বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রার বিষয়ে আলোচনা উঠলেই দীনার বা ডলারের নাম আসে। তবে অবিশ্বাস্য হ’লেও সত্য, তালেবান নিয়ন্ত্রিত ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের আফগানী মুদ্রা এখন বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মুদ্রা। মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ, নগদ অর্থের প্রবাহ ও রেমিট্যান্সের কারণে চলতি প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আফগানীর মান ৯ শতাংশ বেড়েছে। অবশ্য আফগানী শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও আফগানিস্তানের সমস্যা রয়েই গেছে। দেশটিতে বেকারত্বের হার ব্যাপক। দুই-তৃতীয়াংশ পরিবারই মৌলিক চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে।
২০২১ সালের আগস্টে মার্কিন মদদপুষ্ট সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসে তালেবান। এর পরপরই যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের ইশারায় আফগানিস্তান থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নেয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। এছাড়া নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভে থাকা আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের ৯৫০ কোটি ডলার বা ৭৭ হাযার কোটি টাকার বেশি অর্থ আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ফলে আশঙ্কাজনকভাবে বিশ্ব বাজারে দর পতন হ’তে থাকে আফগানীর। ২০২১ সালের নভেম্বরে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ১৩০ আফগানীতে পৌঁছায়।
কিন্তু এরপর থেকে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে পেতে পেতে গত অক্টোবর মাসে মুদ্রাটির মান এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে বৈশ্বিক মুদ্রাবাজারের বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রা টাকা এবং ভারতের রূপির চেয়ে অনেক শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেছে। বর্তমানে ৭৫ আফগানীতে মিলছে ১ মার্কিন ডলার। যেখানে বাংলাদেশি মুদ্রায় ডলারের বিনিময় হার ১১০ টাকা এবং ভারতীয় মুদ্রার বিনিময় হার ৮৩.১২ রুপি।
বিশ্ব ব্যাংকের দাবী, মানবিক সহায়তা থেকে পাওয়া শত শত কোটি ডলার এবং এশীয় প্রতিবেশীদের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যের কল্যাণেই দ্বিতীয় প্রান্তিকে আফগানিস্তানের মুদ্রা বিশ্বব্যাপী র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে এসেছে।
তবে অর্থনীতি বিশ্লেষক জিয়া হাসান বলেন, দুই বছর আগে ক্ষমতা দখলের পর তালেবান সরকার নিজেদের মুদ্রা আফগানির অবস্থান শক্ত রাখতে একাধিক ব্যবস্থা চালু করেছে। এছাড়া মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ, নগদ প্রবাহ এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ গত তিন মাসে আফগানীর দাম প্রায় ৯ শতাংশ বাড়াতে সহায়তা করেছে। যা অন্য মুদ্রার হয়নি। এছাড়া আফগানিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদও দেশটির উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আফগানিস্তানে আনুমানিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের লিথিয়াম ভান্ডার মওজূদ রয়েছে।
[নিজস্ব সম্পদের উপর দৃঢ় থাকা এবং ইহূদী-নাছারাদের নিকট হাত না পাতার দুনিয়াবী পুরস্কার এগুলি (স.স.)]