৬. দীর্ঘ আশা-আকাঙ্ক্ষা :
মানব জীবনে আশা-আকাঙ্ক্ষা থাকবে। কিন্তু তা যদি মানুষকে ভবিষ্যত সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করতে অনুপ্রাণিত করে এবং আখেরাত থেকে ভুলিয়ে না রাখে তবে তা নিন্দনীয় নয়। যেমন জমি কর্ষণ করে ফল-ফসল উৎপাদন ও তা ভোগ করা; বিবাহ-শাদী করা, সন্তান জন্মদান ও প্রতিপালন করা। যাতে মানববংশ অব্যাহত থাকে। এসব শরী‘আত সম্মত। আল্লাহ বলেন, ‘আর আল্লাহ তোমাকে যা দিয়েছেন, তার দ্বারা আখেরাতের গৃহ সন্ধান কর। অবশ্য দুনিয়া থেকে তোমার প্রাপ্য অংশ নিতে ভুলো না। আর অন্যের প্রতি অনুগ্রহ (ছাদাক্বা) কর যেমন আল্লাহ তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আর তুমি পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না’ (ক্বাছাছ ২৮/৭৭)।
পক্ষান্তরে নিন্দনীয় আশা-আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে, যা মানুষকে দুনিয়ামুখী করে, মৃত্যুর কথা ভুলিয়ে দেয়, আখেরাত সম্পর্কে গাফেল করে দেয়। এটা থেকেই মহান আল্লাহ বান্দাকে সাবধান করেছেন। কারণ এগুলো হচ্ছে ঐসব লোকের বৈশিষ্ট্য যাদের দ্বীনদারী নেই এবং আখেরাতে যাদের কোন অংশ নেই। আল্লাহ বলেন, ‘আর তুমি অবশ্যই তাদেরকে পাবে পার্থিব জীবনের প্রতি অন্যদের চাইতে অধিক আসক্ত, এমনকি মুশরিকদের চাইতেও। তাদের প্রত্যেকে কামনা করে সে যেন হাযার বছর বেঁচে থাকে। অথচ এরূপ দীর্ঘায়ু তাদেরকে শাস্তি থেকে দূরে রাখতে পারবে না। বস্ত্ততঃ তারা যা করে, সবই আল্লাহ দেখেন’ (বাক্বারাহ ২/৯৬)। সুতরাং দীর্ঘ আশা-আকাঙ্ক্ষায় কোন কল্যাণ নেই, বরং কল্যাণ রয়েছে নেক আমলে। কেননা দীর্ঘ আশা-আকাঙ্ক্ষা মানুষকে মৃত্যু থেকে গাফেল রাখে, আখেরাত ভুলিয়ে দেয়। আল্লাহ বলেন,ذَرْهُمْ يَأْكُلُوا وَيَتَمَتَّعُوا وَيُلْهِهِمُ الْأَمَلُ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ، ‘ছাড় ওদেরকে। ওরা খানা-পিনা করতে থাকুক আর দুনিয়া ভোগ করতে থাকুক। আশা-আকাঙ্ক্ষা ওদেরকে ভুলিয়ে রাখুক। অতঃপর শীঘ্র ওরা জানতে পারবে’ (হিজ্র ১৫/৩)। হাসান বছরী (রহঃ) বলেন, أطال عبد الأمل إلا أساء العمل، ما ‘বান্দা যখন দীর্ঘ আশা করে, তখন তার আমল খারাপ হয়ে যায়’।[1]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একবার এক সফরে প্রাকৃতিক প্রয়োজন সম্পন্ন করে পানি না পেয়ে তায়াম্মুম করলেন। ইবনু আববাস (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আর একটু সামনে গেলেই তো পানি পাওয়া যেত। তখন রাসূল (ছাঃ) বললেন, مَا يُدْرِينِي لَعَلِّي لَا أَبْلُغُهُ، ‘আমি কিভাবে জানব, আমি সে পর্যন্ত পৌঁছতে পারব কি-না?’[2] এজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ)-কে উপদেশ দিয়ে বলেন, كُنْ فِى الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ، أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ، ‘তুমি দুনিয়াতে অপরিচিত ব্যক্তি বা পথিকের মত হয়ে থাকো’। এরপর থেকে ইবনু ওমর (রাঃ) বলতেন, ‘তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হ’লে সকালের আশা করো না এবং সকালে উপনীত হ’লে সন্ধ্যার আশা করো না। অসুস্থ হওয়ার পূর্বে তুমি তোমার সুস্থতাকে এবং মৃত্যুর পূর্বে তুমি তোমার জীবনকে কাজে লাগাও’।[3]
