রামাযান তোমাকে

আতিয়ার রহমান

মাদরা, কলারোয়া, সাতক্ষীরা।

রামাযান! তোমাকে জানাই আহলান সাহলান

আর জানাই আমার হৃদয় নিংড়ানো

আগমনী সংবর্ধনা ও স্বশ্রদ্ধ সালাম।

পাতকীকে তুমি

লক্ষ পঙ্কিলতার কালিমা থেকে চিরমুক্ত করতে

তুমি তো আল্লাহর এক অফুরন্ত রহমত।

রামাযান! আমরা তোমার আগমনের অপেক্ষায়

পশ্চিম দিগন্তে নতুন চাঁদ দেখতে

উৎসুক মনে একান্ত নিবিড়ভাবে তাকিয়ে আছি।

তোমার আগমনের শুভ সংবাদ পেলাম,

সংবাদ পেলাম বিদায়ী শা‘বানের কাছে।

রামাযান! আমরা পাতকী, পঙ্কিলতার পিচ্ছিলে

আমাদের পদস্খলন ঘটছে অহর্নিশ,

তোমার আগমনে তাই আমরা আশান্বিত।

তুমি কি পারবে রামাযান,

সর্বপ্রকার পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত করে

আমাদের পরিচ্ছন্ন করতে?

তুমি কি পারবে

পরম করুণাময় আল্লাহ রাববুল আলামীনের

নিষ্কলুষ বান্দা রূপে খাঁটি প্রেমিক বানিয়ে দিতে?

প্রিয় রামাযান! সেই আশায় আমরা তোমাকে

অন্তর দিয়ে বরণ করি।

আমার জন্মভূমি

এফ.এম. নাছরুল্লাহ হায়দার

কাঠিগ্রাম, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।

আমরা এদেশ স্বাধীন করেছি

বুকের তাজা রক্তে করেছি শুচি,

যুগে যুগে জেল-যুলুম লাঞ্ছনা সয়েও

আজও মোরা বেঁচে আছি।

মিথ্যাকে এড়িয়ে বাধার পর্বত পেরিয়ে

বলছি সদা তাওহীদের বাণী,

কেঁপে উঠে তাই চারদিক বাতিল শক্তি

সত্যের শ্লোগান শুনি।

ছাহাবায়ে কেরামের যুগ হ’তে চলে আসা নির্ভেজাল

যে আন্দোলন চলছে ধরায় দৈনিক,

সেই আন্দোলনের বীর সিপাহী মোরা

রাজপথের লড়াকু সৈনিক।

পাক-ভারত উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে

স্বর্ণাক্ষরে লেখা যাদের নাম,

কামানের গোলায় চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়েও যারা চালিয়েছে

মাতৃভূমির জন্য সংগ্রাম।

দেশের জন্য যখন লড়েছি মরেছি মোরা

কোথায় ছিলে বল তুমি?

জঙ্গী সাজিয়ে ছেড়ে যেতে বল আজ

আমাদের প্রিয় জন্মভূমি।

            যত দিন রবে এদেশ সবুজ-শ্যামল

            কৃষ্ণচূড়ায় পুষ্প লাল,

            অমর কৃতী থাকবে স্মৃতিতে গাঁথা মোদের

            ইতিহাসের পাতায় মহাকাল।

কান্না

মুহাম্মাদ আব্দুল হাকীম

হাড়াভাঙ্গা, গাংনী, মেহেরপুর।

হাত কাটলে কেহ কাঁদে স্বজন মরলে কেহ

মাল ধ্বংসে কেহ কাঁদে পিটন খেয়ে কেহ।

রোগী কাঁদে রোগের জ্বালায় সুস্থ হ’তে চায়

কচি শিশু কাঁদে ক্ষুধায় দুগ্ধ খাবে তাই।

শ্বশুর বাড়ী যাবার কালে মেয়েরা কাঁদে ভাই

মা কাঁদে তার সাথে মেয়েরই মায়ায়।

ভান করিয়া কেহ কাঁদে কেহ কাঁদে সুখে

আবার দেখ কেহ কাঁদে থেকে নানান দুঃখে।

পিঁয়াজ কাটতে কেহ কাঁদে কেহ চুলার ধূয়ায়

ছাত্র কাঁদে ফেল করে বিষম চিন্তায়।

জেলখানায় কেহ কাঁদে গেছে বিনা দোষে

স্ত্রী-পরিবার সবাই কাঁদে নিজ ঘরে বসে।

ছেলে-মেয়েরা কাঁদে দেখ মিঠাই খাবার তরে

ধমক খেয়ে কেহ কাঁদে কেহ আছাড় খেয়ে।

কেহ কাঁদে আল্লাহর ভয়ে কাঁদে মুছল্লায় বসে

কেহ কাঁদে রুকূ-সিজদায় কেহ কবর পাশে।

মরার ভয়ে কেহ কাঁদে কেহ গোরের ভয়ে

জাহান্নাম ভয়ে কেহ কাঁদে জড়সড় হয়ে।

নানান কান্নার বর্ণনা ভাই লিখিলাম হেথায়

আসল কান্না আল্লাহর ভয়ে জানিও নিশ্চয়।

[মেহেরপুর যেলার গাংনী থানাধীন হাড়াভাঙ্গা ডি.এইচ.এস মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মুহাম্মাদ আব্দুল হাকীম (৫০) গত ৪ মার্চ ২০১১ সকাল ৬-টায় হাড়াভাঙ্গাস্থ নিজ বাড়ীতে ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহ...। ঐদিন বিকাল সাড়ে ৪-টায় অনুষ্ঠিত জানাযা ছালাতে ইমামতি করে তার ছেলে নাছরুল্লাহ জাদীদ। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ কুষ্টিয়া-পশ্চিম যেলা সভাপতি গোলাম যিল-কিবরিয়া তার জানাযায় উপস্থিত ছিলেন। তাকে ঝিনাইদহের বাতিকাডাঙ্গা গ্রামের পৈতৃক গোরস্থানে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে ও ১ মেয়ে রেখে গেছেন। আমরা তার রূহের মাগফিরাত কামনা করছি।-সম্পাদক।]






আরও
আরও
.