সংক্রামক
রোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তা মহামারী আকারে ছড়িয়ে
পড়লে। বর্তমানে নতুন করোনা ভাইরাসকে বিশ্বব্যাপী মহামারী হিসাবে ঘোষণা
দেওয়া হয়েছে। তবে এমন সংক্রামক রোগের অতীত ইতিহাস বেশ দীর্ঘ।
ম্যালেরিয়া, যক্ষ্মা, কুষ্ঠ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, গুটিবসন্ত প্রভৃতি বিভিন্ন রোগ নানা সময়ে মহামারীর রূপ নিয়েছে। মানবসভ্যতা যত উন্নত হয়েছে, মহামারীর প্রাবল্য তত বেড়েছে। কারণ ধীরে ধীরে শহর, গ্রাম গড়ে উঠেছে, জনসংখ্যার ঘনত্ব বেড়েছে। এছাড়া বেড়েছে বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ও বাণিজ্য। ফলে রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও তৈরী হয়েছে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু ভয়ংকর মহামারীর কাহিনী, যা অগণিত মানুষের মৃত্যুর কারণ হয়েছিল। বদলে দিয়েছিল ইতিহাসের গতিধারা।
১. খ্রিষ্টপূর্ব ৪৩০ অব্দ :
পেলোপনেসিয়ান যুদ্ধের সময় খ্রিষ্টপূর্ব ৪৩০ অব্দে একটি রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল। বর্তমান লিবিয়া, ইথিওপিয়া ও মিসর ঘুরে তা গ্রীসের রাজধানী এথেন্সে ছড়িয়ে পড়েছিল। এ রোগে ঐ অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের মৃত্যু হয়। ঐ রোগের মূল লক্ষণ ছিল জ্বর, প্রচন্ড পিপাসা, গলা ও জিহবা রক্তাক্ত হওয়া, ত্বক লালচে হয়ে যাওয়া ও ক্ষত সৃষ্টি হওয়া ইত্যাদি। ধারণা করা হয়, এটি ছিল টাইফয়েড জ্বর। বলা হয়ে থাকে, এমন মহামারীর কারণেই স্পার্টানদের কাছে যুদ্ধে হারতে হয়েছিল এথেনিয়ানদের।
২. জাস্টিনিয়ান প্লেগ (৫৪১ খ্রিষ্টাব্দ) :
মিসরে প্রথম এই রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে ফিলিস্তীন ও বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যজুড়ে এই মহামারী বিস্তার লাভ করে। পরে পুরো ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে এই প্লেগ তান্ডব চালায়। সম্রাট জাস্টিনিয়ান ঐ সময় রোমান সাম্রাজ্যের সঙ্গে বাইজেন্টাইনকে একীভূত করার পরিকল্পনা করছিলেন। মহামারীতে সব ভেস্তে যায়। শুরু হয় অর্থনৈতিক সংকট। এই রোগ পরবর্তী আরও দুই শতাব্দী ধরে বিভিন্ন সময়ে মহামারী আকার নিয়েছিল। মারা গিয়েছিল প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ। তখনকার হিসাবে এটি ছিল পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২৬ শতাংশ। এই প্লেগের মূল বাহক ছিল ইঁদুর। মূলত মানুষের চলাচলের মাধ্যমে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে।
৩. কুষ্ঠ (১১০০ খ্রিষ্টাব্দ) :
কুষ্ঠরোগের অস্তিত্ব ছিল আগে থেকেই। কিন্তু মধ্যযুগে ইউরোপে এই রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল। কুষ্ঠ ব্যাকটেরিয়া জনিত একটি রোগ। অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত কুষ্ঠ ছিল প্রাণঘাতী রোগ। বর্তমানেও বছরে লাখ লাখ লোক কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারের কারণে আর এই রোগে মানুষের প্রাণহানী হয় না।
৪. কালো মৃত্যু (১৩৪৬ সাল) :
