মানব জাতির প্রতি ফেরেশতাদের অভিশাপ :

ফেরেশতামন্ডলী মানুষের উত্তম গুণাবলীর কারণে যেমন তাদের জন্য দো‘আ করেন, তেমনি মানুষের ঘৃণ্য দোষ, অসৎ কাজ ও অপকর্মের কারণে তাদের জন্য বদদো‘আ করেন বা অভিসম্পাত করেন। যাদের জন্য ফিরিশতাগণ বদদো‘আ করেন, তাদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নে পেশ করা হ’ল।-

১. ছাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে খারাপ মন্তব্যকারী :

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর ছাহাবীদেরকে গাল-মন্দ করতে নিষেধ করেছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, لاَ تَسُبُّوْا أَصْحَابِيْ لاَ تَسُبُّوا أَصْحَابِيْ فَوَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا أَدْرَكَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلاَ نَصِيْفَهُ- ‘তোমারা আমার ছাহাবীদেরকে গালি দিও না। তোমরা আমার ছাহাবীদেরকে গালি দিও না। যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! তোমাদের মধ্যে কেউ যদি ওহোদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ দান করে, আমার ছাহাবীদের এক মুদ বা অর্ধ মুদ পরিমাণ (শস্য) দানের সমান ছওয়াব পাবে না’।[1]

যাদেরকে ফেরেশতাগণ অভিশাপ করেন তাদের মধ্যে অন্যতম হ’ল ঐ সকল লোক যারা ছাহাবীদেরকে গালি দেয়।

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ سَبَّ أَصْحَابِيْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلائِكَةِ، وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ-

আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ছাহাবীদেরকে গালি দিল তার উপর আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতা ও সকল মানুষের অভিশাপ’।[2]

এ হাদীছের ব্যাখ্যায় আল্লামা মানাবী (রহঃ) বলেন, سبهم অর্থ- যে তাদেরকে গালি দিল আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে সৎলোকদের দল থেকে বের করে দেন এবং সৃষ্টজীব তাদের জন্য বদ দো‘আ করে থাকে।[3]

মদীনায় বিদ‘আতের প্রচলনকারী :

যে সমস্ত অধম ব্যক্তিদেরকে ফেরেশতাগণ অভিশাপ করে থাকেন, তাদের এক প্রকার হ’ল যারা মদীনাতে বিদ‘আতে লিপ্ত অথবা বিদ‘আতকারীকে আশ্রয় দিবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী করীম (ছাঃ) হ’তে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,

الْمَدِيْنَةُ حَرَمٌ فَمَنْ أَحْدَثَ فِيْهَا حَدَثًا أَوْ آوَى مُحْدِثًا فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ لاَ يُقْبَلُ مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَدْلٌ وَلاَ صَرْفٌ-

‘মদীনা হ’ল হারাম। যে ব্যক্তি সেখানে বিদ‘আত প্রবর্তন করবে বা বিদ‘আতীকে আশ্রয় দিবে তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতাকুল ও সমস্ত মানুষের অভিশাপ। ক্বিয়ামতের দিন তার ফরয, নফল কোন আমলই গ্রহণ করা হবে না’।[4]

মদীনাবাসীর উপর অত্যাচারকারী অথবা তাদেরকে ভয় প্রদর্শনকারী :

যারা রাসূল (ছাঃ)-এর শহর মদীনার উপর অত্যাচার করে এবং সেখানকার অধিবাসীদেরকে ভয় প্রদর্শন করে তাদেরকে ফেরেশতাগণ অভিশাপ করে থাকেন। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ أَخَافَ أَهْلَ الْمَدِيْنَةِ أَخَافَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ وَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ لاَ يَقْبَلُ اللهُ مِنْهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ صَرْفًا وَلاَ عَدْلاَ- ‘যে ব্যক্তি মদীনাবাসীকে ভয় দেখাল, আল্লাহ তা‘আলা যেন তাকে ভয় দেখান। আর তার উপর আল্লাহ তা‘আলা, ফেরেশতাকুল ও সকল মানুষের অভিশাপ। আল্লাহ তা‘আলা ক্বিয়ামত দিবসে তার ফরয ও নফল কোন ইবাদতই গ্রহণ করবেন না’।[5]

মুসলমানদের সাথে অঙ্গীকার ও সন্ধি ভঙ্গকারী :

যারা মুসলমানদের সাথে কৃত সন্ধি ও চুক্তি ভঙ্গ করে তাদের জন্য ফেরেশতাগণ বদদো‘আ করেন। আলী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,

وَذِمَّةُ الْمُسْلِمِيْنَ وَاحِدَةٌ يَسْعَى بِهَا أَدْنَاهُمْ فَمَنْ أَخْفَرَ مُسْلِمًا فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ لاَ يُقْبَلُ مِنْهُ صَرْفٌ وَلاَ عَدْلٌ-

