ট্রান্সজেন্ডারবাদ : এক জঘন্য মতবাদ

ভূমিকা : সাম্প্রতিক সময়ে সাইক্লোনের চেয়ে প্রবল বেগে নামে-বেনামে অসংখ্য ফিৎনা ধেয়ে আসছে মুসলিম জাহানের দিক-দিগন্তে। এ রকম একটি জঘন্য ফিৎনা হচ্ছে ট্রান্সজেন্ডারবাদ। সমকালীন বিশ্বে অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে আসন গাড়ছে সমকামিতা বৈধকরণের পশ্চিমা নয়া সংযোজন অদ্ভূত এ মতবাদ। ব্যক্তিস্বাধীনতার মোড়কে সভ্যতার কফিনে এটি যেন শেষ পেরেক। ইদানীং খোদ বাংলাদেশেই ট্রান্স সুরক্ষা আইন পাশ করানোর জোর গুঞ্জন তোলা হচ্ছে। আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা ট্রান্সজেন্ডারবাদ কি এবং সমাজ শৃঙ্খলায় এর ভয়াবহ প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

ট্রান্সজেন্ডারবাদ কি ও কেন?

ইউরোপীয় রেনেসঁা পরবর্তী চড়াই উৎরাই শেষে সভ্যতা আজ এমন অবস্থায় দঁাড়িয়েছে যে, পশ্চিমারা আমাদেরকে দু’মুঠো অখাদ্য-কুখাদ্য যাই দিচ্ছে, উন্নত সংস্কৃতি ভেবে আমরা তা দেদারসে গলাধঃকরণ করছি। ফলে দু’টি মৌলিক পতনমুখী পশ্চিমা সভ্যতাকে সমাজ ব্যবস্থার ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করেছি। এক. সংখ্যাগরিষ্ঠের মতকে ভাল-মন্দের মাপকাঠি হিসাবে গ্রহণ করা। দুই. ব্যক্তি স্বাধীনতা। যদিও ক্ষেত্রবিশেষে নীতি দু’টি পরস্পর বিরোধী। তবুও স্বাধীনতা মানব জনমের পরম আরাধ্য বিষয়। তবে এ ‘স্বাধীনতা’র সাথে বিভিন্ন শব্দ জুড়ে দিয়ে যেমন (বাকস্বাধীনতা, পোষাকের স্বাধীনতা, নারী স্বাধীনতা ইত্যাদি) একটা গোষ্ঠী সুকৌশলে স্বীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে উদগ্রীব। ১৯৮০-এর দশকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া LGBTQ আন্দোলন মূলতঃ চারটি শব্দের আদ্যাক্ষর Lesbian (সমকামী নারী), Gay (সমকামী পুরুষ), Bisexual (উভয়কামী), Transgender (রুপান্তরিত লিঙ্গ), Queer (বিচিত্র লিঙ্গ আকর্ষণ)-এর সমন্বয়ে গঠিত। উল্লেখ্য, এই ট্রান্সজেন্ডার পরিভাষাটি এলজিবিটিকিউ তথা সমকামী আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আরও পূর্বে ১৯৬৫ সালে প্রথম ব্যবহৃত হয়।[1]

অনেকে একে জেন্ডার আইডেন্টিটি বলে থাকেন। এই মতবাদ অনুযায়ী একজন মানুষ পুরুষ নাকি নারী হবে সেটির সাথে তার দেহের কোন সম্পর্ক নেই। দেহ মানুষের পরিচয় নির্ধারণ করে না। পরিচয় নির্ভর করে মানুষের মনের উপর। একজন মানুষ নিজেকে যা মনে করে সেটাই তার পরিচয়। এর সাথে লিঙ্গের কোন সম্পর্ক নাই। অর্থাৎ তাদের মতে Biological Sex এবং Gender identity সম্পূর্ণ ভিন্ন।

