ভূমিকা :
পৃথিবীতে আগত সকল নবী-রাসূলের মাঝে আমাদের রাসূল মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর মর্যাদা হ’ল তারাভরা রাতের আকাশে একটি রূপালী চাঁদে মত। তিনি সর্বশেষ ও শ্রেষ্ঠ রাসূল। তিনি জগৎবাসীর জন্য রহমত হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার আগমনে পাপ-বিদগ্ধ ভুবনে শান্তির নির্মল সমীরণ প্রবাহিত হয়েছিল। তাঁর আনীত দ্বীনের অনুসরণ করে মানুষের নিস্পন্দ হৃদয়ে অপার্থিব জান্নাতি অনুভূতির স্পন্দন জেগে উঠেছিল। তাঁর পরিশীলিত আদর্শের অনুসরণে জাগতিক শান্তি ও পরকালীন মুক্তির ঠিকানা নিশ্চিত করা সম্ভব। ক্বিয়ামতের কঠিন দিনে তিনিই আমাদের জন্য শাফা‘আত করবেন। তাঁর সুফারিশেই আমরা পেতে পারি জান্নাতী সওগাত। কিন্তু যদি এক জীবনে এই মহান রাসূলের দো‘আ লাভ করা যায়, তাহ’লে এর চেয়ে বড় সৌভাগ্যের বিষয় কী কল্পনা করা যায়? তিনি আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থণা করেছেন, রহমত নাযিলের দো‘আ করেছেন- বিষয়গুলো ভাবতেই হৃদয় জুড়ে প্রশান্তি অনুভূত হয়।
রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আ লাভের উপায় :
ইবরাহীম (আঃ) যেমন তার পরবর্তী বংশধরদের জন্য, মক্কা নগরীর জন্য বিভিন্ন দো‘আ করেছেন এবং সেই দো‘আর মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্ম যুগ-যুগান্তরে উপকৃত হয়েছে এবং আজও হচ্ছে, ঠিক তেমনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)ও তাঁর উম্মতের জন্য বিভিন্ন দো‘আ করেছেন। পৃথিবীর ধ্বংসের পূর্ব পর্যন্ত কোন মুমিন বান্দা সেই আমলগুলো সম্পাদনের মাধ্যমে তাঁর দো‘আয় নিজেকে শামিল করতে পারে। নিমেণ রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আ লাভের কতিপয় উপায় বা আমল বিবৃত হ’ল-
১. তাওহীদী বিশ্বাসকে সঠিক ও স্বচ্ছ রাখা :
যারা শিরক থেকে মুক্ত হয়ে সঠিক তাওহীদী বিশ্বাস রেখে মারা যাবে, তাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জান্নাত লাভের দো‘আ করেছেন। আওফ ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,
أُعْطِيتُ أَرْبَعًا لَمْ يُعْطَهُنَّ أَحَدٌ كَانَ قَبْلَنَا، وَسَأَلْتُ رَبِّي الْخَامِسَةَ فَأَعْطَانِيهَا، كَانَ النَّبِيُّ يُبْعَثُ إِلَى قَرْيَتِهِ وَلَا يَعْدُوهَا وَبُعِثْتُ كَافَّةً إِلَى النَّاسِ، وَأُرْهِبَ مِنَّا عَدُوُّنَا مَسِيرَةَ شَهْرٍ، وَجُعِلَتْ لِيَ الْأَرْضُ طَهُورًا وَمَسَاجِدَ، وَأُحِلَّ لَنَا الْخُمُسُ وَلَمْ يَحِلَّ لِأَحَدٍ كَانَ قَبْلَنَا، وَسَأَلْتُ رَبِّي الْخَامِسَةَ، فَسَأَلْتُهُ أَنْ لَا يَلْقَاهُ عَبْدٌ مِنْ أُمَّتِي يُوَحِّدُهُ إِلَّا أَدْخَلَهُ الْجَنَّةَ فَأَعْطَانِيهَا،
‘আমাকে চারটি বিষয় প্রদান করা হয়েছে, যা আমার পূর্ববর্তী কাউকে (কোন নবীকে) প্রদান করা হয়নি। আমি আমার রবের নিকট পঞ্চমটি চেয়েছি, তিনি আমাকে সেটাও দান করেছেন। (পূর্ববর্তী সকল) নবীকে তার স্বীয় গোত্রের নিকট প্রেরণ করা হয়েছিল, আর তার কওমের লোকেরা তার নবুওয়াতের সাথে বিদ্বেষ পোষণ করেছে। আর আমাকে সমগ্র মানবজাতির নিকটে প্রেরণ করা হয়েছে এবং আমাদের থেকে এক মাসের দূরবর্তী আমাদের শত্রুদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত করা হয়েছে। আমার জন্য সমগ্র যমীন পবিত্র ও ইবাদতের উপযোগী করা হয়েছে। আমার জন্য গনীমতের এক-পঞ্চমাংশ হালাল করা হয়েছে, যা আমাদের পূর্ববর্তী কোন নবীর জন্য হালাল ছিল না। আর আমি আমার রবের নিকট পঞ্চম বিষয়টি চেয়েছি। আমি তাঁর নিকটে দাবী করে বলেছি, ‘(হে আল্লাহ!) আমার উম্মতের কোন বান্দা আল্লাহর একত্বে বিশ্বাসী হয়ে মারা গেলে, তুমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও’। অতঃপর তিনি আমাকে এই দাবী পূরণের নিশ্চয়তা প্রদান করছেন’।[1] সুতরাং বুঝা গেল যাদের আক্বীদা বিশুদ্ধ হবে এবং নির্ভেজাল তাওহীদে বিশ্বাসী হয়ে মারা যাবে, তারা রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আর বদৌলতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
