পর্ব ১শেষ পর্ব। 

ভূমিকা : মধ্যযুগ অবধি রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী কন্সটান্টিনোপলকে বলা হ’ত পৃথিবীর সবচেয়ে সুরক্ষিত নগরী। শত শত বছর ধরে একের পর এক আক্রমণের পরেও এই নগরী টিকে ছিল সগৌরবে। রাসূল (ছাঃ) এই নগরীর ব্যাপারে খুব কৌতুহলী ছিলেন। এই শহর বিজয়ের ব্যাপারে সঙ্গীদের উদ্বুদ্ধও করেছিলেন। মুসলিম বীর সেনানীরা বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছে এ শহর বিজয়ের। শুরুটা হয়েছিল ইয়াযীদের হাত ধরে, মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর শাসনামলে। কিন্তু তার আক্রমণ থেমে গিয়েছিল শহরের প্রাচীরের কাছেই। বহু দিগ্বিজয়ী যোদ্ধা পরাজিত হন কন্সটান্টিনোপলের দুর্ভেদ্য দেয়ালের কাছে। সাতবছর অবরোধ করে রেখেও ব্যর্থ হন কন্সটান্টিনোপলকে কব্যা করতে। উছমানীয় সুলতান বায়েজীদও চেষ্টা করেছিলেন এ শহর দখলের, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনিও। ফলে মানুষ ধরেই নিয়েছিল, কন্সটান্টিনোপল হয়তো একেবারেই অজেয়।

প্রাচীন এই শহরটির আধুনিকায়ন বা জনপ্রিয়তার শুরুটা হয় সম্রাট প্রথম কন্সটান্টাইনের আমলে। অজেয় এই শহরটি ৩৩০ খৃষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়।[1] এমনকি বলা হ’ত যদি পুরো পৃথিবী একটি রাষ্ট্র হয়, আর এর রাজধানী কন্সটান্টিনোপলকে বানানো হয় তাহ’লে সেটাই উপযুক্ত হবে।[2] কন্সটান্টাইন ছিলেন বিভক্ত রোমান সাম্রাজ্যের পূর্বাংশের সম্রাট, যা পরিচিত ছিল বাইজেন্টাইন নামে। ৩১৩ খ্রিস্টাব্দের পর তিনি পুরো সাম্রাজ্য নিজের আওতায় নিয়ে আসেন এবং রাজধানী হিসাবে বেছে নেন কন্সটান্টিনোপলকে।

কন্সটান্টিনোপল এতটা সুরক্ষিত থাকার প্রধান কারণ হচ্ছে শহরটির ভৌগলিক অবস্থান। অনেকটা ত্রিভুজাকৃতির শহরটির উত্তরে রয়েছে গোল্ডেন হর্ন, পূর্বে বসফরাস প্রণালী ও দক্ষিণে মর্মর সাগর। তিনদিক থেকে পানিবদ্ধ থাকায় শহরটি প্রাকৃতিকভাবেই ছিল সুরক্ষিত।

এটি কেবল যে প্রাকৃতিকভাবে সুরক্ষিত ছিল তা নয়, এর চারদিকে ছিল ৪০ ফুট উঁচু ও ৬০ ফুট পুরু দুর্ভেদ্য প্রাচীর। যার ৫০ মিটার অন্তর অন্তর একটি করে ওয়াচ টাওয়ার ছিল, যেখান থেকে সহজেই শত্রু সৈন্যের উপর গোলাবর্ষণ করা যেত। ঢেলে দেওয়া যেত গরম পানি। এছাড়া কন্সটান্টিনোপল রক্ষায় গ্রিক ফায়ার নামে একটি অস্ত্র বিশেষ ভূমিকা রাখত। এ অস্ত্র এতটাই ভয়ংকর ছিল যে এর আগুন পানি দিয়ে নেভানো সম্ভব হ’ত না। আর যেকোন ধরনের নৌ-আক্রমণ ঠেকানোর জন্য বসফরাস থেকে গোল্ডেন হর্নের নৌপথে ছিল এক বিশালাকার চেইন। কোন জাহাজ গোল্ডেন হর্ন অতিক্রম করতে চাইলে চেইন টেনে সহজেই তা আটকে দেওয়া যেত, ফাটিয়ে দেওয়া যেত তার তলদেশ। ফলে শহরের পেছন দিক দিয়ে আক্রমণ করা ছিল একেবারেই অসম্ভব।

