মিসরের অধিকাংশ মানুষ ইসলামী শাসনের পক্ষে
মিসরের অধিকাংশ নাগরিক দেশটিতে ইসলামী শাসন চায় বলে সম্প্রতি দেশটিতে চালানো এক জনমত জরিপে বলা হয়েছে। আধা-সরকারী ‘আল-আহরাম’ পত্রিকার পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, মিসরের শতকরা ৬০ ভাগ মানুষ ইসলামী শাসন ব্যবস্থা চায়। অন্যদিকে শতকরা ২৫ ভাগ মানুষের পছন্দ শুধুমাত্র গণতান্ত্রিক সরকার। শতকরা মাত্র ৪ ভাগ মানুষ সেক্যুলার শাসন ব্যবস্থার পক্ষে মত দিয়েছে। এছাড়া শতকরা তিন ভাগ মানুষ মনে করে, মিসরের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সামরিক শাসন যরূরী। তীব্র গণআন্দোলনের মুখে সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনী মুবারকের পতনের দু’মাসেরও বেশী সময় পরে মিসরে এ জনমত জরিপ চালানো হয়।
ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু
৯/১১-এর হোতা বলে কথিত আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেন গত ২রা মে রাতে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের একটি বাড়িতে মার্কিন সেনা হামলায় নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ৯০ কিঃমিঃ দূরের সেনাশহর অ্যাবোটাবাদের ঐ দোতলা বাড়িতে গত ৬ বছর ধরে নাকি তিনি বসবাস করে আসছিলেন। ওসামাকে হত্যার দায়িত্ব পালন করে মার্কিন বিশেষ কমান্ডো বাহিনী ‘ইউএস নেভি সিল’। বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের এক নম্বর শত্রু ওসামাকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল দেশটি। অবশেষে গত বছর আগষ্ট মাসে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ উক্ত বাড়িটিকে শনাক্ত করে। তখন থেকে তারা বাড়িটির দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছিল। অতঃপর ২রা মে গভীর রাতে আফগানিস্তান থেকে গোপনে পাকিস্তানী রাডারকে ফাঁকি দিয়ে ৭৯ সদস্যের মার্কিন মেরিন সেনার একটি দল চারটি হেলিকপ্টার নিয়ে অবতরণ করে ঐ বাড়ির আঙিনায়। মার্কিন সূত্র মতে মাত্র ৪০ মিনিটেই বিন লাদেন হত্যা অভিযান শেষ হয়। গুলী করে হত্যা করা হয় বিন লাদেন সহ অন্যদেরকে। এরপর তারা দ্রুত ওসামার লাশ হেলিকপ্টারে করে আফগানিস্তানে তাদের সেনাঘাঁটিতে নিয়ে যায়। অতঃপর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাকে আরব সাগরে মোতায়েন একটি সেনা জাহাযে স্থানান্তর করা হয় এবং বিন লাদেনের অনুসারীরা যাতে লাশকে ঘিরে ‘মাযার’ গড়ে তুলতে না পারে সেজন্য তার লাশ সাগরে সমাহিত করা হয়।
এদিকে ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী নানা জল্পনা-কল্পনার ডানা মেলছে প্রতিনিয়ত। বের হচ্ছে নিত্য-নতুন তথ্য। ‘পাকিস্তান অবজারভার’ পত্রিকায় গত ১২মে "Dead Osama was brought into Abbotabad and killed" শিরোনামে পত্রিকাটির ওয়াশিংটন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগেই ওসামাকে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন বরফ কফিনে ভরা ওসামার লাশ নিয়ে এসে অ্যাবোটাবাদের ঐ বাড়িতে হত্যার নতুন নাটকটি সাজায় যুক্তরাষ্ট্র। ঐ সূত্র মতে, আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটিতে ওসামার লাশ এতদিন সংরক্ষিত ছিল।
মার্কিন সামরিক ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সাময়িকী ‘ভেটেরান্স টুডে’র সিনিয়র সম্পাদক গর্ডন ডাফ বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নকল বিন লাদেনকে হত্যা করেছে। আসল বিন লাদেন বহু বছর আগেই রোগাক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এক মার্কিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিন লাদেন মারা যান বলে তিনি দাবী করেন। তিনি আরো বলেন, বিন লাদেনের অনুরূপ চেহারার এক ব্যক্তিকে এতদিন আটকে রেখে তাকে ২রা মে হত্যা করা হয়। ইরানের গোয়েন্দামন্ত্রী হায়দার মুছলেহী বলেছেন, মার্কিন অভিযানের অনেক আগেই বিন লাদেন রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে তার কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে। বিশ্লেষকগণ মনে করছেন, আফগানিস্তান থেকে পালাবার অজুহাত তৈরী করা, পাকিস্তানকে কোণঠাসা করে পারমাণবিক অস্ত্র দখল করা এবং আগামী নির্বাচনে ওবামার জয়ের পথ সুগম করার উদ্দেশ্যে এই নাটক সাজানো হয়েছে।