ইয়াসির আরাফাতকে বিষ প্রয়োগে হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য
ফিলিস্তীনের মরহূম প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতকে পোলোনিয়াম বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে। ২০০৪ সালের ১১ই নভেম্বর তাঁর মৃত্যুর পরই সন্দেহ জোরদার হয়। তারপর সুইজারল্যান্ডে পরিচালিত দীর্ঘ ৯ মাসের তদন্তের পর এ চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। অনলাইন আল-জাযীরা’র এক রিপোর্টে এ গবেষণার ফল প্রকাশ করা হয়। ইয়াসির আরাফাত মারা যাওয়ার ৮ বছর পরও প্রকৃতপক্ষে কিভাবে ফিলিস্তীনের এই মহান নেতা মারা গেছেন তা ছিল রহস্যের চাদরে ঢাকা। কেউ এ বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য দিতে পারেননি। ২০০৪ সালের ১২ই অক্টোবরে হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি ছিলেন সুস্থ। প্যারিসের সামরিক হাসপাতালে মৃত্যুর পর সেখানকার কর্তৃপক্ষ মরহূম প্রেসিডেন্টের ব্যবহার্য পোশাক তার স্ত্রী সুহার কাছে হস্তান্তর করেন। এ তথ্য দিয়ে ইনস্টিটিউট অব রেডিয়েশন ফিজিক্স অ্যাট ইউনিভার্সিটি অব লাওসানের প্রধান ফ্রাঁসোয়া বোকাড বলেন, ইয়াসির আরাফাতের ব্যবহৃত জিনিসপত্রের নমুনা থেকে বিষাক্ত পোলোনিয়ামের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। এদিকে প্রয়াত প্রেসিডেন্টের স্ত্রী সুহা তার স্বামীর দেহাবশেষ কবর থেকে তুলে পুনরায় পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন। ফিলিস্তীনের কর্মকর্তারা সে সময় বলেছিলেন, ইসরাঈল জনপ্রিয় এ ফিলিস্তীনী নেতাকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করেছে। তবে ২০০৫ সালে এক তদন্তে বিষ প্রয়োগে হত্যার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। সে রিপোর্টটিকে সন্দেহজনক মনে করেছিলেন অনেকেই। এদিকে ফিলিস্তীনী প্রেসিডেন্ট মাহমূদ আববাস আরাফাতের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ফরেনসিক তদন্ত করার অনুমতি দিয়েছেন।
সঊদী আরবের নতুন যুবরাজ সালমান
সঊদী আরবের নতুন যুবরাজ হিসাবে রিয়াদের গভর্ণর সালমানের নাম ঘোষণা করেছেন বাদশাহ আব্দুল্লাহ। গত ১৬ জুন সঊদী আরবের বাইরে মারা যান যুবরাজ নায়েফ বিন আব্দুল আযীয আলে সঊদ। ৭৮ বছর বয়সী সঊদকে গত বছরই সঊদী রাজসিংহাসনের উত্তরাধিকারী ঘোষণা করা হয়েছিল।
পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন রাজা পারভেজ আশরাফ
বিভিন্ন নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ক্ষমতাসীন পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা ও গিলানী সরকারের পানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফ। ২২ জুন রাতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে ৩৪২ আসনের মধ্যে ২১১টি ভোট পেয়ে তিনি ২৫তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট জারদারির বিরুদ্ধে সুইজারল্যান্ডের আদালতে দায়ের হওয়া অর্থ পাচারের মামলা আবার চালু করতে সুইজারল্যান্ড সরকারকে চিঠি লিখতে প্রধানমন্ত্রী গিলানীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। গিলানী সেই নির্দেশ পালন না করায় গত ২৬ এপ্রিল গিলানীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এজন্য আদালত তাঁকে ৩০ সেকেন্ডের প্রতীকী সাজা দেন। গিলানী এর বিরুদ্ধে আপিল না করায় আদালত গত ১৯ জুন তাঁকে প্রধানমন্ত্রী ও পার্লামেন্টের সদস্যপদে অযোগ্য ঘোষণা করেন।
আদালতের এ রায়ে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বস্ত্রমন্ত্রী মখদুম শাহাবুদ্দীনকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মনোনীত করে পিপিপি এবং বিকল্প প্রার্থী হিসাবে পিপিপির দুই জ্যেষ্ঠ নেতা কামারুয্যামান কারিয়া ও রাজা পারভেজ আশরাফকেও তালিকায় রাখা হয় এবং তারা মনোনয়নপত্রও দাখিল করেন। কিন্তু মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ঘণ্টা দুয়েকের মাথায় মখদুমের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। অতঃপর বিকল্প হিসাবে রাজা পারভেজ আশরাফকে নির্বাচন করা হয়।