তবে পৃথিবীর কোনকিছুই স্থায়ী নয়, ভাঙা-গড়ার মধ্য দিয়েই আজকের পৃথিবী। তাই কন্সটান্টিনোপলেরও একদিন পতন ঘটে। হাযার বছরের অজেয় খেতাবের অবসান হয় ওছমানীয় সুলতান দ্বিতীয় মুহাম্মাদের হাতে। কন্সটান্টিনোপল বিজয়ে মুসলমানরা বহুবার অভিযান পরিচালনা করে। তার মধ্যে বড় অভিযান ছিল চারটি। আরেকটি পরিচালিত হবে ইমাম মাহদীর নেতৃত্বে ক্বিয়ামতের পূর্বে।[3]

রোম বিজয়ের ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ)-এর ভবিষ্যদ্বাণী :

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীকে আমার জন্য সংকুচিত করলেন। ফলে আমি তার পূর্ব ও পশ্চিম উভয় প্রান্ত দেখলাম। আর আমার উম্মতগণ আমার জন্য সংকুচিত পুরো পৃথিবীতে অচিরেই আধিপত্য বিস্তার করবে। আমাকে লাল (স্বর্ণ) ও সাদা (রৌপ্য) দু’টি ধন ভান্ডার প্রদান করা হয়েছে’।[4] অর্থাৎ পারস্য (বর্তমান ইরাক) ও রোমের (বর্তমান ইউরোপ) রাজত্ব দান করা হয়েছে।

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘পারস্য সম্রাট কিসরা যখন ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন আর কোন কিসরা থাকবে না। রোম সম্রাট কায়ছার যখন ধ্বংস হয়ে যাবে তখন আর কোন কায়ছার থাকবে না। যাঁর হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম! অবশ্যই এই দুই সাম্রাজ্যের ধনভান্ডারসমূহ আল্লাহর পথে ব্যয় করা হবে’।[5]

আব্দুল্লাহ ইবনু বিশর বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম! অবশ্যই তোমরা পারস্য ও রোমের উপর বিজয় লাভ করবে। তখন খাবার অনেক বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু তাতে ‘বিসমিল্লাহ’ বলা হবে না’।[6]

আহযাব যুদ্ধের পূর্বে পরিখা খননকালে রাসূল (ছাঃ) পারস্য ও রোম সাম্রাজ্য বিজয়ের সুসংবাদ প্রদান করেন।[7]

নাফে‘ ইবনু উৎবা হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ‘তোমরা আরব উপদ্বীপে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ তোমাদেরকে তার উপর বিজয় দান করবেন। অতঃপর তোমরা পারস্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করবেন। অতঃপর তোমরা রোমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ তোমাদেরকে তাদের উপর বিজয় দান করবেন। অতঃপর তোমরা দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, আল্লাহ তোমাদেরকে তার উপরেও বিজয় দান

করবেন।[8]

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পাথরে আঘাত করার ফলে মদীনা আলোকিত হ’ল এবং তিনি পারস্য ও রোমের প্রাসাদ সমূহ দেখে বললেন, জিবরীল (আঃ) আমাকে সংবাদ দিলেন যে, আমার উম্মতগণ তাদের উপর বিজয়ী হবে। এতে মুসলমানগণ আনন্দিত হ’লেন এবং সুসংবাদ গ্রহণ করলেন’।[9]

কন্সটান্টিনোপল যুদ্ধে অংশগ্রহণের মর্যাদা :

উম্মে হারাম (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,أوَّلُ جَيْشٍ مِنْ أمَّتِيْ يَرْكِبُوْنَ البَحْرَ قد أوْجَبُوْا وأوَّلُ جَيْشٍ مِنْ أمَّتِي يَغزوْنَ مَدِينَةَ قَيْصَرَ مَغْفوْرٌ لَهُمْ-আমার উম্মতের মধ্যে প্রথম যে দলটি নৌ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে তারা যেন জান্নাত অবধারিত করে ফেলল। আমার উম্মতের প্রথম যে দলটি কায়ছার-এর রাজধানী আক্রমণ করবে, তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত’।[10]

অন্য বর্ণনায় এসেছে, উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আমি রাসূল (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, ‘আমার উম্মতের মধ্যে প্রথম যে দলটি নৌ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে, তারা যেন জান্নাত অবধারিত করে ফেলল। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আমি কি তাদের মধ্যে হব? তিনি বললেন, তুমি তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, অতঃপর নবী করীম (ছাঃ) বললেন, আমার উম্মতের প্রথম যে দলটি কায়ছার-এর রাজধানী আক্রমণ করবে, তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! আমি কি তাদের মধ্যে হব? নবী করীম (ছাঃ) বললেন, না’।[11]