জেন্ডার আসলে বর্ণের মতো। এখানে রয়েছে অসংখ্য রং। লিঙ্গ নয় বরং মনের উপর ভিত্তি করে ব্যক্তি নিজেকে নারী অথবা পুরুষ অথবা দু’টোই অথচ কোনটিই নয় অথবা নারী পুরুষের মাঝামাঝি কোন কিছু পরিচয় দিতে পারে। সবই সমান, সবই বৈধ।[2] অর্থাৎ এই মতবাদের মূল বক্তব্য হচ্ছে, মানুষ লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না। কোন পুরুষ যদি নিজেকে নারী বলে মনে করে তাহ’লে সে একজন নারী। সমাজিক আইনে সে নারী বলে স্বীকৃতি পাবে যদিও তিন বাচ্চার বাপ হোক। আমেরিকাতে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। ডেমি মাইনর নামে খুনের দায়ে দন্ড পাওয়া এক পুরুষ নিজেকে মেয়ে বলে দাবী করার কারণে আমেরিকার আদালত তাকে নারীদের জেলে পাঠায়। ডেমি মাইনর নারীদের জেলে দুইজন নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্কের ফলশ্রুতিতে তারা গর্ভবতী হয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে আবার পুরুষদের জেলে স্থানান্তরিত করা হয়।[3]

অনুরূপভাবে এই মতবাদ অনুযায়ী কোন নারী যদি নিজেকে পুরুষ বলে মনে করে, তাহ’লে সে একজন পুরুষ হিসাবে গণ্য হবে। যদিও তার ঋতু হয়, সে ১০০ ভাগ সুস্থও হয় এবং তার এই মনে হওয়ার ভিত্তিতে সে বিভিন্ন হরমোন ট্রিটমেন্ট আর অপারেশনের মাধ্যমে বদলে ফেলতে পারবে তার শরীরকে।

লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, এখানে তার এমন মনে হওয়ার জন্য তার মানসিক চিকিৎসা করা হবে না; বরং তার শরীরকে বদলে দিতে হবে। আর এই পরিবর্তনের স্বীকৃতি দিতে হবে সমাজ ও রাষ্ট্রকে। হিজড়াদের মতো তারাও সহানুভূতি পাবে সমাজের চোখে। এই লিঙ্গ পরিবর্তনে আইনি জটিলতা ও উত্তরাধিকারী সহ যাবতীয় সুরক্ষা প্রদানে আইন পাশ করানো, এটাই এক নযরে ‘ট্রান্সজেন্ডারবাদ’।[4]

হোচি মিন ইসলাম নামে একজন বাংলাদেশী ট্রান্সজেন্ডার অ্যাক্টিভিস্ট কিছুদিন আগে এক সাক্ষাৎকারে বলে, ‘আমার পুরুষাঙ্গ আছে কিন্তু আমি একজন নারী। আমার বুকে পশম আছে, মুখে দাড়ি ওঠে কিন্তু আমি একজন নারী। শুধু যোনী আর স্তন দিয়ে আপনি একজন নারীকে বিচার করতে পারেন না। আমি পুরুষের শরীরে জন্মেও আসলে পুরুষ নই’।[5]

সুতরাং সহজ ভাষায় বলা যায়, ‘ট্রান্স’ অর্থ পরিবর্তন বা রূপান্তর ‘জেন্ডার’ মানে লিঙ্গ। সুতরাং ‘ট্রান্সজেন্ডার’ মানে লিঙ্গ রূপান্তর। নিজের পুরুষ আইডেন্টিটি পরিবর্তন করে নারী আইডেন্টিটি গ্রহণ করা। অথবা নারী আইডেন্টিটি পরিবর্তন করে পুরুষ আইডেন্টিটি গ্রহণ করার নাম ‘ট্রান্সজেন্ডার’।

হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার শব্দগত অস্পষ্টতা : হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার শব্দগত পার্থক্য না বুঝার কারণে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি পরিলক্ষিত হয়। যেমন ২০১৮ সালে পাকিস্তান সংসদে ট্রান্সজেন্ডার বিল পাশ হয় এবং পরবর্তীতে ১৭ই মে ২০২৩ তারিখে আইনটি বাতিল ঘোষণা করা হয়। মূলতঃ আমরা যে কারণে হিজড়াদের অধিকার আদায়ে কথা বলব, ঠিক একই কারণে ট্রান্সদের বিপক্ষে থাকব।

