অমর বাণী

 ১. আবূবকর ছিদ্দীক্ব (রাঃ) বলেন, اعْلَمْ يَا عَمْرُو! إِنَّ ‌أَطْوَعَ ‌النَّاسِ ‌لِلَّهِ ‌أَشَدُّهُمْ ‌بُغْضًا ‌لِلْمَعَاصِي، فَأَطِعِ اللهَ وَأْمُرْ أَصْحَابَكَ بِطَاعَتِهِ، ‘হে আমর, জেনে রেখ! আল্লাহর অধিক অনুগত সেই ব্যক্তি, যে পাপকে সবচেয়ে বেশী ঘৃণা করে। সুতরাং তুমি আল্লাহর আনুগত্য কর এবং তোমার বন্ধু-বান্ধবকে তাঁর অনুগত হওয়ার নির্দেশ প্রদান কর’।[1]

২. সাহল বিন আব্দুল্লাহ তুসতারী (রহঃ) বলেন, أَعْمَالُ الْبِرِّ يَعْمَلُهَا الْبَرُّ وَالْفَاجِرُ وَلَا يَجْتَنِبُ الْمَعَاصِي إِلَّا صِدِّيقٌ، ‘নেককার ও পাপিষ্ঠ সবাই নেকীর কাজ করতে পারে। কিন্তু শুধু সত্যনিষ্ঠ বান্দাই কেবল পাপাচার থেকে বিরত থাকতে পারে’।[2]

৩. আবূবকর ছিদ্দীক্ব (রাঃ) বলেন, ‌وجدنا ‌الكرم ‌في ‌التقوى والغنى في اليقين والشرف في التواضع، ‘আমরা সম্মান পেয়েছি তাক্বওয়ার মাঝে, স্বচ্ছলতা পেয়েছি দৃঢ় বিশ^াস তথা ঈমানের মাঝে এবং মর্যাদা পেয়েছি বিনয়ের মাঝে’।[3]

৪. ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন,وليس ‌على ‌المرأة ‌بعد ‌حق ‌الله ‌ورسوله أوجب من حق الزوج، ‘নারীর জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অধিকারের পরে স্বামীর চেয়ে অপরিহার্য অধিকার আর কারো নেই’।[4]

৫. আবূ হাযেম আল-আশজা‘ঈ (রহঃ) বলেন, انْظُرِ ‌الَّذِي ‌تُحِبُّ ‌أَنْ ‌يَكُونَ مَعَكَ فِي الْآخِرَةِ فَقَدِّمْهُ الْيَوْمَ ، وَانْظُرِ الَّذِي تَكْرَهُ أَنْ يَكُونَ مَعَكَ ثَمَّ فَاتْرُكْهُ الْيَوْمَ، ‘লক্ষ্য করে দেখ! আখেরাতে তোমার সাথে যে জিনিস থাকা তুমি পসন্দ কর, তা আজই সেখানে পাঠিয়ে দাও। আর লক্ষ্য করে দেখ! তোমার সাথে পরকালে যে জিনিস থাকা অপসন্দ কর, তা আজই পরিত্যাগ কর’।[5]

৬. আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (রহঃ) বলেন,‌من ‌أعظم ‌المصائب ‌للرجل أن يعلم من نفسه تقصيرا، ثمّ لا يبالي ولا يحزن عليه، ‘মানুষের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ বিপদ হ’ল, নিজের দোষ-ত্রুটির ব্যাপারে জেনেও তার পরোয়া না করা এবং তা নিয়ে চিন্তিত না হওয়া’।[6]

৭. আব্দুল্লাহ আর-রাযী (রহঃ) বলেন,إِنْ سَرَّكَ أَنْ تَجِدَ ‌حَلاوَةَ ‌الْعِبَادَةِ وَتَبْلُغَ ذُرْوَةَ سَنَامِهَا؛ فَاجْعَلْ بَيْنَكَ وَبَيْنَ شَهَوَاتِ الدُّنْيَا حَائِطًا مِنْ حَدِيدٍ، ‘তুমি যদি ইবাদতের স্বাদ আস্বাদন করতে চাও এবং আনুগত্যের সুউচ্চশিখরে আরোহণ করে আনন্দিত হ’তে চাও, তাহ’লে তোমার এবং পার্থিব কামনা-বাসনার মাঝে লোহার প্রাচীর দাঁড় করিয়ে দাও’।[7]

