সেশন কর্মী সম্মেলন ২০১৯-২১

৯ ও ১০ই সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতি ও শুক্রবার

দুনিয়াবী স্বার্থে নয়, পরকালীন স্থায়ী শান্তির আশায় কাজ করুন!

-মুহতারাম আমীরে জামা‘আত

রাজশাহী ৯ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার : অদ্য বাদ আছর ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়ায় দারুলহাদীছ বিশ্ববিদ্যালয় (প্রা.) জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত ২০১৯-২১ সেশন কর্মী সম্মেলনে প্রদত্ত উদ্বোধনী ভাষণে সম্মেলনের সভাপতি ও ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদশে’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্ল­াহ আল-গালিব কর্মীদের প্রতি উপরোক্ত আহবান জানান। তিনি সূরা শূরার ২০ আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, যারা দুনিয়ার জন্য দুনিয়া করে তারা স্রেফ দুনিয়া পায় আখেরাত হারায়। যারা দ্বীনের জন্য দুনিয়া করে তারা দুনিয়া ও আখেরাত দু’টিই পায়। আর যারা দুনিয়ার জন্য দ্বীন করে, তারা দুনিয়া ও আখেরাত দু’টিই হারায়।

আমীরে জামা‘আত বলেন, আহলেহাদীছ ও বিদ‘আতীদের মধ্যে পার্থক্য শুধু রাফউল ইয়াদায়েন ও আমীন বলা নয়। বরং যারা সার্বিক জীবনে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের বিধান যারা মেনে চলবেন তারাই আহলেহাদীছ। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, ছহীহ বুখারী ও ছহীহ মুসলিমের দারস দেওয়া আহলেহাদীছ শিক্ষকরাও চল্লিশা ও কুলখানীসহ বিভিন্ন বিদ‘আতী কর্মকান্ডে জড়িত থাকতেন। আমাদের দাওয়াত ও সাংগঠনিক তৎপরতায় যা এখন প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। তাই আপনাদেরকে দাওয়াতী ময়দানে সর্বদা সক্রিয় থাকতে হবে।

আহলেহাদীছ আন্দোলন সার্বিক জীবনে ইসলামের বিধান পালনের আন্দোলন। এর ইতিহাস মানুষের রচিত ধর্মীয় ও বৈষয়িক বিধান সমূহ থেকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের স্বচ্ছ ইসলামের দিকে ফিরে আসার ইতিহাস। যে বিষয়ে পাশ্চাত্যের অমুসলিম বিদ্বানগণ দ্ব্যর্থহীনভাবে বলে গেছেন। তিনি বলেন, আহলেহাদীছ আন্দোলনের ইতিহাস ইখলাছ ও ত্যাগের ইতিহাস। মাত্র ১ টাকা মাসিক এয়ানত দিয়ে আমরা ছাত্ররা ‘যুবসংঘে’র নামে সাংগঠনিক কাজ শুরু করেছিলাম। আজ দাওয়াত ও সংগঠন দেশব্যাপী এমনকি দেশের সীমানা পেরিয়ে প্রসার লাভ করেছে। এসবই ত্যাগের ও ইখলাছের দুনিয়াবী ফসল। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, হকের দাওয়াত দিলে বাধা অবশ্যম্ভাবী। সর্বোচ্চ বাধা রাজনৈতিক বাধা। যে পরীক্ষাও আমাদের জীবনে হয়ে গেছে। দশ দশটি মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাবন্দী করেছিল কথিত ইসলামী মূল্যবোধের চারদলীয় জোট সরকার। আমরা বিচার দিয়েছিলাম আল্লাহর কাছে। বিচার তিনি করেছেন। তারা বলেছিল, We want him at least 14 years to let this movement die down. ‘আমরা চাই তাকে কমপক্ষে ১৪ বছর জেলে রাখতে। যাতে এই আন্দোলন মরে নিঃশেষ হয়ে যায়’। কিন্তু না আমরা বা আমাদের আন্দোলন মরেনি। বরং আরও বেড়েছে ও আরও বেগবান হয়েছে আল্লাহর অশেষ রহমতে। তবে তারা আমাদের জীবন থেকে ৩ বছর ৬ মাস ৬ দিন ছিনিয়ে নিয়েছে এবং হাজতের নামে কারা নির্যাতন করেছে। অতঃপর ৮ বছর ৮ মাস ২৮ দিন মিথ্যা মামলার বোঝা বইতে বাধ্য করেছে। তাই আসুন! আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সকল বাধা অতিক্রম করে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দাওয়াত নিয়ে সমাজ সংস্কারের লক্ষ্যে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাই।