অনেকে হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গ বলে থাকেন, এটা ভুল। আল্লাহ তা‘আলা লিঙ্গকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন, পুরুষ ও নারী। শুধু মানুষ নয় সমস্ত প্রাণীর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। আল্লাহ বলেন, وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنْثَى، ‘শপথ, যা তিনি সৃষ্টি করেছেন নর ও মাদী’ (লায়ল ৯২/৩)। সুতরাং হিজড়া মানে তৃতীয় লিঙ্গ নয় বরং হিজড়া মানে লিঙ্গ প্রতিবন্ধী। মানুষের অন্যান্য অন্ত্রের ক্ষেত্রে যেমন প্রতিবন্ধী হয়, তেমনি লিঙ্গের ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধী হয়। তাই হিজড়ারাও আল্লাহর সৃষ্টির সেরা জীবের অন্তর্ভুক্ত। তাদের ভিন্ন চোখে দেখার সুযোগ নেই। আল্লাহ বলেন,وَلَقَدْ كَرَّمْنَا بَنِي آدَمَ وَحَمَلْنَاهُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَرَزَقْنَاهُمْ مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَفَضَّلْنَاهُمْ عَلَى كَثِيرٍ مِمَّنْ خَلَقْنَا تَفْضِيلًا، ‘আমরা আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি এবং তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দিয়েছি। আর আমরা তাদেরকে পবিত্র রূযী দান করেছি এবং আমরা তাদেরকে আমাদের অনেক সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি’ (বনু ইস্রাঈল ১৭/৭০)

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে একবার কোন গোত্রের নবজাতকের মীরাছ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়, যার নারী-পুরুষ চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছিল না। উত্তরে রাসূল (ছাঃ) বলেন, তার প্রস্রাবের রাস্তাকে কেন্দ্র করে তার মীরাছ প্রাপ্তির বিষয়টি নির্ণিত হবে’।[6] নারী-পুরুষ স্পষ্ট নয় এমন নবজাতকের মীরাছের ব্যাপারে আলী (রাঃ)ও একই উত্তর দিয়েছিলেন।[7] সুতরাং হিজড়ারা সুবিধাবঞ্চিত হিসাবে আমাদের সহানুভূতি এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবে।

পক্ষান্তরে ট্রান্সজেন্ডার জন্মগত কোন বিষয় না। এটা সৃষ্টির বিকৃতি বা রুচিজনিত সমস্যা। এদের পিছনে রয়েছে একটি চক্র। যারা বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে এদেশে LGBTQ মুভমেন্ট বাস্তবায়ন করতে চায়। ইদানীং সমতন্ত্রের ব্যানারে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এদের তৎপরতা দৃশ্যমান।

জনশুমারী ও গৃহ গণনা ২০২২-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে মোট হিজড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৮১২৪ জন। তবে ইলেক্ট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় যে চক্রটি হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডারকে এক সাথে মিলিয়ে প্রচার করছে, তারা মূলতঃ ট্রান্সজেন্ডারদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্বাভাবিক করতেই এটি করছে। এর মাধ্যমে কওমে লূতের আদর্শ বাস্তবায়নে ওরা ধাপে ধাপে এগুতে চায়।

সুতরাং একথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, ট্রান্সজেন্ডাররা কোন সুবিধা বঞ্চিত বা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নয়। হিজড়াদের সাথে এদেরকে মিলিয়ে ফেলা প্রকারান্তরে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে অবমাননা করার শামিল।

শকুনের অশুভ থাবা :

LGBTQ হচ্ছে বিশ^ব্যাপী সমকামিতাকে বৈধ (?) করার একটি আপডেট মতবাদ। তাদের ওয়েবসাইটের তথ্য মতে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে ১৮টি দেশে সমকামিতাকে রাষ্ট্রীয় ভাবে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ একজন পুরুষ পুরুষকে এবং একজন নারী অন্য নারীকে বিয়ে করারকে আইনসিদ্ধ করা হয়েছে। তাছাড়া বিশ্বের ১৬০টি দেশে ১৭০০ সংস্থা এই ঘৃণ্য মতবাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস সহ বিশে^র বিভিন্ন দেশের ধনকুবেররা এর পিছনের কোটি কোটি টাকা খরচ করছে।

