পর্ব ১ । পর্ব ২ । পর্ব ৩ । পর্ব ৪ । পর্ব ৫ । পর্ব ৬ । পর্ব ৭ । পর্ব ৮ । শেষ পর্ব ।
আল্লাহ তা‘আলা যুগে যুগে যেসব নবী-রাসূল প্রেরণ করেছিলেন তাঁদের সবার একই দাওয়াত ছিল আল্লাহর ইবাদত কর এবং শিরকের পথ পরিহার কর। সাথে সাথে তাঁরা মানুষ ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে কিভাবে সফলতা লাভ করতে পারে সে পথ ও পন্থা নির্দেশ করেছেন। আলোচ্য প্রবন্ধে মানব জীবনে সফলতা লাভের কতিপয় উপায় উপস্থাপন করা হ’ল।-
(১) তাওহীদুল ইবাদাহ প্রতিষ্ঠা করা :
ইবাদত কেবল আল্লাহর জন্য হ’তে হবে। এ মর্মে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُوْنِ ‘আমি জিন ও মানুষকে কেবল আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি’ (যারিয়াত ৫৬)। আয়াতটিতে বলা হয়েছে, ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই হ’তে হবে। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, وَمَا أُمِرُوْا إِلاَّ لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ حُنَفَاءَ ‘তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধ চিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করতে’ (বায়্যিনাহ ৫)।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, قُلْ إِنِّيْ أُمِرْتُ أَنْ أَعْبُدَ اللهَ مُخْلِصاً لَّهُ الدِّيْنَ ‘হে নবী! আপনি বলুন, আমি আদিষ্ট হয়েছি, আল্লাহর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর ইবাদত করতে’ (যুমার ১১)। আয়াতদ্বয়ে বলা হয়েছে, ইবাদত একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য করতে হবে এবং শিরকী কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। আল্লাহ বলেন,فَمَنْ كَانَ يَرْجُو لِقَاءَ رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلاً صَالِحاً وَلاَ يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَداً ‘অতএব যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে সে যেন সৎকর্ম করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরীক না করে’ (কাহফ ১১০)।
আয়াতটিতে ইবাদত কবুলের দু’টি শর্ত বলা হয়েছে- (১) ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করতে হবে। (২) রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণে হ’তে হবে। নচেৎ তা কবুল হবে না।
নবী-রাসূলদের দাওয়াতী মিশন ছিল ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই হবে এবং শিরকী কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। যেমন আল্লাহ বলেন, وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِيْ كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُوْلاً أَنِ اعْبُدُواْ اللهَ وَاجْتَنِبُوْا الطَّاغُوْتَ- ‘আল্লাহর ইবাদত করার ও তাগূতকে বর্জন করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি’ (নাহল ৩৬)।
আলোচ্য আয়াতটিতে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই ইবাদত করতে বলা হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যের জন্য যত প্রকার ইবাদত করা হয় সেসব বর্জন করতে বলা হয়েছে। সুতরাং যারা কবরে সিজদা করে, নযর দেয়, কবরে গরু-ছাগল-মুরগী, টাকা-পয়সা দেয়, কবরের নিকট বরকত চায়, ফুল দেয় এবং পীর বাবার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে, যারা মূর্তি পূজা করে, যাদু করে, গণক গিরি করে সবই তাগূতের পথ, শয়তানের পথ।