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদা খেজুর পাতার মাদুরে শুয়েছিলেন। তিনি ঘুম হ’তে জাগ্রত হ’লে তাঁর গায়ে মাদুরের দাগ দেখা গেল। আমরা বললাম,يَا رَسُولَ اللهِ لَوِ اتَّخَذْنَا لَكَ وِطَاءً، فَقَالَ: مَا لِي وَلِلدُّنْيَا، مَا أَنَا فِي الدُّنْيَا إِلَّا كَرَاكِبٍ اسْتَظَلَّ تَحْتَ شَجَرَةٍ ثُمَّ رَاحَ وَتَرَكَهَا، ‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমরা আপনার জন্য যদি একটি নরম বিছানার ব্যবস্থা করতাম! তিনি বললেন, দুনিয়ার সাথে আমার কি সম্পর্ক? দুনিয়াতে আমি এমন একজন পথচারী মুসাফির বৈ কিছুই নই, যে একটি গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিল, অতঃপর তা ছেড়ে দিয়ে চলে গেল’।[4]
মানুষের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে তার আশা-আকাঙ্ক্ষাও বৃদ্ধি পায়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘বৃদ্ধ লোকের হৃদয় দু’টি ব্যাপারে সর্বদা যুবক থাকে। দুনিয়ার প্রতি মহববত ও দীর্ঘ আশা-আকাঙ্ক্ষা’।[5] তিনি আরো বলেন,نَجَا أَوَّلُ هَذِهِ الأمَّةِ باليَقِينِ وَالزُهْدِ، وَيَهْلِكُ آخِرُ هَذِهِ الأمَّةِ بالبُخْلِ وَالأمَلِ، ‘এ উম্মতের প্রথম দিকের লোকেরা দৃঢ় বিশ্বাস ও দুনিয়া বিমুখ হওয়ার মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। আর এ উম্মতের শেষ দিকের লোকেরা কৃপণতা ও দীর্ঘ আশা-আকাঙ্ক্ষার কারণে ধ্বংস হবে’।[6] সুতরাং দীর্ঘ আশা-আকাঙ্ক্ষা মানুষকে ইহকাল ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
আবূ আব্দুর রহমান আস-সালামী বলেন, আলী (রাঃ) একবার কূফায় দেওয়া এক ভাষণে বলেন, ‘হে জনগণ! আমি তোমাদের দু’টি জিনিসকে সবচেয়ে বেশী ভয় পাই, অধিক পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ও প্রবৃত্তির অনুসরণ। অধিক পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তোমাদেরকে আখেরাত ভুলিয়ে দিবে এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ তোমাদেরকে হক থেকে বিচ্যুত করে দিবে। সাবধান! দুনিয়া পিঠ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছে এবং আখেরাত এগিয়ে আসছে। আর প্রত্যেকটির জন্য রয়েছে একদল মানুষ। অতএব তোমরা আখেরাতের সন্তান হও, দুনিয়ার গোলাম হয়ো না। কেননা আজকের দিনটি কর্মের দিন, যেখানে ফলাফল নেই। আর কালকের দিনটি ফলাফলের দিন, যেখানে কর্ম নেই’।[7]
সালমান ফারেসী (রাঃ) বলেন, ‘তিন শ্রেণীর লোককে দেখলে আমি আশ্চর্য হই- (১) সেই ব্যক্তি, যে দীর্ঘ আশা-আকাঙ্ক্ষা করে, কিন্তু মৃত্যুকে নিয়ে আদৌ চিন্তা করে না। অথচ মৃত্যু তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে, (২) মৃত্যু থেকে গাফেল ব্যক্তি, অথচ মৃত্যুর পরেই তার ক্বিয়ামত শুরু হয়ে যাবে, (৩) সেই ব্যক্তি, যে গাল ভরে হাসে, কিন্তু সে জানে না যে, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট নাকি রাগান্বিত’।[8]
