সাড়ে ছয় দশকের বৈরিতার অবসান ঘটিয়ে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ঐতিহাসিক ঐক্যমতে পৌঁছেছে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন ঘোষণা দিয়েছেন, কোরীয় উপদ্বীপে আর কখনও যুদ্ধ হবে না এবং কোরীয় উপদ্বীপকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করতে একসঙ্গে কাজ করবেন তারা।
দুই দেশের সীমান্তবর্তী গ্রাম পানমুনজমে গত ২৭শে এপ্রিল শুক্রবার এক ঐতিহাসিক বৈঠকের পর কিম ও মুনের এই যৌথ ঘোষণা আসে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে ইনের সঙ্গে হাসিমুখে করমর্দন করেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। পরে দুই নেতা বৈঠকে বসেন পানমুনজমের পিস হাউজে।
দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতা, সম্পর্কের টানাপোড়েন আর উত্তেজনার অচলায়তন পেরিয়ে উত্তরের নেতা দুই দেশের মিলিটারী লাইনে পৌঁছলে দক্ষিণের নেতা মুন তাকে স্বাগত জানান। কিমের অভাবনীয় এক তাৎক্ষণিক আমন্ত্রণে মুনও সীমারেখা টপকে উত্তরের মাটিতে পা রাখেন। ১৯৫৩ সালে কোরিয়া যুদ্ধের অবসানের পর এই প্রথম উত্তর কোরিয়ার কোন শীর্ষ নেতার দক্ষিণে পদার্পণ।
দুই কোরিয়ার মধ্যকার এই পুনর্মিলন আয়োজনের পিছনে উত্তর কোরীয় নেতার বোন ইউ জং-এর ভূমিকা থাকলেও মূল ভূমিকা পালন করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান স হুন। তার দীর্ঘ ১৮ বছরের প্রচেষ্টার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। তাই দুই নেতা যখন যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করছিলেন, তখন পিছনে দাঁড়িয়ে চোখের পানি মুছতে দেখা যায় তাকে। গত মার্চ মাসে তিনি ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে পিয়ংইয়ং সফর করেন। ঐ বৈঠকের পর থেকে কিম জং উনের মানসিকতায় ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয় এবং কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি পতাকা স্থায়ীভাবে উড্ডীন করতে রাযী হয়ে যান।