আমরা হয় ভাবতে পারি এটি বহির্বিশ্বের কোন সমস্যা। কিন্তু বাস্তবতা হ’ল শকুনের অশুভ থাবা। যা ইতিমধ্যে বহুদূর বিস্তৃত হয়েছে। বাংলাদেশে সামাজিকভাবে ট্রান্স মতবাদ স্বাভাবিকরণ এবং আইনত সুরক্ষা আদায়ে এরা ইতিমধ্যে সম্ভাব্য প্রায় সকল প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

প্রথমতঃ ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিভিন্ন কনটেন্টে, চোখ দিয়ে পানি আসার মতো গল্প তৈরী করে হিজড়া ও ট্রান্স তালগোল পাকিয়ে মানুষের সহানুভূতি আদায় করছে। যেখানে দেখানো হচ্ছে ট্রান্সরা অবহেলিত এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। অতঃপর মেইনস্ট্রিম মিডিয়া ব্যবহার করে সমাজের চোখে তাদেরকে সাহসী চরিত্র এবং হিরো হিসাবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে মিডিয়ার কিছু সংবাদ শিরোনামে চোখ বোলালেই বিষয়টা বুঝা যায়। যেমন- ‘রূপান্তরিত এক নারীর বদলে যাওয়ার গল্প’।[8] ‘ট্রান্সজেন্ডার সংবাদ পাঠক তাসনুভার বদলে যাওয়ার গল্প’।[9] ‘ট্রান্সজেন্ডার নারী ক্রীড়াবিদ অলিম্পিকে ইতিহাস গড়ার অণ্বেষায়’[10] ‘১০০ বছরের ইতিহাসে ঢাবিতে ১ম ভর্তি হ’ল ট্রান্সজেন্ডার শিক্ষার্থী’[11], ‘টিএসসি’তে পালিত হ’ল ‘ট্রান্সজেন্ডার স্মরণ দিবস’।[12]

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাউল হলে সজীব নামে একজন বড় ভাই ছিলেন। মেয়েদের মতো চাল-চলনের জন্য ছেলেরা প্রায়শ তার সাথে দুষ্টুমি করত। কিছুদিন আগে মিডিয়া কভারেজে দেখতে পেলাম, ‘সজীব থেকে সঞ্জীবনী; সঞ্জীবনী সুম্বা, খুলে দিতে চান সমাজের রুদ্ধ দুয়ার’।[13]

ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ বাস্তবায়নের ২য় ধাপে বর্তমানে বিভিন্ন গোল টেবিলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি ট্রান্সদের অধিকার সুরক্ষার আওয়াজ তোলা হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক NCTB সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুশীলনী বইয়ের ৫১-৫৬ পৃষ্ঠায় ‘শরীফার গল্প’ শিরোনামে বিকৃত যৌনতা এবং ট্রান্সজেন্ডারবাদের দীক্ষা দেওয়া হয়েছে। এই দুই ধাপের পাশাপাশি আইনি প্রক্রিয়াও এগিয়েছে সমানতালে।

আমরা জানি, কোন প্রস্তাবনা আইনে পরিণত হ’তে হ’লে মোট ৪টি ধাপ অতিক্রম করতে হয়।- ১. আইনের খসড়া তৈরী ২. খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ৩. মন্ত্রণালয় কর্তৃক আইন চূড়ান্তকরণ ৪. সংসদে উত্থাপন এবং পাশ হওয়া।

বাংলাদেশ বর্তমানে ‘ট্রান্সজেন্ডার সুরক্ষা আইন’-এর তৃতীয় ধাপে অবস্থান করছে। গত ৫ই ডিসেম্বর ২০২৩ দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় ‘সম্পত্তিতে অধিকার পাবেন ট্রান্সজেন্ডার সন্তানরা’ এই শিরোনামে প্রকাশিত রির্পোটে ‘ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০২৩’ শীর্ষক আইনটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই পাশ করা হবে বলে জানান সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব খায়রুল আলম শেখ।