আবুল লায়েছ সামারকান্দী (রহঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পার্থিব আশা-আকাঙ্ক্ষা কম করে, মহান আল্লাহ তাকে চারভাবে সম্মানিত করেন, (১) তাকে আল্লাহর অনুগত্যে অবিচলতা দান করেন। (২) তার পার্থিব দুশ্চিন্তা হ্রাস করে দেন। (৩) তাকে স্বল্প উপার্জনের উপর সন্তুষ্ট থাকার তাওফীক্ব দান করেন এবং (৪) তার অন্তরকে আলোকিত করে দেন’।[9]
৭. অবৈধ দৃষ্টিপাত :
দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে পুরুষরা যেমন আদিষ্ট তেমনিভাবে মহিলারাও। কোন যুবক-যুবতীর চরিত্র নষ্ট হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে যত্রতত্র দৃষ্টি নিক্ষেপ। এছাড়া লজ্জাস্থান হেফাযতের ক্ষেত্রে বাধা হিসাবে নিম্নোক্ত বিষয়গুলোকেও গণ্য করা হয়- ব্যভিচার সম্পর্কিত আলোচনা, অশ্লীল গল্প-উপন্যাস ও কবিতা পড়ার নেশা, শয়তানের কুমন্ত্রণা, কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ, দীর্ঘ আশা ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি, নিয়ন্ত্রণহীন সুখভোগ এবং সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের লাগাতার অবহেলা ইত্যাদি। কাজেই উপরোক্ত বিষয় থেকে সতর্ক হওয়া কর্তব্য।
আল্লাহ তা‘আলা পুরুষ ও মহিলা উভয়কে লজ্জাস্থান হেফাযতের পূর্বে নিজ দৃষ্টিকে সংযত করতে আদেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তুমি মুমিন পুরুষদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। এটা তাদের জন্য পবিত্রতর। নিশ্চয়ই তারা যা করে আল্লাহ সে বিষয়ে ভালভাবে খবর রাখেন। আর তুমি মুমিন নারীদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে’ (নূর ২৪/৩০-৩১)। আল্লাহ আরো বলেন, يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ ‘তিনি জানেন তোমাদের চোখের চোরাচাহনি এবং অন্তর সমূহ যা লুকিয়ে রাখে’ (গাফির ৪০/১৯)।
আল্লাহ অন্যের ঘরে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছেন। যাতে চোখের অপব্যবহার না হয় এবং অবৈধ দৃষ্টিপাত হ’তে তা সম্পূর্ণরূপে রক্ষা পায় (নূর ২৪/২৭-২৮)।
কোন ব্যক্তি চারটি অঙ্গকে সঠিক ও শরী‘আত সম্মতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই সে অনেকগুলো গোনাহ বিশেষভাবে ব্যভিচার থেকে রক্ষা পেতে পারে। তেমনিভাবে তার ধার্মিকতাও অনেকাংশে রক্ষা পাবে। তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চোখ বা দৃষ্টিশক্তি। আর তা হেফাযত করা লজ্জাস্থানকে হেফাযত করার শামিল। হাদীছে এসেছে, ‘উবাদাহ ইবনুছ ছামিত (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, তোমরা তোমাদের পক্ষ থেকে আমাকে ছয়টি বিষয়ে যামানাত দাও, আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের যামীন হব- ১. যখন তোমরা কথা বলবে, সত্য বলবে, ২. যখন প্রতিশ্রুতি দেবে বা পূরণ করবে, ৩. যখন তোমাদের কাছে আমানত রাখা হবে, তা পরিশোধ করবে, ৪. নিজের লজ্জাস্থান সমূহকে হেফাযত করবে, ৫. নিজ দৃষ্টি অবনমিত রাখবে, ৬. নিজের হস্তদ্বয়কে নিয়ন্ত্রণে রাখবে’।[10]