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা যাবে না। এ মর্মে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَّسُوْلٍ إِلاَّ نُوْحِيْ إِلَيْهِ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنَا فَاعْبُدُوْنِ ‘আমি তোমার পূর্বে কোন রাসূল প্রেরণ করিনি এই অহী ব্যতীত যে, আমি ছাড়া অন্য কোন (সত্য) মা‘বূদ নেই। সুতরাং তোমরা আমারই ইবাদত কর’ (আম্বিয়া ২৫)।
তিনি আরো বলেন, لَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوْحاً إِلَى قَوْمِهِ فَقَالَ يَا قَوْمِ اعْبُدُوْا اللهَ مَا لَكُم مِّنْ إِلَـهٍ غَيْرُهُ ‘নূহকে তার কওমের নিকট পাঠিয়েছিলাম। সে বলল, হে আমার কওম! তোমরা শুধু আল্লাহর ইবাদত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের আর কোন সত্য মা‘বূদ নেই’ (আ‘রাফ ৫৯)। তিনি অন্যত্র বলেন, وَاعْبُدُوْا اللهَ وَلاَ تُشْرِكُوْا بِهِ شَيْئاً ‘আর তোমরা আল্লাহরই ইবাদত কর এবং তাঁর সাথে কোন বিষয়ে অংশী স্থাপন করো না’ (নিসা ৩৬)।
অন্যত্র আল্লাহ বলেন, وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُوْا إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ‘আর তোমার প্রভু নির্দেশ দিয়েছেন তোমরা একমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে এবং মাতা-পিতার সাথে ভাল ব্যবহার করবে’ (ইসরা ১৭/২৩)।
তিনি আরো বলেন, قُلْ تَعَالَوْاْ أَتْلُ مَا حَرَّمَ رَبُّكُمْ عَلَيْكُمْ أَلاَّ تُشْرِكُوْا بِهِ شَيْئًا ‘হে মুহাম্মাদ বলুন! তোমরা এসো, তোমাদের প্রভু তোমাদের উপর যা হারাম করেছেন তা পড়ে শোনাই। (তা হচ্ছে) তোমরা কোন কিছুকে তাঁর সাথে অংশীদার করবে না’ (আন‘আম ১৫১)।
উপরোক্ত আয়াতগুলো দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে সকল প্রকার ইবাদত শুধুমাত্র মহান আল্লাহর জন্য হবে এবং তাঁর ইবাদতে অন্য কাউকে শরীক করা যাবে না। মূলতঃ তাওহীদুল ইবাদাহ প্রতিষ্ঠা হচ্ছে মুমিনের সর্বপ্রথম কর্তব্য। এ মর্মে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) যখন মু‘য়ায (ইবনে জাবাল) (রাঃ)-কে শাসনকর্তা হিসাবে ইয়ামান পাঠান, তখন বলেছিলেন, তুমি আহ’লে কিতাব লোকদের নিকট যাচ্ছ। সুতরাং প্রথমে তাদেরকে এই সাক্ষ্য প্রদানের দাওয়াত দিবে যে আল্লাহ ছাড়া কোন প্রকৃত উপাস্য নেই এবং আমি তাঁর রাসূল। যদি তারা এটা মেনে নেয়, তাহ’লে তাদের তুমি বলবে যে, আল্লাহ দিন-রাতে তাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ফরয করে দিয়েছেন। যদি তারা তা মেনে নেয়, তখন তাদের জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফরয করেছেন, যা তাদের ধনীদের নিকট হ’তে গ্রহণ করা হবে এবং তাদের দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করে দেয়া হবে। যখন তারা এর অনুসরণ করবে তখন তাদের হ’তে তা গ্রহণ করবে এবং লোকের উত্তম মাল গ্রহণ করা হ’তে বিরত থাকবে।[1]
হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আমাদেরকে তাওহীদুল ইবাদাহ প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং সর্বপ্রথম দাওয়াত হবে তাওহীদের। এরপর ছালাত, ছিয়াম, হজ্জ, যাকাত প্রভৃতি ইবাদতের।
তাওহীদ প্রতিষ্ঠাই ছিল রাসূলের মূলকাজ। যেমন তিনি বলেন, আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য নির্দেশিত হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ব্যতীত সত্য কোন মা‘বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ (ছাঃ) আল্লাহর রাসূল। আর ছালাত প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত আদায় করে। তারা যদি এগুলো করে, তবে আমার থেকে তাদের জান ও মাল নিরাপদে থাকবে; অবশ্য ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি কোন কারণ থাকে, তাহ’লে স্বতন্ত্র কথা। আর তাদের হিসাবের ভার আল্লাহর উপর অর্পিত হবে’।[2]
