মদীনা শরীফের মসজিদে নববীর সম্মানিত ইমাম ও সুমধুর কণ্ঠস্বরের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ ক্বারী মুহাম্মাদ আইয়ূব (৬৪) গত ১৬ই এপ্রিল শনিবার বাদ ফজর মৃত্যুবরণ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজি‘ঊন। একইদিন বাদ যোহর মসজিদে নববীতে জানাযা শেষে তাকে বাক্বী‘ গোরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। শায়খ আইয়ূব ১৯৫২ সালে মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নিপীড়িত মুসলিম জাতি মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বংশোদ্ভূত ও বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সঊদী আরবের নাগরিকত্ব পান। মক্কায় প্রাথমিক শিক্ষা শেষে তিনি মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। শিক্ষা জীবন শেষে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। তিনি বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেন তার অতুলনীয় কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াতের জন্য। ১৯৯০ থেকে ৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি মসজিদে নববীতে ইমামতি করেন। পরবর্তীতে তিনি সঊদী আরব, কুয়েত ও আরব আমিরাতের গুরুত্বপূর্ণ মসজিদ সমূহে ইমামতি করেন। মসজিদে নববীতে ইমামতি ছাড়াও তিনি বেশ কিছু রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কিং ফাহাদ কুরআন কমপ্লেক্স পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০১৫ সালের রামাযান মাসে তিনি পুনরায় মসজিদে নববীর ইমাম পদে বরিত হন। অতঃপর তারাবীহর ছালাত পড়ানোর সময় তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাঁর স্মৃতিশক্তি লোপ পায়। পরে তিনি দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অতিসম্প্রতি তিনি মৃত্যুর পূর্বে একবারের জন্য মসজিদে নববীতে ইমামতি করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ফলে গত ১৫ই এপ্রিল শুক্রবার দিবাগত রাতে মসজিদে নববীতে এশার ছালাত আদায় করান। পরদিন শনিবার বাদ ফজর তিনি ইন্তেকাল করেন।
মৃত্যুকালে তিনি ২ স্ত্রী, ৫ পুত্র ও ২ কন্যা রেখে যান। তাঁর সকল সন্তানই কুরআনের হাফেয। জ্যেষ্ঠ পুত্র খালিদ একটি হিফযুল কুরআন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং দ্বিতীয় পুত্র যুবায়ের মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। এছাড়া পুত্র সা‘দ প্রকৌশল বিভাগে, মুছ‘আব মদীনার ত্বাইয়েবা বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে এবং ইউসুফ ছানাবিয়াতে অধ্যয়নরত।
[মিয়ানমার ও
বাংলাদেশের তথা উপমহাদেশের এই মহারত্নকে হারিয়ে আমরা যারপর নেই ব্যথিত,
মর্মাহত ও শোকাহত। আমরা তাঁর জন্য আল্লাহ্র নিকটে জান্নাতুল ফেরদৌস
প্রার্থনা করছি এবং তাঁর রেখে যাওয়া স্ত্রী ও সন্তানদের প্রতি গভীর সমবেদনা
জ্ঞাপন করছি।- (স.স.)]