হঠাৎ কোন হারাম বস্ত্তর উপর চোখ পড়ে গেলে তা দ্রুত ফিরিয়ে নিতে হবে। দ্বিতীয়বার কিংবা একদৃষ্টে সেদিকে তাকিয়ে থাকা যাবে না। রাসূল (ছাঃ) আলী (রাঃ)-কে উদ্দেশ্য করে বলেন,يَا عَلِيُّ لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ، فَإِنَّ لَكَ الْأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الْآخِرَةُ، ‘হে আলী! (কোন বেগানা নারীকে) একবার দেখার পর দ্বিতীয়বার দেখবে না। কেননা তোমার জন্য প্রথমবার দেখার অনুমতি আছে, কিন্তু দ্বিতীয়বার নয়’।[11]
রাসূল (ছাঃ) হারাম দৃষ্টিকে চোখের যিনা বলে আখ্যায়িত করেছেন। যেমনিভাবে কোন ব্যক্তির হাত, পা, মুখ, কান, মন দ্বারাও ব্যভিচার হয়ে থাকে। তবে মারাত্মক ব্যভিচার হচ্ছে লজ্জাস্থানের ব্যভিচার। যাকে বাস্তবেই ব্যভিচার বলা হয়। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘মহান আল্লাহ আদম সন্তানের জন্য তার ব্যভিচারের অংশ লিখে রেখেছেন, সে তা নিশ্চয়ই করবে। চোখের ব্যভিচার হ’ল দেখা, জিহবার ব্যভিচার কথা বলা (যৌন উদ্দীপক কথা বলা)। আর মন চায় ও আকাঙ্ক্ষা করে এবং গুপ্তাঙ্গ তাকে সত্য বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে’।[12]
কিন্তু মুসলিম-এর অপর এক বর্ণনায় আছে, ‘আদম সন্তানের জন্য তাক্বদীরে যেনার অংশ যতটুকু নির্ধারণ করা হয়েছে, সে ততটুকু অবশ্যই পাবে। দুই চোখের যেনা তাকানো, কানের যেনা যৌন উদ্দীপক কথা শোনা, মুখের যেনা আবেগ উদ্দীপ্ত কথা বলা, হাতের যেনা (বেগানা নারীকে খারাপ উদ্দেশ্যে) স্পর্শ করা আর পায়ের যেনা ব্যভিচারের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হওয়া এবং মনের যেনা হ’ল চাওয়া ও প্রত্যাশা করা। আর গুপ্তাঙ্গ তা সত্য বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে’।[13]
দৃষ্টিই সকল অঘটনের মূল। কারণ কোন কিছু দেখার পরই তা মনে জায়গা করে নেয়। ফলে তার প্রতি মনে ভাবনা তৈরী হয়। আর ভাবনা থেকেই তা পাওয়ার জন্য মনে কামনা-বাসনা জন্মে। দীর্ঘ দিনের কামনা প্রতিজ্ঞার রূপ ধারণ করে। আর তখনই কোন কর্ম সংঘটিত হয়। এজন্য দৃষ্টি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। রাসূল (ছাঃ) বলেন,غُضُّوا أَبصارَكم، وكُفُّوا أَيديَكم، واحفَظوا فُروجَكم، ‘তোমাদের দৃষ্টিকে নিম্নগামী কর, হস্তদ্বয় নিয়ন্ত্রণ কর এবং তোমাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত কর’।[14]
৮. অবসর সময় :
সময় আল্লাহ প্রদত্ত অমূল্য নে‘মত। যাকে দুনিয়াবী বা পরকালীন কল্যাণে কাজে লাগানো কর্তব্য। বিশেষত পরকালীন মুক্তি ও আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক কাজে তা ব্যয় করা উচিত। আল্লাহ তাঁর রাসূলকে লক্ষ্য করে বলেন,فَإِذَا فَرَغْتَ فَانْصَبْ، وَإِلَى رَبِّكَ فَارْغَبْ، ‘অতএব যখন অবসর পাও, ইবাদতের কষ্টে রত হও। এবং তোমার প্রভুর দিকে রুজূ হও’ (শারহ ৯৪/৭-৮)।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,نِعْمَتَانِ مَغْبُوْنٌ فِيْهِمَاكَثِيْرٌ مِنَ النَّاسِ الصِّحَّةُ وَالْفَرَاغُ، ‘এমন দু’টি নে‘মত আছে, যে ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষ ধোঁকায় নিমজ্জিত, তা হচ্ছে, সুস্থতা ও অবসর’।[15]