উল্লেখ্য, গত ২১শে সেপ্টেম্বর’২৩ ‘ট্রান্সজেন্ডার অধিকার সুরক্ষা আইন ২০২৩’-এর খসড়া উপস্থাপন করা হয়।[14] এর অর্থ হ’ল আগামী নতুন জাতীয় সংসদে এ জঘন্য আইনটি পাশ হওয়া কেবল সময়সাপেক্ষ। যদিও স্পষ্টতঃ বোঝা যাচ্ছে দেশী-বিদেশী একটি চক্র সরকারকে ভুল বুঝিয়ে আইন পাশ করাতে চাচ্ছে।[15] যার প্রমাণ পাওয়া যায়, বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র সফরে। যেখানে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সমকামিতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেছেন।

ট্রান্সজেন্ডার আইনের অনিবার্য পরিণতি :

যে সমাজ যৌনতার ক্ষেত্রে যত বেশী সহনশীল সে সমাজ তত বেশী সুস্থ ও স্থিতিশীল, এ ধরনের অজ্ঞতাপ্রসূত ধ্যান-ধারণাকে কেন্দ্র করেই ট্রান্সজেন্ডারবাদ এগিয়ে চলছে। মূলতঃ এর উদ্দেশ্য হচ্ছে বিদেশীদের খঁুদ-কুড়ো পাওয়ার হীন মতলবে তাদের পশুসুলভ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। এ মতবাদ দেশ ও সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেবে এবং নানা সমস্যা সৃষ্টি করবে। ট্রান্সজেন্ডারবাদ মেনে নিলে যে সমস্যাগুলি উন্মোচিত হবে।-

১. এটি মেনে নেওয়ার অর্থ হ’ল আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সীমারেখার চূড়ান্ত লঙ্ঘন। এর মাধ্যমে সৃষ্টির পরিবর্তন, সমলিঙ্গের মধ্যে যৌনতা এবং বিকৃত যৌনাচারের দ্বার উন্মোচিত হবে।

২. এর ফলে নারী-পুরুষের মাঝে ব্যবধান মুছে যাবে। এর মাধ্যমে মুছে যেতে পারে পিতা-মাতা, পুত্র-কন্যা সহ পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কগুলি।

৩. ট্রান্সজেন্ডারবাদের মাধ্যমে বিভিন্ন আইনি ও উত্তরাধিকারী সমস্যা সৃষ্টি হবে। ট্রান্সজেন্ডার আইনের মাধ্যমে পিতার উত্তরাধিকার বণ্টন, বয়েজ স্কুল, গার্লস স্কুল, কমনরুম, বাথরুম ব্যবহার সহ বহুক্ষেত্রে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হবে। কেউ নিশ্চয়ই কখনো চাইবে না যে, তার মেয়ে একটা পুরুষ থেকে মহিলা হওয়া ট্রান্সের সাথে বাথরুম বা কমনরুম ব্যবহার করুক অথবা উভয়ে একই সাথে উইমেন কলেজে পড়াশুনা করুক।

শারঈ দৃষ্টিকোণে ট্রান্সজেন্ডারবাদ :