১ম দিন বাদ আছর আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর হিফয বিভাগের প্রধান হাফেয লুৎফর রহমানের অর্থ সহ কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়। এরপর আল-হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য মুহাম্মাদ মীযানুর রহমানের (জয়পুরহাট) জাগরণী পরিবেশন করে। অতঃপর স্বাগত ভাষণ পেশ করেন সম্মেলনের আহবায়ক কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম (মেহেরপুর)।

অতঃপর আমীরে জামা‘আতের উদ্বোধনী ভাষণের পর বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য শুরু হয়। প্রথমে ‘সাংগঠনিক জীবনে ইখলাছের গুরুত্ব’ বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন কুমিল্লা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা ছফিউল্ল­াহ। অতঃপর ‘সমাজ সংস্কারে সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়ার শিক্ষক মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম (রাজশাহী)।

অতঃপর বাদ মাগরিব ‘ইহতিসাব রাখার গুরুত্ব ও পদ্ধতি’ বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক দুররুল হুদা (রাজশাহী), ‘সমাজের আক্বীদা সংস্কারে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’-এর অবদান’ বিষয়ে মাওলানা আমানুল্লাহ বিন ইসমাঈল (পাবনা), ‘তাযকিয়া ও তারবিয়াহর দু’টি মাধ্যম পর্যালোচনা’ বিষয়ে কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম (মারকায)।

তারপর সংগঠনের উন্নতি ও অগ্রগতি বিষয়ে যেলা সভাপতি ও প্রতিনিধিগণের মধ্য হ’তে পরামর্শমূলক বক্তব্য পেশ করেন সঊদী আরব শাখার পক্ষ থেকে জনাব ইমরান মোল্লা (রিয়াদ), চট্টগ্রাম যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক আরজু হোসাইন ছাবিবর, খুলনা যেলা সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, দিনাজপুর-পূর্ব সাংগঠনিক যেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক যাকির হোসাইন, নওগাঁ যেলা সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ আফযাল হোসাইন ও নারায়ণগঞ্জ যেলা সভাপতি মুহাম্মাদ শফীকুল ইসলাম।

অতঃপর বাদ এশা বক্তব্য পেশ করেন ঢাকা-দক্ষিণ সাংগঠনিক যেলার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ আযীমুদ্দীন, ঢাকা-উত্তর সাংগঠনিক যেলার সভাপতি সাইফুল ইসলাম, বগুড়া যেলা সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ ছহীমুদ্দীন ও সাতক্ষীরা যেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল মান্নান।

২য় দিন শুক্রবার বাদ ফজর দরসে কুরআন পেশ করেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত। তিনি সূরা হাশরের ৭ আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, আমাদের সার্বিক জীবনে একমাত্র অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব হ’লেন শেষনবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)। তাঁর নির্দেশ মুসলমানদের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কার্যকর। ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের নাম। আহলেহাদীছ আন্দোলনও তাই। অতঃপর তিনি ভারতের বিখ্যাত হানাফী মনীষী আবুল হাসান আলী নাদভীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, ভারতে আহলেহাদীছ আন্দোলন ৪টি  বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তিশীল। (১) তাওহীদ (২) ইত্তেবায়ে সুন্নাত (৩) জিহাদী জাযবা ও (৪) আল্লাহর নিকট বিনীত হওয়া। আমাদের মধ্যেও যেন উক্ত ৪টি বৈশিষ্ট্য সর্বদা বিদ্যমান থাকে। তিনি বলেন, আহলেহাদীছদের মধ্যে এখন দু’টি পার্থক্য রেখা ফুটে উঠেছে। একদল জাতীয়তাবাদী আহলেহাদীছ ও আরেকদল বিশুদ্ধতাবাদী বা সংস্কারপন্থী আহলেহাদীছ। আমরা নিঃসন্দেহে সংস্কারবাদী এবং সার্বিকভাবে সমাজ সংস্কারে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আপনাদের প্রতি পদক্ষেপে যেন সংস্কারের বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে।