কালো মৃত্যু বা কালো মড়ক মানবসভ্যতার ইতিহাসে একটি বীভৎস, লোমহর্ষক ও কালো ইতিহাস বহন করছে। পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এই মহামারীর কবলে পড়ে ১৩৪৬ থেকে ১৩৫৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের ৭ থেকে ২০ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। অন্য হিসাবে সেসময় বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের মৃত্যু হয়েছিল।
দ্য ব্ল্যাক ডেথ নামে প্রসিদ্ধ এই মহামারী প্রথমে এশিয়া অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল। পরে তা বণিকদের জাহাযে বসবাস করা কালো ইঁদুর ও ইঁদুর মাছি নামক দু’টি প্রজাতির মাধ্যমে পশ্চিমে ছড়ায়। একপর্যায়ে পুরো ইউরোপ এই মহামারীতে আক্রান্ত হয়। অধিকাংশ নারী ও পুরুষ এই পতঙ্গের কামড়ে বুবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়েছিল। ইউরোপের মোট জনসংখ্যার ৩০-৬০ ভাগ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। শুধু এই মহামারীর কারণে ঐ সময়ে ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স যুদ্ধ থেমে যায়।
ইউরোপে প্লেগটির আগমন ঘটে ১৩৪৭ সালের অক্টোবরে, যখন কৃষ্ণ সাগর থেকে আসা ১২টি জাহায নোঙর ফেলে ইতালীর মেসিনা শহরের সিসিলিয়ান বন্দরে। জাহাযগুলো হাযির হওয়ার পর বন্দরে উপস্থিত জনতা আবিষ্কার করে যে, জাহাযগুলোতে থাকা অধিকাংশ নাবিকই মরে পড়ে আছে। আর যারা বেঁচে আছে, তাদের অবস্থাও শোচনীয়। সারা গা ভরে গেছে কালো রঙের পুঁজে। অনেকের ফোঁড়াগুলো পচে গিয়ে পুঁজও বের হচ্ছে।
সবকিছু প্রত্যক্ষ করে সিসিলিয়ান বন্দর কর্তৃপক্ষ দ্রুতই নির্দেশ দেয় যেন সকল জাহায অতিসত্বর বন্দর ত্যাগ করে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। কালো মৃত্যু ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপের মাটিতেও, যা পরবর্তী পাঁচ বছরে কেড়ে নেয় মহাদেশটির দুই কোটির উপর মানুষের প্রাণ। এই মহামারীর কবলে পড়ে চর্তুদশ শতাব্দীতে বিশ্বের জনসংখ্যা ৪৫০ মিলিয়ন থেকে ৩৫০-৩৭৫ মিলিয়নে নেমে আসে।
কালো মৃত্যুর লক্ষণ ছিল- প্রথমে এই রোগে আক্রান্ত নারী ও পুরুষ কবজি বা বগলের কোন স্থানে টিউমারের মত কোন কিছুর অস্তিত্ব অনুভব করত। ধীরে ধীরে সেটি বড় হ’ত। এক পর্যায়ে এটি আপেল বা ডিমের আকৃতির মত ধারণ করত ও ছড়িয়ে পড়তে থাকত। কালো রঙের এই ফোঁড়া অত্যন্ত বেদনাদায়ক হ’ত। রোগাক্রান্ত ব্যক্তি তার সারা শরীরে এটি দেখতে পেত। এক পর্যায়ে এগুলো পচে যেত এবং পুঁজ বের হ’ত এবং মাত্র তিন থেকে সাতদিনের মধ্যে মৃত্যু হ’ত।
৫. দ্য গ্রেট প্লেগ অব লন্ডন (১৬৬৫ সাল) :
এটিও ছিল বুবোনিক প্লেগ। এতে লন্ডনের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে রোগের উৎস হিসাবে কুকুর-বিড়ালের কথা ভাবা হয়েছিল। রোগের আতঙ্কে তখন নির্বিচারে শহরের কুকুর-বিড়াল মেরে ফেলা হয়।
৬. প্রথম কলেরা মহামারী (১৮১৭ সাল) :
কলেরা রোগের প্রথম মহামারীর শুরুটা হয়েছিল রাশিয়ায়। সেখানে এতে প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। দূষিত পানির মাধ্যমে এই রোগ পরে ব্রিটিশ সেনাদের মধ্যে ছড়ায়। পরে তা ভারতে ছড়ায়, যাতে ১০ লাখের অধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোতেও কলেরা মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে। স্পেন, আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া, চীন, জাপান, ইতালী, জার্মানী ও আমেরিকায়ও কলেরা ছড়িয়ে পড়ে মহামারী আকারে। এসব অঞ্চলে প্রায় দেড় লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। ফলে সব মিলিয়ে ২২-২৩ লাখ লোক মারা যায়। এখনো প্রতিবছর কয়েক হাযার মানুষ এই রোগে প্রাণ হারায়। চীন, রাশিয়া ও ভারতে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
