স্বদেশ
প্রকৃতিবান্ধব ৫০ জাতের দেশীয় ধান দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে
গোটা দেশ থেকে প্রকৃতিবান্ধব প্রায় ৫০ জাতের দেশীয় ধান হারিয়ে যাচ্ছে। এক সময় দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে নানা গন্ধের এসব দেশীয় জাতের ধানের আবাদ বেশী হ’ত। উৎপাদন খরচ কম, মানবদেহের জন্য উপকারী ও সুস্বাদু পিঠা-পায়েস, খই-মুড়ি, চিড়া-মুড়কি তৈরী হ’ত বলে কৃষকরা এসব ধান চাষে আগ্রহী ছিল। বর্তমানে কৃষি গবেষণায় উচ্চ ফলনশীল (উফশী হাইব্রিড) জাতের ধান চাষ বেশী লাভজনক ভেবে কৃষকরা সেদিকে ঝুঁকে পড়ায় ক্রমান্বয়ে দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতিবান্ধব দেশীয় ধান। প্রায় হারিয়ে যাওয়া ধানের মধ্যে গৌরিকাজল, ধানাকান্ধি, মহিষান্ধি, লক্ষ্মীলতা, নোড়াইসাটে, দীঘা, হাসবুরালে, ভেড়োনটা, মানিকদীঘা, খেয়ামটর, হাসিমকলম, ফলকচু, পঙ্খিরাজ, ঝিঙেশাল, দেবমণি, দুধমণি, কালাবয়রা, গন্ধকোস্তর, আশ্বিনা-দীঘা, আশ্বিনা মালভোগ, দুধকলম, কাজলাদীঘি, বালামকোপা, সোনারগাঁ, টেপা, গাজীরভোগ, হরিণমুদ্রা, রাজাশাল, কাটারিভোগ, বাদশাভোগ, সোনামুখি, যাদুরফলা ও আউশ উল্লেখযোগ্য।
দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে বছরে এক লাখ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে
-দুদক চেয়ারম্যান
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেছেন, দুর্নীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে বছরে এক লাখ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। এজন্য দুদক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষে একা দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। দুর্নীতি দমনের জন্য দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা। মন্ত্রী-এমপিদের দুর্নীতির ঊর্ধ্বে থেকে দুর্নীতি দমনের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকতে হবে। গত ৩১ ডিসেম্বর দুদক কর্মকর্তাদের এক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে তিনি একথা বলেন।
মোট জিডিপির এক শতাংশ ব্যয় হয় ধূমপানের পেছনে
দেশের দুই কোটি ১৯ লাখ মানুষ ধূমপান করছে। দেশের মোট জিডিপির এক শতাংশ ব্যয় হচ্ছে কেবল ধূমপানের পেছনে। ধূমপান সহ বিভিন্ন ধরনের তামাক ব্যবহারের কারণে হৃদরোগ, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত মানুষের হারও বাড়ছে। ১৫ বছর ও তার বেশী বয়সীদের মধ্যে তামাক গ্রহণের প্রবণতা বেশী। ‘গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোবাকো সার্ভে’ (গ্যাটস) ও বাংলাদেশ প্রতিবেদন ২০০৯-এ এসব তথ্য দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের ১৫ বছর ও তার অধিক বয়সীদের ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশই তামাকে আসক্ত। তামাকে আসক্ত নারী-পুরুষের সংখ্যা শহরের চেয়ে গ্রামে বেশী। প্রতিদিন তামাক গ্রহণ করে এমন মানুষের সংখ্যা এক কোটি ৯৯ লাখ। দেশে দুই কোটি ৫৯ লাখ মানুষ অন্যান্য জর্দা ও সাদা পাতার মতো তামাক গ্রহণ করছে। এসব তামাক ব্যবহারকারীদের প্রায় ২৮ শতাংশই নারী।
দেশে প্রাপ্তবয়ষ্ক জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত
বর্তমানে বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত। বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে একজন যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়। ১৫ সেকেন্ডে একজন মারা যায়। প্রতিবছর ৯৩ লাখের বেশী লোক যক্ষ্মারোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ২০ লাখ লোক প্রতিবছর মারা যাচ্ছে। দেশে প্রাপ্তবয়ষ্ক জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ মানুষই যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত। সর্বাধিক যক্ষ্মা আক্রান্ত বিশ্বের ২২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ।