‘সকল মুসলমানদের সন্ধি ও চুক্তি এক। সবচেয়ে নিচু শ্রেণীর একজন মুসলমান সন্ধি ও চুক্তি করতে পারে। যে ব্যক্তি মুসলমানদের সাথে সন্ধি ও চুক্তিকে ভঙ্গ করবে তার উপর আল্লাহ তা‘আলা, ফেরেশতাকুল ও সকল মুসলমানের অভিশাপ। ক্বিয়ামত দিবসে তার ফরয, নফল কোন ইবাদতই গ্রহণ করা হবে না’।[6]

দুর্ভাগ্য যে, বর্তমানে মুসলমানরা সন্ধি ও অঙ্গীকার বাতিল করার জন্য কত রকম বাহনাই না করে থাকে। অনেকে এমনও আছে যারা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কারো সাথে লেন-দেন চুক্তি করার পর নিজের স্বার্থের বিপরীত দেখলেই তা বাতিল করে দেয় এবং বলে আমাদের এই চুক্তি করার কোন এখতিয়ারই নেই। কোন পিতা যদি কারো সাথে কোন চুক্তি করে বসে আর ছেলে যদি তা নিজের জন্য সুবিধাজনক মনে না করে তবে ছেলে বলে যে, পিতা বহুদিন পূর্বে কাজ থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। দোকান বা ফ্যাক্টরীতে যাওয়া আসা শুধু বরকতের জন্যই, ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেন-দেনের সাথে তার কোন সম্পর্কই নেই।

আর ছেলে যদি কোন চুক্তি করে এবং তা যদি পিতা বাতিল করতে চায়, তবে সে যুক্তি পেশ করে যে, ব্যবসা তো আমার, এধরনের চুক্তি করা তার এখতিয়ার বহির্ভূত।

নিজেকে যারা বুদ্ধিমান ও পন্ডিত মনে করে তাদের আয়াতের প্রতি খেয়াল করা উচিত- يُخَادِعُوْنَ اللهَ وَالَّذِيْنَ آمَنُوْا وَمَا يَخْدَعُوْنَ إِلاَّ أَنْفُسَهُمْ وَمَا يَشْعُرُوْنَ- ‘তারা আল্লাহ ও ঈমানদারকে ধোঁকা দেয় প্রকৃতপক্ষে তারা নিজেরাই ধোঁকাতে পতিত হয়ে থাকে কিন্তু তারা বুঝতে সক্ষম হয় না’ (বাক্বারাহ ৯)

সৎ কাজে, দান-খয়রাতে বাঁধা প্রদানকারী :

যারা স্বীয় সম্পদ সৎপথে ব্যয় করে না তাদের জন্য ফেরেশতাগণ বদ দো‘আ করে থাকেন। বিভিন্ন হাদীছে নবী (ছাঃ) তার উম্মতকে এ ব্যাপারে সাবধান করেছেন। তন্মধ্যে কয়েকটি হাদীছ নিম্নে উল্লেখ করা হ’ল-

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا مِنْ يَوْمٍ يُصْبِحُ الْعِبَادُ فِيْهِ إِلاَّ مَلَكَانِ يَنْزِلاَنِ فَيَقُوْلُ أَحَدُهُمَا اللَّهُمَّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا وَيَقُوْلُ الْآخَرُ اللَّهُمَّ أَعْطِ مُمْسِكًا تَلَفًا-

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘প্রতিদিন সকালে দু’জন ফেরেশতা অবতরণ করে, একজন বলে, হে আল্লাহ! দানকারীর সম্পদ বাড়িয়ে দাও, অপরজন বলে, হে আল্লাহ! যে দান করে না তার সম্পদকে ধ্বংস করে দাও’।[7]

হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) এ হাদীছের ব্যাখ্যায় বলেন, সম্পদ ব্যয় না করার কারণে ধ্বংসের মর্ম হ’ল, সৎ পথে যে সম্পদ খরচ না করা হয় তাই ধ্বংস হওয়া বা সম্পদশালী নিজেই ধ্বংস হওয়া। আর সম্পদশালীর ধ্বংস হওয়ার অর্থ হ’ল, তার অন্যান্য বাজে কর্মে এমনভাবে ব্যস্ত হয়ে যাওয়া যেন সে আর সৎকর্মের দিকে কোন ভ্রূক্ষেপই করতে পারে না।[8]

عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا طَلَعَتْ شَمْسٌ قَطُّ إِلاَّ بُعِثَ بِجَنْبَتَيْهَا مَلَكَانِ يُنَادِيَانِ يُسْمِعَانِ أَهْلَ الْأَرْضِ إِلاَّ الثَّقَلَيْنِ يَا أَيُّهَا النَّاسُ هَلُمُّوْا إِلَى رَبِّكُمْ فَإِنَّ مَا قَلَّ وَكَفَى خَيْرٌ مِمَّا كَثُرَ وَأَلْهَى وَلاَ آبَتْ شَمْسٌ قَطُّ إِلاَّ بُعِثَ بِجَنْبَتَيْهَا مَلَكَانِ يُنَادِيَانِ يُسْمِعَانِ أَهْلَ الْأَرْضِ إِلاَّ الثَّقَلَيْنِ اللَّهُمَّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا وَأَعْطِ مُمْسِكًا مَالاً تَلَفًا-

আবুদ দারদা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘প্রত্যেক দিন সূর্য উদয়ের সময় তার দুই পার্শ্বে দুই ফেরেশতাকে প্রেরণ করা হয়, তারা উচ্চ কণ্ঠে বলতে থাকেন, হে লোক সকল! তোমরা তোমাদের প্রভুর দিকে অগ্রসর হও, পরিতৃপ্তকারী অল্প সম্পদ উদাসীনকারী অধিক সম্পদ হ’তে উত্তম। তাদের কথা মানুষ ও জীন ব্যতীত সবাই শুনতে পায়। আর সূর্যাস্তের সময় তার উভয় পার্শ্বে দুই ফেরেশতা প্রেরণ করা হয়, তারা বলতে থাকে হে আল্লাহ! দানকারীর সম্পদ বৃদ্ধি করে দাও এবং যারা দান করে না তাদের সম্পদকে ধ্বংস করে দাও। তাদের কথা মানুষ ও জীন ব্যতীত সবাই শুনতে পায়’।[9]

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ مَلَكًا بِبَابٍ مِنْ أَبْوَابِ السَّمَاءِ يَقُوْلُ مَنْ يُقْرِضُ الْيَوْمَ يُجْزَى غَدًا وَمَلَكًا بِبَابٍ آخَرَ يَقُوْلُ اللَّهُمَّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا وَعَجِّلْ لِمُمْسِكٍ تَلَفًا-

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই একজন ফেরেশতা জান্নাতের এক দরজার পার্শ্বে দাঁড়িয়ে বলেন, যে ব্যক্তি আজ ঋণ (আল্লাহর রাস্তায় দান করবে) দিবে, তার প্রতিদান পাবে আগামীকাল (ক্বিয়ামত দিবসে)। আর অন্য দরজায় এক ফেরেশতা দাঁড়িয়ে বলেন, হে আল্লাহ! দানকারীর সম্পদ বৃদ্ধি করে দাও এবং যারা দান করে না তাদের সম্পদকে ধ্বংস করে দাও’।[10]

তিন প্রকার লোকের জন্য জিবরাঈল (আঃ)-এর বদ দো‘আ :

তিন শ্রেণীর লোকের জন্য জিবরাঈল (আঃ) বদদো‘আ করেছেন ও তার সমর্থনে রাসূল (ছাঃ) আমীন বলেছেন। তারা হ’ল-

১. যে সকল লোক রামাযান মাস পাওয়ার পরেও নিজের গোনাহ ক্ষমা করাতে পারল না।

২. যারা পিতা-মাতাকে জীবিতাবস্থায় পাওয়ার পর তাদের সাথে সদ্ব্যহার করে জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ পেল না।

৩. যাদের সামনে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নাম উচ্চারিত হওয়ার পরও তাঁর উপর দরূদ পড়ে না।

এ প্রসঙ্গে নিম্নোক্ত হাদীছ প্রনিধানযোগ্য-

عَنْ مَالِكِ بْنِ الْحُوَيْرِثِ قَالَ صَعِدَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمِنْبَرَ، فَلَمَّا رَقَي عَتْبَةً، قَالَ : آمِيْنَ، ثُمَّ رَقَي عَتْبَةً أُخْرَى، فَقَالَ : آمِيْنَ، ثُمَّ رَقَي عَتْبَةً ثَالِثَةً، فَقَالَ : آمِيْن، ثُمَّ قَالَ : أَتَانِيْ جِبْرِيْلُ، فَقَالَ : يَا مُحَمَّدُ، مَنْ أَدْرَكَ رَمَضَانَ فَلَمْ يُغْفَرْ لَهُ، فَأَبْعَدَهُ اللهُ، قُلْتُ : آمِيْنَ، قَالَ : وَمَنْ أَدَرَكَ وَالِدَيْهِ أَوْ أَحَدَهُمَا، فَدَخَلَ النَّارَ، فَأَبْعَدَهُ اللهُ، قُلْتُ : آمِيْنَ، فَقَالَ : وَمَنْ ذُكِرْتُ عِنْدَهُ فَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْكَ، فَأَبْعَدَهُ اللهُ، قُلْ : آمِيْنَ، فَقُلْتُ : آمِيْنَ

