জাপানে জন্মহার ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। এখনই যদি ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহ’লে সমাজ অচল হয়ে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা। অন্যদিকে জাপানী প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেছেন, আমরা যদি এভাবে চলতে থাকি, তাহ’লে দেশ একসময় হারিয়ে যাবে।
বর্তমানে জাপানে জনসংখ্যা সাড়ে ১২ কোটির মতো। গত বছর সেখানে আট লাখের কম শিশুর জন্ম হয়েছে। অথচ ৭০-এর দশকেও দেশটিতে বছরে ২০ লাখের অধিক শিশুর জন্ম হ’ত।
বিশ্বের অনেক দেশই এখন জন্মহার হ্রাসের সংকটে ভুগছে। কিন্তু জাপানের জন্য গত কয়েক দশক ধরে এটি বিশেষ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। গত বছর জাপানে যত শিশু জন্মগ্রহণ করেছে, তার প্রায় দ্বিগুণ লোক মারা গেছে। ২০২২ সালে দেশটিতে শিশু জন্ম নিয়েছে আট লাখের কম, কিন্তু মারা গেছে ১৫ লাখ ৮০ হাযারেরও বেশী মানুষ। ফলে সমাজে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু তাদের সমর্থন দেওয়ার জন্য তরুণ কর্মীর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
পার্লামেন্টে এক বক্তৃতায় কিশিদা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে জন্মহার নিম্নমুখী হওয়ায় দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। একটি সমাজ হিসাবে আমরা চলতে পারব কি-না, তা নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে জাপান। এমনটি চলতে থাকলে আমরা সব দিক থেকে চরম বিপর্যয়ে পড়বো। তাই আর দেরি না করে জনসংখ্যা বাড়ানোর জন্য যা যা করার দরকার, তা এখন থেকেই শুরু করতে হবে।
জাপানী প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মাসাকো মোরি বলেছেন, জন্মহার ধীরে ধীরে কমছে না, এটি সোজা নিচের দিকে যাচ্ছে। এই বিষয়ে কিছু করা না হ’লে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। শিল্প ও অর্থনৈতিক শক্তি কমে যাবে এবং দেশকে রক্ষার জন্য আত্মরক্ষা বাহিনীতে পর্যাপ্ত লোকবল থাকবে না।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাপান নগদ প্রণোদনা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণকে বেশী সন্তান নিতে উৎসাহিত করছে। তবে বিভিন্ন সমীক্ষা অনুযায়ী, জাপানে শিশু প্রতিপালন খুবই ব্যয়বহুল হওয়ায় দম্পতিরা সন্তান নিতে চান না। জন্মহার বাড়াতে জাপান সরকার এর আগেও এধরনের নানা প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কিন্তু সেগুলোর কোনটি থেকেই সাফল্য আসেনি।
ইউওয়া পপুলেশন রিসার্চ অনুসারে, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার পর জাপানই সন্তান প্রতিপালনের দিক থেকে সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশ। জীবনযাত্রা অত্যন্ত উন্নত হওয়ায় দেশটিতে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিবছরই জাপানের জনসংখ্যা কমছে।
[সর্বাগ্রে সন্তান পালনে ব্যয়ভার কমানোর পদক্ষেপ নেওয়া আবশ্যক। অতঃপর এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে ব্যাপক প্রচারণা ও আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করুন। অন্যেরা এ থেকে উপদেশ হাছিল করুন! (স.স.)]