বাঞ্ছারামপুরে বসুন্ধরার দশ লাখ টাকা সূদমুক্ত ঋণ বিতরণ : একটি শুভ উদ্যোগ
দেশের বৃহত্তম শিল্প গোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন গত ১৭ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেলার বাঞ্ছারামপুর উপযেলার দুর্গারামপুরসহ সাতটি গ্রামের দুশ’ দরিদ্র ও বিত্তহীন মানুষের মধ্যে দশ লাখ টাকার সূদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করে। ইতিপূর্বে এ উপযেলার ৯টি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রামের ২ হাযার ২০৭ জন দরিদ্র ও বিত্তহীন পরিবারকে পর্যায়ক্রমে ১ কোটি ২৩ লাখ ৬২ হাযার ৫শ’ টাকা সূদমুক্ত ঋণ বিতরণ করেছে। উল্লেখ্য, ফাউন্ডেশনের নিয়ম অনুযায়ী ঋণ গ্রহীতাকে ঋণ গ্রহণের পর ৩ মাস কিস্তি দিতে হয় না। এই প্রক্রিয়ায় চতুর্থ মাস থেকে সপ্তাহে একশত টাকা করে অর্থাৎ প্রতি মাসে ৪ শত টাকা হারে ফাউন্ডেশনে সূদবিহীন আসল টাকা ফেরত দেয়া হয়। এভাবে ৫০ এবং ৭৫ কিস্তিতে গৃহীত ঋণ সম্পূর্ণ পরিশোধ করে একজন ঋণগ্রহীতা নতুন করে বর্ধিত পরিমাণ ঋণ সুবিধা লাভ করে থাকেন।
ঢাকার জনসংখ্যা এক কোটি ৩০ লাখ; প্রতিদিন আসছে ২১৩৬ জন
‘জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান’ (নিপোর্ট) বলছে, ঢাকা শহরে প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ লোকের বাস। এক বর্গকিলোমিটার জায়গায় ২৭ হাযার ৭০০ মানুষ বাস করে। প্রতিদিন নতুন করে দুই হাযার ১৩৬ জন ঢুকে পড়ছে এই শহরে। আর বছর শেষে যুক্ত হচ্ছে সাত লাখ ৮০ হাযার নতুন মানুষ। যে হারে মানুষ বাড়ছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাগরিক সুবিধা বাড়ছে না। এতে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও যানজটের সমস্যা দিন দিন প্রকট হচ্ছে।
উপকূলে ১শ’ বছরে ৭শ’ ঘূর্ণিঝড়
১৮৯১ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ১শ’ বছরে ছোট-বড় প্রায় ৭শ’ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে উপকূলে। যার প্রায় প্রতিটিই সাগর উপকূলীয় যেলা পটুয়াখালীতে আঘাত হানে। এছাড়া সম্প্রতি আঘাত হানা সিডর ও আইলায় ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন এ জনপদের মানুষ। অন্য দিকে ১৭৯৩ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত সময়কালে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি করেছে এমন ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ৪৫টি। একটি গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গজলডোবা ব্যারেজের প্রভাবে তিস্তা নদী খালে পরিণত
স্রোতস্বিনী তিস্তার বাংলাদেশ প্রবেশপথে ভারতের গজলডোবায় দেওয়া বাঁধের প্রভাব পড়ছে লালমণিরহাটের পরিবেশ ও কৃষির উপর। এ অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা ছোট-বড় প্রায় ৩০টি নদী এখন মৃতপ্রায়। তিস্তার পানি ভারতের একতরফা প্রত্যাহারের ফলে নদীপাড়ের পরিবেশ গেছে পাল্টে। পানির অভাবে তিস্তা সেচ প্রকল্প পড়ে গেছে বিপর্যয়ের মধ্যে। পানির তীব্র সংকটে নদী তীরবর্তী এলাকায় কৃষি জমিতে দেখা দিয়েছে সেচ সংকট। শুধু তাই নয়, এ বাঁধের কারণে তিস্তা নদীবেষ্টিত লালমণিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও রংপুর যেলায় মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, ভারত তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় ১শ’ কিলোমিটার উজানে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি যেলার গজলডোবায় একটি বাঁধ নির্মাণ করেছে। এর গেট রয়েছে ৫৪টি। দৈর্ঘ্য ৯২১.৫৩ কিলোমিটার। এ বাঁধ নির্মাণ করে ভারত ২ হাযার ৯১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ খালের মাধ্যমে ১ হাযার ৫শ’ কিউসেক পানি মহানন্দা নদীতে প্রবাহিত করছে।