২. আছরের ছালাতের পূর্বে চার রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করা :
রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আ লাভের অন্যতম একটি উপায় হ’ল আছরের ফরয ছালাতের পূর্বে চার রাক‘আত নফল ছালাত আদায় করা। ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, رَحِمَ اللهُ امْرَأً صَلَّى قَبْلَ الْعَصْرِ أَرْبَعًا، ‘আল্লাহ সেই ব্যক্তির উপর রহমত বর্ষণ করেন, যে আছরের ছালাতের পূর্বে চার রাক‘আত (নফল) ছালাত আদায় করে’।[2] রাসূল (ছাঃ) দুই সালামে তথা দুই দুই রাক‘আত করে এই ছালাত আদায় করতেন।[3] তবে আছরের পূর্বের এই চার রাক‘আত ছালাত সুনণাতে রাত্বেবা নয়; রবং এই চার রাক‘আত ছালাত আদায় করা মুস্তাহাব, যা নিয়মিত সম্পাদন করা যরূরী নয়। যেমন মাগরিবের আযান ও ইক্বামতের মাঝখানে দুই রাক‘আত ছালাত আদায় করা মুস্তাহাব।[4]
৩. জামা‘আতের প্রথম বা দ্বিতীয় কাতারে ছালাত আদায় করা :
যারা জামা‘আতে প্রথম বা দ্বিতীয় কাতারে ছালাত আদায় করে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। ইরবায ইবনে সারিয়া (রাঃ) বলেন, كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَغْفِرُ لِلصَّفِّ الْمُقَدَّمِ ثَلَاثًا، وَلِلثَّانِي مَرَّةً، ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রথম কাতারের মুছল্লীদের জন্য তিনবার এবং দ্বিতীয় কাতারের মুছল্লীদের জন্য একবার ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন’।[5] নাসাঈর বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের জন্য রহমতের দো‘আ করেছেন।[6] ফলে ফেরেশতারাও তাদের জন্য দো‘আ করেন এবং আল্লাহ তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন। অন্যত্র রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,إِنَّ اللهَ وَمَلَائِكَتَهُ يُصَلُّونَ عَلَى الصَّفِّ الْأَوَّلِ، ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রথম কাতারের মুছল্লীদের উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমত প্রার্থনা করেন। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! দ্বিতীয় কাতারের মুছল্লীদের উপর? রাসূল (ছাঃ) আবার বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রথম কাতারের মুছল্লীদের উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমত প্রার্থনা করেন। এভাবে তিন বার একই উত্তর দিলেন এবং চতুর্থ বারে গিয়ে বললেন, وَعَلَى الثَّانِي، ‘(হ্যাঁ) দ্বিতীয় কাতারের মুছল্লীদের উপরেও’।[7]
৪. আযান দেওয়া ও ছালাতের ইমামতি করা :
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ইমামদের জন্য হেদায়াতের দো‘আ করেছেন এবং মুওয়াযযিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,الْإِمَامُ ضَامِنٌ وَالْمُؤَذِّنُ مُؤْتَمَنٌ، اللَّهُمَّ أَرْشِدِ الْأَئِمَّةَ وَاغْفِرْ لِلْمُؤَذِّنِينَ! ‘ইমাম হচ্ছে যামিন্দার এবং মুওয়াযযিন আমানতদার। হে আল্লাহ! তুমি ইমামদেরকে সৎ পথে পরিচালিত কর এবং মুওয়াযযিনদেরকে ক্ষমা কর’।[8] অপর বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ইমাম ও মুওয়াযযিনদের জন্য তিনবার দো‘আ করে বলেছেন, اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِلْمُؤَذِّنِينَ وَسَدِّدِ الْأَئِمَّةَ! ‘হে আল্লাহ! মুওয়াযযিনদেরকে ক্ষমা কর এবং ইমামদেরকে সঠিক পথে অবিচল রাখ’।[9]