আবু ক্বাবিল বলেন, আমি আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি,بَيْنَمَا نَحْنُ حَوْلَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَكْتُبُ إِذْ سُئِلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَىُّ الْمَدِينَتَيْنِ تُفْتَحُ أَوَّلاً قُسْطَنْطِينِيَّةُ أَوْ رُومِيَّةَُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَدِينَةُ هِرَقْلَ تُفْتَحُ أَوَّلاً يَعْنِى قُسْطَنْطِينِيَّةَ- ‘আমরা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর পাশে বসে লিখতাম। (একদা) রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কে প্রশ্ন করা হ’ল, দু’শহরের কোন শহরটি সর্বপ্রথম বিজিত হবে, কন্সটান্টিনোপল, না-কি রোম? তখন নবী করীম (ছাঃ) বললেন, না, বরং হিরাকল (হিরাক্লিয়াস)-এর শহর (কন্সটান্টিনোপল) সর্বপ্রথম বিজিত হবে।[12]

কন্সটান্টিনোপল বিজয়ে মুসলমানদের অভিযানসমূহ

১ম অভিযান :

মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর শাসনামলে কন্সটান্টিনোপল বিজয়ের উদ্দেশ্যে প্রথম অভিযান প্রেরিত হয়। যদিও ইতিপূর্বে ছোট পরিসরে ওছমান (রাঃ)-এর খেলাফতকালে তথা ৩২ হিজরীর শেষে মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর নেতৃত্বে ও ৪৪ হিজরীতে আব্দুর রহমান বিন খালেদ বিন ওয়ালিদের নেতৃত্বে দু’টি অভিযান পরিচালিত হয়।[13] ছাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মু‘আবিয়া (রাঃ) কন্সটান্টিনোপল অভিযানের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশী আগ্রহী ছিলেন। আবূ ছা‘লাবা (রাঃ) বলেন,وَكَانَ مُعَاوِيَةُ أَغْزَى النَّاسَ الْقُسْطَنْطِينِيَّةَ فَقَالَ وَاللهِ لاَ تَعْجِزُ هَذِهِ الأُمَّةُ مِنْ نِصْفِ يَوْمٍ إِذَا رَأَيْتَ الشَّامَ مَائِدَةَ رَجُلٍ وَاحِدٍ وَأَهْلِ بَيْتِهِ فَعِنْدَ ذَلِكَ فَتْحُ الْقُسْطَنْطِينِيَّةِ. ‘মু‘আবিয়া (রাঃ) কন্সটান্টিনোপল যুদ্ধের ব্যাপারে সর্বাধিক অগ্রগামী ছিলেন। তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! এ জাতি অর্ধ দিনেই কন্সটান্টিনোপল বিজয়ে সক্ষম হবে। যখন তোমরা পুরো শাম এক ব্যক্তি ও তার পরিবারের দস্তরখান রূপে দেখবে, তখনই কন্সটান্টিনোপল বিজয় হবে’।[14]

