ডায়াবেটিস বর্তমানে জাতীয় রোগে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এতে খুব বেশী ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে এটি মারাত্মক কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না। তবে নিয়ন্ত্রণে অলসতা করলে এটি মারাত্মক শারীরিক সমস্যা ডেকে আনতে পারে। যেমন এর ফলে কিডনী রোগ হ’তে পারে, চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে, স্নায়বিক দুর্বলতা বেড়ে যেতে পারে, শরীরে ঘা হ’লে সেটা দ্রুত সারবে না, যৌন ক্ষমতা কমে যাবে, এমনকি শরীরে রক্ত কমে যাবে। অতএব উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে একে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। এজন্য নিম্নোক্ত খাবারগুলি খাদ্য তালিকায় রাখুন। তাতে খুব সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে ইনশাআল্লাহ। হয়তো ঔষধ বা ইনসুলিন কিছুই প্রয়োজন নাও হ’তে পারে। যেমন,
১. করলা : করলাকে ডায়াবেটিস রোগীর নিয়মিত পথ্য হিসাবে গণ্য করা হয়। করলার রস, করলা ভর্তা বা করলার ঝোল যেকোন ভাবেই হোক করলা খেতে হবে। করলা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকরী। এসিডিটির ভয় থাকলে, এমনকি সুস্থ ব্যক্তিগণও যেকোন খাবারের আগে পূর্ণ এক গ্লাস পানি আগেই খেয়ে নিবেন। ইনশাআল্লাহ এসিডিটি থেকে মুক্ত থাকবেন।
২. চিরতা : এর স্বাদ খুবই তিক্ত। যা পিত্ত ও কফ নাশ করে। ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে সুগার কমিয়ে রাখে। এছাড়া চিরতা সন্নিপাত জ্বর ও ক্রিমির সমস্যা দূর করে। শুকনো চিরতা পানিতে ভিজিয়ে খালি পেটে খাওয়া উত্তম।
৩. নিমপাতা : সকালে বা বিকালে দু’টো করে নিমপাতা খেলে তা ডায়াবেটিসের জন্য খুবই ফলদায়ক। এছাড়া চর্ম রোগ সহ নিমপাতা বিভিন্ন রোগের মহৌষধ। নিমপাতা রোদে শুকিয়ে গুড়া করে ভাতের সঙ্গে নিয়মিত খাওয়া যায়।
৪. হেলেঞ্চা শাক : তিতা হেলেঞ্চা ডায়াবেটিস, কুষ্ঠ, জ্বর, কাশি ও পিত্ত রোগ কমিয়ে দেয়।
৫. শিউলী ফুলের পাতার তিক্ত রস ১ চা চামচ খালি পেটে বা তরকারীতে রান্না করেও খাওয়া যায়।
৬. আমলকী : আমলকীর রয়েছে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার অসাধারণ গুণ। নিয়মিত আমলকী খাওয়ার ফলে দেহে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। যার ফলে ডায়াবেটিসের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুবিধা হয়।
মোটকথা নিয়মিত কোন না কোন তিতা খেতে পারলে কেবল ডায়াবেটিস নয়, আল্লাহর ইচ্ছায় অন্যান্য বহু অজানা রোগ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।
৭. আদা : আদার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে বিশেষভাবে সহায়ক। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে কাঁচা আদা চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করলে ডায়াবেটিস সহজেই নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৮. ঘৃতকুমারী সকলেরই পরিচিত। গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস পান করার ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও প্রতিদিন ১ গ্লাস ঘৃতকুমারীর শরবত রক্তের লিপিড বা ফ্যাট মলিকউল্স কমায়। যা ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষত দ্রুত শুকাতে সহায়তা করে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সকালে দু’বড়ি কেলি মিউর ৬x ও বিকালে দু’বড়ি নেট্রাম সাল্ফ ৬x (বায়োকেমিক) খুবই উপকারী। এগুলি মাঝে-মধ্যে খাবেন। অথবা একটানা চারদিন নিয়মমত খেয়ে পরে চারদিন বিরতি দিবেন। তাছাড়া পেটের যেকোন সমস্যায় কেলি মিউর ৬x খুবই ফলপ্রদ। মিষ্টি ভক্তগণ দৈনিক চা চামচের দু’তিন চামচ খাঁটি মধু খেতে পারেন। একবার একটা মিষ্টি খেলে সারা দিন আর কোন মিষ্টি খাবেন না। ঐদিন যেকোন তিতা খাবেন (স.স.)।