মানুষ তার সৃষ্টিকর্তার প্রতি একত্ব এবং নৈতিকতার ব্যাপারে কতিপয় সহজাত প্রবৃত্তি নিয়ে জন্মায়। এই সহজাত অনুভূতিকে হাদীছের ভাষায় বলা হয় ফিতরাত। আর এই সহজাত প্রবৃত্তির বা ফিতরাতের সাথে বাস্তবতার সামঞ্জস্য মূলতঃ ইসলামী শরী‘আতের সৌন্দর্য। এর ঠিক বিপরীতে অবস্থান করা সেক্যুলার সমাজব্যবস্থা পদে পদে মানুষের এই ফিতরাতকে নষ্ট করে দিয়ে নফস ও পশুত্বকে উস্কে দেয়। তারা বদলে দেওয়ার চেষ্টা করে নারী-পুরুষের স্বাভাবিক পরিচয় ও ভূমিকাকে। ফলশ্রুতিতে এক যুগে যেটা অসুস্থতা অন্য যুগে সেটা আবশ্যিকতা। আল্লাহ বলেন,أَرَأَيْتَ مَنِ اتَّخَذَ إِلَهَهُ هَوَاهُ ‘তুমি কি তাকে দেখেছ, যে তার প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছে? তুমি কি তার যিম্মাদার হবে?’ (ফুরক্বান ২৫/৪৩)। তিনি আরো বলেন, وَخَلَقْنَاكُمْ أَزْوَاجًا ‘আর আমরা তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি জোড়ায় জোড়ায়’ (নাবা ৭৮/৮)। আল্লাহ মানুষকে দুইভাবে সৃষ্টি করেছেন। নারী ও পুরুষ। এর বাইরে ট্রান্সজেন্ডার বা সমলিঙ্গের ধারণা বলতে কিছুই নেই। তিনি বলেন, وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنْثَى ‘শপথ, যা তিনি সৃষ্টি করেছেন নর ও মাদী’ (লায়ল ৯২/৩)। তিনি আরো বলেন, ‘তিনি যাকে চান কন্যা সন্তান দান করেন ও যাকে চান পুত্র সন্তান দান করেন। অথবা যাকে চান পুত্র ও কন্যা যমজ সন্তান দান করেন’ (শূরা ৪২/৪৯-৫০)

তাছাড়া রাসূল (ছাঃ) নারীদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী পুরুষ এবং পুরুষদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী নারীদেরকে অভিশাপ দিয়েছেন’।[16] আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন,لَعَنَ النَّبِىُّ صلى الله عليه وسلم الْوَاصِلَةَ وَالْمُسْتَوْصِلَةَ، وَالْوَاشِمَةَ وَالْمُسْتَوْشِمَةَ ‘নবী করীম (ছাঃ) লা‘নত করেছেন এমন সব নারীর উপর যারা উল্কি করে, ভ্রূ উপড়িয়ে ফেলে এবং সেŠন্দর্যের জন্য দাত সরু ও বড় করে আল্লাহর সৃষ্টিকে বদলিয়ে দেয়’।[17]

লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, যেখানে সৃষ্টির সামান্য পরিবর্তনের জন্য রাসূল (ছাঃ) অভিসম্পাত করছেন, সেখানে একজন পুরুষ বা নারী লিঙ্গ পরিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্টিকে পরিবর্তন করলে তার শাস্তি কেমন হতে পারে সহজেই অনুমেয়।

আর ইসলামী শাসন ব্যবস্থায় সমকামীদের শাস্তি হ’ল মৃত্যুদন্ড। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,مَنْ وَجَدْتُمُوهُ يَعْمَلُ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ، فَاقْتُلُوا الْفَاعِلَ، وَالْمَفْعُولَ بِهِ ‘তোমরা কাউকে যদি লূত গোত্রের মতই কুর্কমে লিপ্ত দেখতে পাও, তাহ’লে কর্তা ও যার সঙ্গে করা হয়েছে তাদের উভয়কে হত্যা কর’।[18] এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আইনে সমকামিতা ও পশুকামিতা প্রকৃতিবিরোধী যেŠনাচার হিসেবে শাস্তিযোগ্য ও দন্ডনীয় ফৌজদারী অপরাধ।

উল্লেখ্য, একজন পুরুষের লিঙ্গ পরিবর্তন বা ট্রান্সজেন্ডার হওয়ার অর্থ হ’ল- তার পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষ কেটে ফেলা, বুকে কৃত্রিম স্তন বসানো। অনুরূপ নারীদের লিঙ্গ পরিবর্তন করে ট্রান্সজেন্ডার হওয়ার অর্থ হ’ল- তার শরীর থেকে স্তন, জরায়ু এবং গর্ভধারণের প্রয়োজনীয় অংশসমূহ কেটে ফেলা এবং শরীরে বিভিন্ন অংশ থেকে কিছু মাংসপেশী নিয়ে কৃত্রিমভাবে একটি পুরুষাঙ্গ স্থাপন করা। অথচ আল্লাহ বলেন, لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ ‘অবশ্যই আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম অবয়বে’ (তীন ৯৫/৪)। তার সৃষ্টির এমন বিকৃতি ঘটানোর অর্থ হ’ল প্রকৃত অর্থে আল্লাহর সঙ্গে বিদ্রোহ করা। আর এটা জঘন্যতম অপরাধ। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি নিজেকে একনিষ্ঠভাবে দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ। আল্লাহর ফিতরাত অনুযায়ী চল, যে ফিতরাতের উপর তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই’ (রূম ৩০/৩০)