২. হজ্জ সম্পাদনের পর মাথা মুন্ডন করা অথবা চুল ছেটে ফেলা :
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দো‘আয় নিজেকে শামিল করার আরেকটি উপায় হ’ল হজ্জ সম্পাদনের পর মাথা মুন্ডন করা অথবা চুল ছেটে ফেলা। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদের জন্য রহমতের প্রার্থনা করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বিদায় হজ্জের ভাষণে বলেছেন,اللهُمَّ ارْحَمِ الْمُحَلِّقِينَ قَالُوا: وَالْمُقَصِّرِينَ؟ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: اللهُمَّ ارْحَمِ الْمُحَلِّقِينَ قَالُوا: وَالْمُقَصِّرِينَ؟ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ: وَالْمُقَصِّرِينَ- ‘হে আল্লাহ! মাথা মুন্ডনকারীদের প্রতি রহম করুন। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! যারা মাথার চুল ছোট করেছে তাদের প্রতিও? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, হে আল্লাহ! মাথা মু্ন্ডনকারীদের প্রতি রহম করুন। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! যারা চুল ছোট করেছে তাদের প্রতিও? এবার রাসূল (ছাঃ) বললেন, যারা চুল ছোট করেছে তাদের প্রতিও’।[10] অর্থাৎ হজ্জের পরে যারা মাথা মুন্ডন করে, তাদের জন্য রাসূল (ছাঃ) দুই বার রহমতের দো‘আ করেছেন এবং যারা চুল ছোট করে তাদের জন্য একবার দো‘আ করেছেন।
৩. রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আত অবশ্যককারী ইবাদত সম্পাদন করা :
ক্বিয়ামতের ময়দানে রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আত প্রত্যেক উম্মতের জন্য যরূরী। নিঃসন্দেহে আখেরাতের জীবনে রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আত বান্দার জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া। কেননা মহান আল্লাহ রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আত অব্যশই কবুল করবেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ مُسْتَجَابَةٌ يَدْعُو بِهَا فَيُسْتَجَابُ لَهُ، فَيُؤْتَاهَا، وَإِنِّي اخْتَبَأْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لِأُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ، ‘প্রত্যেক নবীর জন্য এক বিশেষ দো‘আ করার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে, যা অবশ্যই কবুল হবে। সকল নবী তাদের দো‘আ করে ফেলেছেন এবং তা কবুলও করা হয়েছে। কিন্তু আমি আমার এই দো‘আটি ক্বিয়ামত দিবসে আমার উম্মতের জন্য শাফা‘আত করতে মুলতবি রেখেছি’।[11] যারা পার্থিব জীবনে শিরক বর্জন করে নির্ভেজাল তাওহীদে বিশ্বাসী হবে এবং বিদ‘আতকে বর্জন করে রাসূল (ছাঃ)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করবে, তারাই শাফা‘আত লাভের সৌভাগ্য অর্জন করবে। আর রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর শাফা‘আত লাভের অন্যতম একটি উপায় হ’ল আযানের পর তাঁর প্রতি দরূদ পেশ করা এবং আযানের দো‘আ পাঠের মাধ্যমে তাঁর ওসীলা কামনা করা। আব্দুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল ‘আছ (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,إِذَا سَمِعْتُمُ الْمُؤَذِّنَ، فَقُولُوا مِثْلَ مَا يَقُولُ ثُمَّ صَلُّوا