সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

গত ১৪ই আগষ্ট ২০১৬ রবিবার, সকাল সাড়ে ১১-টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স হলে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব লিখিত বক্তব্য পেশ করেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। লিখিত বক্তব্যটি হুবহু নিম্নরূপ-

আসসালামু ‘আলায়কুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

মাননীয় সভাপতি, উপস্থিত সুধী মন্ডলী এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সম্মানিত সাংবাদিক বন্ধুগণ!

(১) আজকে একটি বিশেষ প্রেক্ষাপটে আমরা আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। ইসলামের নামে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ যখন বৈশ্বিক রূপ ধারণ করেছে, তখন ষড়যন্ত্রকারীরা পৃথিবীর ৩য় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশকেও তাদের টার্গেট বানিয়েছে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে সচেতন নাগরিক ও দেশপ্রেমিক সংগঠন হিসাবে জাতির নিকটে আমাদের কথাগুলি আপনাদের মাধ্যমে তুলে ধরতে চাই।

‘আহলেহাদীছ’ অর্থ ‘হাদীছের অনুসারী’। পারিভাষিক অর্থে ‘কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অনুসারী’। সকল দিক ছেড়ে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের দিকে ফিরে যাওয়ার আন্দোলনকেই বলা হয় ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’। ছাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈনে এযাম ও সালাফে ছালেহীন সর্বদা এ পথেরই দাওয়াত দিয়ে গেছেন। ‘আহলেহাদীছ’ তাই প্রচলিত অর্থে কোন ফের্কা বা মতবাদের নাম নয়, এটি একটি পথের নাম। এ পথ আল্লাহ প্রেরিত সর্বশেষ অহি-র পথ। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের পথ। এ পথের শেষ ঠিকানা হ’ল জান্নাত। মানুষের ধর্মীয় ও বৈষয়িক জীবনের যাবতীয় হেদায়াত এ পথেই মওজুদ রয়েছে। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ সেই জান্নাতী পথেই মানুষকে আহবান জানায়। এ আন্দোলন তাই মুমিনের ইহকালীন মঙ্গল ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র আন্দোলন।

কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা নিয়েই ১৯৭৮ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ যাত্রা শুরু করেছিল। আজও তার মুরববী সংগঠন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ এবং তার অঙ্গসংগঠন ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ শিশু-কিশোর সংগঠন ‘সোনামণি’ ও ‘আহলেহাদীছ মহিলাসংস্থা’ একই লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

বন্ধুগণ! (২) এদেশে জঙ্গীবাদের সূচনা থেকেই আমাদের সংগঠন এর বিরুদ্ধে জনগণকে ও সরকারকে হুঁশিয়ার করে আসছে। ১৯৯৮ সালের ২৫শে মে সাতক্ষীরা শহরের চিলড্রেন্স পার্কে অনুষ্ঠিত যেলা সম্মেলনে সংগঠনের আমীর হিসাবে আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জনগণকে এ বিষয়ে সাবধান করি।  

এরপর থেকে আমাদের সকল সম্মেলন, সেমিনার, বই ও পত্র-পত্রিকায় জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকার ও জনগণকে বিশেষ করে তরুণ সমাজকে আমরা সাবধান করে এসেছি। অথচ ২০০৫ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারী বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমাদেরকে ‘গিনিপিগ’ বানিয়ে মিথ্যা অপবাদে কারাগারে নিক্ষেপ করেছিল? যদিও পরে সবাই বেকসুর খালাস পাই। কিন্তু দেশে-বিদেশে সংগঠনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার কাজটি তারা সেরে যায়।

দুর্ভাগ্য জনক সত্য এই যে, কোনরূপ যাচাই-বাছাই ছাড়াই কোন কোন মিডিয়া মাঝে-মধ্যে আহলেহাদীছ-এর বিরুদ্ধে জঙ্গীবাদের সন্দেহমূলক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ কথিত অপবাদের সাথে কখনোই আমাদের সংগঠনের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক ছিল না, আজও নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না ইনশাআল্লাহ। সম্প্রতি সরকারী প্রতিষ্ঠান ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ উক্ত অপপ্রচারে যুক্ত হয়েছে। তারা লা-মাযহাবী, সালাফী, মওদূদী ও যাকির নায়েক সবকিছুকে একাকার করে উদ্দেশ্যমূলক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

