২০১১ সালে তথাকথিত আরব বসন্তের পর থেকেই যুদ্ধবিধ্বস্ত আরব দেশগুলির নির্যাতিত জনগণের নির্মম মৃত্যুর নতুন ঠিকানা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভূমধ্যসাগর। ‘লাশের সাগর’-এ পরিণত হওয়া এ সাগরটিতে প্রতিদিন যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তা বিশ্বের আর কোন সাগরে হয়তো হয়নি। মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, এ বছরেই কমপক্ষে ২ হাযার অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে মারা গেছেন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ২৭৯ জন। তাদের অধিকাংশই আফ্রিকা ও এশিয়ার যুদ্ধবিধ্বস্ত বিভিন্ন দেশের অধিবাসী। গৃহযুদ্ধসহ নানা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে হাযার হাযার মানুষ ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলি সহ বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হওয়ার চেষ্টা করছে। এদেরই একটা বড় অংশ নৌকাডুবিতে করুণ মৃত্যুর শিকার হচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে চরম মানবিক বিপর্যয়।

মানবাধিকারের ধ্বজাধারী পশ্চিমা বিশ্ব নতুন নতুন দেশে তেল দখল, ভূমি দখল, শাসক বদল আর গণতন্ত্র রফতনির জন্য যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে লাখো মানুষের মৃত্যু ঘটিয়ে চলেছে। একইভাবে যুদ্ধের ফলস্বরূপ সৃষ্ট হাযার হাযার শরণার্থীকে স্থান না দিয়ে তাদের এ মৃত্যু দৃশ্য দেখেও তারা মুখে কুলুপ এটেই ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরের সৈকতে পড়ে থাকা তিন’বছর বয়সের শিশু আইলানের ছবি দুনিয়াজুড়ে মানুষের হৃদয়ে আঘাত হেনেছে। সিরিয়ায় যুদ্ধের কবল থেকে নিজেদের বাঁচাতে আইলানের পরিবার কানাডা যাবার জন্য পাড়ি দিতে চেয়েছিল ভূমধ্যসাগর। কিন্তু পিতার হাত ফসকে সমুদ্রের স্রোতে ভেসে যায় আইলান। পরে তার নিথর দেহ ভেসে ওঠে তুরস্কের এক সমুদ্র সৈকতে। এই ছবি সারা বিশে^ সংবাদ মাধ্যমসহ আপামর জনসাধারণের হৃদয়ে ঝড় তোলে। মধ্যপ্রাচ্যে নানামুখী স্বার্থের দ্বন্দ্বে যে রক্ত ঝরছে তার প্রতীক হয়ে উঠে এই শিশু। অবশেষে যুদ্ধের নেপথ্য নায়কেরা লৌকিকতার খাতিরে সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

শুধু আইলানের পরিবার নয়, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশগুলির এরূপ লাখ লাখ পরিবার এখন ভূমধ্যসাগরের স্রোতের সাথে ভেসে আশ্রয় পেতে চায় ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলিতে। তুরস্ক ইতিমধ্যে প্রায় ২০ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। জর্দান, মিসর, লেবানন প্রভৃতি দেশ সমূহ আরো প্রায় ২০ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। এই যখন অবস্থা তখন লিবিয়া, সিরিয়া ও ইরাক যুদ্ধের কারিগর ইউরোপ আর আমেরিকা ও রাশিয়া নিশ্চুপ। ভূমধ্যসাগরে শত শত মানুষের মৃত্যুদৃশ্য যেন তারা উপভোগ করছে। আইলানের এই নিথর দেহ তাদের ঘুমকে ভাঙানোর চেষ্টা করছে।

মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে মানুষের ধর্মীয় পরিচয় সামনে এনেছে ইউরোপের কোন কোন দেশের সরকারপ্রধান। শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে তারা শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে অস্বীকার করছে। যেমন হাঙ্গেরীর প্রধানমন্ত্রী বলছেন, মুসলমানদের আশ্রয় দিলে ইউরোপের খ্রিষ্টীয় সংস্কৃতি হুমকির মুখে পড়বে। অথচ সিরিয়া, ইরাক ও লিবিয়ার যুদ্ধ আরব দেশগুলোর গোষ্ঠীগত সঙ্ঘাতের কারণে শুরু হয়নি। এর পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলো সরাসরি সম্পৃক্ত রয়েছে। তাই অভিবাসন প্রার্থীদের দায় এসব দেশকে অবশ্যই নিতে হবে।







অস্ত্র নির্মাতাদেরকে বাঁচিয়ে রাখতেই পেন্টাগনের প্রধানরা যুদ্ধ করেন : ট্রাম্প
১০ বছরে ১ লাখ কোটি টাকা সূদ
সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণের মূর্তিটি মূর্তি নয়, ভাস্কর্য - -এ্যাটর্নি জেনারেল
মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ
‘লিভিং ঈগল’ সাইফুল আজমের বিদায়
করোনায় বাংলাদেশসহ ৫৭ দেশের ৬৫ শতাংশ মানুষ বেকার : গ্যালাপ
ভিনগ্রহবাসীর জন্য জাদুঘর!
এভারেস্ট থেকে বেরিয়ে আসছে একের পর এক মৃতদেহ
একই ঈদগাহ ময়দানে ৮১ বছর যাবৎ ইমামতি, বিদায়ের সময় পেলেন বিরল সম্মাননা
বিশ্বজুড়ে মার খাচ্ছে গণতন্ত্র
পর্যবেক্ষণ সমূহের সার-সংক্ষেপ
সুনামগঞ্জে চিকসা গ্রামে সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে গান-বাজনা নিষিদ্ধ ঘোষণা
আরও
আরও
.