আমীরে জামা‘আতের দরসের পর বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য শুরু হয়। (১) ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন ও অন্যান্য ইসলামী আন্দোলনের মধ্যে পার্থক্য’ বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন মেহেরপুর যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা মানছূরুর রহমান, (২) ‘সাপ্তাহিক তা‘লীমী বৈঠকের গুরুত্ব পর্যালোচনা’ বিষয়ে ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রশীদ আখতার (কুষ্টিয়া), (৩) ‘আদর্শ সোনামণি গঠনে অনুকূল পরিবেশের প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ে ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় সহ-পরিচালক রবীউল ইসলাম (মারকায), (৪) ‘সংগঠনের অগ্রগতিতে মাসিক সফর পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের গুরুত্ব’ বিষয়ে মেহেরপুর যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ তরীকুযযামান, (৫) ‘গঠনতন্ত্রের ধারা-১৬ পর্যালোচনা’ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম (যশোর), (৬) ‘দ্বিতীয় দফা মূলনীতি অনুসরণের গুরুত্ব’ বিষয়ে কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আলতাফ হোসাইন (সাতক্ষীরা) এবং (৭) ‘আল-‘আওনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ে ‘আল-‘আওন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকির (মারকায) প্রমুখ।

নাশতার বিরতির পর (৮) ‘আহলুলহাদীছ ও আহলুর রায়-এর পার্থক্য’ বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন ‘যুবসংঘ’-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব (মারকায), (৯) ‘গঠনতন্ত্রের অপরিবর্তনীয় ধারা-৩ ও ৪ ব্যাখ্যা’ বিষয়ে আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়ার ভাইস-প্রিন্সিপ্যাল ড. নূরুল ইসলাম (মারকায), (১০) ‘কর্মীদের মান বৃদ্ধিতে ‘কর্মপদ্ধতি’র তৃতীয় দফা বাস্তবায়নের গুরুত্ব’ বিষয়ে ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন (মারকায), (১১) ‘সংগঠনের মযবূতীর জন্য নিয়মিত কর্মী যোগাযোগের গুরুত্ব’ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম (মেহেরপুর), এবং (১২) ‘আন্দোলন’-এর অগ্রগতিতে ‘থিসিস’ পাঠের গুরুত্ব’ বিষয়ে সম্মানিত অতিথি বক্তা হিসাবে ভাষণ পেশ করেন আমেরিকার লুজিয়ানা টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির সাবেক প্রফেসর ড. শহীদ নক্বীব ভূঁইয়া (ঢাকা)। অতঃপর ২০২১-২৩ সেশনের মজলিসে আমেলা, শূরা, যেলা সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম। অতঃপর আমীরে জামা‘আত তাদের বায়‘আত গ্রহণ করেন। 

কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য সম্মেলন : সম্মেলনের ২য় দিন শুক্রবার সকাল ৯-টা থেকে ১১-টা পর্যন্ত আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফীর অফিসে মুহতারাম আমীরে জামা‘আতের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মাওলানা নূরুল ইসলাম-এর পরিচালনায় ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর সেক্রেটারী জেনারেল কর্তৃক উদ্বোধনী বক্তব্যের পর সভাপতির নির্দেশক্রমে ২০১৯-২০২১ বর্ষের কেন্দ্রের  দ্বি-বার্ষিক আয়-ব্যয়ের অডিটকৃত হিসাব পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম। এরপর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সার্বিক রিপোর্ট পেশ করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। অতঃপর সংগঠনের অগ্রগতি সম্পর্কে পরামর্শমূলক বক্তব্য পেশ করেন রাজশাহী সদর সাংগঠনিক যেলার উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট জারজিস আহমাদ। এ সময় রাজশাহী-পূর্ব সাংগঠনিক যেলা সভাপতি ৯৪ বছর বয়স্ক দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব জনাব ডা. ইদ্রীস আলী অসুস্থ শরীর নিয়ে কষ্ট করে এসে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত সহ সকলের নিকট দো‘আ চান। অতঃপর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কর্মী সম্মেলনের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট ১০ দফা দাবী পেশ করে প্রস্তাবনা পেশ করেন। যা সমস্বরে গৃহীত হয়। এই সময় ঢাকা থেকে সম্মানিত মেহমান প্রফেসর ড. শহীদ নক্বীব ভূঁইয়া আগমন করেন ও সকলের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। সবশেষে কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্যদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিষয়ে হেদায়াতী ভাষণ পেশ করেন মুহতারাম আমীরে জামা‘আত।