মালেক বিন হুয়াইরিস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মিম্বরে উঠেন, প্রথম সিঁড়িতে উঠে আমীন বলেন। অতঃপর দ্বিতীয় সিঁড়িতে উঠে বললেন, আমীন। অতঃপর তৃতীয় সিঁড়িতে উঠে বললেন, আমীন। অতঃপর বললেন, আমার নিকট জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ (ছাঃ)! যে ব্যক্তি রামাযান মাসে উপনীত হওয়ার পরও তার জীবনের গোনাহকে ক্ষমা করাতে পারল না, আল্লাহ তাকে রহমত থেকে দূর করুন। আমি তা শুনে বললাম, আমীন। তারপর বলেন, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতাকে অথবা তাদের একজনকে পেল, অথচ (তাদের সাথে সদ্ব্যহার না করে) জাহান্নামে প্রবেশ করল, আল্লাহ তা‘আলা তাকেও তাঁর রহমত থেকে দূর করুন। আমি বললাম, আমীন। অতঃপর বললেন, যে ব্যক্তির সামনে আপনার নাম উচ্চারিত হওয়ার পর আপনার উপর দরূদ পাঠ করল না, সেও আল্লাহ তা‘আলার রহমত থেকে দূর হোক। আমিও তাতে বললাম, আমীন’।[11]

অন্যত্র রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘আমি প্রথম সিঁড়িতে উঠার সময় জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতা বা তাদের একজনকে বৃদ্ধাবস্থায় পাওয়ার পরও (তাদের সাথে সদ্ব্যহার করে) জান্নাতে প্রবেশ করতে পারল না, সে দূর হোক। তিনি বলেন, তখন আমি বললাম, আমীন। যাদের সামনে আপনার নাম উল্লেখ করার পরও দরূদ পাঠ করল না, সে দূর হোক। তাতে আমি বললাম, আমীন। তিনি বলেন, যারা রামাযান মাসে উপনীত হওয়ার পরও তার জীবনের গোনাহ ক্ষমা করাতে পারল না, সেও আল্লাহর রহমত হ’তে দূর হোক, তাতেও আমি বললাম, আমীন’।[12]

মুসলমানদের প্রতি সন্ত্রাসী হামলাকারী :

যারা মুসলমানদের উপর সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালায় তাদের জন্য ফেরেশতাগণ অভিশাপ করে থাকেন। হাদীছে এসেছে,

عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ يَقُوْلُ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَشَارَ إِلَى أَخِيْهِ بِحَدِيْدَةٍ فَإِنَّ الْمَلَائِكَةَ تَلْعَنُهُ حَتَّى يَدَعَهُ وَإِنْ كَانَ أَخَاهُ لِأَبِيْهِ وَأُمِّهِ-

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবুল কাসেম নবী (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের দিকে কোন লোহা দিয়ে ইশারা করল তার উপর ফেরেশতাগণ অভিশাপ করে থাকেন, যদিও সে তার সহোদর ভাই হয়’।[13]

অর্থাৎ কোন মানুষের দিকে যেন অস্ত্র উত্তোলন করা না হয়, তার সাথে দুশমনী থাক বা না থাক। অনুরূপ হাসি-ঠাট্টা করে হোক বা বাস্তবেই হোক। এছাড়াও ফেরেশতাদের অভিশাপই প্রমাণ করে যে অস্ত্র দ্বারা ইশারা করা হারাম।[14]

নিম্নের হাদীছে ইশারা করা নিষেধের কারণ বর্ণিত হয়েছে,

عَنْ أبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ الله عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يُشِيْرُ أَحَدُكُمْ إِلَى أَخِيْهِ بِالسِّلاَحِ فَإِنَّهُ لاَ يَدْرِيْ أَحَدُكُمْ لَعَلَّ الشَّيْطَانَ يَنْزِعُ فِيْ يَدِهِ فَيَقَعُ فِيْ حُفْرَةٍ مِنْ النَّارِ-

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যেন তার ভাইয়ের দিকে অস্ত্র দিয়ে ইশারা না করে। কারণ সে জানে না যে, হয়তো শয়তান তার হাত থেকে (অস্ত্র) খুলে দিবে যার ফলে সে জাহান্নামে পতিত হবে’।[15]

ইসলামী আইন প্রয়োগে বাধা প্রদানকারী :

