বাংলাদেশ
সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম
জনসংহতি সমিতির মধ্যকার স্বাক্ষরিত চুক্তির বয়স তের পেরিয়ে আজ চৌদ্দ বছরে
পদার্পণ করেছে। এই দীর্ঘ সময় পরেও চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে স্বাক্ষরকারী
পক্ষদ্বয়ের মধ্যে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়ে গেছে। বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে
বলা হচ্ছে মাঝখানে চুক্তিবিরোধী বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসায় এটি পুরোপুরি
বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। কিন্তু তারা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর চুক্তির
উল্লেখযোগ্য প্রায় সকল ধারাই বাস্তবায়ন করছে। অবশিষ্ট ধারাসমূহও
বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অপরপক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি
সমিতির পক্ষ থেকে হরহামেশাই বলতে শুনা যাচ্ছে যে, চুক্তির মৌলিক ধারাসমূহের
কোনটাই বাস্তবায়ন করছে না সরকার। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে কাঙ্ক্ষিত
শান্তিও আসছে না। তাই প্রতিবারই চুক্তির বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে জনসংহতি
সমিতির পক্ষ থেকে চুক্তি বাস্তবায়নের ধীরগতি এবং সরকারের অবহেলার বিবরণ
সম্বলিত সাময়িকী প্রকাশসহ সভা-সেমিনার, মিছিল-মিটিং করে প্রতিবাদ জানানো
রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারো তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। অথচ ১৯৯৭ সালের ২
ডিসেম্বর চুক্তি স্বাক্ষরের পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রায় সাড়ে তিন
বছর ক্ষমতায় থেকে বিদায় নেয়ার সময় ঘোষণা করেছিল যে, তারা চুক্তির ৯৮ শতাংশ
বাস্তবায়ন করেছে। ২০০১ সালে অর্থাৎ সাড়ে তিন বছরে যে চুক্তির ৯৮ শতাংশ
বাস্তবায়ন করা হয়েছিল সে চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে ১৩ বছর পরেও কেন পক্ষদ্বয়
একমত হ’তে পারছে না বরং পরস্পর কাদা ছোঁড়াছুড়িতে ব্যস্ত তা নিয়ে জনমনে
কৌতুহল তৈরী হওয়াটাই স্বাভাবিক। হয়েছেও তাই।
সচেতন নাগরিক সমাজের কাছে শুরু থেকেই পার্বত্য চুক্তি সংবিধান বিরোধী এবং দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতার মূলে কুঠারাঘাত হিসাবে চিহ্নিত হ’লেও আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগীরা এর বিরোধিতা করে একে সংবিধান ও দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি আস্থা রেখেই প্রণীত শান্তিচুক্তি হিসাবে আখ্যায়িত করে প্রচারণা চালিয়ে আসছিল। কিন্তু সম্প্রতি রিট আবেদন নম্বর ২৬৬৯/২০০০ এবং ৬৪৫১/২০০৭-এর প্রেক্ষিতে দেয়া হাইকোর্টের রায়ে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীদের প্রচারণার অসাড়তা প্রমাণিত হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ে পার্বত্যচুক্তি এবং এ চুক্তির নির্দেশনা মোতাবেক প্রণীত আইনসমূহ ও গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সম্পর্কে সুস্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে। এর মধ্যে হাইকোর্ট দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদ আইনকে বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করেছে। মামলাটি বর্তমানে সুপ্রীমকোর্টের আপিল বিভাগে বিবেচনাধীন থাকায় এখনই চূড়ান্ত নিষ্পত্তি সম্পর্কে ধারণা করা না গেলেও হাইকোর্টের রায় থেকে চুক্তি এবং চুক্তির ফলে প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ আইনসমূহ, আঞ্চলিক পরিষদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ইঙ্গিত পাওয়া যায়। একই সাথে এটাও বুঝা যায় যে, সরকার বারবার চুক্তি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেও কেন তা বাস্তবায়ন করতে পারছে না। তাছাড়া সরকার এবং জনসংহতি সমিতির মতপার্থক্য কেন কমিয়ে আনা যাচ্ছে না তাও স্পষ্ট হয়েছে।
