১. ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ খুলনা যেলার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মুয্যাম্মিল হক (৫৮) গত ২১শে মার্চ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯-টায় খুলনা সিটি হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন। ১৭ই মার্চ রবিবার সকাল ৮-টায় যশোর যেলার কেশবপুর উপযেলার দোরমুটিয়া গ্রামে নিজ বাড়ীর ছাদে দঁাড়িয়ে ডাব পাড়ার সময় সেটি ছিটকে এসে নিজের মাথায় সজোরে আঘাত করলে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন ও দ্রুত খুলনা সিটি হাসপাতালে নীত হন এবং সেখানেই ৫দিন পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও ১ পালকপুত্রসহ বহু সাংগঠনিক সাথী ও আত্মীয়-স্বজন রেখে যান। পরদিন সকাল সাড়ে ৮-টায় খুলনা পল্লীমঙ্গল হাইস্কুল ময়দানে তার ১ম জানাযার ছালাতে ইমামতি করেন খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ শো‘আয়েব হোসাইন। অতঃপর বাদ জুম‘আ যশোরে তার নিজ গ্রামে ২য় জানাযার ছালাতে ইমামতি করেন খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম। জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানাযায় ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক গোলাম মুক্তাদির, খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ আযীযুর রহমান সহ যেলা ‘আন্দোলন’ ‘যুবসংঘ’ ও ‘সোনামণি’র নেতা-কর্মী ও বিপুল সংখ্যক ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।

২. ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ অখন্ড রাজশাহী যেলার সুযোগ্য সভাপতি (২০১১-২০১৫) ও পরে রাজশাহী-পূর্ব সাংগঠনিক যেলার সাবেক সভাপতি ২০১৫-২০২১) ও প্রাক্তন থানা শিক্ষা অফিসার ডা. মুহাম্মাদ ইদ্রীস আলী (৯৮) গত ৬ই এপ্রিল ২৭শে রামাযান শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ৭-টায় বানেশ্বরের নিজ বাড়ীতে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন। মৃত্যুকালে তিনি ১ পুত্র, ২ কন্যা ও নাতি-নাতনিসহ বহু আত্মীয়-স্বজন ও সাংগঠনিক সাথী রেখে যান। পরদিন সকাল ১০-টায় বানেশ্বর সরকারী ডিগ্রী কলেজ ময়দানে তার জানাযার ছালাত অনুষ্ঠিত হয়। জানাযায় ইমামতি করেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব। জানাযা শেষে তাকে বানেশ্বর বাজারের পার্শ্ববর্তী সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। উল্লেখ্য যে, ২০ বছর পূর্বে ২০০৩ সালের ১৭ই রামাযান বৃহস্পতিবার মাইয়েতের স্ত্রীর জানাযায়ও মুহতারাম আমীরে জামা‘আত ইমামতি করেছিলেন। 

জানাযায় ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল লতীফ, প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা দুররুল হুদা, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ ছাকিব, ‘আন্দোলন’-এর কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল হালীম, ‘যুবসংঘে’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ শরীফুল ইসলাম, হাদীছ ফাউন্ডেশন গবেষণা বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আহমাদ আব্দুল্লাহ নাজীব, রাজশাহী-সদর যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা দুররুল হুদা, রাজশাহী-পূর্ব যেলার প্রধান উপদেষ্টা মাস্টার সিরাজুল ইসলাম, সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, মারকাযের হিফয বিভাগের সহকারী পরিচালক হাফেয আহমাদ আব্দুল্লাহ শাকির সহ যেলা ‘আন্দোলন’ ‘যুবসংঘ’ ও ‘সোনামণি’র দায়িত্বশীলবৃন্দ এবং বিপুল সংখ্যক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।