৪৯ হিজরী সনে সংঘটিত এই অভিযানটি সুফিয়ান বিন ‘আউফের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। অভিযানে তিনি এশিয়া মাইনরে প্রবেশ করে আনাতোলিয়ার বহু দুর্গ দখল করে নেন। অতঃপর মর্মর সাগরের তীরে সৈন্য সমাবেশ ঘটান। এদিকে মু‘আবিয়া (রাঃ) সুফিয়ান বিন ‘আউফের সহায়তার জন্য তার ছেলে ইয়াযীদের নেতৃত্বে এক বিশাল বাহিনী প্রেরণ করেন। যাদের মধ্যে ইবনু আববাস, ইবনু ওমর, ইবনু যুবায়ের, আবু আইউব আনছারী প্রমুখ ছাহাবী ও বিখ্যাত তাবেঈগণ ছিলেন। রোমানদের সাথে যুদ্ধ চলতে থাকে। একসময় মুসলিম বাহিনী চরম সংকটে পতিত হয়। একদিকে প্রচন্ড শীত, অন্যদিকে খাদ্য সংকট। একই সাথে সৈন্যদের মাঝে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না থাকায় কেন্দ্র থেকে সাহায্যও পাচ্ছিলেন না। ভয়াবহ এই যুদ্ধে মুসলমানদের বহু সৈন্য বিশেষতঃ আবূ আইউব আনছারীসহ অনেক ছাহাবী শাহাদত বরণ করেন। শহীদদের সেখানেই দাফন করা হয়। বিশুদ্ধ বর্ণনানুযায়ী তারা হিজরী ৫২ সালে বাইজান্টাইনী সৈন্যদের সাথে যুদ্ধ করে শাহাদত বরণ করেন এবং কন্সটান্টিনোপল শহরের সীমানা প্রাচীরের পার্শ্বেই তাদের দাফন করা হয়। কথিত আছে যে, রোমানরা দুর্ভিক্ষে নিপতিত হ’লে তাদের অসীলায় বিশেষ করে ছাহাবী আবূ আইউব (রাঃ)-এর অসীলায় বৃষ্টি প্রার্থনা করত।[15] যেমন আসলাম আবু ইমরান বলেন, আমরা মদীনা হ’তে কস্ত্তনতুনিয়া (ইস্তাস্বুল) অভিমুখে যুদ্ধযাত্রা করলাম। আমাদের সেনাপতি ছিলেন খালিদ বিন ওয়ালীদের পুত্র আব্দুর রহমান। রোমান সেনাবাহিনী ইস্তাম্বুল শহরের দেওয়ালে পিঠ লাগিয়ে যুদ্ধের জন্য দন্ডায়মান ছিল। এমতাবস্থায় এক ব্যক্তি শত্রু সৈন্যের উপর আক্রমণ করে বসল। তখন আমাদের লোকজন বলে উঠল, থাম, থাম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, সে তো নিজেই নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তখন আবু আইউব আনছারী (রাঃ) বলেন, وَلاَ تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ ‘এবং নিজেদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না’ (বাক্বারাহ ২/১৯৫)। এ আয়াত আমাদের আনছার সম্প্রদায় সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছিল। যখন আল্লাহর নবীকে আল্লাহ সাহায্য করলেন এবং ইসলামকে জয়যুক্ত করলেন, তখন আমরা বলেছিলাম, আমরা যুদ্ধে না গিয়ে ঘরে থেকে আমাদের সহায়-সম্পদ দেখাশুনা করব এবং এর সংস্কার সাধন করব। তখন আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন, (অর্থ) ‘তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় কর এবং নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিও না’। আমাদের ঘরে থেকে মালামালের রক্ষণাবেক্ষণ করা ও যুদ্ধে না যাওয়াই হ’ল নিজেকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়া। আবু ইমরান বলেন, এ কারণেই আবূ আইউব আনছারী (রাঃ) আল্লাহর রাস্তায় সর্বদা যুদ্ধে লিপ্ত থাকতেন। শেষ পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হন। কস্ত্তনতুনিয়ায় (কন্সটান্টিনোপলে) তাকে দাফন করা হয়।[16] অতঃপর প্রায় এক বছর কন্সটান্টিনোপল অবরোধ করে রাখে মুসলমানরা। কিন্তু কোন সফলতার মুখ না দেখায় বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে ৫০ হিজরীতে মুসলিম সৈন্যরা ফিরে আসে।[17]

দ্বিতীয় অভিযান :

৫৪ হিজরী সনে জুনাদাহ বিন আবী উমাইয়ার নেতৃত্বে কন্সটান্টিনোপলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় অভিযান পরিচালিত হয়। এই অভিযান ৭ বছর স্থায়ী হয়। পথিমধ্যে মুসলমানরা ইযমীর[18] ও লিকিয়া অধিকার করে। এরপর মুসলিম সৈন্যরা সিরিয়ার আরওয়াদ উপদ্বীপ অতিক্রম করে কন্সটান্টিনোপলকে স্থলভাগ ও জলভাগ উভয় দিক থেকে অবরোধ করে। এই অবরোধ চলে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ইতিমধ্যে শীত চলে আসে। মুসলমানরা শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে ফিরে আসে আরওয়াদ উপদ্বীপের ‘কাযীকূস’ ((كزيكوس শহরে। শীতকাল চলে গেলে মুসলমানরা আবার শহরটি অবরোধ করে। এভাবে সাত বছরে ধরে শীত ও গ্রীষ্মের পালাবদলে শহরটিকে অবরোধ করে রাখে তারা। কিন্তু এতে তারা তেমন কোন সফলতা পায়নি। বরং ক্ষতিই বৃদ্ধি পেতে থাকে। কারণ দেয়ালে ৫০ মিটার অন্তর অন্তর একটি করে ওয়াচ টাওয়ার ছিল, যেখান থেকে সহজেই মুসলিম সেনাদের উপর গোলাবর্ষণ করা যেত। সাথে সাথে তারা মুসলমানদের উপর বিষাক্ত গরম পানি ঢেলে দেয়, যাতে সৈন্যরা দূরে সরে যেতে বাধ্য হয়। শহরটি রক্ষায় তারা ‘গ্রীক ফায়ার’ নামে একটি অস্ত্র ব্যবহার করে। এ অস্ত্রটি এতই ভয়ংকর ছিল যে, তাতে পানি দিলেও তা নিভতো না। বরং আগুনের শিখা আরো ভয়ংকরভাবে ছড়িয়ে পড়ত। নুড়ি পাথর ও ধুলাবালিতে গড়াগড়ি করে তা নেভাতে হ’ত।