তবে কোন পুরুষের যদি মেয়েলি কিছু আলামত থাকে অথচ বাস্তবে সে একজন পুরুষ কিংবা কোন নারীর যদি পুরুষালি কিছু আলামত থাকে অথচ ব্যস্তবে সে একজন নারী, সেক্ষেত্রে সার্জারী বা ঔষধ গ্রহণ করে সেই সমস্যার সমাধান করা জায়েয। যেটিকে লিঙ্গ পরিবর্তন নয় বরং লিঙ্গ সংরক্ষণ করা বলা হয়।[19]

করণীয় :

নতুন নতুন মোড়কে ধেয়ে আসা ফিৎনাকে চিনতে হ’লে অহি-র জ্ঞানে নিজেদের সমৃদ্ধ করার কোন বিকল্প নেই। যার ভিতরে শারঈ জ্ঞানের অভাব রয়েছে, সে খুব সহজেই চকটদার চিন্তাধারা ও মতবাদের টোপ গিলে ফেলে। মনে রাখতে হবে- বর্তমান সময়ে কাফের-মুসলিমদের সাথে আমাদের যে তুমুল যুদ্ধ চলছে, সেটা হচ্ছে ‘চিন্তার যুদ্ধ’। আর এই চিন্তার যুদ্ধের প্রধান রণাঙ্গন হচ্ছে ‘শিক্ষা ব্যবস্থা’। আমাদের দেশের ‘শিক্ষা ব্যবস্থা’ অনেক আগেই তাদের হামলার শিকার হয়েছে এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। সুতরাং নিজকে এবং নিজের পরিবারকে ফিৎনামুক্ত ও আল্লাহমুখী করতে হ’লে অবশ্যই ইসলামী আদর্শ ও শিক্ষানীতিকে ব্যাপকভাবে চর্চা করতে হবে।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ একটি মানসিক রোগ। সুতরাং নাটক, সিনেমা, মুভি এবং অসৎ সঙ্গের প্রভাবে কেউ যদি ছেলে হয়েও নিজেকে মেয়ে মনে করে বা মেয়ে হয়ে নিজেকে ছেলে দাবী করে বসে, তবে তাকে দূরে না ঠেলে দেওয়া কর্তব্য। মনোরোগের চিকিৎসায় বহুল চর্চিত এবং প্রচলিত একটি চিকিৎসা পদ্ধতি হ’ল কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি [Cognitive Behavioral Therapy (CBT)]। এই থেরাপির মাধ্যমে এই মানসিক সমস্যাকে দূর করা সম্ভব ইনশাআল্লাহ।

উপসংহার :

ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলে যারা সমকামী ও ট্রান্সজেন্ডার অধিকারের পক্ষ নেয় তাদেরকে আমরা বলতে চাই যে, ‘প্রাণী জগতে রেইপ বা ধর্ষণ একটি ন্যাচারাল বিষয় হিসাবে প্রমাণিত হওয়ার পরও আমরা যেকারণে ধর্ষণের বিরোধিতা করি, ঠিক একই কারণে ব্যক্তি স্বাধীনতার নামে সমকামিতা, ট্রান্সজেন্ডার ও সুরক্ষা আইনের বিরুদ্ধে কথা বলি। আমরা কেউ নিজের ইচ্ছায় পৃথিবীতে আসিনি এবং আমাদের এই দেহটাও মূলতঃ আমাদের নয়। এটা আল্লাহ প্রদত্ত আমানত। সুতরাং আল্লাহ যাকে পুরুষ হিসাবে বানিয়েছেন তাকে চিরকাল পুরুষ হিসাবে থাকতে হবে এবং আল্লাহ যাকে নারী বানিয়েছেন তাকে চিরকাল নারীই থেকে যেতে হবে। আল্লাহ বলেন, أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ‘সৃষ্টি যার হুকুম ও বিধান চলবে তার’ (আ‘রাফ ৭/৫৪)। আল্লাহ আমাদের সঠিক বুঝ দান করুন এবং যাবতীয় ফিৎনা থেকে নিরাপদ করুন- আমীন!

