মহাবিশ্ব নিয়ে মানুষের গবেষণা খুবই প্রাচীন। এক সময় মানুষ ধারণা করত যে, মহাবিশ্বের মোট আয়তন স্থির। উপরের দিকে তাকালে যতটুকু দেখা যাচ্ছে ততটুকুই আকাশের সীমা। মহাবিশ্বের প্রকৃতি উদ্ঘাটন নিয়ে চলছে গবেষণা। আর আল্লাহ তা‘আলা তার নবী (ছাঃ)-এর উপর নাযিল করেছেন দুনিয়ার জ্ঞানের সর্বোচ্চ উৎস কুরআনুল হাকীম। কুরআন নাযিল হওয়ার পর পৃথিবীর গবেষক ও বিজ্ঞানীদের চিন্তাধারায় আমূল পরিবর্তন আসে। আর কুরআন নাযিল করার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা পৃথিবীর জ্ঞানের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। কুরআন নাযিল হওয়ার পর পৃথিবীর মানুষ মহাবিশ্ব, পৃথিবী, মানুষের শারীরিক গঠন, জীববৈচিত্র্য ইত্যাদি সম্পর্কে এত বেশী জেনেছে যে, এর পূর্বে এর কিয়দংশও জানতে পারেনি। এই গবেষণার অন্যতম একটি নিদর্শন হ’ল মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ।

মহান আল্লাহ বলেন, فَلَا أُقْسِمُ بِالْخُنَّسِ ‘আমি শপথ করছি ঐসব নক্ষত্রের, যা (দিবসে) হারিয়ে যায় ও (রাতে) প্রকাশিত হয়’ (তাকভীর ৮১/১৫)

নক্ষত্র পিছনের দিকে যাচ্ছে বা হারিয়ে যাচ্ছে। وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ ‘আমরা স্বীয় ক্ষমতাবলে আকাশ নির্মাণ করেছি। আর আমরা অবশ্যই এর সম্প্রসারণকারী’ (যারিয়াত ৫১/৪৭)। আল্লাহ তা‘আলা এই মহাবিশ্ব সম্প্রসারণ করে যাচ্ছেন। এক্ষণে আসুন জেনে নিই বিজ্ঞানীদের গবেষণা কি বলে।

মহাবিশ্ব সম্প্রসারণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা :

মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের এই ধারণাটি প্রথম আবিষ্কার করেন জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডউইন হাবল (Edwin Hubble) ১৯২০ সালে তাঁর 2.5 m টেলিস্কোপের সাহায্যে। ১৮৪২ সালে ডপলার (Johann Christian Doppler) দেখান যে, কোন উৎস যদি পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে আপেক্ষিক গতিতে থাকে এবং তা যদি পর্যবেক্ষকের দিকে সরে আসে তাহ’লে উৎস থেকে আগত তরঙ্গের কম্পাঙ্ক বেড়ে গেছে বলে মনে হবে আর যদি পর্যবেক্ষক থেকে দূরে সরে যায় তাহ’লে কম্পাঙ্ক কমে গেছে বলে মনে হবে। একে ডপলার ক্রিয়া (Doppler effect) বলে। এ প্রক্রিয়া শব্দ তরঙ্গের বেলায় যেমন সত্য তেমনি সকল দৃশ্য অদৃশ্য বিকিরণের বেলায়ও সত্য।

১৮৬৮ সালে স্যার উইলিয়াম হাগিনস (Sir William Huggins) দেখাতে সক্ষম হন যে, কয়েকটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের বর্ণালির ফ্রনহফার কালো রেখাগুলো সৌর বর্ণালিতে তাদের স্বাভাবিক অবস্থানের তুলনায় সামান্য লাল বা নীলের দিকে সরে যায়। একে লাল অপসরণ (Red shift) বা নীল অপসরণ (Blue shift) বলে।

