুরুষ ছালাত আদায় করত এবং ওই নারীর দিকে দৃষ্টি দিত। তাদের মধ্যে কেউ রুকূর সময় বগলের নিচ দিয়ে তাকে দেখতো। আবার কেউ প্রথম কাতারে এগিয়ে যেত, যেন উক্ত নারীকে দেখা না যায়। এই প্রেক্ষিতে আল্লাহ তা‘আলা নাযিল করলেন, وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَقْدِمِينَ مِنْكُمْ وَلَقَدْ عَلِمْنَا الْمُسْتَأْخِرِينَ ‘তোমাদের মধ্যে যারা আগে অগ্রসর হয়ে গেছে, তাদেরকেও আমি জানি আর যারা পেছনে রয়ে গেছে, তাদেরকেও জানি’ (হিজর ১৫/২৪)। হাদীছটি আবূদাঊদ তায়ালেসী (হা/২১৭২), বায়হাক্বী স্বীয় সুনানে (/৯৮) তায়ালেসীর সূত্রে, আহমাদ (/৩০৫), নাসাঈ, ইবনু মাজাহ ও ইবনু খুযায়মা বর্ণনা করেছেন।

হাদীছটি সম্পর্কে ইবনু কাছীর বলেন, ‘হাদীছটি খুবই গরীব। এতে কঠিন নাকারাত রয়েছে’। আলবানী আলোচ্য হাদীছটির উপর প্রথমে আকর্ষণীয় তাহক্বীক্ব পেশ করেছেন। তারপর সনদ ও মতনগত দিক দিয়ে এর বিশুদ্ধতা প্রমাণ করেছেন এবং উভয় দিক দিয়ে এর নাকারাতকে অপনোদন করেছেন। অতঃপর তিনি বলেন, ‘ইবনু কাছীরের ধারণা অনুযায়ী এখানে কঠিন নাকারাত রয়েছে। অর্থাৎ তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে, জ্ঞানের দৃষ্টিতে এটা সম্ভব নয় যে, মুছল্লীদের কেউ ঐ নারীকে দেখার জন্য শেষ কাতারে চলে যাবে!

আলবানী বলেন, ‘উক্ত মন্তব্যের ক্ষেত্রে আমাদের জবাব হ’ল, বিদ্বানগণ বলে থাকেন যে, যখন হাদীছ পেশ করা হয়, তখন যুক্তি বাতিল হয়ে যায়। তাই হাদীছ প্রমাণিত হওয়ার পর তার বাস্তবতাকে প্রত্যাখ্যান করার কোন সুযোগ নেই। কেবলমাত্র জ্ঞানগতভাবে অসম্ভব মনে হওয়ার ভিত্তিতে আমরা যদি হাদীছ প্রত্যাখ্যান করার দুয়ারকে উন্মুক্ত করে দেই, তাহ’লে বহু ছহীহ হাদীছকে অস্বীকার করা আবশ্যক হয়ে যাবে। যা আহলুস সুন্নাহ ও আহলুল হাদীছের নীতি নয়। বরং তা মু‘তাযিলা ও প্রবৃত্তিপূজারীদের রীতি। আর ঐসব পিছনে যাওয়া মানুষগুলো মুনাফিক হওয়ায় বাধা কোথায়, যারা বাহ্যিকভাবে ঈমান যাহির করত এবং কুফরীকে গোপন রাখত? তারা তো ঐসব মানুষও হ’তে পারে যারা ইসলামে নবাগত? যারা ইসলামী আদব-আখলাক ও কৃষ্টি-কালচারে এখনো অভ্যস্ত হয়নি?[18]

