আমীনুল ইসলাম ছিল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ছাত্র। তার আগে থেকেও আমরা তাকে চিনতাম ‘যুবসংঘ’-এর সদস্য হওয়ার কারণে। সে ছিল অত্যন্ত আনুগত্যশীল, বিনয়ী ও দূরদর্শী। পরামর্শ সভায় তার কাছ থেকে আমরা সর্বদা উত্তম পরামর্শ পেতাম। নম্রভাষী হওয়ায় সে ছিল সবার প্রিয়। ১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর অযোধ্যায় বাবরী মসজিদ ধ্বংসের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে ‘আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র উদ্যোগে যে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল হয়, সেখানে সে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে বক্তব্য রাখে। যার ছবি এখনো এ্যালবামে রক্ষিত আছে। একই বছরে ‘যুবসংঘ’-এর সাংগঠনিক সফরে সে চাঁপাই নবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানাধীন চাতরা আলিয়া মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত ‘যুবসংঘে’র কর্মী প্রশিক্ষণে যায়। সেখানে প্রশ্নোত্তর পর্বে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘যুবসংঘে’র বিরুদ্ধে ‘জমঈয়ত’ মুখপত্র সাপ্তাহিক আরাফাতে যেসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এবং তাদের লোকেরা যেসব অপবাদ রটাচ্ছে, এসবের জবাব কি? উত্তরে সে এককথায় বলেছিল, সংগঠনের দায়িত্ব পালন শেষ করতে পারিনা, ঐসব অপপ্রচারের জবাব দেব কখন? কথাটি তার মুখেই সরাসরি শোনা।

২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারীতে আমরা কারাগারে যাওয়ার পর সুকৌশলে সংগঠনকে লক্ষ্যচ্যুত করার ও সংগঠনকে মিটিয়ে দেওয়ার যে আত্মঘাতি ষড়যন্ত্র হয়েছিল, সে সময় সে ইমারতের প্রতি অটুট আনুগত্য বজায় রেখেছিল এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। আরও পরে মারকাযের সংকটকালে তার ভূমিকা ছিল অনন্য। ইমারত ও বায়‘আতের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য সে সঠিক ভাবে অনুধাবন করেছিল।

সংগঠনের ও মারকাযের যেকোন গুরুত্বপূর্ণ ছোট্ট কমিটিতে তার নামটা যেন আপনাতেই এসে যেত। মৃত্যুর আগেও সে তার সাংগঠনিক আনুগত্যের প্রমাণ রেখে গেছে। ঢাকা মেডিকেল থেকে সে তার ভাগিনার কাছে ফোন করে জানতে চেয়েছে আমীরে জামা‘আতের নির্দেশ কি? নির্দেশ পেয়ে সে ঐ রাতেই এ্যাম্বুলেন্সে রাজশাহী রওয়ানা করেছে। মারকাযে আসার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হ’ল, সে গ্রামের বাড়ীতে যাবে, নাকি মারকাযে থাকবে? সে বলল, আমি মারকাযে থাকব। যেদিন সে আসল তার পরদিন বৃহস্পতিবার মারকাযে ‘যুবসংঘে’র দেশব্যাপী কেন্দ্রীয় কর্মী প্রশিক্ষণ ছিল। একইদিনে ‘আন্দোলন’-এর আমেলা ও তার পরদিন শুক্রবার যেলা সভাপতিদের বৈঠক ছিল। সবাই তার সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পেল এবং তাকে প্রাণ ভরে দো‘আ করল। ৮ তারিখ বুধবার সকালে সে ঢাকা থেকে মারকাযে এল। পরের বুধবার ১৫ তারিখ দুপুর ১২-টায় মারকাযে তার জানাযা হ’ল। অগণিত আলেম, ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মীদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সে চির বিদায় নিল।...






প্রফেসর ড. মুঈনুদ্দীন আহমাদ খান : কিছু স্মৃতি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
দায়িত্বশীলতা ও আদর্শিকতার এক মূর্ত প্রতীক - ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব
স্মৃতির দর্পণে আমীনুল ভাই - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
ইসলামী জাগরণীর প্রাণভোমরা শফীকুল ইসলামের ইন্তেকালে স্মৃতি রোমন্থন - মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম প্রধান
তাবলীগী ইজতেমা ২০০৫ : প্রসঙ্গ কথা - শামসুল আলম
খতীবে আযম : টুকরো স্মৃতি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
জেল-যুলুমের ইতিহাস - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
তাবলীগী ইজতেমার সেই রজনী! - শামসুল আলম
স্মৃতির আয়নায় তাবলীগী ইজতেমা
এক পিতার ঘরে ফেরা... - শরীফা বিনতে আব্দুল মতীন
আমীনুলের কিছু স্মৃতি - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
তাবলীগী ইজতেমা ২০১৮ : টুকরো স্মৃতি - মুহাম্মাদ বেলাল বিন ক্বাসেম
আরও
আরও
.