লাল অপসরণ থেকে জানা যায়, নক্ষত্রগুলো পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আর নীল অপসরণ থেকে জানা যায়, নক্ষত্রগুলো আমাদের দিকে সরে আসছে। আমাদের ছায়াপথ গ্যালাক্সির নক্ষত্রগুলোর মধ্যে কিছু নক্ষত্রের আলোর নীল অপসরণ হচ্ছে অর্থাৎ এরা পৃথিবীর দিকে সরে আসছে আর কিছু নক্ষত্রের আলোর লাল অপসরণ হচ্ছে অর্থাৎ এরা পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। পৃথিবীর সাপেক্ষে এ নক্ষত্রগুলোর গড় বেগ সেকেন্ডে ৩০ কিলোমিটার। আমাদের নিকটবর্তী গ্যালাক্সিগুলোর নক্ষত্র থেকে আগত আলো হয় নীল অপসরণ অথবা লাল অপসরণ প্রদর্শন করে। তবে আমরা যখন দূরবর্তী গ্যালাক্সি বা গ্যালাক্সিগুচ্ছ (Cluster of galaxies) এর নক্ষত্র থেকে আগত আলো পর্যবেক্ষণ করি তখন শুধু লাল অপসরণ দেখতে পাই। এ থেকে সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, দূরবর্তী সকল গ্যালাক্সি বা গ্যালাক্সিগুচ্ছ আমাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। মহাবিশ্বের দিক-নিরপেক্ষ এবং সমসত্ত্ব চেহারা যদি আমরা মেনে নেই তাহ’লে মহাবিশ্বের যেকোন স্থান থেকেই যেকোন পর্যবেক্ষকেরই নিকট মনে হবে যে, গ্যালাক্সিগুলো পরস্পর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

বেগুনী আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে কম এবং এর কম্পাংক সবচেয়ে বেশী। লাল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশী এবং এর কম্পাংক সবচেয়ে কম।

কোন নক্ষত্র যখন পৃথিবী হ’তে দূরে সরে যায় তখন ডপলারের সূত্র অনুসারে আগত রশ্মির কম্পাংক হ্রাস পাবে। ফলে লাল আলোর পরিমাণ বেশী দেখাবে যেহেতু লাল আলোর কম্পাংক কম এবং নীল আলোর পরিমাণ কম দেখাবে যেহেতু নীল আলোর কম্পাংক বেশী। একে লাল অপসরণ (Red Shift) বলে। আবার নক্ষত্র পৃথিবীর দিকে সরে আসলে কম্পাংক বৃদ্ধি পাবে। ফলে নীল আলো বেশী দেখাবে যেহেতু নীল আলোর কম্পাংক বেশী এবং লাল আলো কম দেখাবে যেহেতু লাল আলোর কম্পাংক কম। একে নীল অপসরণ (Blue Shift) বলে।

যেহেতু দূরবর্তী নক্ষত্রের ক্ষেত্রে কেবল লাল অপসরণ পাওয়া যায় তাই নক্ষত্র পৃথিবী হ’তে দূরে সরে যাচ্ছে। উপরোক্ত তত্ত্বের আলোকে এটাই বলা যায় যে, মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে।

আমরা এতক্ষণ জেনেছি মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ সম্পর্কে। এবার আমরা যদি সময়কে পিছনের দিকে নিয়ে যাই তাহ’লে মহাবিশ্বের সংকোচন দেখতে পাব। অর্থাৎ এই মহাবিশ্ব কিরূপ অবস্থা হ’তে সম্প্রসারিত হ’তে শুরু করেছিল? আসুন এটি জেনে নেওয়া যাক।

বিজ্ঞানীরা বলেছেন, যখন থেকে এই মহাবিশ্বের শুরু হয়েছিল, তাহ’ল প্ল্যাংক কাল। বিজ্ঞানী প্ল্যাংক বলেছেন, মহাবিশ্বের শুরুতে এর স্থায়িত্বকাল ছিল ০ সেকেন্ড থেকে ১০-৪৩ সেকেন্ড এবং মহাবিশ্ব ১০-৩৫ মিটার দৈর্ঘ্য এলাকা জুড়ে ছিল। তখন মহাবিশ্বের সবকিছু একত্রিত ছিল। মহাবিশ্বে চার ধরনের বলের অস্তিতব রয়েছে যথা- মহাকর্ষ বল, তাড়িতচৌম্বক বল, দুর্বল নিউক্লিয় বল, সবল নিউক্লিয় বল। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যে, তখন এই চারটি বল একটি মৌলিক বলরূপে কেন্দ্রীভূত ছিল। ঐ অবস্থা হ’তে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ শুরু হয়। যাকে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন বিগ ব্যাং। জর্জ লেমাইটারকে বিগ ব্যাং মডেলের জনক বলা হয়।