এছাড়াও যেকোন ধরনের নৌ-আক্রমণ ঠেকানোর জন্য বসফরাস থেকে গোল্ডেন হর্নের পানিপথে ছিল এক বিশালাকার চেইন। ফলে মুসলিম নৌবাহিনী জাহায নিয়ে গোল্ডেন হর্ন অতিক্রম করতে গেলে তারা জাহাযের তলা ফাটিয়ে দিত। এভাবে বহু সৈন্য ডুবে মারা যায়। এই যুদ্ধে মুসলমানরা ত্রিশ সহস্রাধিক সৈন্য হারায় এবং তাদের নৌবহরের বড় অংশ পানিতে ডুবে যায়। এই ভয়াবহতার কথা জানতে পেরে মু‘আবিয়া (রাঃ) বাধ্য হয়ে রাজা চতুর্থ কন্সটান্টাইনের সাথে ত্রিশ মতান্তরে চল্লিশ বছরের জন্য শান্তি চুক্তি করেন।[19] তবে এই চুক্তিতে এও ছিল যে মুসলমানরা সেখানে মসজিদ নির্মাণ করে ছালাত আদায় করতে পারবে।[20] তবে কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে, মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে ইয়াযীদ বিন মু‘আবিয়া খেলাফতে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর বাইজানন্টাইন থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেন।[21]

তৃতীয় অভিযান :

উমাইয়া খলীফা ওয়ালীদ বিন আব্দুল মালেকের শাসনামলে কন্সটান্টিনোপল বিজয়ের উদ্দেশ্যে তৃতীয় অভিযান পরিচালিত হয়। ৮৭-৮৮ হিজরীতে টাইনা দুর্গ মুসলমানদের দখলে আসে, যা বসফরাস প্রণালী ও শামের মধ্যে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল।[22] এতে ৫০ হাযার রোমান সৈন্য নিহত হয়। এরপর ৮৯ হিজরীতে সূরিয়া, ক্বামুদিয়া, আম্মুরিয়া ও হেরাক্লিয়া দুর্গ মুসলমানদের দখলে আসে।[23] (যদিও তা পরে রোমানদের দখলে চলে যায় এবং আববাসীয় খলীফা মু‘তাছিম বিল্লাহর আমলে ২২২ হিজরীতে আবার মুসলমানদের দখলে চলে আসে)। এছাড়াও এসময়ে হিশাম বিন আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে বুলাক্ব, আখরাম, বুলাস ও কুয়াইক্বেম দুর্গ ও ফুরসান লেক মুসলমানদের দখলে আসে।[24] এই বিজয়গুলো মুসলমানদেরকে বাইজান্টাইন রাজধানী কন্সটান্টিনোপল বিজয়ের প্রেরণা দেয়।

ফলে ৯৪ হিজরী থেকে পুনরায় অভিযানের প্রস্ত্ততি শুরু হয়। প্রস্ত্ততির কথা জানতে পেরে বাইজান্টাইন সম্রাট সুদৃঢ় প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলেন। অতঃপর মাসলামা বিন আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে ৯৭ হিজরী সনে এই অভিযান শুরু হয়। এরই মধ্যে ওয়ালীদ বিন আব্দুল মালেক মারা গেলে পরবর্তী খলীফা সুলায়মান বিন আব্দুল মালেকও উক্ত অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। আঠার হাযার সেনাসম্বলিত নৌবহরসহ এক লক্ষ বিশ হাযার সৈন্যের বিরাট এক বাহিনী এতে অংশগ্রহণ করে। কন্সটানিটনোপল শহরের সন্নিকটে অবস্থান গ্রহণ করে সেনাপতি মাসলামা বলেন,وَابْنُوا لَكُمْ بُيُوتًا مِنْ خَشَبٍ، فَإِنَّا لَا نَرْجِعُ عَنْ هَذِهِ الْبَلَدِ حَتَّى نَفْتَحَهَا إِنْ شَاءَ اللهُ، ‘তোমরা এখানেই কাঠ দিয়ে তোমাদের গৃহ নির্মাণ কর, কেননা আমরা বিজয় অর্জন না করে এই শহর থেকে ফিরে যাব না ইনশাআল্লাহ।[25]

