ষষ্ঠ
শতাব্দীতে নির্মিত স্থাপত্য হাইয়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরের ঘোষণা
দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। গত ১০ই জুলাই দেশটির
প্রশাসনিক আদালত থেকে রায় পাওয়ার এক ঘণ্টা পর এ ঘোষণা দেন দেশটির
প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, হাইয়া সোফিয়ায় প্রবেশ ফী বাতিল করা হবে এবং সব
ধর্মের অনুসারীরা সেখানে প্রবেশ করতে পারবেন। আর আগামী ২৪ শে জুলাই থেকে
মুসলমানরা সেখানে ছালাত আদায় করতে পারবে।
ঘোষণার পর পরই হাইয়া সোফিয়া থেকে দীর্ঘ ৮৬ বছর পর প্রথমবারের মত আযানের ধ্বনি ভেসে আসে। খুশীতে মেতে ওঠে তুর্কী জনগণ। সোফিয়ার আশপাশে সর্বত্র ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।
গত বছর ইস্তাম্বুল বিজয়ের বর্ষপূর্তিতে প্রেসিডেন্ট এরদোগান হাইয়া সোফিয়াতে ছালাত আদায় করেন এবং একে মসজিদে রূপান্তরের ঘোষণা দেন। ফলে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রীস ও রাশিয়া সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তীব্র সমালোচনা শুরু করে।
উল্লেখ্য, বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের অধিপতি সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ানের নির্দেশে ৫৬৭ সালে হাইয়া সোফিয়া নির্মিত হয়। ঐ সময় এটিই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গির্জা। অতঃপর প্রায় ৯০০ বছর ধরে এটি ছিল পূর্বাঞ্চলীয় অর্থডক্স খ্রিষ্টান ধর্মের কেন্দ্রবিন্দু। পরবর্তীতে ইউরোপের ক্যাথলিকরা কনস্টান্টিনোপল দখল করলে হাইয়া সোফিয়া ক্যাথিড্রালে পরিণত হয়।
১৪৫৩ সালে ইস্তাম্বুল ওছমানীয় খেলাফতের অধীনস্থ হ’লে ওছমানীয় সুলতান মুহাম্মাদ আল-ফাতেহ একে মসজিদে পরিণত করেন এবং এর চারপাশে চারটি মিনার তৈরী করেন। এরপর কয়েকশ’ বছর ধরে এই মসজিদটি ছিল ওছমানীয় খেলাফতের কেন্দ্রবিন্দু। অতঃপর ১৯২৪ সালে খেলাফতের পতনের পর ১৯৩৪ সালে তৎকালীন সেক্যুলার রাষ্ট্রপ্রধান মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এক ডিক্রিতে মসজিদটিকে জাদুঘরে পরিণত করা হয় এবং মুসলিম-খৃষ্টান উভয় ধর্মের ইবাদত নিষিদ্ধ করা হয়। তারপর থেকে এটি ইউনেস্কো ঘোষিত একটি বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসাবে গণ্য হয়ে আসছে। বর্তমানে এটি তুরস্কের সর্বাধিক জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র। প্রতি বছর ৩৭ লাখ পর্যটক এটি দেখতে আসে।
[আমরা তুরস্কের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। আগামীতে তুরস্ক যেন ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের খোলস থেকে বেরিয়ে এসে পরিপূর্ণ ইসলামের দিকে ফিরে আসে, আমরা সেই কামনা করি (স.স.)]।