অন্যত্র এসেছে, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) মানুষদের বলেছিলেন, ‘তোমরা বল, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা‘বূদ নেই, তাহ’লেই তোমরা সফলকাম হবে’।[3]
উল্লিখিত আয়াত ও হাদীছ থেকে দু’টি বিষয় সুস্পষ্ট হ’ল- (১) সকল প্রকার ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই করতে হবে। (২) সকল প্রকার শিরকী আমল পরিহার করতে হবে।
অপরদিকে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর হজ্জটাই ছিল তাওহীদের বাণী প্রচার ক্ষেত্র স্বরূপ। যেমন তিনি তালবিয়াহ পাঠ করতেন এভাবে, لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لاَشَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لاَشَرِيْكَ لَكَ- অর্থ : ‘আমি হাযির হে আল্লাহ! আমি হাযির, আমি হাযির। আপনার কোন শরীক নেই, আমি হাযির। নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও সকল অনুগ্রহ ও সাম্রাজ্য সবই আপনার; আপনার শরীক নেই’।[4]
মুহাদ্দিছ আল্লামা আব্দুল মুহসিন আল-আববাদ বলেন, হাদীছে তাওহীদ প্রতিষ্ঠিত করতে বলা হয়েছে এবং শিরক থেকে বেঁচে থাকতে বলা হয়েছে। যার অর্থ দাঁড়ায় ইবাদত একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্যই হ’তে হবে, অন্যের জন্য নয়।[5]
আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) আরাফার দো‘আ সম্পর্কে বলেন, উত্তম দো‘আ হ’ল আরাফার দিনের দো‘আ। যে দো‘আ আমি এবং আমার পূর্বের নবীগণ পড়তেন। তাহ’ল ‘আল্লাহ ছাড়া কোন সত্য মা‘বূদ নেই, তাঁর কোন শরীক নেই, তিনিই সমস্ত রাজত্বের মালিক এবং তাঁর জন্যই সমস্ত প্রশংসা এবং তিনি সমস্ত বিষয়ে ক্ষমতাবান’।[6]
মূলতঃ তাওহীদের স্বীকৃতি দিয়েই মানুষ ইসলামে প্রবেশ করে এবং তাওহীদের স্বীকৃতি প্রদান করে দুনিয়া থেকে পরপারে চলে যায়। এজন্যই আল্লামা ইবনে আবিল-ইয হানাফী (রহঃ) বলেন, ‘তাওহীদের মাধ্যমেই সর্বপ্রথমে ইসলামে প্রবেশ করা হয় এবং সেটার মাধ্যমেই মানব জাতি দুনিয়া থেকে বের হয়ে পরপারে যায়। যেমন নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তির শেষের বাক্য হবে ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’।[7]
কোন বিদ্বান বলেন, তাওহীদই হচ্ছে প্রথম ওয়াজিব এবং সেটাই হচ্ছে শেষ ওয়াজিব।[8] অপর হাদীছ থেকে পাওয়া যায়, লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ জান্নাতের চাবি। ওয়াহ্হাব ইবনু মুনাবিবহ (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল, ‘লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ’ কি জান্নাতের চাবি নয়? উত্তরে তিনি বললেন, অবশ্যই। তবে কোন চাবির দাঁত থাকে। তুমি দাঁত যুক্ত চাবি আনতে পারলে তোমার জন্য (জান্নাতের) দরজা খুলে দেওয়া হবে। অন্যথা তোমার জন্য খোলা হবে না।[9]
উল্লিখিত হাদীছ দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, কালেমা পড়ে বসে থাকলে হবে না, আমলও করতে হবে, নচেৎ নাজাতের কোন পথ নেই।
প্রত্যেক আদম সন্তানই ইসলামের উপর তথা তাওহীদের উপর জন্ম লাভ করে। এ মর্মে রাসূল (ছাঃ) এরশাদ করেন, প্রত্যেক নবজাতকই ফিৎরাতের উপর (তাওহীদের উপর) জন্মলাভ করে। অতঃপর পিতা-মাতা তাকে ইহুদী, নাছারা বা মাজুসী (অগ্নিপূজক) রূপে গড়ে তোলে। যেমন চতুষ্পদ পশু একটা পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাকে কোন (জন্মগত) কানকাটা দেখতে পাও? অতঃপর আবু হুরায়রাহ (রাঃ) তিলাওয়াত করলেন ‘তাঁর (আল্লাহর) দেয়া ফিৎরাতের অনুসরণ কর, যে ফিৎরাতের উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, এটাই সরল সুদৃঢ় দ্বীন’।[10]