উল্লেখ্য, পৃথক দু’টি মামলার রুলের চূড়ান্ত শুনানি গ্রহণ করে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীকে নিয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ চলতি বছরের ১২ ও ১৩ এপ্রিল দুই দিনব্যাপী এক ঐতিহাসিক রায় প্রদান করেন। এই রায়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি সম্পর্কে মন্তব্যে আদালত বলেন, বহু-বৈচিত্র্যময় শান্তিচুক্তিটি সংবিধানের অধীন বর্ণিত চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নয়। দীর্ঘদিন ধরে চলমান শান্তি প্রক্রিয়ার সাথে সংশ্লিষ্ট এই আন্তঃরাষ্ট্রীয় শান্তিচুক্তিটি মূলতঃ সংবিধান সংশ্লিষ্ট নয় এবং সাংবিধানিক বিবেচনার বাইরে থেকেই এর প্রকৃতি ও বৈধতা নির্ধারণ করতে হবে। তাছাড়া শান্তিচুক্তি স্বাভাবিক কার্যকারিতা হারিয়েছে। কারণ, এই চুক্তিটি পরবর্তীকালে ৪টি আইনে পরিবর্তিত হয়েছে। এ কারণে শান্তিচুক্তির বৈধতার প্রশ্নে আদালতের কিছু বিবেচনার প্রয়োজন নেই। কারণ শান্তিচুক্তির শর্তগুলো উক্ত ৪টি আইনের মাধ্যমে কার্যকর হয়েছে। ফলে আদালত শান্তিচুক্তির পরিবর্তে চুক্তির শর্ত মোতাবেক প্রণীত আইনগুলো সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করে রায় প্রদান করেন।
আঞ্চলিক পরিষদ আইন সম্পর্কে আদালতের বক্তব্য হচ্ছে, আঞ্চলিক পরিষদ আইনের ধারা ৪১-এর মাধ্যমে আইন প্রণেতাদের ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেয়ার উদ্দেশ্যকেই প্রকাশ করে। রাষ্ট্রের একক স্বত্বাকে খর্ব করার উদ্দেশ্যেই আঞ্চলিক পরিষদ আইনের ধারা ৪০ এবং ৪১ ইচ্ছাকৃতভাবেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও আঞ্চলিক পরিষদ আইন সংবিধানের ১ নম্বর অনুচ্ছেদে রক্ষিত রাষ্ট্রের একক চরিত্র হিসাবে সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে বিনষ্ট ও ধ্বংস করেছে। বাদি এবং বিবাদি পক্ষের যুক্তিতর্ক ও সংবিধানের ৮ম সংশোধনী মামলার মতামত ও পর্যবেক্ষণ থেকে আদালত সিদ্ধান্তে আসে যে, আঞ্চলিক পরিষদ আইনটি রাষ্ট্রের একক চরিত্র ধ্বংস করেছে বিধায় এটি অসাংবিধানিক। এ ছাড়াও সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদ মোতাবেক এই আঞ্চলিক পরিষদ কোন স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নয়। এর কারণ হচ্ছে যে, পরিষদ আইনে আঞ্চলিক পরিষদকে প্রশাসনিক কোনো ইউনিট হিসাবে আখ্যা দেয়া হয়নি।
হাইকোর্টের রায়ে আঞ্চলিক পরিষদ আইন এবং আঞ্চলিক পরিষদকে অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণার পাশাপাশি পার্বত্য তিনটি যেলা পরিষদ আইনের বেশ কিছু ধারাকে বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করেছে।
আদালত যেলা পরিষদ আইনের ৬ নম্বর ধারা বিবেচনা করে উল্লেখ করেন, ঐ ধারায় একজন ব্যক্তি উপজাতীয় কি না, তা গ্রামের হেডম্যান কর্তৃক প্রদত্ত সনদের দ্বারা নির্ধারিত হবে বলে সার্কেল চিফকে ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। বস্ত্ততঃ এই বিধান এমন কোন বস্ত্তনিষ্ঠ মানদন্ড নিশ্চিত করেনি যার দ্বারা ঐ সনদ প্রদান করা হবে কি না, তা নিশ্চিত করা যায়। তাই এটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭, ২৮(১), ২৯(১) এবং ৩১-এর বিধানগুলোর লঙ্ঘন। সংবিধানের একই বিধানগুলো দ্বারা ১৯৮৯ সালের আইনের ১১ নম্বর ধারা (যা ১৯৯৮ সালের আইনের ১১ নম্বর ধারার সংশোধিত)- যার বিধান অনুযায়ী ‘স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনে ভোট প্রদান করতে হ’লে একজন ব্যক্তিকে অবশ্যই পাহাড়ি অঞ্চলে জমির অধিকারী এবং ঐ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হ’তে হবে কে বাতিল করে। আদালত মনে করেন যে, ওই ধারা বাস্তবিকভাবে একজন অ-উপজাতীয় ব্যক্তিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে যেকোন নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত করছে যদিও বাংলাদেশ সংবিধানে সেই অধিকারগুলো রক্ষিত আছে। আদালত আরো উল্লেখ করেন যে, ১৯৮৯ সালের আইনের ধারা ৩২(২) এবং ৬২(১) (যা ১৯৯৮ সালের আইনের সংশোধিত) এর দ্বারা পার্বত্য যেলা পরিষদ এবং পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে উপজাতীয়দের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। এই নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নীতির বিধান পূর্ববর্তী আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নিয়োগ নীতির পরিবর্তে আনা হয়েছে।
