স্বদেশ
শেষ হ’ল ৪ দিনের ব্যতিক্রমধর্মী হিজাব মেলা
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হ’ল হিজাব মেলা-২০১৪। রাজধানীর ডব্লিউডিএ অডিটোরিয়ামে গত ২৬ ফেব্রুয়ারী থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত এ মেলাটি চলে। মেলার আয়োজক ছিলেন মার্সি মিশন বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট। আয়োজকেরা জানান, মেলার মূল উদ্দেশ্য ছিল নারী-পুরুষ সবাইকে শালীন পোশাক সম্পর্কে সচেতন করা ও ইসলামী সংস্কৃতির সাথে নিজেদের সম্পৃক্ততা বাড়ানো। চার দিনব্যাপী এ মেলায় ছিল হিজাব, শালীন-রুচিশীল ইসলামী পোশাক, বই, সুগন্ধি ও নিত্যব্যবহার্য বস্ত্তর সমাহার। মেলায় অংশ নেয় স্পন্দন, ডিজায়ার, তাহুর, নেভা, মুসলিমাহ, স্টাইল, ড্যাজলিং ড্রেস অ্যান্ড ডেকর ইত্যাদি নামকরা ব্রান্ডের প্রতিষ্ঠান। মেলায় তিন হাযারেরও বেশী দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছিল।
[এটি শুভ উদ্যোগ। এতে অনেকের মধ্যে সাহসের সঞ্চার করবে। হিজাব নারীর অঙ্গ ভূষণ। অতএব যেখানেই নারী থাকবে সেখানেই তার হিজাব থাকবে, এটাই হৌক সবার প্রতিজ্ঞা (স.স.)]
হবিগঞ্জে বায়ুচালিত সাইকেল উদ্ভাবন
প্রথমবারের মতো দেশে বায়ুচালিত দ্রুতগতির সাইকেল উদ্ভাবিত হয়েছে। বাতাসের সাহায্যে চলা পরিবেশবান্ধব সাইকেলটির উদ্ভাবক হবিগঞ্জ যেলার রিচি গ্রামের হাফেয মুহাম্মাদ নূরুযযামান। তেল বা পেট্রোল ছাড়াই শুধু সিলিন্ডারে একবার বাতাস ভরে সাইকেলটি ৪০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে। বায়ুচালিত হ’লেও এর গতিবেগ ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার এবং দেখতে মোটরসাইকেলের মতো। উদ্ভাবক নূরুযযামান বলেন, কাঠ, লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে এ সাইকেলটি সে তৈরি করেছে। ২০১১ সালে সে এটি তৈরির কাজ শুরু করে। এতে তার খরচ পড়েছে সাড়ে ৪ লাখ টাকা। তবে বাণিজ্যিকভাবে তৈরী শুরু হ’লে খরচ পড়বে ১ লাখ টাকা। সে জানায়, সাইকেলটি চালাতে জ্বালানী তেলের প্রয়োজন পড়বে না। হাইড্রোলিক মেকানিজম সংযুক্ত গিয়ার বক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে একটি সিলিন্ডারে বাতাস সঞ্চিত হবে। পরে ঐ বাতাসের চাপে সাইকেলটি চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৬ শতাংশ ছাত্রীই যৌন হয়রানির শিকার
উচ্চশিক্ষার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ নয় ছাত্রীদের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ৭৬ শতাংশ ছাত্রীই কোন না কোনভাবে যৌন হয়রানির শিকার হন। তবে পাবলিক বা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ হার ৮৭ শতাংশ। বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোতে ৭৬ শতাংশ, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬ শতাংশ এবং মেডিকেল কলেজে যৌন হয়রানির শিকার হন ৫৪ শতাংশ ছাত্রী। জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠান ইউএন-উইমেনের করা এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপে দেখা গেছে, বিভিন্ন অশালীন মন্তব্যের মাধ্যমেই ছাত্রীদের সবচেয়ে বেশি যৌন হয়রানি করা হয়।
[ইসলামে নারী ও পুরুষের সহ-শিক্ষা নিষিদ্ধ। যা ভঙ্গ করার পরিণাম যা হবার তাই হচ্ছে। কিন্তু রোম যখন পুড়ছে, নীরু তখন বাঁশি বাজাচ্ছে। অতএব সামাজিক প্রতিরোধই একমাত্র পথ। নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মসংস্থান এখন সময়ের দাবী (স.স.)]