عَلَيَّ، فَإِنَّهُ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ صَلَاةً صَلَّى الله عَلَيْهِ بِهَا عَشْرًا، ثُمَّ سَلُوا اللهَ لِيَ الْوَسِيلَةَ، فَإِنَّهَا مَنْزِلَةٌ فِي الْجَنَّةِ، لَا تَنْبَغِي إِلَّا لِعَبْدٍ مِنْ عِبَادِ اللهِ، وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ أَنَا هُوَ، فَمَنْ سَأَلَ لِي الْوَسِيلَةَ حَلَّتْ لَهُ الشَّفَاعَةُ، ‘তোমরা যখন মুওয়াযযিনকে আযান দিতে শুনবে, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বলবে। তারপর আমার ওপর দরূদ পাঠ করবে। কারণ যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করে, আল্লাহ এর বিনিময়ে তার উপর দশবার রহমত নাযিল করেন। অতঃপর আল্লাহর কাছে আমার জন্য ওসীলা প্রার্থনা করবে। ওসীলা হ’ল জান্নাতের একটি বিশেষ স্থান, যা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে কোন এক বান্দাকে দেয়া হবে। আমি আশা করি যে, আমিই হব সেই বান্দা। যে ব্যক্তি আমার জন্য ওসীলা প্রার্থনা করবে, তার জন্য আমার শাফা‘আত ওয়াজিব হয়ে যাবে’।[12] অপর এক বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি আযান শোনার পর নিমেণর দো‘আটি পড়বে, ক্বিয়ামতের দিন তার জন্য আমার শাফা‘আত অনিবার্য হয়ে যাবে’। দো’আটি হ’ল- اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّدًا نِالْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا نِالَّذِي وَعَدْتَهُ، ‘আল্লা-হুম্মা রববা হা-যিহিদ্ দা‘ওয়াতিৎ তা-ম্মাতি ওয়াছ্ ছালা-তিল ক্ব-য়িমাতি আ-তি মুহাম্মাদা-নিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাযীলাহ্, ওয়াব্‘আছহু মাক্বা-মাম্ মাহমূদা-নিল্লাযী ওয়া‘আদতাহ্’ [হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহবান এবং প্রতিষ্ঠিত ছালাতের প্রতিপালক! তুমি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে ওসীলা ও শ্রেষ্ঠত্ব দান কর এবং তাঁকে প্রতিষ্ঠিত কর মাক্বামে মাহমূদে, যার ওয়াদা তুমি তাঁকে দিয়েছ]’।[13]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর শাফা‘আত লাভের আরেকটি উপায় হ’ল ফরয ছালাতের পাশাপাশি বেশী বেশী নফল ছালাত আদায় করা। একদিন রাসূল (ছাঃ) বনু মাখযূমের এক খাদেমের খেদমতে খুশি হয়ে তাকে বললেন, ‘আমার কাছে তোমার কোন চাহিদা আছে কি?’ সে বলল, حَاجَتِي أَنْ تَشْفَعَ لِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ، ‘আমার চাহিদা হ’ল আপনি ক্বিয়ামতের দিন আমার জন্য শাফা‘আত করবেন’। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, فَأَعِنِّي بِكَثْرَةِ السُّجُودِ، ‘তাহ’লে বেশী বেশী সিজদাহ (নফল ছালাত)-এর মাধ্যমে আমাকে সহযোগিতা কর’।[14] অর্থাৎ বেশী বেশী নফল ছালাত আদায় করে আমরা শাফা‘আত লাভের জন্য নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুল।
৪. তাহাজ্জুদের ব্যাপারে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সহযোগিতা :
কোন দম্পতি যদি তাহাজ্জুদ ছালাত আদায় করে এবং পরস্পরকে সেই ইবাদতে উৎসাহিত করে, তাহ’লে সেই স্বামী-স্ত্রী রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর রহমতের দো‘আ লাভের সৌভাগ্য অর্জন করতে পারে। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,رَحِمَ اللهُ رَجُلًا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّى، وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ، فَإِنْ أَبَتْ، نَضَحَ فِيْ وَجْهِهَا الْمَاءَ، رَحِمَ اللهُ امْرَأَةً قَامَتْ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّتْ، وَأَيْقَظَتْ زَوْجَهَا، فَإِنْ أَبَى، نَضَحَتْ فِيْ وَجْهِهِ الْمَاءَ، ‘আল্লাহ সেই ব্যক্তির উপর রহম করেন, যে রাত জেগে ছালাত আদায় করে; অতঃপর সে তার স্ত্রীকে ঘুম হ’তে জাগ্রত করে। আর যদি সে ঘুম হ’তে উঠতে না চায়, তাহ’লে সে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয় (নিদ্রাভঙ্গের জন্য)। আর আল্লাহ সেই মহিলার উপরেও রহম করেন, যে রাতে উঠে ছালাত আদায় করে এবং নিজের স্বামীকে জাগ্রত করে। যদি সে ঘুম হ’তে উঠতে অস্বীকার করে, তখন সে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়’।[15] অপর বর্ণনায় তিনি বলেন,إِذَا اسْتَيْقَظَ الرَّجُلُ مِنَ اللَّيْلِ وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ فَصَلَّيَا رَكْعَتَيْنِ كُتِبَا مِنَ الذَّاكِرِينَ اللهَ كَثِيرًا وَالذَّاكِرَاتِ، ‘যখন কোন ব্যক্তি রাতে ঘুম থেকে জেগে উঠে নিজ স্ত্রীকেও ঘুম থেকে জাগ্রত করে এবং উভয়ে দুই রাক‘আত (নফল) ছালাত আদায় করে, তাদের উভয়কে আল্লাহর পর্যাপ্ত যিকরকারী পুরুষ ও পর্যাপ্ত যিকিরকারিণী স্ত্রীলোকদের তালিকাভুক্ত করা হয়’।[16] সুতরাং দাম্পত্য জীবনে আল্লাহর রহমত, বরকত ও রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দো‘আ পেতে হ’লে তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হওয়া যরূরী। স্বামী-স্ত্রীর এই ইবাদতগুযারীর মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্মের উপর একটি দ্বীনি প্রভাব পড়বে এবং তাদের পরবর্তী বংশধর দ্বীনের ছাঁচে গড়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ।
৫. শারীরিক ও আভ্যন্তরীণভাবে পবিত্র থাকা :
পবিত্রতা দুই ধরনের। একটি হ’ল শারীরিকভাবে পবিত্রতা, যা ওযূ, গোসল, তায়াম্মুম প্রভৃতির মাধ্যমে অর্জিত হয়। আরেকটি হ’ল অন্তরের পবিত্রতা, যা তওবা, ইস্তিগফার প্রভৃতির মাধ্যমে অর্জিত হয়।[17] আর যারা এই দুই পবিত্রতা অর্জন করে রাতের বেলা ঘুমিয়ে পড়ে, তারা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দো‘আ অর্জনের পাশাপাশি ফেরেশতাদেরও দো‘আ লাভ করে। আব্দুল্লাহ ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,طَهِّرُوْا هَذِهِ الْأَجْسَادَ طَهَّرَكُمُ اللهُ، فَإِنَّهُ لَيْسَ عَبْدٌ يَبِيْتُ طَاهِرًا إِلَّا بَاتَ مَعَهُ مَلَكٌ فِيْ شِعَارِهِ لَا يَنْقَلِبُ سَاعَةً مِنَ اللَّيْلِ إِلَّا قَالَ: اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِعَبْدِكَ فَإِنَّهُ بَاتَ طَاهِرًا، ‘তোমরা এই দেহগুলোকে পবিত্র রাখ, তাহ’লে আল্লাহ তোমাদেরকে পবিত্র করবেন। সুতরাং যখন কোন বান্দা পবিত্র হয়ে (ওযূ করে) রাত্রি যাপন করে বা ঘুমিয়ে পড়ে, তখন তার শিয়রের পাশে একজন ফেরেশতাও রাত্রি যাপন করতে থাকে। রাতের কোন মুহূর্তে বান্দা যখনই তার পার্শ্ব পরিবর্তন করে, তখন সেই ফেরেশতা তার জন্য দো‘আ করে বলে, হে আল্লাহ! তোমার এই বান্দাকে ক্ষমা কর, কেননা সে পবিত্র হয়ে শুয়ে পড়েছে’।[18] আলোচ্য হাদীছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পবিত্র হয়ে রাত্রী যাপনকারীদের জন্য গোনাহ থেকে পরিত্রাণ লাভের দো‘আ করেছেন।[19]
৬. ঋণের পাওনা আদায়ে ও ক্রয়-বিক্রয়ে সহনশীল হওয়া :