আমরা সকল মিডিয়াকে বস্ত্তনিষ্ঠভাবে সত্য প্রকাশের আহবান জানাচ্ছি। বিশেষ করে সরকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-কে নিরপেক্ষ থাকার আহবান জানাচ্ছি। এই সাথে আমরা দাবী করছি যেন (ক) এর পরিচালনা কমিটিতে আহলেহাদীছ প্রতিনিধি থাকেন এবং এখানে আহলেহাদীছ বিদ্বানগণের বই-পত্র সসম্মানে স্থান পায়। সেই সাথে এটাও দাবী করছি যেন (খ) বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে অন্ততঃ একজন ইমাম আহলেহাদীছ থাকেন ও মাসে কমপক্ষে একটি খুৎবা দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। (গ) আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিলেবাস কমিটিতে ও ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটিতে আহলেহাদীছ বিদ্বানগণের প্রতিনিধিত্ব দাবী করছি

সাংবাদিক বন্ধুগণ! (৩) এদেশে সুন্নী মুসলমানদের মধ্যে হানাফী ও আহলেহাদীছ দু’টি সম্প্রদায় রয়েছে। হানাফীদের মধ্যে ব্রেলভী ও দেওবন্দী দু’টি দল রয়েছে। আমরা মনে করি প্রকৃত হানাফী এবং প্রকৃত আহলেহাদীছ বা সালাফী কখনোই জঙ্গীবাদে বিশ্বাসী নয়। জঙ্গীদের মধ্যে অনেকে ছালাতে রাফাদানী হ’লেও আক্বীদায় ‘আহলেহাদীছ’ নয়। কেননা প্রকৃত ‘আহলেহাদীছ’ সর্বদা মধ্যপন্থী। তারা যেমন শৈথিল্যবাদী নয়, তেমনি চরমপন্থীও নয়।

তাছাড়া ব্যক্তি কোন অপরাধ করলে পুরা সম্প্রদায় তার জন্য দায়ী হয় না। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘একের পাপের বোঝা অন্যে বইবে না’ (আন‘আম ৬/১৬৪)। এদেশে উভয় সম্প্রদায় পরস্পরে সহানুভূতির সঙ্গে বসবাস করছে এবং তারা পরস্পরে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ। অতএব তাদের মধ্যে যাতে বিভেদ সৃষ্টি না হয় এবং ভালোবাসার বন্ধন দৃঢ় হয়, তেমন সহনশীল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সম্মানিত আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখগণের প্রতি আবেদন রইল।

বন্ধুগণ! ইসলাম নিঃসন্দেহে শান্তির ধর্ম। এখানে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের কোন স্থান নেই। জিহাদ ও জঙ্গীবাদ কখনো এক নয়। সশস্ত্র প্রশিক্ষণ দিয়ে যারা সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তারা জিহাদ করে না, বরং সন্ত্রাস করে। সন্ত্রাসী কখনো ইসলামের বন্ধু নয়। ওরা ইসলামের শত্রু, রাষ্ট্রের শত্রু, মানবতার শত্রু। নিঃসন্দেহে জঙ্গীবাদের জন্য ইসলাম দায়ী নয়। প্রকৃত কোন মুসলমানও দায়ী নয়। বরং ইসলামের প্রতি সাধারণ মানুষের ঘৃণা সৃষ্টির জন্যই বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের নতুন ইস্যু সৃষ্টি করা হয়েছে। কারা করেছে, তাদেরকে সবাই চেনেন ও জানেন। কিন্তু বলতে পারেন না। 