বিদেশ
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে ক্যান্সার: ডব্লিউএইচও
প্রাণঘাতী রোগ ক্যান্সার বিশ্বজুড়ে ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ (ডব্লিউএইচও)। ক্যান্সারের বড় ধরনের বিস্তৃতি রোধে অ্যালকোহল ও মিষ্টি জাতীয় (সুগার) খাদ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যরূরী বলেও মনে করছে সংস্থাটির গবেষকরা। তাদের মতে, ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বে বছরে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা দু’কোটি ৪০ লাখে পৌঁছে যেতে পারে। তবে সতর্কতা অবলম্বন করলে এ সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা এবং মুটিয়ে যাওয়া রোধ করার ওপর জোর দেয়া এখন সময়ের দাবী। বর্তমানে বিশ্বে বছরে ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের ক্যান্সার ধরা পড়ছে। তবে ২০২৫ সালের মধ্যে ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে এক কোটি ৯০ লাখ, ২০৩০ সালের মধ্যে ২ কোটি ২০ লাখ এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে ২ কোটি ৪০ লাখে গিয়ে দাঁড়াবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশী। এছাড়া ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যয় দিন দিন সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে, এমনকি উচ্চ আয়ের দেশগুলোতেও। ডব্লিউএইচও তাদের ক্যান্সার বিষয়ক প্রতিবেদনে কিছু বিষয় উল্লেখ করেছে। যেগুলি থেকে বেঁচে থাকলে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা অনেকটাই সম্ভব। পরিত্যাজ্য বিষয়গুলি হ’ল- ধূমপান, দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত, অ্যালকোহল, অলসতা ও স্থূলতা, বায়ু দূষণ ও অন্যান্য পরিবেশ জনিত সমস্যা, দেরিতে গর্ভধারণ, কম সন্তান জন্ম দান এবং শিশুদের বুকের দুধ না খাওয়ানো ইত্যাদি।
বিশ্বের অর্ধেক মানুষের চেয়ে বেশী সম্পদ ৮৫ ব্যক্তির
বিশ্বব্যাপী ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান ক্রমশই বাড়ছে। বিশ্বের সেরা ৮৫ ধনী ব্যক্তির সম্পদের পরিমাণ সাড়ে তিনশ কোটি দরিদ্র মানুষের মোট সম্পদের সমান। যা ক্রমশঃ ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যের ঊর্ধ্বগতির ইঙ্গিত করছে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ‘অক্সফামে’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান ক্রমশই বাড়ছে; যা দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য বড় ধরনের বাধা। ধনীদের আরো ধনী হওয়ার মাধ্যমে এ বৈষম্য ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাওয়ায় সামাজিক উত্তেজনা ও সমাজ ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত বছর আরো ২১০ ব্যক্তি বিলিওনিয়ারের অভিজাত ক্লাবে প্রবেশ করেছে। এ নিয়ে বর্তমান বিশ্বে মোট এক হাযার ৪২৬ জন বিলিওনিয়ার আছে। যাদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৫.৪ ট্রিলিয়ন। শুধুমাত্র ভারতে গত ১০ বছরে বিলিওনিয়ারের সংখ্যা ৬ থেকে ৬১ জনে উন্নীত হয়েছে। এমনকি এই বৈষম্য বিদ্যমান রাজনীতি ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্যও হুমকিস্বরূপ।
[ইসলামী অর্থনীতি গ্রহণ ও চালু করা ব্যতীত এই অবস্থা থেকে বাঁচার কোন উপায় নেই (স.স.)]
মার্কিন সেনাবাহিনীতে আসছে রোবট যান ও সেনা
প্রযুক্তির বিকাশ ও অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক বাহিনীতেও নতুনত্ব আনতে চাইছে। এর অংশ হিসাবে এবার সেনা কর্মকর্তাদের ভাবনায় এসেছে রোবট সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা। তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাশুল দিতে হবে সেনাবাহিনীর বেশ কয়েক হাযার সদস্যকে। এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন সেনা কর্মকর্তা বলেন, তিনি সেনাবাহিনীর ব্রিগেড কমব্যাট টিমের আকার এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে ফেলার চিন্তা করছেন। এটি কার্যকর হ’লে ঘাটতি পূরণে এই সেনাদের স্থলে রোবট সেনা ও দূরনিয়ন্ত্রিত সামরিক যান নিয়োগ করা হবে। তবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে প্রাণঘাতী অস্ত্রসজ্জিত স্বয়ংক্রিয় রোবট নামানোর কোন পরিকল্পনা নেই।
নতুন ঐ চিন্তা-ভাবনায় আপাতত মানবচালিত লরি ও অন্য যানবাহনের স্থানে রোবটচালিত সরবরাহ ট্রেন নামানোর প্রস্তাব রয়েছে। কর্মকর্তারা জানান, মনুষ্যবিহীন বিমান (ড্রোন) ছাড়াও এরই মধ্যে আফগানিস্তানে রোবটচালিত কিছু সামরিক স্থলযানের পরীক্ষা করা হয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য পাঁচ লাখ ৪০ হাযার থেকে কমিয়ে চার লাখ ৯০ হাযারে আনার কথা রয়েছে।
মাটির নিচে আমেরিকার কয়েকশ’ পরমাণু বোমা!