দেশে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ ১০ হাযার ১৮৭ টাকা
বর্তমানে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ১০ হাযার ১৮৭ টাকা (১৪৯ দশমিক ৫৪ মার্কিন ডলার) বলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহীত গত ১২ জানুয়ারী সংসদে জানিয়েছেন। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ৫ দশমিক ৯ ভাগ।
মাত্র ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন কৃষকরা
ব্যাংকে মাত্র ১০ টাকা নগদ জমা দিয়ে আমানত হিসাব খুলতে পারবেন কৃষকরা। এতে করে কৃষকদের জন্য ব্যাংকিং সেবাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোকে কৃষি ঋণ বিতরণের জন্য আলাদা শাখা খোলার নির্দেশ দেয়ার পর এবার সহজে ব্যাংক হিসাব খোলার নির্দেশ দেয়া হ’ল। এখন থেকে সকল রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকে মাত্র ১০ টাকা জমা দিয়েই ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন কৃষকরা। আর এই হিসাবে ন্যূনতম স্থিতি রাখার কোন বাধ্যবাধকতা থাকবে না। একই সাথে কৃষকদের এই হিসাব থেকে কোন প্রকার চার্জ অথবা ফিস আদায় করতে পারবে না ব্যাংক।
আইন-শৃংখলার বেহাল দশা
চট্টগ্রাম বন্দর থানার সামনে সরকার দলীয় এমপি-র ৩ ঘণ্টা নীরবে অবস্থান প্রতিবাদ শেষে হত্যা মামলা নিল পুলিশ
আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ নাঈমা বেগম (৩২)-কে তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী স্বামী ও স্বজনেরা পিতার বাড়ী থেকে টাকা এনে দিতে না পারায় পিটিয়ে হত্যা করে ঘরের মধ্যে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে চলে যায়। অতঃপর পুলিশ দ্রুত লাশ মর্গে পাঠিয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করে। পরে নিহতের বোন ও প্রতিবেশীদের থানায় গিয়ে বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও থানা তাদের হত্যা মামলার অভিযোগ গ্রহণ করেনি। বরং উল্টা ধমকিয়ে বের করে দিয়েছে। ফলে পরের দিন সকালে স্থানীয় এমপি আবদুল লতীফ থানায় গিয়ে নীরব প্রতিবাদ শুরু করলে ৩ ঘণ্টা পর তারা হত্যা মামলা নিতে সম্মত হয়। নিহতের বড় বোন বলেন, তিন মাস পূর্বে একবার বোনের স্বামীকে উক্ত থানার পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে তার বোন নগদ ৬০ হাযার টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনে’।
বিদেশ
হাইতিতে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্প; নিহত দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে
স্মরণকালের ভয়াবহ ৭ মাত্রার ভূমিকম্প ১২ জানুয়ারী স্থানীয় সময় বিকেল ৪-টা ৪৫ মিনিটে হাইতিতে আঘাত হানে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্স থেকে ১৫ কিঃমিঃ দক্ষিণ-পশ্চিমে। প্রথম ভূমিকম্পের কিছুক্ষণের মধ্যেই ৫.৯, ৫.৫ ও ৫.১ মাত্রায় আরও তিনটি মৃদু ভূকম্পন অনুভূত হয়। হাইতির ইতিহাসে গত ২শ’ বছরেরও বেশী সময়ের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ক্যারিবীয় এই রাষ্ট্রটি। নেমে এসেছে চরম মানবিক বিপর্যয়। নিহত হয়েছে দুই লাখের বেশী মানুষ। আহত হয়েছে ১ লাখ ৯৪ হযার। গৃহহীন হয়ে পড়েছে ১০ লাখ লোক। নিহতদের মধ্যে আর্জেন্টিনা, অষ্ট্রিয়া, ব্রিটেন, কানাডা, চীন, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশের লোকও রয়েছে। নিরন্ন বুভুক্ষ দুর্যোগ কবলিত বনু আদমের গগণবিদারী আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে দেশটির আকাশ-বাতাস। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে লাশের দুর্গন্ধ। ভূমিকম্পে প্রেসিডেন্টের বাসভবন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনের সদর দফতর, বিশ্বব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়সহ হাযার হাযার সরকারী-বেসরকারী অফিস-আদালত ও বাসভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পের করাল গ্রাস থেকে বেঁচে যাওয়া লাখ লাখ মানুষ খোলা আকাশের নীচে রাত্রি যাপন করছে। ত্রাণের জন্য চলছে হাহাকার। বিভিন্ন দেশ সেখানে ত্রাণ পাঠালেও প্রয়োজনের তুলনায় তা নিতান্তই অপ্রতুল। খাদ্যের অভাবে লুটপাটের ঘটনাও ঘটছে। পানির অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে। মুদ্রার পরিবর্তে পানিই হয়ে উঠেছে বিনিময়ের মাধ্যম। সবমিলিয়ে সাক্ষাৎ এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে দেশটি। জাতিসংঘের পাঠানো তিন হাযার সেনাদলের ব্যাপক উদ্ধার তৎপরতার ফলে ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়া বহু মানুষ জীবিত উদ্ধার পেয়েছে। ৭ দিনের মাথায় ৯১ জন, ৮ দিনের মাথায় আরও ৩৫ জন তন্মধ্যে ৬৯ বছরের এক বৃদ্ধা মহিলা এবং ১০ দিনের মাথায় ৮২ বছরের এক মহিলা জীবিত উদ্ধার পেয়েছেন। সর্বশেষ প্রাপ্ত হিসাব অনুযায়ী মোট ১৩২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে কাউকে জীবিত পাওয়ার আশা ক্ষীণ হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে কিছু দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। কিন্তু পুনরায় ৫ মাত্রার মৃদু ভূমিকম্পে মানুষ সবাই রাজধানী ছেড়ে পালিয়েছে।
হাইতির ভূমিকম্প যুক্তরাষ্ট্রের শকওয়েভ পরীক্ষার ফসল-শ্যাভেজ ঃ এদিকে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ বলেছেন, হাইতির ভূমিকম্প কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ঘটানো একটি কৃত্রিম ঘটনা। শ্যাভেজ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘শকওয়েভ’ নামে এমন একটি ভূমিকম্পন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে, যার মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে ভূমিকম্প ঘটানো সম্ভব। এছাড়া এই ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে বন্যা, খরা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটানো যেতে পারে। ফক্স নিউজে প্রচারিত খবরে বলা হয়, মার্কিন সরকার আলাস্কায় এই ধরনের একটি পরিবেশগত গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে এবং ষড়যন্ত্রমূলক তত্ত্ব নিয়েই এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী নারী নির্যাতনের চালচিত্র
দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতি ৬ ঘণ্টায় একজন মহিলাকে মেরে ফেলা হচ্ছে। ভারতে ২০০৭ সালের জরিপ অনুযায়ী যৌতুকের কারণে প্রতিদিন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে ২২ জন নারীকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যত নারী মারা যায় তার এক-তৃতীয়াংশ মৃত্যুবরণ করে স্বামী বা বন্ধুর হাতে। গুয়াতেমালায় প্রতিদিন একজন মহিলাকে মেরে ফেলা হচ্ছে বিশেষ কোন কারণ ছাড়াই। ইকুয়েডরে ৩৭ শতাংশ স্কুলছাত্রী জানিয়েছে, তাদের উপর যৌনপীড়ন করা হয়। এক্ষেত্রে স্কুল শিক্ষকদের তারা দায়ী করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোতে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ মহিলা জানিয়েছেন, কর্মস্থলে তারা যৌন হয়রানির শিকার হন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১২ থেকে ১৬ বছরের স্কুল ছাত্রীরা যৌন হয়রানির শিকার হয় স্কুলগুলিতেই। প্রতিবছর প্রায় ৮ লাখ মানুষকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে পাচার করা হয়। তার মধ্যে ৮০ শতাংশ হ’ল অল্প বয়ষ্কা মেয়ে। এদের সবার শেষ যাত্রাস্থল হয় পতিতালয়।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কমিটির রিপোর্ট