সাংবাদিক বন্ধুগণ! (৪) ইসলামে শৈথিল্যবাদ ও চরমপন্থা কোনটারই অবকাশ নেই। আল্লাহ বলেন, আমরা তোমাদেরকে মধ্যপন্থী উম্মত করেছি। যাতে তোমরা মানবজাতির উপরে (ক্বিয়ামতের দিন) সাক্ষী হ’তে পার এবং রাসূলও তোমাদের উপর সাক্ষী হন’ (বাক্বারাহ ২/১৪৩)। সাক্ষ্যদাতা উম্মত সর্বদা মধ্যপন্থী হয়ে থাকে। আর এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে মুসলিম উম্মাহর ‘শ্রেষ্ঠ জাতি’ হওয়ার চাবিকাঠি (আলে ইমরান ৩/১১০)। আল্লাহ বলেন, ‘দ্বীনের ব্যাপারে কোন যবরদস্তি নেই। নিঃসন্দেহে হেদায়াত গোমরাহী থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে’ (বাক্বারাহ ২/২৫৬)।  ইসলামের এই মহান আদর্শের কারণেই বাংলাদেশে হাযার বছর ধরে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ ও ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ শান্তির সঙ্গে পাশাপাশি বসবাস করছে। হঠাৎ এমন কি হ’ল যে, কেউ আর ইসলাম ও মুসলমানকে বরদাশত করতে পারছে না? টুপী-দাড়ি ও বোরকা-হিজাব দেখলে অনেকে ক্ষেপে উঠছে?

সুধী মন্ডলী! (৫) দেশে দেশে পরাশক্তিগুলির অব্যাহত যুলুম ও নির্যাতনে অতিষ্ঠ মানবতা যখন ইসলামের শান্তিময় আদর্শের দিকে দ্রুত ছুটে আসছে, তখন ইসলামকে সন্ত্রাসী ধর্ম হিসাবে প্রমাণ করার জন্য তারা জিহাদের অপব্যাখ্যা করে একদল লোককে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসী তৎপরতায় নিয়োজিত করেছে। আর তাদের অপকর্মের মাধ্যমে ইসলামকে জঙ্গীবাদী ধর্ম বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অতঃপর সন্ত্রাস দমনের নামে বিশ্বব্যাপী নিরীহ মুসলমানদের রক্ত ঝরানো হচ্ছে। বাংলাদেশেও তাদের একই পলিসি কাজ করছে। বাংলাদেশকে জঙ্গী রাষ্ট্র প্রমাণ করাই তাদের উদ্দেশ্য। যাতে ত্রাণকর্তা হিসাবে তারা এখানে সহজে প্রবেশ করতে পারে এবং সরকারের উপর ছড়ি ঘুরাতে পারে। বর্তমানের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও বাংলাদেশের কৌশলগত ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান বিষয়টিকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।

(৬) এই প্রেক্ষিতে আমাদের পরামর্শগুলি নিম্নরূপ :

এক- ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাকে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া। এজন্য শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামের সঠিক আক্বীদা সিলেবাস ভুক্ত করা অপরিহার্য। সেই সাথে পরিবার, সমাজ ও প্রশাসনকে অধিক সতর্ক ও সহনশীল হওয়া আবশ্যক। কারণ আমাদের সন্তানদেরকে সঠিক শিক্ষা দিতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই তারা আজ পথচ্যুত হয়েছে। অতএব তাদেরকে সংশোধন প্রচেষ্টা চালানোর মধ্যেই দেশের কল্যাণ বেশী। সেই সাথে যদি কেউ সত্যিকার অর্থে তওবা করে ফিরে আসে, তাহ’লে তাদেরকে গ্রহণ করার সুযোগ থাকা উচিত। দুই- দেশে ন্যায় বিচার ও সুশাসন কায়েম করা। তিন- ইসলামের বিরুদ্ধে উস্কানীমূলক কার্যক্রম সমূহ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। চার- জঙ্গীবাদের বিশ্বাসগত ভ্রান্তির দিকটা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা।  

উল্লেখ্য যে, ঈমানের সংজ্ঞায় মৌলিকভাবে তিনটি দল রয়েছে। খারেজী, মুরজিয়া ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত আহলেহাদীছ। খারেজীগণ বিশ্বাস, স্বীকৃতি ও কর্ম তিনটিকেই ঈমানের মূল হিসাবে গণ্য করেন। ফলে তাদের মতে কবীরা গোনাহগার ব্যক্তি কাফের ও চিরস্থায়ী জাহান্নামী এবং তাদের রক্ত হালাল’। এই চরমপন্থী আক্বীদার লোকেরাই ৪র্থ খলীফা হযরত আলী (রাঃ)-কে হত্যা করেছিল নেকীর কাজ মনে করে। এই দর্শনের বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর কঠোর ভবিষ্যদ্বাণীসমূহ রয়েছে (মুসলিম হা/১০৬৪, ১০৬৬; ইক্বামতে দ্বীন ৩৪-৩৫ পৃঃ)। যুগে যুগে অধিকাংশ চরমপন্থী মুসলমান এই ভ্রান্ত মতের অনুসারী। বর্তমানে ইসলামের নামে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের উত্থানের মূল উৎস এখানেই। স্বার্থবাদী লোকেরা জান্নাতের স্বপ্ন দেখিয়ে এই ভ্রান্ত বিশ্বাসকেই উস্কে দিচ্ছে। তাদের এই ভ্রান্ত বিশ্বাস ইসলামের বিশুদ্ধ আক্বীদার সম্পূর্ণ পরিপন্থী