দুনিয়াবী ব্যস্ততা মানুষকে এক অজানা গন্তব্যের দিকে দ্রুতগতিতে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেক মানুষ স্ব স্ব কাজে অত্যধিক ব্যস্ততার সাথে সময় অতিবাহিত করছে। ক্ষণস্থায়ী পার্থিব জীবনের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পিছনে মানুষ বিদ্যুতের গতিতে ছুটে চলেছে। দুনিয়ার বিভিন্ন পেশা ছাড়াও মানুষের কাছে আছে মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, নোট, আইপ্যাডের মত সময় ব্যয় করার অত্যাধুনিক ডিভাইস সমূহ। ফেসবুকে ঢুকলেই আর যেন বের হওয়ার মত সুযোগ মিলে না। ইউটিউবের খবরগুলো যেন একটির চেয়ে অন্যটির আকর্ষণ অত্যধিক। টুইট করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের কাতারে শামিল হওয়া যেন বর্তমানে ফ্যাশান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকলেই রাতের পর রাত, দিনের পর দিন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা টাচ স্ক্রীনের উপর স্ক্রলিং করেই সময় অতিবাহিত করছে। এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, বর্তমানে এ্যান্ড্রয়েড ফোন তথা টাচ ফোন ব্যবহারকারী একজন মানুষ দৈনিক অন্তত ১৭ হাযার বার আঙগুল স্পর্শ করে থাকে। চিন্তা করুন, একদিন বা ২৪ঘণ্টা ফোন যদি না থাকে, তাহ’লে হাত, চোখ, মন-মানসিকতা কতটা নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকে। অথচ এটাও ভাবার সময় নেই। দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার কলামিস্ট সুমন রহমানের গবেষণা থেকে জানা যায়, অধিকাংশ মানুষ তার অবসর সময় অতিবাহিত করেন টেলিভিশন দেখে। তন্মধ্যে সিনেমা দেখেই সময় কাটায় ৪২.৬ শতাংশ মানুষ। এছাড়াও ইউটিউব, ফেসবুক, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, লাইভ ক্রিকেট খেলা, ফুটবল, কুস্তি ইত্যাদি অনুপোকারী অনুষ্ঠান দেখে মানুষ সময় কাটায়।[16] এভাবে গবেষণা করলে দেখা যাবে যে, অবসর সময় মানুষ কোন না কোনভাবে অতিবাহিত করে। অধিকাংশ মানুষ তার অবসর সময়গুলো অপ্রয়োজনীয়, অনুপকারী কাজে ও অবহেলায় নষ্ট করে দেয়। অথচ অবসর সময়কে ভাল কাজ ও ফলদায়ক চিন্তা-গবেষণায় অতিবাহিত করা উচিত। কেননা অবসর আল্লাহ প্রদত্ত অনন্য নে‘মত। যে ব্যাপারে অধিকাংশ মানুষই উদাসীন থাকে। তাই এমন কল্যাণকর কাজে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত রাখা কর্তব্য, যাতে করে সময়ও অতিবাহিত হয়, নেকীও অর্জন করা যায় এবং সময়ের আবর্তনে তা স্থায়ী রূপ লাভ করে।
আল্লামা ত্বীবী বলেন, ‘নবী করীম (ছাঃ) শরী‘আতের বিধান প্রযোজ্য এমন ব্যক্তির উদাহরণ দিয়েছেন পুঁজির অধিকারী ব্যবসায়ীর সাথে। যে ব্যক্তি তার পুঁজি ঠিক রেখে ব্যবসায় লাভের আশা করে। এক্ষেত্রে তার ব্যবসায়ীর সাথে ব্যবসা করতে মনোযোগী হ’তে হবে এবং সততা ও নিপুনতাকে আবশ্যিক করে নিতে হবে। যাতে সে প্রতারিত না হয়। সুতরাং সুস্থতা ও অবসর হচ্ছে পুঁজি। আর তার জন্য কর্তব্য হ’ল আল্লাহর সাথে ঈমান সহকারে মু‘আমালা করা এবং কুপ্রবৃত্তি ও দ্বীনের শত্রুর সাথে লড়াই