এ আয়াত ও হাদীছের শিক্ষা হ’ল- (১) প্রথমেই আক্বীদা শুদ্ধ করতে হবে এবং সকল ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই হ’তে হবে। কোন পীর, মাজার, দরগা বা অন্য কারো জন্য নয়। কেননা এসব শিরক এবং এর পরিণাম জাহান্নাম।
(২) কালেমা পড়ার সাথে সাথে আমল করতে হবে। অন্তরে বিশ্বাস করতে হবে, মুখে উচ্চারণ এবং তা কাজে বাস্তবায়ন করতে হবে, নইলে মুসলমান হওয়া যাবে না।
(৩) সকল তাগূতীপথকে পরিত্যাগ করতে হবে। তাগূত হচ্ছে, আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যের ইবাদত করা।
(৪) সকল মানব সন্তান ফিৎরাতের উপর (তাওহীদের উপর) জন্ম গ্রহণ করে। পিতা-মাতা তাকে ইহুদী, নাছারা, অগ্নিপূজক বানায়।
(৫) সম্পূর্ণ হজ্জ অনুষ্ঠানই তাওহীদের বাণী প্রচারের উপযুক্ত সময়।
(৬) তাওহীদের মাধ্যমেই মানব সন্তান ইসলামে প্রবেশ করে এবং তাওহীদের মাধ্যমেই দুনিয়া থেকে পরপারে চলে যায়।
(৭) রাসূল (ছাঃ)-এর অনুসরণেই আমল করতে হবে। অন্যথা তা কবুল হবে না।
সাফল্য লাভের দ্বিতীয় উপায় : শিরক মুক্ত আমল করা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, الَّذِيْنَ آمَنُواْ وَلَمْ يَلْبِسُواْ إِيْمَانَهُمْ بِظُلْمٍ أُوْلَـئِكَ لَهُمُ الأَمْنُ وَهُمْ مُّهْتَدُوْنَ ‘যারা ঈমান এনেছে এবং নিজেদের ঈমান যুলুমের সাথে (শিরকের সাথে) সংমিশ্রিত করেনি, প্রকৃতপক্ষে তারাই শান্তি ও নিরাপত্তার অধিকারী। তারাই হেদায়াত প্রাপ্ত’ (আন‘আম ৮২)।
অনুরূপভাবে আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাযিল হ’ল ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুলুমের দ্বারা কুলষিত করেনি। তখন তা মুসলমানদের পক্ষে কঠিন হয়ে গেল। তারা আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি আছে যে নিজের উপর যুলুম করেনি? তখন নবী করীম (ছাঃ) বললেন, এখানে অর্থ তা নয়; বরং এখানে যুলুমের অর্থ হ’ল শিরক। তোমরা কি কুরআনে শুননি লোক্বমান তাঁর ছেলেকে নছীহত করার সময় কী বলেছিলেন? তিনি বলেছিলেন, ‘হে আমার বৎস! তুমি আল্লাহর সঙ্গে শিরক করো না। নিশ্চয়ই শিরক এক মহাপাপ’।[11]
অতএব আমাদের প্রথম দাওয়াত হ’তে হবে তাওহীদের এবং শিরকী কাজ বর্জনের। এ মর্মে মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি একটি গাধার পিঠে মহানবী (ছাঃ)-এর পেছনে বসেছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, হে মু‘আয! বান্দার ওপর আল্লাহর হক কি এবং আল্লাহর ওপর বান্দার হক কি তা কি তুমি জান? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেন, বান্দার ওপর আল্লাহর হক্ব হ’ল, তারা শুধু তাঁরই ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার করবে না। আর আল্লাহর ওপর বান্দার হক্ব হ’ল, যে ব্যক্তি তাঁর সাথে কোন কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করে না তাকে শাস্তি না দেয়া। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি কি মানুষকে এ বিষয়ে সুসংবাদ দেব না? তিনি বললেন, না, তাহ’লে তারা আমল থেকে বিমুখ হয়ে পড়বে’।[12]
শিরক করলে শিরককারীর সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, وَلَوْ أَشْرَكُواْ لَحَبِطَ عَنْهُم مَّا كَانُواْ يَعْمَلُونَ ‘আর তারা যদি শিরক করতো তবে তারা যা কিছুই করতো, সবই নষ্ট হয়ে যেতো’ (আন‘আম ৮৮)।
আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ ‘যদি তুমি আল্লাহর শরীক স্থির কর তবে নিঃসন্দেহে তোমার কর্ম তো নিষ্ফল হবে এবং অবশ্যই তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (যুমার ৬৫)।
শিরক কারীকে মহান আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। তিনি বলেন, إِنَّ اللهَ لاَ يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً بَعِيْداً ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সাথে অংশীদার স্থাপন করাকে ক্ষমা করেন না এবং এতদ্ব্যতীত তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে থাকেন। আর যে আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন করল সে নিশ্চয়ই চরমভাবে গোমরাহ হয়ে গেল’ (নিসা ১১৬)।
শিরক করলে চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকতে হবে এবং জান্নাত তার জন্য হারাম হয়ে যাবে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِنَّهُ مَن يُشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَيهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ أَنصَارٍ ‘নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে অংশীদার স্থাপন করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিবেন এবং তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম, আর এরূপ অত্যাচারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী হবে না’ (মায়েদাহ ৭২)।
আল্লাহ তা‘আলা ওয়াদা করেছেন সৎ আমলের সাথে শিরক না করলে তাদের প্রতিনিধিত্ব দান করবেন। আর যদি তাদের আমল শিরক দ্বারা শুরু হয় তবে প্রতিনিধিত্ব প্রদান করবেন না। মহান আল্লাহ বলেন,
وَعَدَ اللهُ الَّذِيْنَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِيْنَهُمُ الَّذِيْ ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُمْ مِّنْ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْناً يَعْبُدُونَنِيْ لاَ يُشْرِكُوْنَ بِيْ شَيْئاً وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُوْنَ
‘তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি তাদেরকে পৃথিবীতে খেলাফত (প্রতিনিধিত্ব) দান করবেন। যেমন তিনি (প্রতিনিধিত্ব) দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য সুদৃঢ় করবেন তাদের দ্বীনকে যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন। আর ভয়-ভীতির পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা দান করবেন। তারা শুধু আমার ইবাদত করবে, আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না, অতঃপর যারা অকৃতজ্ঞ হবে তারা তো সত্যত্যাগী’ (ফাসিক্ব) (নূর ৫৫)।
শিরককারীকে আল্লাহ জাহান্নামে দিবেন। যেমন নবী করীম (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা অবস্থায় মারা যাবে, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (রাবী বলেন) আমি বললাম, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে শিরক না করা অবস্থায় মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’।[13]
রাসূল (ছাঃ) আরো বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যকে তাঁর সমকক্ষ হিসাবে আহবান করা অবস্থায় মারা যায়, সে জাহান্নামে যাবে। আর (রাবী বলেন,) আমি বললাম, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে সমকক্ষ হিসাবে আহবান না করা অবস্থায় মারা যায়? (তিনি বললেন) সে জান্নাতে যাবে’।[14]