৭. তৃতীয় প্লেগ মহামারী (১৮৫৫ সাল) :
চীন থেকে এর সূত্রপাত হয়েছিল। পরে তা ভারত ও হংকংয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রায় দেড় কোটি মানুষ এই মহামারীর শিকার হয়েছিল। ভারতে এই মহামারী সবচেয়ে প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছিল। ইতিহাসবিদেরা বলে থাকেন, এই মহামারীকে উপলক্ষ হিসাবে নিয়ে ভারতে ব্রিটিশ শাসকেরা নিপীড়নমূলক পদক্ষেপ নেয় এবং সেসবের মাধ্যমে বিদ্রোহ দমন করে।
৮. রাশিয়ান ফ্লু (১৮৮৯ সাল) :
ফ্লুর মাধ্যমে সৃষ্ট প্রথম মহামারী ছিল এটি। সাইবেরিয়া ও কাজাখস্তানে এর সূত্রপাত। তারপর ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও আফ্রিকা অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছিল এই ফ্লু। ১৮৯০ সালের শেষ নাগাদ এই রোগে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাযার মানুষের মৃত্যু হয়।
৯. স্প্যানিশ ফ্লু (১৯১৮ সাল) :
বিশ শতকে পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ যে মহামারী দেখা দিয়েছিল তার নাম ‘স্প্যানিশ ফ্লু’। ১৯১৮-১৯ সালে এই ভাইরাসে বিশ্বব্যাপী আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০ কোটি। মৃত্যুবরণ করেছিল ৫ থেকে ১০ কোটি মানুষ। তন্মধ্যে ভারতবর্ষেই মারা গিয়েছিল দেড় কোটির বেশী মানুষ। দুই বিশ্বযুদ্ধে নিহত মানুষের যোগফলও এর চেয়ে কম ছিল।
রোগটি প্রথম ধরা পড়েছিল আমেরিকার কানসাসের এক সামরিক দুর্গে। ১৯১৮ সালের ১১ই মার্চ সকালে রান্নাঘরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক সৈন্য। কিন্তু সন্ধ্যা গড়াতে না গড়াতেই ঐ ক্যাম্পের শত শত সৈন্য ও কর্মকর্তা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
কানসাসের প্রাথমিক সংক্রমণ কেটে গিয়েছিল অল্প সময়ে। কিন্তু মাস ছয়েক পর ভাইরাসটি ভয়ানক রূপ ধারণ করে মরণ কামড় বসাতে থাকে। এক হিসাবে দেখা গেছে, ১৯১৮-এর সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বরের মধ্যে এটি সবচেয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করে। শুধু অক্টোবরেই ১ লাখ ৯৫ হাযার আমেরিকান মৃত্যুবরণ করেছিল। আমেরিকায় মোট প্রাণহানি ঘটে ৬ লাখ ৭৫ হাযার মানুষের। অথচ প্রথম মহাযুদ্ধের সময় সমগ্র আমেরিকায় ১ লাখ ১৬ হাযার সৈন্য নিহত হয়েছিল। আমেরিকানদের কাছে এ মহামারী ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধাক্কা।
তবে তাদের সংখ্যাটি যতই বড় মনে হোক, স্প্যানিশ ফ্লু সবচেয়ে ভয়াবহ আক্রমণটি করেছিল ভারতবর্ষে। ইতিহাসবিদদের মতে, ১৯১৮ সালের এক মধ্যরাতে বোম্বাই (বর্তমানে মুম্বাই) বন্দরে এসে নোঙর করে একটি জাহায। সেই জাহায থেকে নামেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকে ফিরে আসা সেনারা। তারপর এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে বেশী দেরি হয়নি। বাতাসের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে এবং হাযারে হাযার মানুষ মরতে থাকে প্রতিদিন। বছর গড়াতেই সংখ্যাটি কোটির ঘর পেরিয়ে যায়। সেসময় মাহাত্মা গান্ধীও এই ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অসুস্থতার মধ্যে তরল জাতীয় খাবার খেয়ে এবং ঘরে একা একা থেকে দিন কাটাতেন। এভাবে কোয়ারেন্টাইন এবং আইসোলেশনের মধ্য দিয়ে তিনি ধীরে ধীরে সুস্থতা লাভ করেন।