ইসলামী দন্ডবিধি প্রয়োগে বাধা প্রদানকারীর উপর ফেরেশতাগণ অভিশাপ করে থাকেন। ইবনু আববাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, مَنْ قُتِلَ فِيْ عِمِّيَّةٍ رَمْيًا يَكُوْنُ بَيْنَهُمْ، بِحَجَرٍ، أَوْ عَصَا، أَوْ سَوْطٍ، فَهُوَ خَطَأٌ، عَقْلُهُ عَقْلُ خَطَإٍ، وَمَنْ قُتِلَ عَمْدًا فَهُوَ قَوَدٌ، مَنْ حَالَ دُوْنَهُ، فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَغَضَبُهُ، لا يُقْبَلُ مِنْهُ صَرْفٌ وَلاَ عَدْلٌ- ‘যে ব্যক্তি অজান্তে হত্যা হ’ল বা পাথর, চাবুক বা লাঠি নিক্ষেপের কারণে মারা গেল, তবে এর জন্য ভুল করে হত্যার দিয়্যাত দিতে হবে। কিন্তু যাকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হবে তাতে দন্ডবিধি প্রয়োগ হবে এবং যে ব্যক্তি এ দন্ডবিধি প্রয়োগে বাধা দান করবে তার উপর আল্লাহ তা‘আলা ফেরেশতাকুল ও সকল মানুষের অভিশাপ। আল্লাহ তা‘আলা তার ফরয, নফল কোন ইবাদতই গ্রহণ করবেন না’।[16]

আল্লাহ তা‘আলা দয়াপরবশ হয়ে এ জাতির উপর দন্ডবিধি নির্ধারণ করেছেন। কেননা এতে রয়েছে মানুষের জীবন (জীবনের নিরাপত্তা)। আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেন, وَلَكُمْ فِي الْقِصَاصِ حَيَاةٌ يَاْ أُوْلِيْ الأَلْبَابِ- ‘হে বিবেকবান লোক সকল! কিছাছের (ইসলামী দন্ডবিধির) মধ্যে তোমাদের জীবন রয়েছে’ (বাক্বারাহ ১৭৯)

স্বামীর বিছানা হ’তে দূরে অবস্থানকারী মহিলা :

যে সকল মহিলা তাদের স্বামীর আহবান প্রত্যাখ্যান করতঃ পৃথক বিছানায় রাত্রি যাপন করে তাদের প্রতি ফেরেশতাগণ অভিশাপ করেন। এ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন, إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إَلَى فِرَاشِهِ، فَأَبَتْ أَنْ تَجِىْءَ لَعَنَتْهَا الْمَلاَئِكَةُ حَتَّي تُصْبِحَ- ‘যখন কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে আপন বিছানায় আহবান করে, অতঃপর স্ত্রী যদি তার স্বামীর আহবান প্রত্যাখান করে, তবে তার উপর সকাল পর্যন্ত ফেরেশতাগণ অভিশাপ করতে থাকেন’।[17]

রাসূল (ছাঃ) আরো বলেছেন, ‘যখন কোন মহিলা তার স্বামীর বিছানা থেকে পৃথক রাত্রি যাপন করে, প্রভাত অবধি ফেরেশতাগণ ঐ মহিলার উপর অভিশাপ করতে থাকেন’।[18] অন্য বর্ণনায় এসেছে যে, حَتَّي تَرْجِعَ ‘যতক্ষণ বিছানায় ফিরে না আসে’।[19]

ইমাম নববী (রহঃ) অত্র হাদীছের ব্যাখ্যায় বলেন, শারঈ ওযর ব্যতীত কোন মহিলার জন্য তার স্বামীর বিছানায় থাকতে অস্বীকার করা হারাম। অত্র হাদীছটি একথারই প্রমাণ বহণ করে।[20]

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلي الله عليه وسلم إِثْنَانِ لاَتَجَاوَزُ صَلاَتَهُمَا رُؤُوْسَهُمَا: عَبْدٌ أَبَقَ مِنْ مَوَالِيْهِ حَتَّي يَرْجِعَ إِلَيْهِمْ، وَامْرَأَةٌ عَصَتْ زَوْجَهَا حَتَّي تَرْجِعَ إِلَيْهِ-

আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘দুই প্রকারের লোক যাদের ছালাত তাদের মাথা (থেকে উপরে) অতিক্রম করে না। ১- পলাতক গোলাম, যতক্ষণ না তার মালিকের কাছে ফিরে আসে। ২- স্বামীর অবাধ্য মহিলা যতক্ষণ না সে তার স্বামীর কাছে ফিরে আসে’।[21]

যালেম নেতৃবর্গ :