[মাইয়েতের স্মৃতিচারণ করে মুহতারাম আমীরে জামা‘আত বলেন, তিনি ছিলেন, অত্যন্ত সময়ানুবর্তী, সারাদেশের যেলা সভাপতিদের মধ্যে ১ম স্থান অধিকারী হিসাবে পুরস্কারপ্রাপ্ত সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি মিটিং শুরুর আগেই সর্বদা মারকাযে পৌঁছে যেতেন। তার ভাষা জ্ঞান ছিল অত্যন্ত প্রখর। তিনি ছিলেন আমাদের লেখনীর সুক্ষ্মদর্শী পাঠক। যেখানেই তিনি যেতেন মাসিক আত-তাহরীক এবং ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন কি ও কেন?’ বই সব সময় তার ব্যাগে থাকত। তিনি ‘কি ও কেন?’ বইটি সর্বত্র বিতরণ করতেন। তঁার সেই রীতির অনুসরণে আমরা তঁার মৃত্যুর পর রামাযানের মধ্যেই উক্ত বই খরীদ করে ছাদাক্বায়ে জারিয়াহ হিসাবে তঁার নামে বিতরণ করেছি।]

৩. ‘অল ইন্ডিয়া জমঈয়তে আহলেহাদীছ’-এর মুর্শিদাবাদ যেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মাদ মেছবাহুদ্দীন (৮৯) গত ৬ই এপ্রিল ২৬শে রামাযান শনিবার সকাল পৌনে ৮-টায় বার্ধক্যজনিত কারণে লালগোলায় নিজ বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন। ইন্না লিল্লা-হি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজে‘ঊন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ পুত্র ও ৩ কন্যাসহ বহু আত্মীয়-স্বজন ও সাংগঠনিক সাথী রেখে যান। তার জানাযায় ইমামতি করেন ‘জমঈয়তে আহলেহাদীছ ইন্ডিয়া’ পশ্চিম বাংলার সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ সালাফী। জানাযা শেষে তাকে সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা। জানাযায় যেলা ‘জমঈয়তে আহলেহাদীছ’-এর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কুতুবুদ্দীনসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলবৃন্দ এবং বিপুল সংখ্যক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য যে, মাওলানা মেছবাহুদ্দীন ডিসেম্বর’১৭ পর্যন্ত ‘মাসিক আত-তাহরীক’-এর নিয়মিত এজেন্ট ছিলেন। যার সর্বোচ্চ সংখ্যা ছিল ৮৩৫ কপি। এছাড়া তার এক কন্যা ঢাকায় বিবাহিত হওয়ার কারণে প্রায়ই ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসতেন এবং নওদাপাড়া মারকাযে অবস্থান করতেন।

[মুহতারাম আমীরে জামা‘আত স্মৃতিচারণ করে বলেন, তাঁর পিতা মাওলানা মোততাযুদ্দীন লিখিত ‘আনুগত্যহীন সংগঠন’ বইটি আহলেহাদীছ ‘যুবসংঘে’র সিলেবাসভুক্ত ছিল। তাঁর পিতার অন্যান্য বইও যুবসংঘের অফিস থেকে বিক্রয় হ’ত। তার মাধ্যমেই মাসিক আত-তাহরীক ও ‘হাদীছ ফাউন্ডেশন’ প্রকাশিত বই-পত্র প্রথম পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে পরিবেশিত হয়। ১৯৮৮-৮৯ সালে ভারত-পাকিস্তান ও নেপালে ৫২ দিনের স্টাডি ট্যুরের এক পর্যায়ে আমি লালগোলায় যাই এবং তাদের বাড়ীতে অবস্থান করি। এসময় তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে আমার সাথে সফর করেন। এতদ্ব্যতীত লালগোলা মাদ্রাসার শিক্ষক ইসহাক মাদানীও আমাকে তার ভ্যাসপায় করে নিকটবর্তী স্থান সমূহে সফর করেন]

[আমরা মরহূমদের জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি ও তাদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি। সেই সাথে তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি-সম্পাদক।]







আরও
আরও
.