অভিযান দু’বছর স্থায়ী হয়। কিন্তু এই অভিযানও দ্বিতীয় অভিযানটির মত রোমান সৈন্যদের কৌশলের কাছে পর্যুদস্ত হয়। এই অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পিছনে রোমানদের একই পদ্ধতি তথা অগ্নিগোলক ও গরম পানি নিক্ষেপ এবং জাহায নষ্ট করে দেওয়ার কৌশল সফল হয়। এর সাথে যোগ হয় সেনাপতি ইলয়ূন আয়সূরী আরমেনীর বিশ্বাসঘাতকতা। সে প্রথমে মাসলামা বিন আব্দুল মালেকের সাথে চুক্তি করে যে, তাকে ক্ষমতাসীন করা হ’লে কন্সটান্টিনোপল মুসলমানদের হাতে ছেড়ে দিবে। কিন্তু সে তৃতীয় থিওডিসিয়াসকে (Theodosius) পদচ্যুৎ করতে সক্ষম হ’লে মাসলামার সাথে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করে এবং কন্সটান্টিনোপল রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। ফলে মুসলমানরা অভিযান পরিচালনা করে সফলতা অর্জনে ব্যর্থ হয়।

কোন কোন ঐতিহাসিক মনে করেন, সম্রাট মারা গেলে রোমান সেনাপতি ইলউন আয়সূরী আযারবাইজান থেকে ফিরে আসে এবং মুসলিম সেনাপতির সাথে আত্মসমর্পণের শর্তে চুক্তি করে এবং পরে তা ভঙ্গ করে। সে সেনাপতি মাসলামাকে বলে, আপনি এক রাতের জন্য শহরে খাদ্য সরবরাহ করুন যাতে জনগণ বুঝতে পারে যে, আপনি ও আমি একই মতাদর্শের। সেনাপতি মাসলামা তাকে বিশ্বাস করে খাদ্য বোঝাই জাহায পাঠিয়ে দেন। কিন্তু সকাল হ’তে না হ’তেই তারা রাতের অন্ধকারে মুসলমানদের উপর উপর্যপুরি হামলা করতে থাকে। এতে মুসলমানরা চরম সংকটে পড়ে যায়। মুসলিম সৈন্যরা এমন খাদ্য সংকটে পড়ে যে, তাদেরকে মাটি ব্যতীত সকল বস্ত্ত খেয়ে জীবন বাঁচাতে হয়।

হাফেয ইবনু কাছীর-এর বিবরণ অনুযায়ী সেনাপতি মাসলামা সকল সৈন্যকে দু’মুদ করে খাদ্য সাথে নিয়ে আসতে বলেছিলেন। সকলে দু’মুদ করে খাদ্য নিয়ে এসেছিল। তিনি সকলকে সেই খাদ্য একত্রিত করতে বললেন। সেগুলো একত্রিত করা হ’লে পাহাড়সম হয়ে গেল। তিনি সেগুলো থেকে খেতে নিষেধ করলেন। বরং সে এলাকার খাদ্য খেতে বললেন। তিনি আরো নির্দেশ দিলেন যে, সৈন্যরা কৃষি জমিগুলো আবাদ করবে যাতে পরবর্তীতে খাদ্যের যোগান দেওয়া যায়। কিন্তু রোমান সেনাপতি ইলউন আয়সূরী মাসলামাকে এসে বলল যে, কন্সটান্টিনোপলের জনগণ আত্মসমর্পণ করতে রাযী আছে। তবে তারা আপনার খাদ্যগুদাম দেখে আতঙ্কিত। কারণ এত খাদ্য থাকলে অবরোধ বিলম্বিত হ’তে পারে। সেজন্য আপনি যদি এই খাদ্যগুদাম পুড়িয়ে দেন তাহ’লে তারা আপনাকে বিশ্বাস করবে। তিনি তাকে বিশ্বাস করে খাদ্যগুদাম পুড়িয়ে দেন। পরক্ষণেই রোমান সেনাপতি বিশ্বাসঘাতকতা করে।[26]