অন্যত্র তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার না করে তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে ব্যক্তি তাঁর সাথে কোন অংশীদার সাব্যস্ত করে সাক্ষাৎ করবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে’।[15]
পবিত্র কুরআনের উল্লিখিত অমীয় বাণী এবং রাসূল (ছাঃ)-এর হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, শিরক করলে পরকাল হারাতে হবে এবং মর্মান্তিক শাস্তি ভোগ করতে হবে। এখানে শিরক মিশ্রিত কতিপয় আমল উল্লেখ করা হলো-
(১) রুকূ-সিজদা : রুকু-সিজদা আল্লাহর জন্যই করতে হবে। এ রুকূ-সিজদা আল্লাহকে বাদ দিয়ে কোন মাযার, কবর, পীর বাবা বা অন্য কারো জন্য করা হ’লে সেটা হয়ে যাবে শিরক মিশ্রিত আমল। তাই কোন মাযার বা কবরকে সিজদা করা যাবে না। রুকূ-সিজদা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্যই করতে হবে। যেমন মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন, يَا أَيُّهَا الَّذِيْنَ آمَنُوْا ارْكَعُوْا وَاسْجُدُوْا وَاعْبُدُوْا رَبَّكُمْ وَافْعَلُوْا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ ‘হে মুমিনগণ! তোমরা রুকূ কর, সিজদা কর এবং তোমাদের প্রতিপালকের ইবাদত কর ও সৎকর্ম কর যাতে সফলকাম হ’তে পার’ (হজ্জ ৭৭)।
পৃথিবীর সকল জীব-জন্তু মহান আল্লাহকে সিজদা করে। মহান আল্লাহ বলেন,وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ طَوْعاً وَكَرْهاً وَظِلاَلُهُمْ بِالْغُدُوِّ وَالآصَالِ ‘আল্লাহর প্রতি সিজদাবনত হয় আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় এবং তাদের ছায়াগুলিও সকালে ও সন্ধ্যায়’ (রা‘দ ১৫)।
অপর আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَا فِيْ السَّمَاوَاتِ وَمَا فِيْ الأَرْضِ مِنْ دَآبَّةٍ وَالْمَلآئِكَةُ وَهُمْ لاَ يَسْتَكْبِرُوْنَ ‘আল্লাহকেই সিজদা করে যা কিছু আছে আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে জীব-জন্তু এবং ফেরেশতাগণও। আর তারা অহংকার করে না’ (নাহল ৪৯)।
রুকূ-সিজদা শুধু আল্লাহকেই করতে হবে। মহান আল্লাহ বলেন,
وَمِنْ آيَاتِهِ اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ لاَ تَسْجُدُوْا لِلشَّمْسِ وَلاَ لِلْقَمَرِ وَاسْجُدُوْا لِلَّهِ الَّذِيْ خَلَقَهُنَّ إِنْ كُنْتُمْ إِيَّاهُ تَعْبُدُوْنَ
‘তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে রজনী ও দিবস, সূর্য ও চন্দ্র্ তোমরা সূর্যকে সিজদা করো না, চন্দ্রকেও নয়; সিজদা কর আল্লাহকে, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদত কর’ (হা-মীম-সাজদাহ ৩৭)।
নবী করীম (ছাঃ) বলেন, ‘মানুষের জন্য সমীচীন হবে না যে, একজন মানুষ অপর মানুষকে সিজদা করবে’।[16] কোন মুসলমান কখনও আল্লাহকে ব্যতীত অন্য কাউকে সিজদা করতে পারে না। আর অন্য কাউকে সিজদা করাটা শুধু কাফেরের দ্বারাই হয়ে থাকে। যেমন মূর্তিকে সিজদা করা এবং চন্দ্র, সূর্য, অগ্নি ও ক্রুশকে সিজদা করা। যারা এগুলোকে সিজদা করে তারা প্রকাশ্য কুফরী করে।[17]
কবরকে সিজদা করা কুফরী এবং বড় শিরক। তাই নবী করীম (ছাঃ) কবরে সিজদাকারীর জন্য ধ্বংসের দো‘আ করেছেন। আবু হুরায়রাহ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা ইহুদীদের ধ্বংস করুন। কেননা তারা তাদের নবীদের কবরকে মসজিদ বানিয়ে নিয়েছে’।[18]
হাফেয ইবনে আব্দিল বার্র বলেন, ‘নবীদের কবরকে সিজদা করা হারাম। এর অর্থ এই যে, অন্যদের কবরকে সিজদা করা হালাল নয়’।[19] অনুরূপভাবে তিনি কবরকে সিজদা করা বড় শিরক বলেছেন।[20]