চরমপন্থী খারেজী ও শৈথিল্যবাদী মুরজিয়া মতবাদের মধ্যবর্তী হ’ল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত তথা আহলেহাদীছের ঈমান। যাদের নিকট ঈমানের সংজ্ঞা হ’ল, ‘হৃদয়ে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি ও কর্মে বাস্তবায়নের সমন্বিত নাম, যা আনুগত্যে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং গোনাহে হ্রাসপ্রাপ্ত হয়। ঈমান হ’ল মূল এবং আমল হ’ল শাখা’। যা না থাকলে পূর্ণ মুমিন বা ইনসানে কামেল হওয়া যায় না। অতএব জনগণের ঈমান যাতে সর্বদা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, পরিবার, সমাজ ও সরকারকে সর্বদা সেই পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। নইলে ঈমান হ্রাসপ্রাপ্ত হ’লে সমাজ অকল্যাণে ভরে যাবে। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ জন্মলগ্ন থেকেই সকল চরমপন্থী আক্বীদার কঠোর বিরোধিতা করে আসছে এবং দেশে ঈমানী পরিবেশ বৃদ্ধির চেষ্টা করে যাচ্ছে।

বস্ত্ততঃ নবী-রাসূলগণ কেউই শাসনক্ষমতা প্রয়োগের মাধ্যমে দ্বীন কায়েম করেননি। বরং তাঁরা হিকমত ও নছীহতের মাধ্যমেই সমাজ সংশোধন করেছেন। আবুবকর, ওমর, ওছমান, আলী, হামযা কেউই অস্ত্রের ভয়ে বা শাসনশক্তির ভয়ে মুসলমান হননি। যুগে যুগে এই ক্ষমতাকেন্দ্রিক চিন্তাধারাই চরমপন্থী দর্শনের অন্যতম প্রধান উৎস। আর এটাই হ’ল সবচেয়ে বড় ভ্রান্তি।

(৭) ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’ বা ‘আহলেহাদীছ যুবসংঘ’ কখনো ক্ষমতা লাভের জন্য আন্দোলন করে না। তারা কখনই হরতাল-ধর্মঘট করে না। তারা আমর বিল মা‘রূফ ও নাহী ‘আনিল মুনকার তথা ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধ-এর চিরন্তন ইসলামী মূলনীতির অনুসরণে সমাজ সংস্কারের কাজ করে থাকে। ইসলামের নির্দেশ অনুযায়ী তারা সকল সরকারেরই আনুগত্য করে। তারা বৈধভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে। দেশে ইসলামী বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী পন্থায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে থাকে। বিভিন্ন উপায়ে সরকারকে নছীহত করে এবং সরকারের হেদায়াতের জন্য আল্লাহর নিকট দো‘আ করে।   

(৮) বর্তমানে দেশ থেকে জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে সরকার যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, আমরা তাকে পূর্ণ সমর্থন করি। সেই সাথে কোন নিরীহ মানুষ যাতে স্রেফ সন্দেহ বশে পুলিশী হয়রানীর শিকার না হয় এবং যাতে প্রকৃত দোষীরা ধরা পড়ে, সেজন্য সরকারের আশু দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমরা জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস কামনা করি।

হে আল্লাহ! তুমি বাংলাদেশকে দেশী ও বিদেশী সকল প্রকার ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা কর -আমীন!