এরই মধ্যে খলীফা ওয়ালীদ মারা যান এবং খেলাফতের দায়িত্বে আসেন ইসলামের পঞ্চম খলীফা নামে খ্যাত ওমর বিন আব্দুল আযীয (রহঃ)। সৈন্যদের দুরাবস্থা দেখে খলীফার নিকট পত্র লেখা হয়। পত্র পেয়েই ওমর বিন আব্দুল আযীয মুসলিম বাহিনীর জন্য ঘোড়া, রসদ ও খাদ্যসামগ্রী প্রেরণ করলেন। সাথে সাথে জনসাধারণকে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার নির্দেশ দিলেন। অন্যদিকে সেনাবাহিনীকেও ফিরে আসার নির্দেশ প্রদান করেন।

এই যুদ্ধে মুসলমানদের বাহনের প্রাণীগুলো খাদ্য সংকটে মারা যায়, রোমানাদের আগুনের গোলার আঘাতে কিছু জাহায পুড়ে যায়। আবার কিছু সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। বহু সৈন্য প্রচন্ড ঠান্ডায় মৃত্যুবরণ করে। এভাবে ভয়াবহ পরিস্থিতির পরিসমাপ্তি ঘটে। এই অভিযানে এক লক্ষ বিশ হাযার নৌবাহিনী ও এক লক্ষ বিশ হাযার স্থল বাহিনী অংশগ্রহণ করে বলে একদল ঐতিহাসিক উল্লেখ করেছেন।[27] তবে সেনাপতি মাসলামা বিন আব্দুল মালেক সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার পূর্বে অত্যন্ত মযবূত ভিত্তি দিয়ে গগনচুম্বি মসজিদ নির্মাণ করেন। যাতে পরবর্তীতে মুসলমানরা অনুপ্রেরণা পায়।[28] [চলবে]

মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম

নিয়ামতপুর, নওগাঁ।

[1]. সাঈদ আশূর, উরুববা ফিল উছূরিল উস্তা ২৯ পৃ.

[2]. ড. মুহাম্মাদ মুছতফা, ফাতহুল কুস্তানতীনিইয়াহ ওয়া সীরাতুস সুলতান মুহাম্মাদ আল-ফাতেহ ৩৬-৪২ পৃ.; ড. আলী মুহাম্মাদ আছ-ছাল্লাবী, আদ-দাওলাতুল ওছমানিয়া ৮৮ পৃ.

[3]. বুখারী হা/৩১৭৬, ইবনু মাজাহ হা/৪০৪২; মিশকাত হা/৫৪২০

[4]. মুসলিম হা/২৮৮৯; মিশকাত হা/৫৭৫০

[5]. বুখারী হা/৩০২৭, ৩১২০; মুসলিম হা/২৯১৮; মিশকাত হা/৫৪১৮

[6]. বায়হাক্বী, শু‘আবুল ঈমান হা/৫৮৪৭; ছহীহাহ হা/৩৯৩

[7]. নাসাঈ হা/৩১৭৬; আবূদাঊদ হা/৪৩০২; ছহীহুল জামে‘ হা/৩৩৮৪; ছহীহাহ হা/৭৭২; মিশকাত হা/৫৪৩০

[8]. মুসলিম হা/২৯০০; ছহীহাহ হা/৩২৪৬; মিশকাত হা/৫৪১৯

[9]. ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী (বৈরূত : দারুল মা‘রিফা ১৩৭৯ হিঃ) ৭/৩৯১; বায়হাক্বী, দালায়েলুন নবুঅত হা/১৩০৬, ৩/৪৯৮; ইবরাহীম আলী, ছহীহুস সীরাহ, পৃ. ৩৫৪

[10]. তাবারাণী আওসাত্ব হা/৬৮১২; ছহীহাহ হা/২৬৮; ছহীহুল জামে‘ হা/২৫৬২

[11]. বুখারী হা/২৯২৪; ছহীহাহ হা/২৬৮

[12]. আহমাদ হা/৬৬৪৫; ছহীহাহ হা/৪; মাজমাউয যাওয়ায়েদ হা/১০৩৮৫

[13]. মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ ইনান, মাওয়াকেফু হাসেমা ফী তারীখিল ইসলাম, ৩৫ পৃ.