উপরোক্ত উদাহরণগুলো থেকে স্পষ্টভাবে বুঝা যায়, মতনের সমালোচনায় আলবানী অগ্রগামী হননি একথা ঠিক নয়। তিনি একদিকে যেমন সনদগতভাবে যঈফ হাদীছের মতনগত সমালোচনা পেশ করেছেন। অন্যদিকে সনদগতভাবে ছহীহ হওয়ার পর মতন বাহ্যিকভাবে অসমাঞ্জস্যপূর্ণ মনে হ’লে মুহাদ্দিছীনের নীতির অনুসরণে বিভিন্ন দলীল-প্রমাণ ও যুক্তি তুলে করার মাধ্যমে সামঞ্জস্য বিধান করার প্রয়াস পেয়েছেন। এরূপ উদাহরণ তাঁর গ্রন্থসমূহের বহু স্থানে বিধৃত হয়েছে। এমনকি কেবল হাদীছের মতনের সমালোচনায় তাঁর অবদান ও মানহাজ বিশ্লেষণ করে এ পর্যন্ত একাধিক গবেষণাপত্র সম্পন্ন হয়েছে।[19]

উপসংহার :

পরিশেষে বলা যায়, আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা শায়খ আলবানী (রহঃ)-এর ব্যাপারে বিরুদ্ধবাদীদের কিছু আপত্তি ও সংশয়ের জবাব প্রদানের প্রয়াস পেয়েছি। যা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, তাঁর বিরুদ্ধে যেসব সমালোচনা করা হয়েছে, তার অধিকাংশই অগ্রহণযোগ্য অযৌক্তিক। আশা করি এর মাধ্যমে আলবানীর ব্যাপারে বিভিন্ন মহলের নানা সন্দেহ-সংশয়ের অবসান ঘটবে এবং তারা তাঁর রেখে যাওয়া অমূল্য

গ্রন্থরাজি সম্পর্কে অধিকতর গবেষণার প্রতি উৎসাহিত হবেন। তবে মনে রাখা যরূরী সকল বিদ্বানের ন্যায় তিনিও একজন মানুষ। ফলে তাঁর গবেষণায় ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকা খুবই স্বাভাবিক। জীবদ্দশায় যেসব ভুল তার নিকটে প্রতিভাত হয়েছে, তা তিনি স্পষ্টভাবেই ব্যক্ত করেছেন। একাধিক গবেষক তার ভুল-ত্রুটির সংশোধনী নিয়ে পৃথক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তবে কতিপয় বিদ্বান মাযহাবী গোঁড়ামি ও চিন্তাগত মতপার্থক্যের কারণে এবং কেউ কেউ তাখরীজ বিষয়ে যথাযথ জ্ঞানের অভাবে আলবানীর ব্যাপারে বিদ্বেষপূর্ণ সমালোচনা ও অগ্রহণযোগ্য দৃষ্টিভঙ্গি পেশ করেছেন এবং তাঁর ইলমী উত্তরাধিকার থেকে ফায়েদা গ্রহণ থেকে মানুষকে

বিরত রাখার প্রয়াস পেয়েছেন, যা নিতান্তই অনুচিত। আল্লাহ রাববুল আলামীন শায়খ আলবানীকে তাঁর একনিষ্ঠ খেদমতের উত্তম জাযা দান করুন, তাঁর ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করুন এবং তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউসের অধিকারী হিসাবে কবুল করুন। আমীন।


[1]. আল্লামাশায়খ শুআইব আরনাঊত্ব; সীরাতুহূ ফী ত্বলাবিল ইলমি ওয়া জুহূদুহূ ফী তাহকীকিত তুরাছ, পৃ. ২০০-২০১

[2]. নুযহাতুন নযর ফী তাওযীহি নুখবাতিল ফিকার, পৃ. ৬৭; তামামুল মিন্নাহ ফিত তালীক আলা ফিক্বহিস সুন্নাহ, পৃ. ১৫

[3]. মূল আরবী : إذا كان هناك حديث اسناده صحيح لا نقولمقتصرين فقط علي ان رجاله ثقات، لانه لا بد عن تأمل لا بد عن التدقيق فيه، لعل في هذا الإسناد علة، فاذا ما اجتهد مجتهد فتبين له سلامة الاسناد من علة قادحة وحينئذ يصح له أن يقول اسناده صحيح، ... وهذا الذي نجري عليه في كثير من الأحاديث-দ্র. ইবনু আবিল আইনাঈন, সুওয়ালাত লিল-আল্লামা আলবানী সাআলাহা আবূ আব্দুল্লাহ আল-‘আয়নাইন (কায়রো : মাহবাতুল অহী, ১ম প্রকাশ, ২০০২ খ্রি.), পৃ. ১৫১