৮. ফুযাইল ইবনে ইয়ায (রহঃ) বলেন,لم ينبُل من نَبُلَ بالحج والجهاد، ولا بالصوم ولا بالصلاة، إنما نبل عندنا من يعقِلُ أَيْشٍ يُدخِل جَوْفَه، يعني الرَّغِيفَ من حِلِّه، ‘সেই ব্যক্তি সম্ভ্রান্ত মুসলিম ও মহৎ নয়, যে শুধু হজ্জ, ছিয়াম, ছালাত প্রভৃতি ইবাদত সম্পাদন করে; বরং আমার মতে প্রকৃত সম্ভ্রান্ত সেই ব্যক্তি, যিনি (এসব ইবাদত বন্দেগীর পাশাপাশি) সবসময় হিসাব করেন, তার পেটে হালাল ঢুকেছে নাকি হারাম ঢুকেছে’।[8]

৯. সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ) বলেন,يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ تَمُوتُ فِيهِ الْقُلُوبُ، وَتَحْيَى الْأَبْدَانُ، ‘মানুষের সামনে এমন একটি যুগ আসবে, যখন তাদের দেহগুলো জীবিত থাকলেও অন্তরগুলো মরে যাবে’।[9]

১০. শায়খ ওছায়মীন (রহঃ) বলেন, الإنسان ‌إذا ‌احتاج ‌ودعا ‌ربه أوشك أن يستجاب له لأن الله سبحانه وتعالى يجيب دعوة المضطر ودعوة المحتاج أكثر مما يستجيب لغيرهما، ‘মানুষ যখন তার রবের মুখাপেক্ষী হয়ে দো‘আ করে, তখন তার দো‘আ কবুলের সম্ভাবনা থাকে। কেননা মহান আল্লাহ অন্যান্যদের চেয়ে মুখাপেক্ষী ও আর্ত লোকের দো‘আ বেশী কবুল করে থাকেন’।[10]

১১. ইমাম ইবনে তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন,من رأى ‌أنه ‌لا ‌ينشرح ‌صدره، ولا يحصل له حلاوة الإيمان ونور الهداية، فليكثر التوبة والاستغفار، ‘কেউ যদি দেখে যে তার বক্ষ প্রশস্ত হচ্ছে না, ঈমানের স্বাদ ও হেদায়াতের নূর অর্জন করা যাচ্ছে না, তবে সে যেন বেশী বেশী তওবা-ইস্তিগফার করে’।[11]

১২. মুহাম্মাদ ইবনে ইউসুফ (রহঃ) বলেন,لَوْ أَنَّ رَجُلًا سَمِعَ بِرَجُلٍ أَطْوَعَ لِلَّهِ مِنْهُ أَوْ عَرَفَهُ كَانَ يَنْبَغِي أَنْ يحْزِنَهُ ذَلِكَ، ‘যদি কোন লোক শুনতে পায় অথবা জানতে পারে যে, অন্য কোন ব্যক্তি তার চেয়ে আল্লাহর বেশী অনুগত হয়ে গেছে, তবে এজন্য তার উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত’।[12]

আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ

 এম.ফিল গবেষক, আরবী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


[1]. তাবারাণী, মু‘জামুল আওসাত্ব হা/৮২৮৪; মাজমা‘উয যাওয়ায়েদ, ৬/১১৭; আহমাদ যাকী ছাফওয়াত, জামহারাতু খুতাবিল আরাব ১/৪৪৬।

[2]. আবূ নু‘আইম, হিলয়াতুল আওলিয়া ১৩/২১১; মাওয়াইযুছ ছাহাবা, পৃ. ২৬।

[3]. গাযালী, ইহইয়াউ ‘উলূমিদ্দীন ৩/৩৪৩।

[4]. মাজমূ‘উল ফাতাওয়া ৩২/২৭৫।

[5]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা, ৭/১৯৪।

[6]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান ১/৫১৫।

[7]. আল-মুজালাসাহ ওয়া জাওয়াহিরুল ইলম, ৩/৫৩৩।

[8]. আবূ তাহের সিলাফী, আত-তুয়ূরিয়াত ২/৩২৯।

[9]. আবূ নু‘আইম, হিলয়াতুল আওলিয়া ৭/৮২।

[10]. শারহু রিয়াযিছ ছালিহীন ৪/৬১৫।

[11]. ইবনু তায়মিয়াহ, আল-ফাতাওয়াল কুবরা ৫/৬২।

[12]. আবূ নু‘আইম, হিলয়াতুল আওলিয়া ৮/২৩৩।






আরও
আরও
.