করা। যাতে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ অর্জন করে লাভবান হওয়া যায় এবং আল্লাহর নৈকট্য পাওয়া যায়। আললাহর বাণী,هَلْ أَدُلّكُمْ عَلَى تِجَارَة تُنْجِيكُمْ مِنْ عَذَاب أَلِيم، ‘আমি কি তোমাদের এমন একটি ব্যবসায়ের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি হ’তে মুক্তি দিবে’? (ছফ ৬১/১০)। আর তার জন্য কর্তব্য হ’ল প্রবৃত্তির আনুগত্য ও শয়তানের সাথে মু‘আমালা পরিহার করা। যাতে তার পুঁজি ও লাভ বিনষ্ট না হয়’।[17]
ছাহাবায়ে কেরাম সময়কে অত্যধিক মূল্যায়ন করতেন। যেমন- একদা আবূ মূসা আশ‘আরী ও মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ) ক্বিয়ামুল লায়ল (রাত্রি জাগরণ) সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তখন একজন বললেন, আমি ইবাদতও করি, নিদ্রাও যাই। আর নিদ্রা অবস্থায় ঐ আশা রাখি যা ইবাদত অবস্থায় রাখি।[18]
৯. জিহবার নিয়ন্ত্রণহীনতা :
কখনো অযথা ও অপ্রয়োজনীয় কথা বলা যাবে না। কথা বলার ইচ্ছা হ’লেই চিন্তা করতে হবে, এতে কোন ফায়দা আছে কি-না? যদি তাতে কোন ধরনের ফায়দা না থাকে তাহ’লে সে কথা বলবে না। আর যদি তাতে কোন ধরনের ফায়দা থেকে থাকে তাহ’লে দেখবে, এর চাইতে আরো উপকারী কোন কথা আছে কি-না? যদি থেকে থাকে তাহ’লে তাই বলবে, অন্যটা নয়। কথার মাধ্যমেই অন্যের মনোভাব বুঝা যায়। ইয়াহয়া বিন মু‘আয (রহঃ) বলেন, অন্তর হচ্ছে ডেগের ন্যায়। তাতে যা রয়েছে অথবা দেয়া হয়েছে তাই রন্ধন হ’তে থাকবে। বাড়তি কিছু নয়। আর মুখ হচ্ছে চামচের ন্যায়। যখন কেউ কথা বলে তখন সে তার মনোভাবই ব্যক্ত করে। অন্য কিছু নয়। যেভাবে আপনি কোন পাত্রে রাখা খাদ্যের স্বাদ জিহবা দিয়ে অনুভব করতে পারেন। ঠিক তেমনিভাবে কারোর মনোভাব আপনি তার কথার মাধ্যমেই টের পাবেন।
মন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নিয়ন্ত্রক ঠিকই। তবে সে অন্য কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সহযোগিতা ছাড়া কোন কাজ সম্পাদন করতে পারে না। সুতরাং মন যদি কোন খারাপ কথা বলতে প্ররোচিত করে তখন জিহবার মাধ্যমে তার সহযোগিতা করা থেকে বিরত থকাতে হবে। তখন সে নিজ কাজে ব্যর্থ হবে নিশ্চয়ই এবং গুনাহ কিংবা তার অঘটন থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। এজন্যই রাসূল (ছাঃ) ইরশাদ করেন,لَا يَسْتَقِيْمُ إِيْمَانُ عَبْدٍ حَتَّى يَسْتَقِيْمَ قَلْبُهُ، وَلَا يَسْتَقِيْمُ قَلْبُهُ حَتَّى يَسْتَقِيْمَ لِسَانُهُ، ‘কোন বান্দার ঈমান ঠিক হয় না যতক্ষণ না তার অন্তর ঠিক হয়। তেমনিভাবে কোন বান্দার অন্তর ঠিক হয় না যতক্ষণ না তার মুখ ঠিক হয়’।[19]
সাধারণত অন্তর, মুখ ও লজ্জাস্থানের মাধ্যমেই অধিকাংশ অঘটন ঘটে। তাই রাসূল (ছাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল কোন জিনিস মানুষকে বেশীর ভাগ জাহান্নামের সম্মুখীন করে? তিনি বলেন, الْفَمُ وَالْفَرْجُ ‘মুখ ও লজ্জাস্থান’।[20]
একদা রাসূল (ছাঃ) মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ)-কে জান্নাতে যাওয়া এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার উপযোগী আমল বলে দেয়ার পর আরো কিছু নেক আমলের কথা বলেন। এমনকি তিনি সকল ভালো কাজের মূল, কান্ড ও চূড়া সম্পর্কে বলার পর বলেন,