বিপুল নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে মিসরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন
ব্রাদারহুড নেতা মুহাম্মাদ মুরসী নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত
মিসরের ঐতিহাসিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা মুহাম্মাদ মুরসী। গত ২৪ জুন রোববার মিসরের নির্বাচন কমিশন তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করে এবং ৩০ শে জুন তিনি শপথ গ্রহণ করেন। ইতিহাসের কি নির্মম পরিহাস! মাত্র দেড় বছর আগেও হোসনী মোবারক সরকারের আমলে যে মুরসী ছিলেন কারাগারে, তিনিই এখন মিসরের প্রেসিডেন্ট। আর মোবারক আজ কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্ঠে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন।
মুরসী ৫১ দশমিক ৭৩ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী হোসনী মোবারকের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আহমাদ শফীককে পরাজিত করেছেন। তাঁর এ জয়ে অনেকেই গণতান্ত্রিক মিসরের স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু দেশী-বিদেশী বিশ্লেষকেরা বলছেন, মুরসির পথ মোটেও সহজ হবে না। ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে তাঁকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আপসরফার পথ বেছে নিতে হবে। তবে তিনি কৌশলে আগাবেন বলে মনে হচ্ছে। কারণ ইতিমধ্যে তিনি একজন কপটিক খ্রিষ্টান এবং একজন মহিলাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন। এছাড়া গত ২৯ ও ৩০ জুন তারিখে তিনি তাহরীর স্কয়ারে এবং কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বক্তৃতা দেন তা একদিকে যেমন প্রকৃত ইসলামপন্থীদের হতাশ করেছে, তেমনি প্রমাণ করেছে যে, তিনি ইসলামী শরী‘আ আইন প্রতিষ্ঠার চিন্তা কোনভাবেই করছেন না। একইভাবে তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছেন, বর্তমান সময়ে ধর্মনিরপেক্ষতার কোন বিকল্প নেই।
এদিকে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আগে সুপ্রিম সামরিক কাউন্সিল নিজেদের হাতে অনেক ক্ষমতা কুক্ষিগত করে যে ডিক্রি জারি করেছে তাতে মুরসী কতটুকু স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে গেছে। সামরিক কাউন্সিলের ডিক্রি অনুযায়ী, যুদ্ধ ঘোষণার মতো সিদ্ধান্ত নিতে প্রেসিডেন্টকে জেনারেলদের অনুমোদন নিতে হবে। তাছাড়া সামরিক বিষয়াদিতে তিনি নাক গলাতে পারবেন না।
[কুফরী ব্যবস্থাকে গ্রহণ করে আর যাই হোক প্রকৃত ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় (স.স.)]
মালির সালাফী সংগঠন আনছারুদ্দীন শিরকের আড্ডাখানা গুঁডিয়ে দিল
সম্প্রতি মালির উত্তরাঞ্চলের দুই-তৃতীয়াংশে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে সালাফী বিদ্রোহী সংগঠন আনছারুদ্দীন এবং এমএনএলএ। অতঃপর তারা দখলীকৃত টিম্বুকটু শহরের ছূফী সাধকদের বড় বড় মাযারসমূহ ভেঙে ফেলতে শুরু করেছে। ইসলামী শরী‘আতের কট্টর অনুসারী এই সংগঠনটি মুসলিম ছূফী সাধকদের এসব সমাধিকে মূর্তি হিসাবে বিবেচনা করে। বিগত বছরগুলোতে আফগানিস্তান, মিসর ও লিবিয়ায় ছূফী সাধকদের বিভিন্ন সমাধিতে হামলা করেছিল এই কট্টর সালাফীরা। ইতিমধ্যে তারা সিদি মাহমূদ সমাধিসহ আরও দুটি স্তম্ভ সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলেছে।
মূলতঃ পুরো মালিতে ইসলামী শরী‘আ আইন চালু করতে এবং সকল প্রকার শিরকের মূলোৎপাটন চায় এই সালাফী সংগঠনটি।
[কবরকে সম্মান করা হয়। কিন্তু কবরে যখন পূজা হয়, তখন তা শিরকের কেন্দ্রে পরিণত হয়। জাহেলী আরবে বিভিন্ন সৎলোকদের কবরে এভাবে পূজা হ’ত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হযরত আলী (রাঃ)-কে নির্দেশ দেন, ‘তুমি কোন উঁচু কবরকে ছেড় না মাটি সমান না করা পর্যন্ত’ (মুসলিম হা/৯৬৯; ঐ মিশকাত হা/১৬৯৬ ‘জানায়েয’ অধ্যায়, ‘মৃতের দাফন’ অনুচ্ছেদ)। এই সব কবরকেন্দ্রিক মসজিদে ছালাত কবুল হয় না। কেননা এখানে কবরই মুখ্য, মসজিদ গৌণ। আর শিরক ও তাওহীদ কখনো একত্রে চলতে পারে না (স.স.)]