পরিশেষে আমরা সম্মানিত সুধী মন্ডলী এবং সাংবাদিক বন্ধুগণের প্রতি ও প্রেসক্লাব কর্তৃপক্ষের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আসসালামু ‘আলায়কুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করার পর মুহতারাম আমীরে জামা‘আত উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্নোত্তর এখানে বিবৃত হ’ল।-

প্রশ্নোত্তর :

(১) বর্তমানে জঙ্গী কার্যক্রমের অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের অনেকে আহলেহাদীছ-এর অনুসারী। তাছাড়া জেএমবি নেতা শায়খ আব্দুর রহমান ‘আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র সদস্য ছিল কি-না, সাংবাদিকদের এরূপ প্রশ্নের জবাবে আমীরে জামা‘আত বলেন,

জঙ্গীবাদের অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের কেউ কেউ ছালাতে রাফঊল ইয়াদায়েন করতে পারে, তবে তারা কখনোই আক্বীদাগত ভাবে আহলেহাদীছ নয়। কেননা রাফঊল ইয়াদায়েন করলেই আহলেহাদীছ হওয়া যায় না, যদি সে আক্বীদায় আহলেহাদীছ না হয়। আর ‘আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র কোন ছেলে কখনোই জঙ্গীবাদে সম্পৃক্ত নয়। আব্দুর রহমান কখনোই ‘আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র সদস্য ছিল না। তার পিতা ছিলেন আহলেহাদীছের বিখ্যাত আলেম মাওলানা আব্দুল্লাহ ইবনে ফযল। তিনি কখনোই জঙ্গীবাদের পক্ষে ছিলেন না। তাঁর ছেলে পথভ্রষ্ট হবার কারণে সমগ্র আহলেহাদীছ জামা‘আতের উপরে আজ কালিমা লিপ্ত হয়েছে।

অথচ রাফঊল ইয়াদায়েন কেবল আহলেহাদীছরাই করেনা। বরং আমাদের দেশে যে বলা হয়ে থাকে চার মাযহাব মানা ফরয, তাদের মধ্যে কেবল হানাফী মাযহাব ছাড়া বাকি তিন মাযহাবের লোকেরা ছালাতে রাফঊল ইয়াদায়েন করেন। এক্ষণে কোন মাযহাবের কেউ যদি জঙ্গীবাদী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে, তবে সেও কি আহলেহাদীছ হবে? এরপরেও বলব, ব্যক্তির কোন অপরাধে পুরা সম্প্রদায় দায়ী হবে না।

(২) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক প্রচারিত Hallo CT apps এর প্রমোশনাল ভিডিওতে ‘ইক্বামতে দ্বীন : পথ ও পদ্ধতি’ ও ‘আক্বীদায়ে মোহাম্মদী বা মাযহাবে আহলেহাদীছ’ বই দু’টির ছবি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা যথাস্থানে এর বিরুদ্ধে লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছি। আজও এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আপনারা দয়া করে বই দু’টি পড়ে দেখবেন। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে বাংলার যমীনে ‘ইক্বামতে দ্বীন : পথ ও পদ্ধতি’ বইয়ের চাইতে দলীল সমৃদ্ধ ও যুক্তিপূর্ণ ভাষায় কোন বই আছে বলে আমাদের জানা নেই। অথচ সেই বইটির উপর কিছু বোমা তৈরীর সরঞ্জাম রেখে ভিডিও তৈরী করে দেখানো হচ্ছে। ভাবখানা এমন যে, এই বইটি পড়েই মানুষ জঙ্গী হচ্ছে। আরেকটি বই ‘আক্বীদায়ে  মোহাম্মদী’, যার লেখক আমার আববা ১৯৭৬ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি জঙ্গীবাদের কিছু্ই জানতেন না। বাংলা ১৩৫৯ সালে বইটি লিখিত হয়েছে। অথচ এই বই দু’টি দিয়ে Hallo CT apps এর প্রমোশনাল ভিডিও তৈরী করা হয়েছে। এই অপপ্রচার কেন চালানো হচ্ছে? আমাদের মনে হয় সরিষার মধ্যেই ভূত আছে।

