পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ইস্রাঈল যবরদস্তি করে ফিলিস্তীনীদের হত্যা করে তাদের ভূমি দখল করেছে, অথচ জাতিসংঘ তামাশা দেখছে। মিয়ানমার যবরদস্তি করে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা করে বিতাড়িত করেছে, কিন্তু জাতিসংঘ সেখানে কার্যকর কোন ভূমিকা রাখেনি। এখন ভারত যদি একই কাজ কাশ্মীরে করতে চায়, তবে পরিণতি হবে ভয়াবহ। গত ২৮শে সেপ্টেম্বর শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে ইংরেজী ভাষায় প্রদত্ত পঞ্চাশ মিনিটের দীর্ঘ ভাষণে মূলতঃ তিনি গ্লোবাল ওয়ার্মিং তথা বৈশ্বিক উষ্ণতা, মানি লন্ডারিং তথা অর্থ পাচার, ইসলামোফোবিয়া তথা ইসলাম ভীতি এবং কাশ্মীর- এই চারটি বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এমনকি তিনি মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা নির্যাতন ও বিতাড়ন বিষয়টিও তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন। তবে তাঁর ভাষণের প্রায় পুরোটাই ছিল কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে। যদিও চীনের উইঘুর মুসলমানদের উপর নির্যাতন বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি। 

ইসলামোফোবিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ইসলামী জঙ্গীবাদ বলতে কোন শব্দ নেই। ইসলাম একটাই, ১৪০০ বছর পূর্বে মুহাম্মাদ (ছাঃ) যা শিখিয়ে গেছেন। পশ্চিমারা সন্ত্রাসের সাথে ইসলামকে যুক্ত করে ইসলামকে অপমান করছে। আমাদের মুসলমানদের দায়িত্ব সঠিক ইসলামের বাণী প্রচার করা। যাতে পশ্চিমারা আমাদের ইসলাম ও নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ) সম্পর্কে মিথ্যা প্রচারণা চালাতে না পারে।

জাতিসংঘকে উদ্দেশ্য করে ইমরান খান বলেন, গত ৭০ বছরে এক লাখ কাশ্মীরী প্রাণ দিয়েছে স্বাধীনতার জন্য। যে স্বাধীনতা তাদের দেয়ার ওয়াদা করেছিল জাতিসংঘ। খোদ জাতিসংঘের দু’টি রিপোর্ট রয়েছে কাশ্মীরীদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে। কিন্তু তারপরেও গোটা দুনিয়া চুপ রয়েছে। অতএব এখনই সময় পদক্ষেপ নেয়ার। আর প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে কাশ্মীরে ৫৫ দিন ধরে ভারত যে অমানবিক কারফিউ জারী করে রেখেছে, তা বাতিল করতে হবে। তিনি বলেন, আমি এখানে এসেছি আপনাদের সতর্ক করতে। জাতিসংঘের জন্য এটা একটা পরীক্ষা।

তিনি বলেন, কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে দু’টি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র মুখোমুখি অবস্থানে আছে। যে কোন কিছু ঘটে যেতে পারে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তারা কি ১২০ কোটি মানুষের অর্থশালী ভারতের পাশে দাঁড়াবে, না মানবতার পক্ষে দাঁড়াবে।

তিনি আরও বলেন, একটি রাষ্ট্র তার থেকে ৭ গুণ ছোট একটা রাষ্ট্রকে এই অবস্থায় নিয়ে যায় যে, হয়তো আত্মসমর্পণ কর, না হয় মৃত্যু পর্যন্ত যুদ্ধ কর। তখন আপনারা কি করবেন? আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ ছাড়া আমাদের কোন মা‘বূদ নেই। আমরা আমৃত্যু লড়বো। আর যখন কোনও পারমাণবিক শক্তিধর দেশ শেষ অবধি লড়াই চালিয়ে যায় তখন তার পরিণাম মানচিত্রের সীমানা ছাড়িয়ে যায়। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের লড়াইয়ের প্রভাব তখন পুরো দুনিয়ার ওপর পড়বে। সমগ্র বিশ্বকে এর ফল ভোগ করতে হবে।






আরও
আরও
.