‘আমি কি তোমাকে এমন বস্ত্ত সম্পর্কে বলবো যার উপর এ সবই নির্ভরশীল? আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী (ছাঃ)! আপনি দয়া করে তা বলুন। অতঃপর তিনি নিজ জিহবা ধরে বললেন, এটাকে তুমি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করবে। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! আমাদেরকে কথার জন্যও কি পাকড়াও করা হবে? তিনি বললেন, তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক, হে মু‘আয! একমাত্র কথার কারণেই বিশেষভাবে সেদিন মানুষকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে’।[21]
অনেক সময় একটি কথাই মানুষের দুনিয়া ও আখেরাত এমনকি তার সকল নেক আমল ধ্বংস করে দেয়। জুন্দুব বিন আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) ইরশাদ করেন, ‘জনৈক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ ওকে ক্ষমা করবেন না। তখন আল্লাহ বললেন, কে সে? যে আমার উপর কসম খেয়ে বলে যে, আমি অমুককে ক্ষমা করবো না? অতএব (আল্লাহ তাঁর উপর শপথ-কারীকে উদ্দেশ্য করে) বললেন, আমি তাকেই ক্ষমা করে দিলাম এবং তোমার সকল নেক আমল ধ্বংস করে দিলাম’।[22]
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) উক্ত হাদীছ বর্ণনা করার পর বলেন, وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَتَكَلَّمَ بِكَلِمَةٍ أَوْبَقَتْ دُنْيَاهُ وَاٰخِرَتَهُ، ‘সে সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! লোকটি এমন কথাই বলেছে যা তার দুনিয়া ও আখিরাত সবই ধ্বংস করে দিয়েছে’।[23]
রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, ‘বান্দাহ কখনো কখনো বাছবিচার ছাড়াই এমন কথা বলে ফেলে যার দরুন সে জাহান্নামে এতদূর পর্যন্ত নিক্ষিপ্ত হয় যতদূর দুনিয়ার পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মাঝের ব্যবধান’।[24]
রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ سَخَطِ اللهِ، مَا يَظُنُّ أَنْ تَبْلُغَ مَا بَلَغَتْ، فَيَكْتُبُ اللهُ عَلَيْهِ بِهَا سَخَطَهُ إِلَى يَوْمِ يَلْقَاهُ، ‘তোমাদের কেউ কখনো এমন কথা বলে ফেলে যাতে আল্লাহ তার উপর অসন্তুষ্ট হন। সে কখনো ভাবতেই পারেনি কথাটি এমন এক মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছবে। অথচ আল্লাহ উক্ত কথার দরুনই ক্বিয়ামত পর্যন্ত তার উপর তাঁর অসন্তুষ্টি অবধারিত করে দেন’।[25]
এসব কারণেই রাসূল (ছাঃ) স্বীয় উম্মতকে সর্বদা ভালো কথা বলা অথবা চুপ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন,مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ، ‘যে আল্লাহ ও পরকালের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন ভালো কথা বলে অথবা চুপ থাকে’।[26] অতএব জিহবার কাজ খুবই সহজ। কিন্তু তার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ।