আল্লাহ বলেন, أَوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاءِ كُلَّ شَيْءٍ حَيٍّ أَفَلَا يُؤْمِنُونَ، ‘অবিশ্বাসীরা কি দেখে না যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল দু’টি সংযুক্ত ছিল। অতঃপর আমরা উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং আমরা পানি দ্বারা সকল প্রাণবান বস্ত্তকে সৃষ্টি করলাম। এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?’ (আম্বিয়া ২১/৩০)

উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বিগ ব্যাং মডেল সম্পর্কে তার বান্দাদের অবহিত করেছেন। উক্ত আয়াতে আরো বলা হচ্ছে ‘অবিশ্বাসীরা কি ভেবে দেখে না’। আর আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, যারা ইসলামকে অস্বীকার করে তারাই বিগ ব্যাং মডেল সম্পর্কে পৃথিবীবাসীর নিকট উপস্থাপন করছেন। আল্লাহ বলেন, إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ ‘অবশ্যই এতে আল্লাহর নিদর্শন সমূহ রয়েছে চিন্তাশীল ব্যক্তিদের জন্য’ (যুমার ৩৯/৪২)

উপরে আমরা দু’টি আয়াত সম্পর্কে আলোকপাত করেছি, যাতে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ এবং মহাবিশেবর যাত্রা সম্পর্কে বলা হয়েছে। আরো আলোচনা করা হয়েছে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ এবং মহাবিশ্বের উৎপত্তি সম্পর্কে যে তত্ত্ব-প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন তা সম্পর্কে।

এবার আসুন একটু চিন্তা করি। বিন্দু হ’তে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ শুরু হ’ল, সম্প্রসারিত হ’তে হ’তে তৈরী হ’ল : গ্রহ, উপগ্রহ, ধুমকেতু, উল্কা, নক্ষত্র, গ্রহাণু, গ্যালক্সি। প্রত্যেকের রয়েছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য। প্রশ্ন হ’ল- কে এই সম্প্রসারণ শুরু করলেন? কে সম্প্রসারণ করেই যাচ্ছেন? কে পৃথিবী এবং আসমানকে পৃথক করলেন? আবার একটু চিন্তা করি আমরা আসমানের দিকে তাকালে দেখতে পাই সূর্য, যা ২৫ দিনে নিজ অক্ষে একবার প্রদক্ষিণ করে। আল্লাহ বলেন,وَهُوَ الَّذِي خَلَقَ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ كُلٌّ فِي فَلَكٍ يَسْبَحُونَ، ‘তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। প্রত্যেকেই আকাশে (নিজ নিজ কক্ষ পথে) সন্তরণশীল’ (আম্বিয়া ২১/৩৩)

আল্লাহ তা‘আলা আগেই আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন সূর্য নিজ অক্ষ প্রদক্ষিণ করছে। এমনকি চাঁদ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে নিজ অক্ষে প্রদক্ষিণ করতে ২৭ দিন সময় লাগে। সুর্যের চারিদিকে যা ঘুরে তা হ’ল গ্রহ। তাদের রয়েছে নিজস্ব উপবৃত্তাকার কক্ষপথ, সুনির্দিষ্ট সময়। যেমন- পৃথিবীর সূর্যের চারিদিকে প্রদক্ষিণ করতে ৩৬৫ দিন সময় লাগে, মঙ্গল গ্রহের লাগে ৬৮৭ দিন। গ্রহকে কেন্দ্র করে ঘুরছে উপগ্রহ যেমন- চাঁদ হ’ল পৃথিবীর উপগ্রহ। রয়েছে ধুমকেতু যা ৭৬ বছরে একবার দেখা যায়, এর এক অংশ লেজের মত অন্য অংশ মাথার মত। রয়েছে উল্কা, যা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করলে আগুন ধরে যায় এবং আমরা মাঝে মাঝে আসমানে আগুনের গোলার মত দেখতে পাই। এত সুনিপণ এবং সুশৃঙ্খল সৃষ্টি কে করেছে?