যে সকল বদনসীব ও বঞ্চিতদের উপর ফেরেশতাগণ অভিশাপ করে থাকেন তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হ’ল ঐ সকল নেতৃবৃন্দ, যারা নাগরিকের অধিকার আদায় করে না। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি এমন একটি হাদীছ বর্ণনা করব যা কেউ বর্ণনা করেনি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বাড়ীর দরজায় দন্ডায়মান ছিলেন আর আমরা ভিতরে ছিলাম। তখন তিনি বলেন, নেতা হবে কুরাইশদের মধ্য হ’তে। নিঃসন্দেহে তোমাদের উপর আমার অধিকার রয়েছে এবং তাদের উপরও তোমাদের অধিকার রয়েছে। যখনই তাদের কাছে অনুগ্রহ চাওয়া হবে, অনুগ্রহ করবে। অঙ্গীকার করা হ’লে পূরণ করতে হবে। বিচার ফায়ছালা করলে ইনসাফ করতে হবে। যে ব্যক্তি এরূপ করবে না তার উপর আল্লাহ, সমস্ত ফেরেশতা ও সমস্ত মানুষের অভিশাপ’।[22]

তিনি আরো বলেন, قَالَ الْأَئِمَّةُ مِنْ قُرَيْشٍ إِذَا اسْتُرْحِمُوْا رَحِمُوْا وَإِذَا عَاهَدُوْا وَفَوْا وَإِذَا حَكَمُوْا عَدَلُوْا فَمَنْ لَمْ يَفْعَلْ ذَلِكَ مِنْهُمْ فَعَلَيْهِ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلاَئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ- ‘নেতা হবে কুরাইশদের মধ্য হ’তে, যখন অনুগ্রহ কামনা করা হবে তখন যেন তারা অনুগ্রহ করে। অঙ্গীকার করলে তা পূর্ণ করবে। বিচারকার্য সম্পাদনে ইনসাফ বজায় রাখবে। তাদের মধ্য হ’তে যে এরূপ করবে না, আল্লাহ তা‘আলা, ফেরেশতামন্ডলী ও সমস্ত মানুষের অভিশাপ তার উপর বর্ষিত হবে’।[23]

কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী :

যারা কুফরী অবস্থাতে মৃত্যুবরণ করেছে তাদের জন্য ফেরেশতাগণ অভিশাপ করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

إِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَمَاتُوْا وَهُمْ كُفَّارٌ أُوْلَئِكَ عَلَيْهِمْ لَعْنَةُ اللهِ وَالْمَلآئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ ، خَالِدِيْنَ فِيْهَا لاَ يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلاَ هُمْ يُنْظَرُوْنَ-

‘নিশ্চয়ই যারা কুফরী করেছে এবং কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের উপর আল্লাহ, ফেরেশত মন্ডলী ও সমগ্র মানবতার অভিশাপ। তারা উক্ত অবস্থায়ই জাহান্নামে চিরকাল অবস্থান করবে। কখনো তাদের আযাব হ্রাস করা হবে না এবং নিষ্কৃতিও দেয়া হবে না’ (বাক্বারাহ ১৬১-১৬২)

হাফেয ইবনে কাছীর (রহঃ) স্বীয় তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, যারা কুফরী করেছে এবং সে অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে, তাদের সম্বন্ধে আল্লাহ তা‘আলা জানিয়ে দিয়েছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ, ফেরেশতামন্ডলী ও সমগ্র মানবতার অভিশাপ তাদের উপর। এ আযাব ক্বিয়ামত অবধি চলতে থাকবে এবং এ অবস্থাতেই তারা জাহান্নামে নিপতিত হবে। তাদের এই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি কখনো হ্রাস করা হবে না এবং তাদেরকে এ থেকে কখনো অব্যাহতিও দেয়া হবে না; বরং স্থায়ীভাবে এই শাস্তি অনন্তকাল অব্যাহত থাকবে।[24] আমরা এরূপ কঠিন শাস্তি হ’তে আল্লাহ তা‘আলার কাছে পরিত্রাণ চাই।

১. আল্লাহ তা‘আলা কাফেরদের অভিশপ্ত ও শাস্তির যোগ্য হওয়ার জন্য কুফরী অবস্থায় মৃত্যুকে শর্ত করেছেন। হাফেয ইবনুল জাওযী (রহঃ) উক্ত শর্তারোপের অন্তর্নিহিত কারণ প্রসঙ্গে বলেন, মৃত্যু অবস্থায় কুফরীর শর্ত এ জন্যই আরোপ করা হয়েছে যে, কারো ব্যাপারে কুফরীর বিধান আরোপ তার মৃত্যু কুফরীর অবস্থায় হওয়ার কারণেই সাব্যস্ত হবে।[25]

