বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন হত্যা, ধর্ষণ, দুর্নীতি, রাহাজানিতে সামাজিক জীবন দূর্বিষহ, জেলখানাগুলো যখন বন্দী ও কয়েদীতে উপচে পড়ছে, ঠিক তখন তার বিপরীত চিত্র ইউরোপের সবচেয়ে উদার ধর্মীয় সংস্কৃতির দেশ নেদারল্যান্ডের। ২০১৩ সালে কয়েদির অভাবে ১৯টি জেলখানা বন্ধ করে দেয় নেদারল্যান্ড সরকার এবং এর ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে আরো ৫টি জেলখানা বন্ধ করতে হয়েছে সরকারকে। ফলে বেকার হয়ে পড়েছে প্রায় ২ হাযার কারাকর্মী। যাদের মাত্র ৭০০ জনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্যান্য জায়গায় চাকরি দেয়া সম্ভব হয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে নেদারল্যান্ডে অপরাধীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পেয়ে আসছে। জেলখানা পূর্ণ করতে দেশটি সম্প্রতি নরওয়ে থেকে ২৪০ জন কয়েদীকে আমদানি করেছে।
কিন্তু এমন সাফল্যের পেছনে কী সেই কারণ, যা নেদারল্যান্ডের অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখছে? এ বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে নেদারল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী আর ভেন ডার সেটুর পার্লামেন্টকে জানান, কয়েদীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার পেছনে কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হ’ল মাদক আইন শিথিল করা। বর্তমানে মাদকসেবীদের শাস্তি দেয়ার বদলে তাদের পুনর্বাসনে জোর দেয়া হয়েছে। অপর একটি কারণ হচ্ছে এঙ্কেল মনিটরিং ব্যবস্থা। কয়েদীদের জেলে বসিয়ে অযথা খরচ না করে তাদের পায়ে ট্রাকার লাগিয়ে সমাজে বিভিন্ন ইতিবাচক খাতে কাজে লাগানো হচ্ছে। তাতে করে সে নিজের উপার্জন নিজে করার পাশাপাশি নিজের ভুল থেকেও শিক্ষা নিতে পারছে। আরেকটি বিষয় হ’ল, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোন অপরাধী সাজা খেটে বের হ’লে তাকে সুস্থধারায় ফেরানোর জন্য উপযুক্ত কাজের ব্যবস্থা করা, যা কিনা খোদ যুক্তরাষ্ট্রেও নেই। ফলে মার্কিন জনগণের প্রতি ১ লক্ষে অপরাধীর সংখ্যা ৭১৬ জন, যেখানে নেদারল্যান্ডসের প্রতি লাখে অপরাধীর সংখ্যা মাত্র ৬৯ জন!
[বাংলাদেশ এখান থেকে শিক্ষা নিতে পারে। প্রয়োজন কেবল সদিচ্ছার (স.স.)]