মাটির নিচে গোপন আস্তানায় আমেরিকার কয়েকশ’ পরমাণু বোমা এখনও মওজুদ রয়েছে। এসব বোমা কয়েক দশক ধরে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব পরমাণু বোমার ধ্বংস ক্ষমতা কল্পনার বাইরে। এসব বোমা দিয়ে হামলা চালিয়ে মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষ নিশ্চিহ্ন করে ফেলা সম্ভব। এসব তথ্য দিয়েছেন বার্তা সংস্থা এপি’র নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিবেদক রবার্ট বার্নস। তিনি বলেছেন, পরমাণু বোমা ধ্বংস করার কাজ অত্যধিক ব্যয়বহুল। সেজন্য নতুন সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি থেকেই যাবে। তবে আমেরিকা পরমাণু বোমার ব্যবহার করতে চায় না। বরং একদিন এগুলি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করবে এবং এর জন্য আমেরিকার কোটি কোটি ডলার খরচ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
মেক্সিকোয় দ্রুত বাড়ছে মুসলমানদের সংখ্যা
মেক্সিকোতে ইসলামের দ্রুত প্রসার ঘটছে। ১৯৯৪ সালে মেক্সিকো সিটিতে মুসলমানের সংখ্যা ছিল মাত্র ৮০ জন। তবে এখন অবস্থা বদলে যাচ্ছে। পিউ রিসার্চের গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১০ সালে মেক্সিকোতে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১১ হাযার। ১৯৯৪ সালে মরক্কো থেকে মেক্সিকো সিটিতে আসা সৈয়দ লুয়াহাবী বলেন, এ শহরে সে সময় ২-৩ মাসেও একজন মুসলমানের দেখা মিলত না। মসজিদ খুঁজে পেতে হয়রান হ’তে হ’ত। কিন্তু এখন পরিবেশ একেবারেই ভিন্ন। এখন প্রতি শুক্রবারই ইসলাম গ্রহণ করছেন মেক্সিকানরা। কোন কোন শুক্রবার ৫ জনও ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি জানান, নবদীক্ষিতদের বেশিরভাগই নারী। পিউ রিসার্চের গবেষণায় বলা হয়েছে, ১৯৭০ সালে মেক্সিকোতে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ৯৬.৭ শতাংশ। ২০১০ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৮২.৭ শতাংশে। এখন ক্যাথলিকদের একটি অংশ ইসলাম গ্রহণ করছেন।
মেক্সিকোর খ্রিস্টানদের ইসলাম গ্রহণের কারণ সম্পর্কে বলা হয়, ক্যাথলিকদের ঈশ্বরের তিন রূপ মতবাদের বিপরীতে ইসলামে এক আল্লাহ্তে বিশ্বাস অনেককে আকৃষ্ট করেছে। এছাড়া খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর সীমাহীন অভিযোগেও অনেক খ্রিস্টান বিরক্ত। তারা ইসলামে এর সমাধান পাচ্ছেন।
এদেরই একজন মার্থা আলামিলা, বয়স ২৩। তিনি একটি ক্যাথলিক পরিবারে বেড়ে ওঠেন। ইসলাম গ্রহণের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার মনে কোন সংশয় ছিল না যে ঈশ্বর আছেন। কিন্তু আমার ধর্মের কাছে অনেক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করে আমি অর্থপূর্ণ জবাব পাইনি। তিনি বলেন, ইসলাম সম্পর্কে তার প্রাথমিক ধারণা ছিল যে, এটি সন্ত্রাসবাদ ও নিপীড়নের ধর্ম। এ ধর্ম নারীদের অধিকার হরণ করে, তাদের হিজাব পরতে বাধ্য করে। কিন্তু পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করার পর এবং মুসলমানদের সঙ্গে বৈঠকের পর তার ধারণা পাল্টে যায়। তিনি যেসব প্রশ্নের জবাব খুঁজছিলেন তাও পেয়ে যান। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারলাম যে, এটা একটা সুন্দর ধর্ম। এখানে প্রত্যেকটা জিনিসের অর্থ আছে। কুরআন ও হাদীছে প্রতিটি প্রশ্নের জবাব আছে। প্রায় ছয় মাস অধ্যয়ন শেষে ইসলাম গ্রহণ করেন তিনি।