সম্মেলনের অন্যান্য রিপোর্ট : দু’দিন ব্যাপী কর্মী সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে কুরআন তেলাওয়াত করেন, হাফেয লুৎফুর রহমান (মারকায), হাফেয আহমাদ আব্দুল্ল­াহ শাকির (মারকায), হাফেয মুখলেছুর রহমান (বগুড়া)। ইসলামী জাগরণী পরিবেশন করে আল-হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য মুহাম্মাদ মীযানুর রহমান (জয়পুরহাট), রাক্বীবুল ইসলাম ও ইয়াকূব হোসাইন (মেহেরপুর) প্রমুখ।

সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে সঞ্চালক ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রশীদ আখতার, দফতর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম। সম্মেলনে ৫৮টি যেলা থেকে ১১০১ জন বাছাইকৃত কর্মী উপস্থিত হন।

জুম‘আর খুৎবা : খুৎবায় সূরা নিসার ৬৫ আয়াত উদ্ধৃত করে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত বলেন, এই আয়াত সহ সূরা মায়েদার ৪৪-৪৫ ও ৪৭ আয়াতের ব্যাখ্যায় খারেজী আক্বীদাপুষ্ট মুফাসসিরদের ভুল তাফসীরে প্রভাবিত হয়ে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির গোলক ধাঁধাঁয় পড়ে দেশের অনেক তরুণ চরমপন্থী ও জঙ্গীবাদী তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমাদের সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এই ধাঁধাঁ থেকে মুক্ত এবং এর বিরুদ্ধে একমাত্র প্রতিবাদী সংগঠন হিসাবে জ্ঞানী মহলে সমাদৃত। তিনি বলেন, অন্যান্য দলের লক্ষ্য স্ব স্ব দলকে বিজয়ী করা। আর আমাদের লক্ষ্য হ’ল, সার্বিক জীবনে কুরআন-হাদীছকে বিজয়ী করা। আমাদের লক্ষ্য সমাজ পরিবর্তন করা এবং দল-মত নির্বিশেষে সকল বনু আদমের নিকট কুরআন-হাদীছের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া। অতঃপর তিনি সমাজের মদ-জুয়া, সূদ-ঘুষ, বেপর্দা-বেহায়াপনা ও নারী নির্যাতনের ব্যাপকতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান। সবশেষে তিনি সেশন কর্মী সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন।

সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাব সমূহ : কর্মী সম্মেলনে নিম্নোক্ত প্রস্তাবসমূহ বিবেচনার জন্য দেশের সরকার, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণের নিকটে পেশ করা হয়- (১) পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে দেশের আইন, বিচার ও শাসন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। (২) জঙ্গীবাদের মূলোৎপাটন এবং সামাজিক অনাচার সমূহ প্রতিরোধের জন্য শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং সহ শিক্ষার বিশুদ্ধ ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং মাদ্রাসা ও স্কুল-কলেজের সিলেবাস থেকে ডারউইনের নাস্তিক্যবাদী বিবর্তনবাদ সহ সকল প্রকার ইসলাম বিরোধী মতবাদ প্রত্যাহার করতে হবে। (৩) মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছবি-মূর্তি টাঙানো ও শহীদ মিনার স্থাপনের বাধ্যবাধ্যকতা প্রত্যাহার করতে হবে। (৪) স্কুল-মাদরাসার পাঠ্য বই সমূহ থেকে ঈমান-আক্বীদা বিরোধী সবকিছু প্রত্যাহার করতে হবে। (৫) সিলেবাস প্রণয়ন কমিটিতে এবং ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর পরিচালনা কমিটিতে ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর মনোনীত প্রতিনিধি রাখতে হবে। (৬) ছেলে ও মেয়েদের সহশিক্ষা বাতিল করতে হবে। সাথে সাথে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শালীন পোষাক ও পর্দাপ্রথা নিশ্চিত করা এবং মহিলাদের পর্দা পালনে বাধাসৃষ্টিকারীদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। (৭) যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় রোধে মদ-জুয়ার অবাধ সয়লাব রোধ এবং বিনোদন ও সংস্কৃতির নামে টিভি-সিনেমা ও পত্র-পত্রিকা থেকে অশ্লীলতা ও বেলেল্লাপনা বন্ধ করতে হবে। সেই সাথে সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশে এবং বিশুদ্ধ ইসলামের প্রচার ও প্রসারে মাসিক আত-তাহরীক ও আত-তাহরীক অনলাইন টিভিসহ অন্যান্য সুস্থ গণমাধ্যমকে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা দান করতে হবে। (৮) এ সম্মেলন খুন ও ধর্ষণের ব্যাপারে স্বীকারোক্তিদানকারী অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করার আহবান জানাচ্ছে। সেই সাথে বিবাহের ক্ষেত্রে মেয়েদের ১৮ বছর বয়সের ইসলাম বিরোধী শর্ত এবং তালাকের ক্ষেত্রে ‘হিল্লা প্রথা’ বাতিল করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছে। (৯) এ সম্মেলন আহলেহাদীছদের বিরুদ্ধে মহলবিশেষের আক্রমণাত্মক অবস্থানের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং এ ব্যাপারে সরকারের নিরপেক্ষ ও সক্রিয় হস্তক্ষেপ দাবী করছে। (১০) এ সম্মেলন রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিয়ে তাদেরকে সসম্মানে দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য অথবা তাদের আবাসভূমি রাখাইন প্রদেশকে স্বাধীন ‘আরাকান রাষ্ট্র’ ঘোষণার জন্য জাতিসংঘ সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।

আল-‘আওন-এর ক্যাম্পিং ও ব্লাড গ্রুপিং : সম্মেলন উপলক্ষে আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী কমপ্লেক্স-এর আবাসিক ভবনের ডাইনিং হলের সামনে ২নং স্টলে আল-‘আওন-এর কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে ক্যাম্পিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ক্যাম্পিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আল-‘আওন-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ জাহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকির, তথ্য সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামূন, দফতর সম্পাদক শরীফুল ইসলাম প্রমুখ। উক্ত ক্যাম্পিংয়ে মোট ৩২ জনের ব্লাড গ্রুপিং ও ২৮ জন ডোনর বা রক্তদাতা সদস্য তালিকাভুক্ত হন। এ সময় আল-‘আওনের শ্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন সমূহ প্রদর্শন করা হয়।

প্রশিক্ষণ

চন্ডিপুর, মণিরামপুর, যশোর ১৬ই জুলাই শুক্রবার : অদ্য বেলা ১১-টায় যেলার মণিরামপুর উপযেলাধীন চন্ডিপুর আহলেহাদীছ জামে মসজিদে এক দায়িত্বশীল প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি আ. ন. ম বযলুর রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত প্রশিক্ষণে কেন্দ্রীয় মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুনীরুয্যামান।

মাসিক ইজতেমা

উত্তর পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম ৩রা সেপ্টেম্বর শুক্রবার : অদ্য বাদ জুম‘আ যেলার পতেঙ্গা থানাধীন হোসেন আহমাদ পাড়াস্থ বায়তুর রহমান আহলেহাদীছ জামে মসজিদে যেলা ‘আন্দোলন’-এর উদ্যোগে মাসিক ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মুহাম্মাদ শেখ সা‘দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত ইজতেমায় কেন্দ্রীয় মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন। সঞ্চালক ছিলেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক আরজু হোসাইন সাবিবর। উল্লেখ্য, মাসিক ইজতেমার পূর্বে কেন্দ্রীয় মেহমান উক্ত মসজিদে জুম‘আর খুৎবা প্রদান করেন।