কাশ্মীরকে স্বায়ত্তশাসন প্রদানের সুপারিশ
ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের নিয়োগ করা একটি উপদেষ্টা কমিটি ভারত শাসিত কাশ্মীরকে স্বায়ত্তশাসন দেবার পক্ষে সুপারিশ করেছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক এস সাগির আহমাদের নেতৃত্বাধীন ঐ কমিটি যতদূর সম্ভব কাশ্মীরে স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে মত দেয়। এখানে স্বাধীনতাকামী মুসলিম মুজাহিদরা ২০ বছরেরও বেশী সময় ধরে নয়াদিল্লীর শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ এবং ভারতের অন্তর্ভুক্তির পর থেকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ রাজ্যকে যোগাযোগ, প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র ছাড়া আর সব বিষয়ে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দেয়া হয়। কয়েক বছর আগে এ ক্ষমতা খর্ব করা হয়। উল্লেখ্য, ড. সিং ২০০৬ সালে কাশ্মীরের উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার জন্য উক্ত উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে।
চীনে বিশ্বের সর্বোচ্চ গতির ট্রেন চালু
চীনে গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে বিশ্বের সবচেয়ে গতিসম্পন্ন ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়েছে। গড়ে ঘণ্টায় সাড়ে ৩শ’ কিলোমিটার গতিসম্পন্ন এ ট্রেনটি চীনের উইহান থেকে গুয়াংজু পর্যন্ত চলাচল করবে। উইহান হচ্ছে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় একটি মহানগরী এবং গুয়াংজু হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশের একটি বাণিজ্যিক এলাকা। এই দু’টি রেল স্টেশনের মধ্যেকার দূরত্ব হচ্ছে এক হাযার ৬৮ কিলোমিটার এবং এই পথ পাড়ি দিতে যেখানে আগে সাড়ে ১০ ঘণ্টা সময় লাগত এখন সেখানে প্রয়োজন হবে মাত্র তিন ঘণ্টা।
ফ্রান্সে বোরকা পরলে হাযার ডলার জরিমানা
ফ্রান্স বোরকার বিরুদ্ধে একটি কঠোর আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। যেসব নারী বোরকা পরে জনসমক্ষে যাবেন, এই আইনের বলে তাদের ৭৫০ ইউরো (এক হাযার ৮০ মার্কিন ডলার) জরিমানা করা যাবে। আর এই বোরকা যদি নারীরা তাদের স্বামীদের কিংবা পরিবারের অন্য কোন সদস্যের চাপের মুখে পরতে বাধ্য হন তবে ঐ স্বামী কিংবা পরিবারের সদস্যদের দ্বিগুণ জরিমানা গুনতে হবে। ফরাসী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি দীর্ঘদিন ধরে নারীদের বোরকা পরার তীব্র বিরোধিতা করে আসছেন। বোরকার বিরুদ্ধে প্রণয়ন করতে যাওয়া এই আইনটির খসড়া জাতীয় পরিষদে প্রেরণ করা হবে শ্রীঘ্রই।
চীনে ২ কোটি ৪০ লাখ তরুণের বউ জুটবে না
চীনে ২০২০ সাল নাগাদ ২ কোটি ৪০ লাখেরও বেশী তরুণের ভাগ্যে বউ জুটবে না। মেয়ে শিশুর ভ্রুণ হত্যাই এর অন্যতম কারণ। সরকারের চাইনিজ একাডেমী অব সোশ্যাল সায়েন্সের এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, নতুন জন্ম নেয়া শিশুদের ক্ষেত্রে লিঙ্গ অসমতা ১শ’ ৩০ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশটিতে মারাত্মক জনতাত্ত্বিক সমস্যা তৈরী করবে। গবেষণাপত্রে লিঙ্গ অসমতা জটিল আকার ধারণ করার জন্য ছেলে সন্তান বেশী অগ্রাধিকার পাওয়ায় সর্বত্র বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় লিঙ্গ নির্দিষ্ট গর্ভপাতকেই দায়ী করা হয়েছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত ২০০৫ সালের উপাত্ত অনুযায়ী দেশটিতে নারী-পুরুষের হার ছিল প্রতি ১শ’ নারীর জন্য ১শ’ ১৯ জন পুরুষ।
[আল্লাহর নির্ধারিত জন্ম বিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ারই শাস্তি এগুলি। অতএব হে মানুষ! সাবধান হও। - (স.স.)]