যদি আপনা-আপনি হ’ত অবশ্যই এত সুশৃঙ্খল হ’ত না। এজন্যই আল্লাহ বলেছেন, অবিশ্বাসীরা কি ভেবে দেখে না? এতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। যিনি কুরআনুল হাকীমে মহাবিশ্বের এতগুলো তথ্য সূক্ষ্মভাবে প্রদান করেছেন তিনিই এসব কিছুর স্রষ্টা। যদি তিনি ব্যতীত অন্য কোন স্রষ্টা থাকত তবে এতে অনেক গরমিল পাওয়া যায়।

আল্লাহ বলেন, أَمْ جَعَلُوا لِلَّهِ شُرَكَاءَ خَلَقُوا كَخَلْقِهِ فَتَشَابَهَ الْخَلْقُ عَلَيْهِمْ قُلِ اللهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ وَهُوَ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ ‘তারা কি আল্লাহর জন্য এমন সব শরীক নির্ধারণ করেছে যারা তাঁর সৃষ্টির মত সৃষ্টি করেছে? যে কারণে ঐসব সৃষ্টি তাদেরকে বিভ্রান্তিতে ফেলেছে? বলে দাও, আল্লাহ সকল বস্ত্তর সৃষ্টিকর্তা। তিনি এক ও পরাক্রান্ত’ (রা‘দ ১৩/১৬)

অতএব কুরআনের মহাবিশ্ব সংক্রান্ত আয়াত আমাদের নিকট সত্য প্রমাণিত হ’ল, যা মুসলিমদের অন্তর প্রশান্ত করে এবং ঈমান বৃদ্ধি করে। আমরা যারা দ্বীন নিয়ে গাফেল, পরকাল নিয়ে কোন চিন্তা-ভাবনা করি না, তারা যদি একটু ভেবে দেখি তাহ’লে দেখতে পাবো যে, এই কুরআনই পরকালের কঠিন আযাবের সংবাদ আমাদের দিয়েছে। অতএব দুনিয়া সংশ্লিষ্ট কুরআনের জ্ঞান যেরূপ সত্য একইরূপ পরকাল সংক্রান্ত জ্ঞানও অভ্রান্ত সত্য। তাই পরকালের কঠিন আযাব থেকে বাঁচার জন্য আমাদেরকে এখনই সতর্ক হ’তে হবে।

তথ্যসূত্র : (১) উচ্চ মাধ্যমিক পদার্থ বিজ্ঞান, ২য় পত্র, অধ্যায়ঃ জ্যোতির্বিজ্ঞান (২) A Brief of History of Time by Stephen Hawking (৩) The Creation of Universe by George Gamow. [ক্রমশঃ]






কিয়ামত আসন্ন ও অবশ্যম্ভাবী - মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম
মানব জাতির প্রতি ফেরেশতাদের দো‘আ ও অভিশাপ (পূর্ব প্রকাশিতের পর) - মুহাম্মাদ আবু তাহের, পরিচালক, কিউসেট ইনস্টিটিউট, সিলেট।
আক্বীদা ও আহকামে হাদীছের প্রামাণ্যতা (৭ম কিস্তি) - মীযানুর রহমান মাদানী
প্রসঙ্গ : মাসিক আত-তাহরীক - মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম প্রধান
প্রাক-মাদ্রাসা যুগে ইসলামী শিক্ষা (শেষ কিস্তি) - আসাদুল্লাহ আল-গালিব (শিক্ষার্থী, ইংরেজী বিভাগ, ২য় বর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)।
ঈদে মীলাদুন্নবী - আত-তাহরীক ডেস্ক
আশূরায়ে মুহাররম - আত-তাহরীক ডেস্ক
সমাজ সংস্কারে ইমামগণের ভূমিকা - ইমামুদ্দীন বিন আব্দুল বাছীর
খলীফা বা আমীর নিযুক্ত করা কি যরূরী? - ড. নূরুল ইসলাম
ঈদায়নের কতিপয় মাসায়েল - আত-তাহরীক ডেস্ক
মোবাইল ব্যবহারের আদব ও সতর্কতা - ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম
যাকাত ও ছাদাক্বা - আত-তাহরীক ডেস্ক
আরও
আরও
.