স্প্যানিশ ফ্লু এতই ভয়ংকর ছিল যে কোন কোন আক্রান্ত মানুষ চিকিৎসা নেয়ার আগেই দ্রুত মৃত্যুবরণ করত। এমনও ঘটেছে যে, কেউ একজন ঘুম থেকে উঠে দেখল, তার জ্বর এসেছে। তারপর নাশতা সেরে অফিসে বা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পথেই মৃত্যুবরণ করেছে।
অসুখের লক্ষণগুলো ছিল এ রকম- প্রথমে জ্বর আসে, সেই সঙ্গে শ্বাসকষ্ট। অক্সিজেনের অভাবে মুখমন্ডল নীল বর্ণ ধারণ করে, ফুসফুসে রক্ত জমে যায়, নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত কেউ এর হাত থেকে নিস্তার পায়নি।
অনেক অঞ্চলেই এই ফ্লুর কারণে স্থানীয় চিকিৎসকরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। কারণ এই ফ্লুতে আক্রান্ত রোগীদের সঙ্গে তারাই প্রথম যোগাযোগ স্থাপন করতেন। ফলে তারাও অবধারিতভাবে এ মহামারীর কবলে পড়ত। এমনও দেখা গেছে, কোন শহরে স্প্যানিশ ফ্লু মারাত্মক আকার ধারণ করলেও সেখানে কোন চিকিৎসক খুঁজে পাওয়া যেত না।
প্রাণহানির সংখ্যায় ভারতের পর ছিল চীনের অবস্থান। সে সময়ে চীনে ৪০-৯০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল। ইরানে ১০-২৪ লাখ, ইন্দোনেশিয়া দ্বীপপুঞ্জে ১৫ লাখ, জাপানে ৪ লাখ, ব্রাজিলে ৩ লাখ, ব্রিটেনে আড়াই লাখ ও ফ্রান্সে ৪ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এগুলো বড় বড় হিসাব। এর বাইরে এশিয়া-আফ্রিকা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে আক্রান্ত হয়েছিল লাখ লাখ মানুষ। আফ্রিকার বেশ কিছু উপজাতি সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে গিয়েছিল। কিছু কিছু শহরের জনসংখ্যা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছিল। এছাড়া পৃথিবীর সবগুলো মহাদেশেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে ব্রাজিলের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মারাজোতে শুধু এই ভাইরাস সংক্রমণের কোন রেকর্ড পাওয়া যায়নি।
১০. এশিয়ান ফ্লু (১৯৫৭ সাল) :
হংকং থেকে এই রোগ চীনে ছড়িয়ে পড়ে। পরে তা ছয় মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র হয়ে যুক্তরাজ্যে ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করে। এতে প্রায় ১৪ হাযার মানুষের মৃত্যু হয়ে। ১৯৫৮ সালের শুরুর দিকে এশিয়ান ফ্লু দ্বিতীয়বারের মতো মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে। ঐ সময় এশিয়ান ফ্লুতে বিশ্বব্যাপী প্রায় ১১ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই মারা গিয়েছিল ১ লাখ ১৬ হাযার মানুষ। পরে ভ্যাকসিন দিয়ে ঐ মহামারী প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছিল।
উপরোক্ত বিবরণে বুঝা যায় যে, পৃথিবীতে যুগে যুগে বহু মহামারীর ঘটনা ঘটেছে এবং এসব মহামারীতে মৃত্যুবরণ করেছে কোটি কোটি মানুষ। চলমান করোনা ভাইরাস পূর্ববর্তী মহামারীগুলোর চেয়ে ব্যাপকতা লাভ করবে কি-না তা ভবিষ্যতই বলে দেবে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা অনুযায়ী অধিকাংশ দেশে এখনও এ মহামারীর প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
তথ্যসূত্র :