
মিয়ানমারের
রাখাইনে এখনও চলছে নির্যাতন এবং এখনও সেখান থেকে পালাচ্ছে মানুষ। এমনই ৭৯
জন রোহিঙ্গা সম্প্রতি নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে একটি নৌকায় করে গন্তব্যহীন পথে
যাত্রা শুরু করে। একপর্যায়ে তারা থাইল্যান্ডে পৌঁছলে সেখানকার নৌবাহিনী
তাদের পথ রোধ করে দাঁড়ায়। পরে তারা সিদ্ধান্ত নেয় মালয়েশিয়া যাওয়ার। কিন্তু
তার আগেই তারা পৌঁছে যায় ইন্দোনেশিয়ার শরী‘আ শাসিত অঞ্চল আচেহপ্রদেশে এবং
সেখানেই খুঁজে পায় তাদের কাঙ্ক্ষিত ঠিকানা।
এখানে রোহিঙ্গাদেরকে নিজেদের ভাই-বোনের মতোই মনে করা হয়। রোহিঙ্গারা যখন এই এলাকায় নামে, তখন তাদের বুক দুরুদুরু করছিল। তারা জানত না, তাদের সাথে কেমন ব্যবহার করা হবে। কিন্তু নামার পরে যখন স্থানীয়দের সাথে তাদের সাক্ষাৎ হয়, তখন তাদের সব ভয় দূর হয়ে যায়। স্থানীয়দের আচরণে তারা মুগ্ধ হয়। এখানে তারা খাবার, ওষুধ, আশ্রয় সবকিছুই পায়। আপাতত তাদের থাকতে দেয়া হয় একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে। অচিরেই তাদের শহরে আরেকটু ভালো ও স্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। সরেযমীনে দেখা গেছে, রামাযানের সেদিন ইফতারের জন্য রান্না করা হচ্ছিল ভাত, মাছ, নুডুলস, নারিকেলের দুধে গরুর গোশতের তরকারি, বেগুন ভাজা ইত্যাদি। এগুলো সবই এসেছে অনুদান থেকে। মাগরিবের আযান হ’তেই পুরুষরা একদিকে এবং নারী ও শিশুরা আরেক দিকে ইফতারী করতে শুরু করে। ইফতার শেষে পুরুষরা সবাই মসজিদে একসঙ্গে ছালাত আদায় করতে ছুটে যায়। সেখানে কয়েকটি ভবনে পুরুষ ও নারীদের পৃথক ডরমেটরি রয়েছে। রয়েছে একটি মসজিদও। রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ্য রাখতে সেখানে রয়েছে একটি সমৃদ্ধ ক্লিনিক। সেখানকার স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের দায়িত্ব পালনে বেশ তৎপর। কারণ তারা মনে করে, রোহিঙ্গারা আমাদের ভাই। আমরা যা করছি তা আমাদের দায়িত্ব। ইউএনএইচসিআরের পক্ষ থেকে ক্যাম্পটি পরিদর্শনের সময় রোহিঙ্গারা তাদের নিকটে অনুভূতি প্রকাশ করে। এসময় কৃতজ্ঞতায় তারা কেঁদে ফেলে। তাদের ভাষায় আচেহবাসী খুবই ধার্মিক, অমায়িক ও সহমর্মী।
[আমরা আচেহবাসীদের আন্তরিক মুবারকবাদ জানাই এবং অন্যান্য দেশগুলিকে তাদের অনুকরণের আহবান জানাই (স.স.)]