এক্ষণে আমাদেরকে যখন অন্যায়ভাবে কলংকিত করা হচ্ছে, তখন আমাদেরও তো কিছু বলার অধিকার আছে। আপনাদের যদি যা খুশী লেখার ও বলার স্বাধীনতা থাকে, তবে আমাদের কি সত্য কথা বলার স্বাধীনতা নেই? ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ বাংলার যমীনকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে গড়ে তুলতে চায়, সন্ত্রাসের আলোকে নয়।

(৩) গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারীদের কেউ কেউ ডা. যাকির নায়েক-এর বক্তব্যের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়েছে এবং সে কারণে সরকার পীস টিভি বন্ধ করেছে; এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে আমীরে জামা‘আত বলেন, কোন বক্তব্য শুনে তারা জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছে? ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার তার প্রায় ২০০ বক্তব্য যাচাই করে দেখেছে, যার একটিতেও তারা আপত্তিকর কিছু পায়নি। তাই বাংলাদেশ সরকার যদি অভিযোগ উত্থাপনের সাথে সাথে এ্যাকশন না নিয়ে একটু যাচাই-বাছাই করে দেখতেন, আমার মনে হয় তারা এরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করতেন না। আশা করি একদিন পীস টিভির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমরা সরকারের এ পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়েছি (দৈনিক ইনকিলাব ১১ই জুলাই’১৬, ৩য় পৃ.)। আপনারা বাক-স্বাধীনতার কথা বলেন। তাঁর কি কথা বলার স্বাধীনতা নেই? পসন্দ না হ’লে আপনি তা গ্রহণ করবেন না। তিনি তো বিশ্বব্যাপী প্রচারিত একটি বৃহৎ মিডিয়া ‘পীস টিভি’-র মালিক। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা পৃথিবীতে পীস টিভির মাধ্যমে তাঁর বক্তব্য প্রচারিত হচ্ছে। বিশ্বের মানুষ তাকে সমর্থন করছে, প্রশংসা করছে। সঊদী সরকার, দুবাই সরকার তাকে শ্রেষ্ঠ প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের পুরস্কারে ভূষিত করেছে। আপনিও যদি তাকে একটু যাচাই করে দেখতেন তাহ’লে বুঝতেন তিনি কে?

আমীরে জামা‘আত বলেন, যাকির নায়েকের বক্তব্য শুনে হলি-আর্টিজানের ২টি ছেলে প্রভাবিত হয়েছে বলে যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, তা একজন ভুক্তভোগী হিসাবে আমি সর্বাংশে বিশ্বাস করতে পারি না। কারণ ২০০৫ সালে তৎকালীন চার দলীয় জোট সরকার যখন আমাকে জেলে ঢুকিয়েছিল, তখন আপনারাই বলেছিলেন, শফীকুল্লাহ নামের একটি ছেলে নাকি আমার বই পড়ে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। কিন্তু কোন্ বই, তা বলা হয়নি। অথচ পরবর্তীতে সেই শফীকুল্লাই আদালতে বলল যে, আমি এসব কিছুই বলিনি। আমাকে প্রচন্ড নির্যাতন করা হয়েছিল। অতঃপর তারা ইচ্ছামত লিখে আমার প্রথম পৃষ্ঠার নাম-ঠিকানার স্বাক্ষর নকল করে শেষ পৃষ্ঠায় তারাই স্বাক্ষর করেছে। ঐ স্বাক্ষর আমার ছিল না। আমি উনাকে তখন চিনতামই না। উনার কোন বইও কখনো পড়িনি’। অতএব এইসব রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে একটি আন্তর্জাতিক ইসলামী মিডিয়াকে ব্যান্ড করা হ’ল। এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে বিদেশে নিজেদেরকে ছোট করা হয়েছে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের সংবিধানের বিরোধী। অতঃপর সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বিভিন্ন মত ও পথের সাংবাদিক এখানে আছেন। আপনাদের যদি ভিন্ন মত প্রকাশের সুযোগ না থাকে, তাহ’লে সাংবাদিকতাই তো বন্ধ হয়ে যাবে। বরং মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকলে মানুষ চেনা সহজ হবে।