এ প্রসঙ্গে শায়খ মুহাম্মাদ রশীদ রেযা বলেছেন, চিরস্থায়ী অভিশাপের শাস্তি প্রাপ্ত হওয়ার জন্য এমন শর্তারোপ করা হয়েছে যে, তার মৃত্যু কুফরের উপর হ’তে হবে। এ ধরনের মানুষের উপর স্থায়ী অভিশাপ হবে এবং এ অবস্থায় কোন প্রকার শাফা‘আত-সুপারিশ অথবা অন্য কোন মাধ্যম তাদের কোন উপকারে আসবে না।[26]

২. ইমাম বাগাবী (রহঃ) বলেন, ইমাম আবু আলিয়া বলেছেন, ঐ সকল লোকদের অভিশাপ ক্বিয়ামতের দিন প্রযোজ্য হবে। কাফেরকে দাঁড় করানো হবে, তারপর তাদের উপর আল্লাহ তা‘আলা অভিশাপ দিবেন, অতঃপর ফেরেশতা মন্ডলী, অতঃপর সমগ্র মানবজাতী তাদেরকে অভিশাপ দিবে।[27]

কুফরী মতবাদের অনুসারী :

ফেরেশতাগণ যাদের প্রতি অভিশাপ করে থাকেন তাদের অন্যতম হচ্ছে যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে রাসূলকে সত্য জেনে এবং ইসলামের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও প্রমাণাদি পেঁŠছার পরও কুফরী মতবাদ গ্রহণ করে। এ সকল লোকদের সম্পর্কেই আল্লাহ ঘোষণা করেছেন,

كَيْفَ يَهْدِي اللهُ قَوْمًا كَفَرُوْا بَعْدَ إِيْمَانِهِمْ وَشَهِدُوْا أَنَّ الرَّسُوْلَ حَقٌّ وَجَاءَهُمُ الْبَيِّنَاتُ وَاللهُ لاَ يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِيْنَ، أُوْلَـئِكَ جَزَآؤُهُمْ أَنَّ عَلَيْهِمْ لَعْنَةَ اللهِ وَالْمَلآئِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِيْنَ، خَالِدِيْنَ فِيْهَا لاَ يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلاَ هُمْ يُنْظَرُوْنَ، إِلاَّ الَّذِيْنَ تَابُواْ مِنْ بَعْدِ ذَلِكَ وَأَصْلَحُوْا فَإِنَّ الله غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ.

‘আল্লাহ কিরূপে সৎপথে পরিচালিত করবেন সে সম্প্রদায়কে যারা ঈমান আনয়নের পর ও রাসূলকে সত্য বলে সাক্ষ্যদান করার পর এবং তাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন আসার পর কুফরী করে? আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না। তারা তো এমনই যাদের শাস্তি হ’ল, তাদের উপর আল্লাহ, ফেরেশতাকুল এবং মানুষ সকলের অভিশাপ। তারা তাতে স্থায়ী হবে, তাদের শাস্তি লঘু করা হবে না এবং তাদেরকে বিরামও দেয়া হবে না। কিন্তু যারা তারপর তওবা করে এবং সংশোধন করে নেয়, নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (আলে ইমরান ৮৬-৮৯)

পরিশেষে আমরা যেন ফেরেশতাগণ যাদের প্রতি অভিশাপ করে থাকেন তাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে দূরে থাকি এবং যেসব গুনাবলী সম্পন্ন মানব জাতির জন্য দো‘আ করে থাকেন তাদের অন্তর্ভুক্ত হই, আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন- আমীন!

মুহাম্মাদ আবু তাহের

পি-এইচ.ডি. গবেষক, আল-হাদীছ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।


[1]. ছহীহ মুসলিম হা/১১, ইমাম বুখারী এ হাদীছকে আবু সাঈদ খুদরী হ’তে বর্ণনা করেন, ছহীহ বুখারী হা/৩৬৭৩, ৭/২১।

[2]. আবুল কাসিম তাবারানী, আল-মু‘জামুল কাবীর হা/১২৭০৯, ১২/১১০-১১১, হাদীছটি হাসান, সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৩৪০, ৫/৮৮৬-৮৮৭, ছহীহ জামেউছ ছাগীর হা/৬১৬১, ৫/২৯৯।

[3]. ফায়যুল কাদীর ৬/১৪৬-১৪৭।

[4]. ছহীহ বুখারী হা/ ১৮৬৭, ১৮৭০, ৪/৮১; ছহীহ মুসলিম হা/২৪৩৪।

[5]. আল-মুসনাদ হা/১৫৯৬৪, ১৫৯৬২; কিতাব সুনানুল কুবরা, ৪২৬৫, ১, ২/৪৮৩, আল-মু‘জামুল কাবীর হা/৬৬৩১, ৭/১৪৩; সিলসিলা ছহীহা হা/২৩০৪।