[14]. আহমাদ হা/১৭৭৬৯, সনদ ছহীহ

[15]. আল-বিদায়াহ ৮/৫৯

[16]. আবূদাউদ হা/২৫১২; ছহীহাহ হা/২১৫১; আছারুছ ছহীহাহ হা/১১৩

[17]. আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৮/৩২; ইবনু জারীর আত-তাবারী, তারীখে তাবারী ৫/২৩২; ইবনুল আছীর, আল-কামিল ফিত-তারীখ ৩/৫৬-৫৭; তারীখু খালীফা বিন খাইয়াত্ব ২১১ পৃ.

[18]. তুরস্কের আনাতোলিয়ার পশ্চিম সীমান্তের একটি মহানগর। ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারার পরে এটি তুরস্কের তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল শহর এবং গ্রিসের এথেন্সের পরে এজিয়ান সাগরের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহানগর।

[19]. আল-বিদায়াহ ৮/৭৮, ৮২, ৯৪, ১১৫; আল-কামেল ফিত-তারীখ ৩/৯১-১১৯; ড. সাইয়েদ আব্দুল আযীয সালেম ও ড. আহমাদ মুখতার আল-আবাদী, তারীখুল বাহরিয়াতিল ইসলামিয়াহ ২১-২৫ পৃ., মাওয়াকেফু হাসেমাহ ফী তারীখিল ইসলাম ৩৪-৩৮ পৃ.

[20]. ইবনুল কাছীর, আন-নিহায়াতু ফিল ফিতান ওয়াল মালাহিম, তাহক্বীক্ব, ড. ত্ব্হা যায়নী ১/৬২

[21]. আল-কামিল ফিত-তারীখ ৩/৯১

[22]. বসফরাস প্রণালী এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যবর্তী অঞ্চলের একটি অংশের সীমানা নির্দেশ করে। এটিকে ইস্তাম্বুল প্রণালীও বলা হয়। বসফরাস, মারমারা উপসাগর এবং দক্ষিণ পশ্চিমের দার্দানেলাস প্রণালী মিলে তুর্কি প্রণালী গঠিত। বসফরাস প্রণালী বিশ্বের নৌ চলাচলে ব্যবহৃত সবচেয়ে সরু পথ

[23]. আল-কামিল ফীত-তারীখ ৪/১৩-১৭; নাদিয়া মুছতফা, আদ-দাওলাতুল উমাবিয়া দাওলাতুল ফুতূহাত ৩০-৩১ পৃ.; আব্দুল আযীম রামাযান, আছ-ছুরা‘ বায়নাল আরাব ওয়া উরুববা ১১৩ পৃ.

[24]. আল-বিদায়াহ ৯/৭১

[25]. ঐ ৯/১৭৪

[26]. ঐ ৯/১৭৪-৭৫; আল-কামিল ফিত-তারীখ ৪/৮৬

[27]. আল-বিদায়াহ ৯/৭৬, ১৬৯-১৭০,১৭৫; তারীখে তাবারী ৬/৫৩০-৩১;আল-কামেল ফীত-তারীখ ৪/৮৬-৮৭; মাওয়াকেফু হাসেমা ফী তারীখিল ইসলাম ৪২-৪৩ পৃ.

[28]. আল-বিদায়াহ ৯/১৭৪






আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসে শিথিলতা : আমাদের করণীয় - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
পুনরুত্থান - রফীক আহমাদ - বিরামপুর, দিনাজপুর
ইসলামের দৃষ্টিতে সফলতার স্বরূপ - মুহাম্মাদ ওয়ারেছ মিয়াঁ
পিতা-মাতার উপর সন্তানের অধিকার (শেষ কিস্তি) - ড. মুহাম্মাদ শফীকুল আলম
আদালত পাড়ার সেই দিনগুলো (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - শামসুল আলম
ঈদে মীলাদুন্নবী : প্রাসঙ্গিক কিছু কথা - মুহাম্মাদ আব্দুল ওয়াদূদ
শারঈ মানদন্ডে ঈদে মীলাদুন্নবী - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
শরী‘আতের আলোকে জামা‘আতবদ্ধ প্রচেষ্টা (শেষ কিস্তি) - মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক
কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে তাক্বলীদ (২য় কিস্তি) - মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম মাদানী
ফৎওয়া : গুরুত্ব, প্রয়োজনীয়তা ও বিকাশ - ড. শিহাবুদ্দীন আহমাদ, শিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, রাজশাহী
কুরআন শিক্ষা ও তেলাওয়াতের ফযীলত - ইহসান ইলাহী যহীর
ঈদে মীলাদুন্নবী - আত-তাহরীক ডেস্ক
আরও
আরও
.