কোন ব্যক্তি কিভাবে এবং কিসের ওপর ভিত্তি করে অন্য ব্যক্তির অধিকারকে লঙ্ঘন করে এবং তাকে বাদ দিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নিয়োগের সুবিধা পাবে, এই আইনে সে বিষয়ে কিছুই উল্লেখ নেই। তাই আদালত মনে করেন যে, এই বিধানগুলো সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭, ২৮ (১), ২৯ (১) এবং (২) এর পরিপন্থী। এই পরিপ্রেক্ষিতে বস্ত্তনিষ্ঠ মানদন্ডের অনুপস্থিতিতে এবং বর্ণ বৈষম্যের ওপর ভিত্তি করে অগ্রাধিকার নীতি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় তা অসাংবিধানিক।
অপরদিকে আঞ্চলিক পরিষদ আইন ও আঞ্চলিক পরিষদকে বেআইনি ও অবৈধ এবং পার্বত্য যেলা পরিষদ আইনসমূহের বিভিন্ন বিতর্কিত ধারা বাতিল করে হাইকোর্টের রায় পেশ করার দিনই আদালত প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এডভোকেট মুরাদ রেজা জানিয়েছিলেন যে, রায় ঘোষণার পর এর বিরুদ্ধে আপিল না করা পর্যন্ত আঞ্চলিক পরিষদের কোন অস্তিত্ব নেই।
আর এ কারণেই সরকার দ্রুত সুপ্রীম কোর্টে আপিল করে আঞ্চলিক পরিষদ এবং সন্তু লারমার পদ আপাতত রক্ষা করেছে। যাইহোক দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিবেচনায় থাকায় মামলার চূড়ান্ত ফল সম্পর্কে জানতে হ’লে সংশ্লিষ্টদের আরো অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আপিল বিভাগের রায় কি হ’তে পারে সে সম্পর্কে সরকার এবং জনসংহতি সমিতি হাইকোর্টের রায় থেকেই সম্ভবত কিছুটা অাঁচ করতে পারছে। তাই তারা বিকল্প পথ খুঁজছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলার চেষ্টা করা হচ্ছে, প্রয়োজনে চুক্তিকে সাংবিধানিক সুরক্ষা দিয়ে হ’লেও (আদালতের ভাষায় রাষ্ট্রের একক চরিত্র ধ্বংসকারী) আঞ্চলিক পরিষদ আইন এবং আঞ্চলিক পরিষদকে রক্ষা করা হবে। অপর দিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি এবং আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমা পার্বত্যাঞ্চলের শাসন ব্যবস্থা নির্ধারণের জন্য বারবার সরকারকে তাগিদ দিচ্ছে। তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে বামদলীয় তথাকথিত সুশীল সমাজ এবং সবার পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউএনডিপিসহ বেশ কিছু দেশী-বিদেশী এনজিও। তবে এখানে বলে রাখা ভাল যে, যারা আদালতকে পাশকাটিয়ে অসাংবিধানিক পার্বত্যচুক্তি এবং আঞ্চলিক পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদ আইনকে সুরক্ষা দিতে চান তাদেরকে সংবিধানের ৮ম সংশোধনী মামলা এবং ৫ম সংশোধনী মামলার রায় থেকে শিক্ষা নেয়া প্রয়োজন। অন্যথায় এক্ষেত্রেও ভবিষ্যতে একই পরিণতি হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। তাছাড়া এটি ভবিষ্যতে গর্হিত অপরাধ হিসাবেই গণ্য হবে।
অতএব সরকার এবং জনসংহতি সমিতিকে নতুন করে ভাবতে হবে। তাদের ভাবনায় দেশের সার্বভৌমত্ব ও সংবিধানের সুরক্ষাই অগ্রাধিকার পেতে হবে। তা না হ’লে পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত সকল জনগোষ্ঠীর অধিকার সমুন্নত রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন কোনদিনই বাস্তবায়িত হবে না। আর এই পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব না হ’লে অশান্ত পরিবেশের সুযোগ নিবে সুযোগসন্ধানী বিদেশী অপশক্তিগুলো। ইতিমধ্যেই তার প্রভাব পার্বত্যাঞ্চলে বিদ্যমান। পাহাড়ে অশান্তি এবং অর্থনৈতিক দুরাবস্থার সুযোগ নিয়ে সেখানে বিভিন্ন দাতা গোষ্ঠীর সহায়তায় দুর্বার গতিতে চলছে খ্রিষ্টানাইজেশন। কোন কোন ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর শতভাব মানুষ খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে। চাকমা, মারমা এবং ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর লোকজনও একই স্রোতের আবর্তে হারিয়ে ফেলছে তাদের নিজস্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি। এ খ্রিষ্টানাইজেশন আজ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীগুলোর কৃষ্টি-কালচার সবকিছুই ধ্বংস করে দিচ্ছে। অথচ এক সময় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলো তাদের এই সংস্কৃতি রক্ষার জন্যই সশস্ত্র সংগ্রামে নেমেছিল।
তাই তের বছর পর একটি অসাংবিধানিক বিষয়কে নিয়ে টানাহেঁচড়া না করে সরকার এবং জনসংহতি সমিতি পার্বত্যাঞ্চলের সকল নাগরিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হবে এটাই প্রত্যাশা।
\ সংকলিত \
সৈয়দ ইবনে রহমত