সহনশীলতা মানব চরিত্রের একটি মহান গুণ। জীবনের পথ চলায় লেনদেন, ক্রয়-বিক্রয়, দেনা-পাওনা আদায়ে যারা সহনশীলতা ও কোমলতা প্রদর্শন করে, রাসূল (ছাঃ) তাদের জন্য রহমত ও জান্নাত লাভের দো‘আ করেছেন। জাবের (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেছেন,رَحِمَ اللهُ عَبْدًا سَمْحًا إِذَا بَاعَ، سَمْحًا إِذَا اشْتَرَى، سَمْحًا إِذَا اقْتَضَى، ‘আল্লাহ সেই বান্দার প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, যে বান্দা ক্রয়-বিক্রয়ের সময় উদারচিত্ত হয় এবং (ঋণের) পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে সহনশীল হয়’।[20] অন্যত্র তিনি বলেছেন,غَفَرَ اللهُ لِرَجُلٍ كَانَ قَبْلَكُمْ، كَانَ سَهْلًا إِذَا بَاعَ، سَهْلًا إِذَا اشْتَرَى، سَهْلًا إِذَا اقْتَضَى، ‘তোমাদের পূর্ববর্তী যুগের এক ব্যক্তিকে আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন। সে বিক্রির ক্ষেত্রে ছিল সহজ, ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহনশীল এবং ঋণের তাগাদা দেওয়ার ক্ষেত্রে ছিল উদার’।[21] অপর এক বর্ণনায় তিনি বলেন,أَدْخَلَ اللهُ الْجَنَّةَ رَجُلاً كَانَ سَهْلاً قَاضِياً وَمُقْتَضِياً وَبَائِعاً وَمُشْتَرِياً، ‘আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করান, যে বিচারকার্যে, ঋণের পাওনা আদায়ে এবং ক্রয়-বিক্রয়ে কোমলতা প্রদর্শন করে’।[22]
৭. জিহবার হেফাযত করা :
জিহবার অন্যতম ইবাদত হ’ল জিহবার মাধ্যমে হক্ব ও কল্যাণকর কথা বলা এবং অশ্লীলতা, গীবত-তোহমত ও বাজে কথা থেকে জিহবাকে হেফযত করা। যারা এই কাজটি করতে পারে, তারা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দো‘আ লাভ করবে। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জিহবার হেফাযতকারী বান্দাদের জন্য দো‘আ করে বলেন,رَحِمَ اللهُ عَبْدًا قَالَ خَيْرًا فَغَنِمَ، أَوْ سَكَتْ عَنْ سُوءٍ فَسَلِمَ، ‘আল্লাহ সেই বান্দার প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, যে ভাল কথা বলে, ফলে সে (এই কথার মাধ্যমে) বিনা কষ্টে সাফল্য লাভ করে অথবা সে খারাপ কথা বলা থেকে চুপ থাকে, ফলে সে নিরাপত্তা লাভ করে’।[23] সুতরাং মানুষের কর্তব্য হ’ল আলাপ-আলোচনায় ভাল কথা বলা নতুবা চুপ থাকা। কেননা জিহবার মাধ্যমে অনেক বড় বড় পাপে জড়িয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, أكثر خطايا ابن آدم في لسانه، ‘আদম সন্তানের জিহবার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশী পাপ সংঘটিত হয়’।[24] আল্লাহ আমাদের জিহবাকে যাবতীয় অনিষ্ট থেকে হেফযতে রাখার তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!
৮. অধীনস্থ লোকের উপর কোমল হওয়া :
অধীনস্থ যে কোন ব্যক্তির উপর কোমলতা ও নম্রতা প্রদর্শনের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর দো‘আ লাভ করা যায়। নবী কারীম (ছাঃ) তাঁর উম্মতের কোমলতা প্রদর্শনকারী ব্যক্তিদের জন্য দো‘আ করে বলেন,اللهُمَّ مَنْ وَلِيَ مِنْ أَمْرِ أُمَّتِي شَيْئًا فَشَقَّ عَلَيْهِمْ، فَاشْقُقْ عَلَيْهِ، وَمَنْ وَلِيَ مِنْ أَمْرِ أُمَّتِي شَيْئًا فَرَفَقَ بِهِمْ، فَارْفُقْ بِهِ، ‘হে আল্লাহ! যে ব্যক্তি আমার উম্মতের কোনরূপ কর্তৃত্ব লাভ করে এবং তাদের প্রতি কঠোরতা আরোপ করে, তুমি তার প্রতি কঠোর হও। আর যে আমার উম্মতের উপর কোনরূপ কর্তৃত্ব লাভ করে তাদের প্রতি কোমল আচরণ করে, তুমিও তার প্রতি কোমল ও সদয় হও’।[25] সুতরাং আল্লাহর রাসূলের দো‘আ পেতে হ’লে অধীনস্থ ব্যক্তিবর্গের প্রতি নম্র ব্যবহার করা যরূরী।
৯. সকালের সময়কে কাজে লাগানো :