স্মর্তব্য যে, আমাদের প্রতিটি কথাই লিপিবদ্ধ হচ্ছে। তা যতই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র হোক না কেন। আল্লাহ বলেন,مَا يَلْفِظُ مِنْ قَوْلٍ إِلاَّ لَدَيْهِ رَقِيْبٌ عَتِيْدٌ، ‘মানুষ যাই বলুক না কেন তা লিপিবদ্ধ করার জন্য দু’জন অতন্দ্র প্রহরী (ফেরেশতা) তার সাথেই রয়েছে’ (ক্বাফ ৫০/১৮)। মানুষ তার জিহবা সংক্রান্ত দু’টি সমস্যায় সর্বদা ভুগতে থাকে। একটি কথার সমস্যা এবং অপরটি চুপ থাকার সমস্যা।
জিহবার মাধ্যমে যেসব গুনাহ হয়ে থাকে :
গালিগালাজ করা (বুখারী হা/৪৮, ৬০৪৪), গীবত বা পরনিন্দা করা (হুজুরাত ১২), মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা (নূর ২৪/৪), মিথ্যা কথা বলা (কলম ৬৮/৮; আবূ দাউদ হা/৪৯৮৯), ঝগড়া করা (বুখারী হা/৩৪, ২৪৬৯; মিশকাত হা/৫৬), হারাম খাদ্য খাওয়া (নিসা ৪/২৯; মিশকাত হা/২৭৮৭; ছহীহাহ হা/২৬০৯), সাক্ষাতে মানুষকে অপমান করা (হুমাযাহ ১), মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া (বুখারী হা/৬৮৭১), অহেতুক কথাবার্তা বলা (বুখারী হা/১৯০৩), অন্যকে লা‘নত করা (তিরমিযী হা/২০১৯; মিশকাত হা/৪৮৪৮), দ্বিমুখী হওয়া (বুখারী হা/৩৪৯৪), কথার দ্বারা অন্যকে কষ্ট দেয়া (মুসনাদে আহমদ হা/৯৬৭৩; ছহীহুত তারগীব হা/২৫৬০) ইত্যাদি। [ক্রমশঃ]
[1]. শানক্বীতী, তাফসীরে আযওয়াউল বায়ান ২/২৫৩।
[2]. আহমাদ হা/২৬১৪; ছহীহাহ্ হা/২৬২৯, সনদ হাসান।
[3]. বুখারী হা/৬৪১৬; তিরমিযী হা/২৩৩৩; মিশকাত হা/১৬০৪।
[4]. তিরমিযী হা/২৩৭৭; ইবনু মাজাহ হা/৪১০৯; মিশকাত হা/৫১৮৮।
[5]. বুখারী হা/৬৪২০; মুসলিম হা/১০৪৬; আহমাদ হা/১০৫১৯।
[6]. ছহীহুত তারগীব হা/৩৩৪০, হাসান লিগায়রিহী।
[7]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/১০৬১৪; বাগাভী, শরহুস সুন্নাহ হা/৪০৯৩; আহমাদ ইবনে হাম্বল, ফাযাইলুছ ছাহাবাহ হা/৮৮১।
[8]. ইমাম গাযালী, ইহয়াউ ‘উলূমিদ্দীন ৪/৪৫৪; মিফতাহুল আফকার ১/১৩০।
[9]. আবুল লায়েছ সামারকান্দী, তাম্বীহুল গাফেলীন, পৃঃ ২২৫।
[10]. হাকেম হা/৮০৬৬; ছহীহ ইবনু হিববান হা/২৭১; আহমাদ হা/২২৭৫৭; ছহীহাহ হা/১৪৭০; মিশকাত হা/৪৮৭০।
[11]. আবু দাউদ হা/২১৪৯; মিশকাত হা/৩১১০; ছহীহুল জামে‘ হা/৭৯৫৩।
[12]. বুখারী হা/৬২৪৩; মুসলিম হা/২৬৫৭; আবূ দাঊদ হা/২১৫২; ইরওয়া হা/১৭৮৭; ছহীহুল জামে‘ হা/১৭৯৭।
[13]. মুসলিম হা/২৬৫৭।
[14]. মু‘জামুল কাবীর ৮/২৬২ পৃঃ, হা/৮০১৮; ছহীহুল জামে‘ হা/১২২৫, ২৯৭৮।
[15]. বুখারী হা/৬৪১২; তিরমিযী হা/২৩০৪; মিশকাত হা/৫১৫৫।
[16]. দৈনিক প্রথম আলো, ২৮শে জুলাই, ২০১৭।
[17]. হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ), ফৎহুল বারী, ১১/২৩০।
[18]. বুখারী হা/৬৯২৩, ২২৬১; মুসলিম হা/১৮২৪।
[19]. আহমাদ হা/১৩০৭১; ছহীহাহ হা/২৮৪১; ছহীহুত তারগীব হা/২৫৫৪।
[20]. তিরমিযী হা/২০০৪; ইবনু মাজাহ হা/৪৩২২; আদাবুল মুফরাদ হা/২৯২।
[21]. তিরমিযী হা/২৬১৬; ইবনু মাজাহ হা/৪০৪৪; আহমাদ ৫/২৩১, ২৩৭।
[22]. মুসলিম হা/২৬২১; মিশকাত হা/২৩৩৪; ছহীহাহ হা/১৬৮৫।
[23]. আবূ দাউদ হা/৪৯০১।
[24]. বুখারী হা/৬৪৭৭; মুসলিম হা/২৯৮৮।
[25]. তিরমিযী হা/২৩১৯; ইবনু মাজাহ হা/৪০৪০।
[26]. বুখারী হা/৬০১৮-১৯; মুসলিম হা/৪৭-৪৮; ইবনু মাজাহ হা/৪০৪২।