যারা মানুষ বা কবরে সিজদা করে তারা আল্লাহর নিকট সবচেয়ে নিকৃষ্টতম জীব। আয়েশা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, উম্মু সালমাহ (রাঃ) আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)-এর নিকট তাঁর হাবশায় দেখা মারিয়া নামক একটা গির্জার কথা উল্লেখ করলেন। তিনি সেখানে যেসব প্রতিমূর্তি দেখেছিলেন, সেগুলোর বর্ণনা দিলেন। তখন আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বললেন, এরা এমন সম্প্রদায় যে, এদের মধ্যে কোন সৎ বান্দা অথবা বলেছেন কোন সৎ লোক মারা গেলে তার কবরের উপর তারা মসজিদ বানিয়ে নিত। আর তাতে ঐসব ব্যক্তির প্রতিকৃতি স্থাপন করত। এরা আল্লাহর নিকট নিকৃষ্টতম জীব’।[21]
নবী করীম (ছাঃ) নিজেই আল্লাহর নিকট দো‘আ করেছেন যেন তাঁর কবরকে ইবাদতখানা বানানো না হয়। তিনি বলেন, হে আল্লাহ! আমার কবরকে (পূজার ন্যায়) ইবাদতখানা বানায়ে নিও না’।[22]
ইমাম আবু হানীফা এবং তাঁর অনুসারীগণ আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যকে (কবরে অথবা মাযারে) সিজদা করাকে বড় শিরক বলেছেন।[23]
ইমাম মালেক এবং তাঁর অনুসারীগণও নবী-রাসূল এবং পীর-মাযার, ক্বূববাকে সিজদা করা বড় শিরক বলেছেন।[24]
অনুরূপভাবে ইমাম শাফেঈ এবং ইমাম আহমাদ ও তাঁদের অনুসারীগণও আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যকে সিজদা করাকে বড় শিরক বলেছেন। ইবনে তায়মিয়াহ (রহঃ) বলেন, রুকূ-সিজদা, তাসবীহ, দো‘আ, ক্বিরাআত (কুরআন পড়া), ক্বিয়াম (রাতের ছালাত বা অন্য ছালাত) এসবই আল্লাহর জন্যই হ’তে হবে। কোন চন্দ্র, সূর্য, নবী-ফেরেশতা বা কোন সৎ মানুষ বা কোন কবরের জন্য নয়।
মোটকথা রুকূ-সিজদা এবং সমস্ত ইবাদত আল্লাহর জন্যই হ’তে হবে। যদি রুকূ-সিজদা কোন কবরে মাযারে বা অন্য কাউকে করা হয়, তাহ’লে বড় শিরক হবে। আর বড় শিরক করলে এবং তওবা না করে মারা গেলে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হয়ে যাবে, যদিও সে ছালাত-ছিয়াম হজ্জ-যাকাত প্রভৃতি ইবাদত পূর্ণভাবে আদায় করে থাকে। সুতরাং যে সকল ভাই-বোনেরা কবরে রুকূ-সিজদা করেন, সেখানে গিয়ে ছালাত আদায় করেন, তারা এখনই তওবা করুন এবং কবর পূজা ছাড়ুন। নইলে পরকালে ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হ’তে হবে।
[চলবে]
হাফেয আব্দুল মতীন
[1]. বুখারী হা/১৪৫৮; মুসলীম হা/১৯।
[2]. বুখারী হা/২৫; মুসলিম হা/২১।
[3]. আহমাদ হা/১৬০৬৬; ছহীহ ইবনে খুযাইমা হা/১৫৯, সনদ ছহীহ।
[4]. ছহীহুল বুখারী হা/১৫৪৯।
[5]. তাফসীর আন-নাসিক বে আহকামিল মানাসিক, পৃঃ ৯০-৯১।
[6]. তিরমিযী হা/৩৫৮৫; মিশকাত হা/২৫৯৮, সনদ হাসান।
[7]. ইবনে হিববান হা/৭১৯ সনদ ছহীহ।
[8]. শরহে আক্বীদাহ আত-ত্বহাবিয়্যাহ ১/১২৫।
[9]. ছহীহুল বুখারী, কিতাবুল জানায়েয, পৃঃ ১৯৮।
[10]. রূম ৩০; ছহীহুল বুখারী হা/১৩৫৯।
[11]. লোক্বমান ১৩; ছহীহুল বুখারী হা/৩৪২৯।
[12]. বুখারী হা/৬২৬৭, ৫৯৬৭, ২৮৫৬; মুসলিম হা/৩০, ১৪৪।
[13]. বুখারী হা/১২৩৮; মুসলিম হা/২৬৮।
[14]. বুখারী হা/৪৪৯৭।
[15]. মুসলিম হা/২৭০।
[16]. আহমাদ ২০/৬৫, হা/১২৬১৪, সনদ জাইয়িদ।
[17]. আশ-শেফা ২/২৯১-২৯২।
[18]. বুখারী হা/৪৩৭।
[19]. আত-তামহীদ ৬/৩৮৩।
[20]. আত-তামহীদ ৫/৪৫।
[21]. বুখারী হা/৪৩৪।
[22]. মুওয়াত্ত্বা মালেক ২/৭২ হা/৪৫২, সনদ ছহীহ মুরসাল, আত-তামহীদ ৫/৪২-৪৩; নাছীরুদ্দীন আলবানী একে ছহীহ বলেছেন। দ্র. তাহযীরুস সাজেদ, পৃঃ ২৫ হা/১১।
[23]. বাহরুর রায়েক ৫/১২৪; রূহুল মা‘আনী ১৭/২১৩; মিরক্বাত ২/২০২; আবু হানীফা, উছূলুদ্দীন পৃঃ ২৬০।
[24]. জুহূদুল মালেকিয়্যাহ, পৃঃ ৪৩৯-৪৪৬।