সাগরের পানিতে অক্সিজেন
শূন্যতার কারণে পানিতে যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, সেটি ‘লাল জোয়ার’ নামে
পরিচিত। ক্রমাগত তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে এবং দীর্ঘদিন বৃষ্টিপাত না হ’লে
সাগর ও নদীতে এক ধরনের ক্ষতিকর উদ্ভিজ্জ অনুজীব বিস্তার করে। এই অনুজীবগুলি
পানির কলামে মিশে থাকা অক্সিজেন উপরের দিকে তুলে আনে। যার কারণে পানির
নীচের দিকে অক্সিজেন শূন্যতার তৈরী হয় এবং পানিতে বিষাক্ততা ছড়িয়ে পড়ে। তখন
বিষয়টি জলজ প্রাণীর জন্য মারাত্মক হয়ে দাঁড়ায়। যাকে ‘লাল জোয়ার’ বলা হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাগরগুলিতে মাঝে-মধ্যেই এমন লাল জোয়ার-এর ঘটনা ঘটে।
এ লাল জোয়ারই সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে ঘন ঘন তিমি মৃত্যুর অন্যতম কারণ হ’তে পারে মনে করা হয়। নদীর মিঠা পানি যখন সমুদ্রের লোনা পানির সাথে মিশে, তখন সেটি সমুদ্রের পানির কলামে হরিজন্টালি বা আনুভমিকভাবে স্তর পুনর্বিন্যাস (স্ট্রেটিফিকেশন) না করে ভার্টিক্যালী বা উল্লম্বভাবে বিন্যস্ত হ’লেই সাগরের পানিতে অক্সিজেন শূন্যতা তৈরি হয়। যেটি ‘লাল জোয়ার’ নামে পরিচিত।
সাগর থেকে মাঝে-মধ্যেই এমন গেঁজাপূর্ণ দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানি ও আবর্জনা ভেসে আসে। কিন্তু গত প্রায় এক মাস ধরে যে ঘটনা দেখা যাচ্ছে, তা আগে কখনও দেখা যায়নি। গত প্রায় ২/৩ মাস ধরেই কক্সবাজারের সাগরের পানি ঘোলাটে রয়েছে। যে কারণে মাছও ধরা পড়ছে খুব কম। এছাড়া গত এপ্রিল মাসের শেষ দিকে কক্সবাজারের চিংড়ী পোনা উৎপাদনকারী হ্যাচারিগুলির প্রায় দেড়’শ কোটি পোনা মারা যাওয়ার ঘটনায় সাগরের এ বিষাক্ত পানিই কারণ বলে মনে করছেন হ্যাচারি মালিকেরা। কক্সবাজারের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, গত ৬ মাসে কক্সবাজারে কেবল একবারই সামান্য বৃষ্টিপাত হয়েছে। যে কারণে গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই তাপমাত্রা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রির উপরে ওঠানামা করছে।
[সরকারের নদী রক্ষা কমিশনের উচিৎ, গুরুত্বের সাথে বিষয়টি বিবেচনা করা। কারণ এর মধ্যে মানুষ ও প্রাণীজগতের জীবন-মৃত্যুর সম্পর্ক রয়েছে (স.স.)]।