বছরে সিগারেটে মারা যায় ৫০ লাখ মানুষ
প্রতি বছর সিগারেটের কারণে ৫০ লাখেরও বেশী মানুষ মারা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ধূমপান রোধ করার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হ’লে এই সংখ্যা আরো বেড়ে যেতে পারে। আশংকা করা হচ্ছে, ধূমপানের কারণে বর্তমান মৃত্যুর হার অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালে মৃতের সংখ্যা ৮০ লাখে দাঁড়াতে পারে। তবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মৃত্যুর হার বেশী। উল্লেখ্য, প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের কারণে মারা যায়।
চলে গেলেন জ্যোতি বসু
ভারতের প্রবীণ বামপন্থী রাজনীতিবিদ এবং পশ্চিমবঙ্গের সুদীর্ঘ ২৩ বছরের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু গত ১৭ জানুয়ারী সকাল ১১-টা ৪৭ মিনিটে কোলকাতার একটি বেসরকারী হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। জ্যোতি বসুর পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বারদি গ্রাম। বাল্য ও কৈশোরের স্মৃতিধন্য এই গ্রাম ও বাংলাদেশের কথা তিনি কখনোই ভুলতে পারেননি। কোলকাতায় তার জন্ম ১৯১৪ সালে। কোলকাতার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লরেটো, সেন্ট জেভিয়ার্স ও প্রেসিডেন্সী কলেজে লেখাপড়া শেষ করে তিনি লন্ডনে যান। সেখান থেকে ১৯৪০ সালে ব্যারিষ্টারি পাস করে দেশে ফিরে আসেন। তিনি ১৯৪৬ সালে প্রথমবারের মতো নির্বাচনে দাঁড়িয়ে বঙ্গীয় আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর স্বাধীন ভারতে যতবার রাজ্যসভায় নির্বাচন হয়েছে, ততবারই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবং একবার ব্যতীত প্রতিবারই নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৬৭ ও ১৯৬৯ সালে গঠিত অকংগ্রেসী রাজ্য সরকারের কোয়ালিশন মন্ত্রীসভায় তিনি উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন। এরপর ১৯৭৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সময়ে তিনি পশ্চিমবঙ্গের সিপিআই (এম) মন্ত্রীসভার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
সহস্রাব্দের দীর্ঘতম সূর্যগ্রহণ
বিশ্বজুড়ে সহস্রাব্দের দীর্ঘতম বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা গেছে গত ১৫ জানুয়ারী। গ্রাসের পর সূর্যকে একটি সোনালী রিংয়ের মতো দেখা গেছে। আগামী এক হাযার বছরেও আর এরকম সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে না। মালদ্বীপকে সূর্যগ্রহণ দেখার সবচেয়ে ভাল জায়গা হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানের ভাষ্য অনুযায়ী, চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে চলে এলেই গ্রহণ হয়। চাঁদের ছায়া পৃথিবীর উপর পড়লে পৃথিবীর সেই অংশ থেকে সূর্যকে দেখা যায় না।