[4]. মুনাবী, ফায়যুল ক্বাদীর শারহুল জামিইছ ছাগীর, (মিসর : আল-মাকতাবাতুত তিজারিইয়াহ আছ-কুবরা, ১ম প্রকাশ, ১৩৫৬ হি.), পৃ. /৩৭১

[5]. ইবনু আব্দিল বার্র, আত-তামহীদ, (মরক্কো : ওয়াযারাতু উমূমিল আওক্বাফ, ১ম প্রকাশ, ১৩৮৭ হি.), ১৮/১২০

[6]. মাজমাউয যাওয়ায়েদ ১/১১৯

[7]. মুসনাদে আহমাদ, ২৫/২৬৮

[8]. শারহু নুখবাতিল ফিকার, পৃ. ৫৮-৫৯

[9]. সিলসিলা ছহীহাহ, /৮২৬, হা/৪৬০

[10]. ওয়ালীউদ্দীন আত-তিবরীযী, মিশকাতুল মাছাবীহ, তাহক্বীক্ব : আল-আলবানী, (বৈরূত : আল-মাকতাবুল ইসলামী, ৩য় প্রকাশ, ১৯৮৫ খ্রি.), /৪০, হা/১১২-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য

[11]. সিয়ারু আলামিন নুবালা, ৯ম/১৮৮

[12]. মুসলিম হা/৮৭৫; নাসাঈ হা/১৩৯৫

[13]. বুখারী হা/৯৩৪; মুসলিম হা/৮৫১; মিশকাত হা/১৩৮৫

[14]. সূরা আলাক্ব, আয়াত নং ৯-১০

[15]. সূরা নূর, আয়াত নং ৬৩

[16]. সিলসিলা যঈফাহ, ১ম/২০০-২০২

[17]. সিলসিলা ছহীহাহ, /৯৪-১০১উল্লেখ্য যে, বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞানে উক্ত হাদীছটির সিদ্ধান্ত সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। বিস্তারিত দ্রঃ মাসিক আত-তাহরীক (রাজশাহী, ২০ তম বর্ষ, ৩য় সংখ্যা, ডিসেম্বর, ২০১৬ খ্রি.), পৃ. ৩৯

[18]. সিলসিলা ছহীহাহ, /৬০৮-৬১২

[19]. যেমন আব্দুল মাজীদ মুবারাকিইয়াহ রচিত মাকাঈসু নাকদি মুতূনিল হাদীছ ইনদাল আলবানী। উক্ত গ্রন্থটি আলজেরিয়ার আলহাজ লাখদার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী শিক্ষা বিভাগের অধীনে কৃত পিএইচ.ডি অভিসন্দর্ভ। এখানে হাদীছের মতনগত সমালোচনার ক্ষেত্রে আলবানীর অনুসৃত মানহাজ ও অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে।






শেরে পাঞ্জাব, ফাতিহে কাদিয়ান মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) (৮ম কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) - ড. নূরুল ইসলাম
ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) (৩য় কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) (৬ষ্ঠ কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীর (৪র্থ কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) (৯ম কিস্তি) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী (রহঃ) - ড. নূরুল ইসলাম
যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছ মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী (রহঃ) - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব
শেরে পাঞ্জাব, ফাতিহে কাদিয়ান মাওলানা ছানাউল্লাহ অমৃতসরী (রহঃ) - ড. নূরুল ইসলাম
ইমাম নাসাঈ (রহঃ) - কামারুযযামান বিন আব্দুল বারী
ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) (৪র্থ কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
মাওলানা মুহাম্মাদ জুনাগড়ী (রহঃ) (৩য় কিস্তি) - ড. নূরুল ইসলাম
আরও
আরও
.