[6]. ছহীহ বুখারী হা/২৯৪৩, ছহীহ মুসলিম হা/৪৬৭, (১৩৭০) ৪৬৮, ৯৯৫-৯৯৯।

[7]. বুখারী হা/ ১৩৫১, মুসলিম হা/৫৭ (১০১০), ২/৭০০।

[8]. ফাতহুল বারী ৩/৩০৫।

[9]. মুসনাদে আহমাদ হা/২০৭২৮; সিলসিলা ছহীহা হা/৪৪৪।

[10]. আল-মুসনাদ হা/৭৭০৯, ছহীহ ইবনে হিববান হা/৩৩৩৩, ৮/১২৪; সিলসিলাহ ছহীহহা হা/৯২০।

[11]. ছহীহ ইবনু হিববান, ২য় খন্ড, পৃঃ ৩০৮, হা/৪১০, ৩য় খন্ড, পৃঃ ৩০৪, হা/৯০৯ ছহীহ আত-তারগীব হা/৯৯৬।

[12]. ছহীহ তারগীব হা/৯৯৫।

[13]. ছহীহ মুসলিম, হা/৪৭৪১।

[14]. ছহীহ মুসলিম, ১৩ খন্ড, পৃঃ ৪৩, হা/৪৭৪২।

[15]. ছহীহ মুসলিম হা/৪৭৪২।

[16]. নাসাঈ হা/৪৭০৮; ইবনু মাজাহ, হা/২৬২৫; হাদীছ ছহীহ; ছহীহ সুনানে আবূ দাউদ ৩/৮৬৭; ছহীহুল জামে‘ হা/৬৪৫১।

[17]. ছহীহ বুখারী, ৫১৯৩, ৯/২৯৩-২৯৪, ছহীহ মুসলিম ১২২ (১৪৩৬) ২/১০৬০, হাদীছের শব্দগুলি বুখারীর।

[18]. ছহীহ বুখারী ৯/২৯৪, ছহীহ মুসলিম ২/১০৫৯, হাদীছটির শব্দগুলি মুসলিমের।

[19]. ছহীহ বুখারী ৯/২৯৪; ছহীহ মুসলিম ২/১০৬০।

[20]. শারহু নববী ১০/৭-৮।

[21]. মাযমাউয যাওয়ায়েদ ৪/৩১৩; হাদীছ ছহীহ, ছহীহ তারগীব হা/১৮৮৮।

[22]. মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১১৮৫৯, হাদীছ ছহীহ ছহীহুল জামে‘ হা/২৭৫৮।

[23]. আল-মুসনাদ হা/১১৮৫৯; হাদীছ ছহীহ সিলসিলা ছহীহা হা/২৮৫৮।

[24]. তাফসীরুল কুরআনিল আযীম প্রথম খন্ড, (রিয়াদ: দারুল ফায়হা, প্রথম সংস্করণ, ১৪১৩ হিঃ), পৃঃ ২১৪।

[25]. হাফিয ইবনুল জাওযী, যাদূল মাসীর ফী ইলমিত তাফসীর, (বৈরুত: আল-মাকতাবাতুল ইসলামী, ১ম সংস্করণ, ১৯৮৪ খৃঃ), পৃঃ ১৬৬।

[26]. সায়্যিদ মুহাম্মাদ রশীদ রিদা, তাফসীরুল মানার, ২য় খন্ড, (বৈরুত: দারুল মা‘রিফা, ২য় সংস্করণ, তাবি), পৃঃ ৫২-৫৩।

[27]. আবু মুহাম্মাদ বাগাবী, মা‘আলিমুত তানযীল, ১ম খন্ড (বৈরুত: দারুল মা‘রিফা, ১ম সংস্করণ, ১৪০৬ হিঃ), পৃঃ ১৩৪।






বিষয়সমূহ: দো‘আ
তালাক সংঘটিত হওয়ার কারণ ও প্রতিকারের উপায় - মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলাম
সফরের আদব - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
কুরআন নিয়ে চিন্তা করব কিভাবে? (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
ইয়ারমূক যুদ্ধ - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
বক্তার আধিক্য ও আলেমের স্বল্পতা - আছিফ রেযা, ছাত্র, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সঊদী আরব।
আহলেহাদীছ আন্দোলন-এর পাঁচ দফা মূলনীতি : একটি বিশ্লেষণ (৩য় কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
মাদ্রাসার পাঠ্যবই সমূহের অন্তরালে (৫ম কিস্তি) - প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
ইসলামে ভ্রাতৃত্ব - ড. এ এস এম আযীযুল্লাহ
যিলহজ্জ মাসের ফযীলত ও আমল - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
মহামনীষীদের পিছনে মায়েদের ভূমিকা (৫ম কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
দাওয়াত ও সংগঠন (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
প্রাকৃতিক প্রয়োজন পূরণের শিষ্টাচার - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
আরও
আরও
.