সাতক্ষীরার
শ্যামনগর উপযেলায় রয়েছে ১১৬০ জন বাঘবিধবা। বাঘের হামলায় স্বামী মারা গেলে
তাকে স্থানীয়ভাবে বলে বাঘবিধবা। এই বিধবাদের সমাজে অপয়া (অশুভ) হিসাবে দেখা
হয়। তাদের দ্বিতীয় বিবাহ হয় না। সন্তান না থাকলে বাকি জীবন কাটে দুর্বিষহ।
স্থানীয় একটি বেসরকারী সংস্থার হিসাব মতে, এই উপযেলায় ১১৬০ জন বাঘবিধবা
আছে। স্বাধীনতার পর থেকে তারা বিভিন্ন সময় বিধবা হয়েছে। তাদের স্বামীরা
সুন্দরবনে মধু, গোলপাতা বা মাছ আহরণ করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে নিহত হয়েছে।
আবার কুমিরের হামলায় মরেছে অনেকে।
এমনই এক বিধবা বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের সীতা রাণী (৫৫)। স্বামী ও ছেলে দু’জনেই বাঘের হামলায় মারা গেছে। ছেলের বউ আছে। তাদের দিন কাটে নদীতে কাঁকড়া ও রেণু ধরে। নদীতে না গেলে তার পেটে খাবার পড়ে না। যা পান তাতেও পেট চলে না। তাই খাবারের জন্য রীতিমত যুদ্ধ করতে হয়। এর ওপর স্বামী হারানোর পর থেকে সইতে হচ্ছে নানা অপবাদ। কারণ স্বামীকে বাঘে ধরলেই নানা রকম সামাজিক কুসংস্কার ঘিরে ধরে। শুনতে হয় অপয়া, অলক্ষ্মীসহ নানা অপবাদ। অনেককে ছাড়তে হয় স্বামীর ভিটা। এ ব্যাপারে শ্যামনগর উপযেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বলেন, অসহায় বিধবাদের জীবনমানের উন্নতি ঘটাতে সরকারীভাবে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ভাতা ও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা সহ কুসংস্কার দূরীকরণেও বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে।
[বাঘ-বিধবারা যে অপয়া নয়, প্রথমে সে বিষয়ে কুরআন ও হাদীছের মাধ্যমে গণ সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বিধবা বিবাহের ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সাথে পর্দার মধ্যে থেকে তারা যাতে কর্মসংস্থান করতে পারে তার সুব্যবস্থা সরকারী ভাবে কিংবা বেসরকারীভাবে দ্বীনদার ব্যক্তিগণের মাধ্যমে করতে হবে (স.স.)]