সকাল বেলায় সম্পাদিত যাবতীয় কাজে বরকত নাযিল হয়। রাসূল (ছাঃ) প্রভাতকালে বরকত নাযিলের জন্য আল্লাহর কাছে দো‘আ করেছেন। ছাখ্র আল-গামেদী (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, اللَّهُمَّ بَارِكْ لِأُمَّتِي فِيْ بُكُوْرِهَا، ‘হে আল্লাহ! আমার উম্মতের ভোর বেলার মধ্যে তাদেরকে বরকত দান করুন’। যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কোথাও কোন ক্ষুদ্র বা বিশাল বাহিনী প্রেরণের সিদ্ধান্ত নিতেন, তখন সকাল বেলায়ই পাঠাতেন। বর্ণনাকারী ছাহাবী ছাখ্র ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। তিনিও তার পণ্যসামগ্রী কোথাও পাঠালে দিনের প্রথম অংশ বা সকালে পাঠাতেন। ফলে তিনি সম্পদশালী হয়েছিলেন এবং তার সম্পদ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছিল’।[26] সুতরাং ব্যবসা-বাণিজ্য, লেখাপড়া গবেষণা-অধ্যাবসয় যাবতীয় কাজ যদি সকাল বেলা করা হয়, তাহ’লে নবী করীম (ছাঃ)-এর দো‘আর বদৌলতে সেই সকল কাজে প্রভূত বরকত লাভ করা যায়। ইমাম নববী (রহঃ) বলেন, কুরআন তেলাওয়াত, বিভিন্ন ওয়াযীফা পাঠ, তাসবীহ-তাহলীল, শারঈ জ্ঞান চর্চা, ই‘তিকাফ, সফর শুরু করা, বিবাহের আক্বদ সম্পন্ন করা প্রভৃতি কাজ সকাল বেলা সম্পাদন করা সুন্নাত।[27]
১০. হাদীছ মুখস্থ করা ও প্রচার করা :
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দো‘আ লাভের সৌভাগ্য হাছিলের উল্লেখযোগ্য উপায় হ’ল- তাঁর হাদীছ মুখস্থ করা এবং তা মানুষের মাঝে প্রচার করা। নবী করীম (ছাঃ) বলেছেন, نَضَّرَ اللهُ امْرَأً سَمِعَ مَقَالَتِيْ فَوَعَاهَا وَحَفِظَهَا وَبَلَّغَهَا، فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ، ‘আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে মর্যাদামন্ডিত করেন, যে আমার কথা শুনেছে, তা মুখস্থ করেছে, সংরক্ষণ করেছে এবং অন্যের নিকটে তা পৌঁছে দিয়েছে। অনেক জ্ঞানের বাহক যার নিকট জ্ঞান বহন করে নিয়ে যান তিনি তার (বাহকের) চাইতে বেশী বুদ্ধিমান হ’তে পারেন’।[28] ইমাম ইবনু আব্দিল বার্র (রহঃ) তার বিখ্যাত ‘জামি‘উ বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহী’ নামক গ্রন্থে একটি অধ্যায়ের শিরোনাম লিখেছেন এভাবে- دعاء رسول الله صلى الله عليه وسلم لمستمع العلم وحافظه ومبلغه، (মনোযোগ দিয়ে ইলম শ্রবণকারী, মুখস্থকারী এবং প্রচারকারীর জন্য রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আ)।[29] কাসত্বাল্লানী (রহঃ) বলেন, যারা আল্লাহর রাসূলের হাদীছ অধ্যয়ন করে, মুখস্থ করে এবং সেই অনুযায়ী আমল করে ও জনগণের মাঝে এর প্রচার-প্রসার ঘটায়, আল্লাহ তাকে শারীরিকভাবে দেহসৌষ্ঠবে শক্তিমত্তা ও প্রফুল্লতা দান করেন, তার চেহারাতে সৌন্দর্যের জ্যোতি বিকশিত করেন এবং মানুষের মাঝে তার মর্যাদা বুলন্দ করেন। প্রকৃতপক্ষে রাসূল (ছাঃ) বরকতের দো‘আর কারণেই এমনটা হয়ে থাকে।[30] সুতরাং যুগে যুগে যারাই রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ মুখস্থ করবে, এর হেফাযত করবে এবং প্রচার করবে, তারা তাঁর দো‘আয় ধন্য হয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মানিত হবে।
পরিশেষে বলা যায়, রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আ আমাদের জীবনে এক পশলা বৃষ্টির মত, এই দো‘আর বৃষ্টি যার জীবনজুড়ে যত বেশী বর্ষিত হয়, তার হৃদয় যমীন আখেরাতের ফসল ফলাতে তত বেশী উপযোগী হয়ে ওঠে। ফলে প্রশান্তি অনুভূত হয় তার হৃদয়ে, জীবন তরী পৌঁছে যায় সফলতার বন্দরে। তাই আসুন! আল্লাহর একনিষ্ঠ ইবাদতের মাধ্যমে রাসূল (ছাঃ)-এর দো‘আ নিজেকে শামিল করে নেই। যেন দুনিয়াতে তাঁর দো‘আ এবং আখেরাতে তাঁর শাফা‘আত লাভে ধন্য হ’তে পারি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সেই তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!