আলোচনা সভা

তকিপুর, বাগমারা, রাজশাহী ২৬শে জুলাই সোমবার : অদ্য বাদ মাগরিব যেলার বাগমারা উপযেলাধীন তকিপুর আহলেহাদীছ জামে মসজিদে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ বাগমারা উপযেলার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শাখা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি ও অত্র মসজিদের খতীব মুহাম্মাদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন রাজশাহী-পূর্ব সাংগঠনিক যেলা ‘আন্দোলন’-এর সহ-সভাপতি মাস্টার এস. এম সিরাজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সুলতান মাহমূদ।

কোয়ালীপাড়া, বাগমারা, রাজশাহী ২৮শে জুলাই বুধবার : অদ্য বাদ আছর যেলার বাগমারা উপযেলাধীন কোয়ালীপাড়া উত্তর পাড়া আহলেহাদীছ জামে মসজিদে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ নরদাশ এলাকার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এলাকা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাস্টার মানছূর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম ও সহ-পরিচালক মুহাম্মাদ মুঈনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন নরদাশ এলাকা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ ইব্রাহীম।

হরিয়ান নগর, মণিরামপুর, যশোর ৬ই আগস্ট শুক্রবার : অদ্য বাদ জুম‘আ যেলার মণিরামপুর উপযেলাধীন হরিয়ান নগর আহলেহাদীছ জামে মসজিদে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শাখা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মুহাম্মাদ হাসান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি আ. ন. ম বযলুর রশীদ ও ‘যুবসংঘ’-এর সভাপতি হাফেয তরীকুল ইসলাম। উল্লেখ্য, আলোচনা সভার পূর্বে কেন্দ্রীয় মেহমান অত্র মসজিদে জুম‘আর খুৎবা প্রদান করেন।

তা‘লীমী বৈঠক

সাধুরমোড়, বোয়ালিয়া, রাজশাহী ১১ই আগস্ট বৃহস্পতিবার : অদ্য বাদ মাগরিব যেলা শহরের বোয়ালিয়া থানাধীন সাধুর মোড় মাসিক আত-তাহরীক-এর প্রবীন লেখক মৃত আলহাজ্জ আব্দুর রহমানের বড় পুত্র মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আমেরিকা প্রবাসী মাহফূযুর রহমানের বাসায় তার সভাপতিত্বে এক তা‘লীমী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত তা‘লীমী বৈঠকে কেন্দ্রীয় মেহমান হিসাবে উপস্থিত

ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও মাসিক আত-তাহরীক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন এবং ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মুহাম্মাদ ক্বারী।

কোমরপুর, পাবনা ৩রা সেপ্টেম্বর শুক্রবার : অদ্য বাদ আছর যেলার সদর থানাধীন কোমরপুর হযরত আলী (রাঃ) জামে মসজিদে এক তা‘লীমী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সদর থানা ‘আন্দোলন’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ গোলযারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত বৈঠকে কেন্দ্রীয় মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘সোনামণি’র কেন্দ্রীয় পরিচালক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন ‘আল-‘আওনে’র কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক আব্দুল্লাহ নাবীল ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মাদ শাহীন ও শাখা ‘আন্দোলন’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদত হোসাইন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন অত্র মসজিদের পরিচালক রবীউল ইসলাম।

মহিলা সমাবেশ

দুর্বাডাঙ্গা, মণিরামপুর, যশোর ৮ই আগস্ট রবিবার : অদ্য বাদ আছর যেলার মণিরামপুর উপযেলাধীন দুর্বাডাঙ্গা আহলেহাদীছ জামে মসজিদে এক মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শাখা ‘আহলেহাদীছ মহিলা সংস্থা’র সভানেত্রী তহূরুন নেসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে কেন্দ্রীয় মেহমান হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম। তিনি তার বক্তব্যে পর্দার অন্তরালে সমবেত মা-বোনদের উদ্দেশ্যে আদর্শ পরিবার গঠনে ‘আহলেহাদীছ মহিলা সংস্থা’র গুরুত্ব তুলে ধরেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য পেশ করেন শাখা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ বেলালুদ্দীন।






আরও
আরও
.