(৪) অতঃপর ঢাকা শহরে ও বাংলাদেশের বিভিন্ন যেলায় স্থাপিত পীস স্কুল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ‘পীস’ নামটি ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্র। আমি যতটুকু জানি, যাকির নায়েকের সাথে এসব স্কুলের কোন সম্পর্ক নেই। তবে পীস স্কুল গুলির উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করার মাধ্যমে সরকার যে কি ফায়েদা হাছিল করতে চান তা আমাদের জানা নেই। বরং বছরের মাঝখানে এরূপ করার মাধ্যমে বহু ছাত্র-ছাত্রীর পড়াশুনার উপর সংকট সৃষ্টি করা হ’ল মাত্র।

(৫) প্রশ্নোত্তরের এক পর্যায়ে ইংরেজী দৈনিক ডেইলী স্টারের সাংবাদিক ‘আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র ‘ক্বিতাল’ শাখা ছিল বলে মন্তব্য করলে আমীরে জামা‘আত দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, আপনার এই নতুন আবিষ্কার যদি আপনার পত্রিকায় আসে, তবে আমরা আপনার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিব। আমি ‘বাংলাদেশ আহলেহাদীছ যুবসংঘে’র প্রতিষ্ঠাতা আপনাদের সামনে বসে আছি, অথচ আমি জানি না ক্বিতাল শাখা ছিল কি-না। আর আপনি বললে হবে? কস্মিনকালেও ‘যুবসংঘে’র কোন ক্বিতাল শাখা ছিল না, আজও নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না ইনশাআল্লাহ।

(৬) জঙ্গীবাদ দমনে ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কার্যক্রম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, আমরা বহু পূর্ব থেকেই এর বিরুদ্ধে লেখনী, বক্তব্য, লিফলেট বিতরণ ইত্যাদি কার্যক্রম চালিয়ে আসছি। সাম্প্রতিককালে আমরা এর বিরুদ্ধে বক্তৃতা, সমাবেশ, মানববন্ধন, র‌্যালী, পথসভা ইত্যাদি করছি এবং চরমপন্থীদের বিভিন্ন যুক্তিতর্কের দলীলভিত্তিক জবাব দানের মাধ্যমে তাদের বিশ্বাসগত ভ্রান্তির দিকটা সবার সামনে তুলে ধরছি। আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের এসব কার্যক্রম সম্পর্কে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন। তবে সবক্ষেত্রেই আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। কোনরূপ হিংসাত্মক আন্দোলনে নয়।

(৭) দেশে ‘আইএস’ আছে কি-না এমন এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা মাননীয় পুলিশ মহাপরিদর্শকের সাথে একমত। এখন ইন্টারনেটের যুগে আই.এস হওয়ার জন্য পৃথক কোন অফিসের প্রয়োজন হয়না। ইন্টারনেটে সহজেই সব তথ্য পাওয়া যায়। অতএব প্রশাসন যখন বলছে এদেশে আইএস নেই, তখন আমরা কিভাবে বলব যে, এদেশে আইএস আছে?

(৮) গ্রেফতারকৃত জঙ্গীরা জামায়াতে ইসলামী, জেএমবি বা আইএস-এর সদস্য কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে যারা ধরা পড়ছে তাদেরকে মেরে না ফেলে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই বেরিয়ে আসবে যে, তারা কোন দলের সদস্য।

‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ ঢাকা যেলার সভাপতি আলহাজ্জ মুহাম্মাদ আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন’-এর উপদেষ্টা প্রবীণ ভাষা সংগ্রামী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব নূরুল ইসলাম প্রধান (৮০), ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল লতীফ, প্রচার সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ সাখাওয়াত হোসাইন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক ড. মুহাম্মাদ কাবীরুল ইসলাম, খুলনা যেলা ‘আন্দোলন’-এর সভাপতি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। এছাড়া ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী সহ বিভিন্ন যেলা থেকে দায়িত্বশীলগণ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

(উক্ত সংবাদ সম্মেলনের রিপোর্ট পরদিন ১৫ই আগস্ট ইংরেজী দৈনিক দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট, ডেইলী স্টার; বাংলা দৈনিক ইনকিলাব, নয়াদিগন্ত, ভোরের কাগজ, আমাদের সময় সহ বিভিন্ন জাতীয় ও অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এছাড়া যমুনা টিভি ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি ঐদিন ১৪ই আগস্ট খবরটি প্রচার করে।)

সম্মেলনটির ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন- ahlehadeethbd.org/audiovideo.html






আরও
আরও
.