 আব্দুল্লাহ আল-মুছাদ্দিক

বিএসএস (সম্মান), এমএসএস, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।


[1]. তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া

[2]. অবক্ষয়কাল : আসিফ আদনান, ট্রান্সজেন্ডার মতবাদ অধ্যায়, পৃ. ১৯

[3]. তথ্যসূত্র : Trans inmate impregnated two other prisoners, The telegraph, 17th july 2022 (online).

[4]. তথ্যসূত্র : What does the `T' in LGBTQ mean? Gender identity and the tran gender non binary communities. Writer clare Mulroy, USA Today, 29th March, 2023(ভাবানুবাদ)।

[5]. সূত্র : পুরুষের শরীরে নারী, ইউটিউব Think Bangla.

[6]. বায়হাকী, সুনানে কুবরা ৬/২৬১

[7]. বায়হাকী, সুনানে কুবরা ১২২৯৪; মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১৯২০৪

[8]. Dhaka times News১০ই মার্চ ২০২১

[9]. বিবিসি নিউজ বাংলা, ৭ই মার্চ ২০২৩

[10]. The daily star, ২ আগস্ট ২০২১

[11]. যমুনা টিভি

[12]. কালের কণ্ঠ ২১ নভেম্বর ২০২২

[13]. Bd news 27,১ জুলাই ২০২৩। এককালে ট্রল হওয়া এই ভাই-আপু এখন মিডিয়ার ব্যাপক প্রশংসায় ভাসছে।

[14]. তথ্য সূত্র : ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষার আইন দ্রুত পাশ হবে ‘সাম্প্রতিক দেশকাল, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩’)

[15]. তথ্য সূত্র : প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ট্রান্সজেন্ডার হোচি মিনের সাক্ষাৎ, সময় নিউজ, ১০ই আগস্ট ২০২৪

[16]. বুখারী হা/৫৮৮৫

[17]. বুখারী হা/৫৯৪৭; মুসলিম হা/২১২৪

[18]. আবূদাঊদ হা/৪৪৬২; সনদ ছহীহ।

[19]. তথ্যসূত্র : https://islamqa.info/en/answers/138451






নতুন শিক্ষা কারিকুলাম : মুসলিম জাতিসত্তা ধ্বংসের নীল নকশা - ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন
মোদীর বিজয়ে ভারত কী হারাল? - উইলিয়াম ডালরিম্পল
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক : একটি প্রাসঙ্গিক আলোচনা - লিলবর আল-বারাদী - যশপুর, তানোর, রাজশাহী
ফিলিস্তীনীদের কান্না কবে থামবে? - শামসুল আলমশিক্ষক, আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী, নওদাপাড়া, রাজশাহী।
কোথায় মিলবে চিকিৎসা? - মুহাম্মাদ আবু নোমান
ক্রাইস্টচার্চে হামলা : বর্ণবাদীদের মুখোশ উন্মোচন - * জুয়েল রানাসহকারী শিক্ষকআলহাজ্জ শাহ্ মাহ্তাব-রওশন ব্রাইট স্টার স্কুলউত্তর পলাশবাড়ী, চিরিরবন্দর, দিনাজপুর।
ফারাক্কা-রামপাল : বাংলাদেশ ও ভারত সম্পর্কের বাধা - আনু মুহাম্মদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ
জাপান : সততাই যার মূল শক্তি - \ সংকলিত \
শিক্ষা আইন ২০১৬-এর খসড়ার উপর আমাদের মতামত - মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ : বিচার হয় না আর্থিক প্রতারণার - সাঈদ আহমাদ
বাবরী মসজিদ কলঙ্কের অবসান হোক - ড. নূরুল ইসলাম
কাশ্মীরে বিপজ্জনক গুজব - আলতাফ পারভেজ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ক গবেষক
আরও
আরও
.