বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ
স্বাস্থ্য সচেতন হ’লেও রোগ বালাই তার সাথে পাল্লা দিয়ে মানুষকে আক্রমণ
করছে। কিন্তু মানুষকে বসে থাকলে চলবে না। প্রতিনিয়ত তাকে একদিকে রোগকে জয়
করার চেষ্টা করতে হবে অন্যদিকে রোগ প্রতিরোধেরও চেষ্টা করতে হবে। আর রোগ
প্রতিরোধ করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হচ্ছে খাদ্য। খাদ্য যেমন রোগকে দূরে রাখতে
পারে তেমনি আবার এই খাবারের কারণে শত রোগ মানুষের শরীরে বাসা বাঁধে। কাজেই
অন্য নিয়ম কানুনের সাথে খাদ্যের ব্যাপারেও সবাইকে হতে হবে অনেক বেশী
সচেতন, তবেই হয়ত সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে সুন্দর জীবনযাপন করা সম্ভব হবে।
পৃথিবীতে বেশ কিছু খাদ্য আছে, যা একই সাথে শত গুণের আধার। তেমনই একটা খাদ্য হচ্ছে ‘টক দই’। এই টক দই আমাদের শরীরের জন্য নানা ধরনের কাজ করে থাকে। নিয়মিত টক দই খেলে তা দেহকে নানাভাবে উপকার করে। টক দইয়ে আছে আমিষ, ভিটামিন, মিনারেল ইত্যাদি। টক দইয়ে থাকে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া যা স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। এতে দুধের চেয়েও বেশী ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম ও পটাশ আছে। নিয়মিত টক দই খাওয়া শুরু করলে তার ফল পাওয়া যায় তড়িৎ গতিতে। সেকারণ ডাক্তার বা পুষ্টিবিদেরা সবসময়ই টক দই খেতে পরামর্শ দেন। বাইরের দেশগুলোতে যেমন ভারত বা পাকিস্তানে খাওয়ার পর টক দই খাওয়ার নিয়মটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত।
টক দইয়ের উপকারিতা :
ঘরে কিভাবে টক দই তৈরী করা যায় :
এক লিটার দুধ জ্বাল দিয়ে ঘন করতে হবে। এবার ছয়/সাত চামচ টকদই-এর ভিতর দিয়ে ভাল করে ঘেঁটে দিতে হবে। তারপর মাটির পাত্রে দুধটা ঢেলে সাত আট ঘন্টা রেখে দিলেই টক দই তৈরী হয়ে যাবে। ফ্রিজে দই পাতা যায় না। কারণ ফ্রিজে ব্যাকটেরিয়া কাজ করে না।
টক দই কিভাবে খাওয়া যায় :
টক দই খাওয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হচ্ছে বোরহানী করে খাওয়া। টক দইয়ের ভিতর বিট লবন, গোল মরিচ গুঁড়া, পুদিনা বাটা ইত্যাদি দিয়ে তৈরী করা বোরহানী খেতে যেমন অসাধারণ তেমনি স্বাস্থ্যকরও বটে। এছাড়া স্বাদ অন্যরকম করতে তেতুলের রস ও জিরা গুঁড়াও মেশানো যায়।
বোরহানীর সাথে টক দইয়ের ভিতর সবকিছু দিয়ে হ্যান্ড বিটার দিয়ে ভাল করে ফেটে বা ব্লেন্ডারে দিয়ে বোরহানী তৈরী করা যায়।
টক দই আরও খাওয়া যায় সালাদের সাথে। টমেটো, শসা, গাজর ইত্যাদি কেটে টক দই মিশিয়ে তার সাথে বিট লবন, গোল মরিচের গুঁড়া যোগ করে খেতে হবে। এছাড়াও বিভিন্ন ফল কেটে টক দই সহযোগেও খাওয়া যায়। দু’টো পদ্ধতিই সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর।
কতটুকু টক দই খাওয়া যাবে :
একবারে এক কাপ টক দই খাওয়া যায়। বেশি বেশি কোনকিছুই ভালো নয়। টক দইয়ের ক্ষেত্রেও কথাটা প্রযোজ্য। সারাদিনে একচামচ করে কিছুক্ষণ পর পর টাক দই খেতে পারেন বা একবারে এক কাপ খাবেন।
যেভাবেই টক দই খাওয়া হোক না কেন মূল কথা হচ্ছে এটি দারূন উপকারী। নিয়মিতভাবে টক দই খেলে আমাদের শরীর থাকবে অনেক রোগমুক্ত, সতেজ ও স্বাভাবিক। যা প্রতিটি মানুষেরই কাম্য।
\ সংকলিত \