আব্দুল্লাহ আল-মা‘রূফ
এম.এ (অধ্যয়নরত), আরবী বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
[1]. ইবনু হিববান হা/৬৩৯৯; ছহীহ মাওয়ারিদুয যাম’আন হা/১৭৮১, সনদ ছহীহ লিগায়রিহী।
[2]. আবূদাউদ হা/১২৭১; তিরমিযী হা/৪৩০; আহমাদ হা/৫৯৮০; ছহীহুত তারগীব হা/৫৮৮, সনদ হাসান।
[3]. তিরমিযী হা/৪২৯; ছহীহুত তারগীব হা/৫৮৮; মিশকাত হা/১১৭১, সনদ হাসান।
[4]. ইবনু বায, ফাতাওয়া নূরুন আলাদ দারব ১০/২৮১; ফাতাওয়া লাজনা দায়েমা ৬/১২৩।
[5]. ইবনু মাজাহ হা/৯৯৬; ছহীহুত তারগীব হা/৪৯০, সনদ ছহীহ।
[6]. নাসাঈ হা/৮১৭; আহমাদ হা/ ১৭১৯৭; সনদ ছহীহ।
[7]. আহমাদ হা/২২২৬৩; ছহীহুত তারগীব হা/৪৯১, সনদ হাসান।
[8]. আবূদাঊদ হা/৫১৭; তিরমিযী হা/২০৭; মিশকাত হা/৬৬৩, সনদ ছহীহ।
[9]. ইবনু খুযায়মাহ হা/১৫৩১; ছহীহুত তারগীব হা/২৩৭, সনদ ছহীহ।
[10]. বুখারী হা/১৭২৭; মুসলিম হা/২৬৪৮; মিশকাত হা/৩১৭।
[11]. বুখারী হা/৬৩০৪; মুসলিম হা/৩৩৯; মিশকাত হা/২২২৩।
[12]. মুসলিম হা/৩৮৪; আবূদাউদ হা/৫২৩; তিরমিযী হা/৩৬১৪; নাসাঈ হা/৬৭৮; মিশকাত হা/৬৫৭।
[13]. বুখারী হা/৬১৪; আবূদাঊদ হা/৫২৯; তিরমিযী হা/২১১; নাসাঈ হা/৬৮১; মিশকাত হা/৬৫৯।
[14]. আহমাদ হা/১৬০৭৬; ছহীহাহ হা/২১০২।
[15]. আবূদাঊদ হা/১৩০৮; ইবনু মাজাহ হা/১৩৩৬; নাসাঈ হা/১৬১০; মিশকাত হা/ ১২৩০, সনদ হাসান ছহীহ।
[16]. আবূদাঊদ হা/১৩০৯; ইবনু মাজাহ হা/১৩৩৫, সনদ ছহীহ।
[17]. মানাভী, ফায়যুল ক্বাদীর শারহে জামে‘উছ ছাগীর ৪/২৭১।
[18]. তাবারাণী, মু‘জামুল কাবীর হা/১৩৬২০; ছহীহুত তারগীব হা/৫৯৯; ছহীহুল জামে’ হা/৩৯৩৬, সনদ হাসান।
[19]. আত-তানওয়ীর শারহে জামে‘উছ ছাগীর ৭/১৩৯।
[20]. ইবনু মাজাহ হা/২২০৩, সনদ ছহীহ।
[21]. তিরমিযী হা/১৩২০; বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৭৭৫৮, সনদ ছহীহ।
[22]. আহমাদ হা/৪৯৫; জামে‘উছ ছাগীর হা/২৪৩, সনদ হাসান।
[23]. ইবনুল মুবারক, আয-যুহদ হা/৩৮০; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৪৯৬; ছহীহাহ হা/ ৮৫৫; সনদ হাসান।
[24]. সিলসিলা ছহীহাহ হা/৫৩৪; ছহীহুল জামে’ হা/১২০১; সনদ ছহীহ।
[25]. মুসলিম হা/১৮২৮; মিশকাত হা/৩৬৮৯।
[26]. আবূদাঊদ হা/২৬০৬; তিরমিযী হা/১২১২; ইবনু মাজাহ হা/২২৩৬; মিশকাত হা/৩৯০৮, সনদ ছহীহ।
[27]. ফায়যুল ক্বাদীর ২/১০৩, হা/১৪৫৭ দ্রষ্টব্য।
[28]. তিরমিযী হা/২৬৫৮; আবূদাঊদ হা/৩৬৬০; ইবনু মাজাহ হা/২৩৬; মিশকাত হা/২৩০, সনদ ছহীহ।
[29]. জামি‘উ বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহী ১/১৭৫।
[30]. হামযাহ ক্বাসেম, মানারুল ক্বারী শরহে মুখতাছার ছহীহিল বুখারী ১/১০।