থানকুনি একটি অতি উপকারী
ভেষজ। চিকিৎসার অঙ্গণে থানকুনি পাতার অবদান অপরিসীম। প্রক্রিয়াজাতকরণের
মাধ্যমে বহু রোগের উপশম হয় এই থানকুনির ভেষজ তেল থেকে। খাদ্য হিসাবে
থানকুনি সরাসরি গ্রহণ রোগ নিরাময়ে যথার্থ ভূমিকা পালন করে। অঞ্চলভেদে এর
বিভিন্ন নাম রয়েছে। যেমন- থানকুনি, টেয়া, মানকি, তেতুরা, আদামনি, দোলামনি,
থুলকুঁড়ি, মানামানি ইত্যাদি। এটি সাধারণত পুকুরের পাড়ে পাওয়া যায়।
থানকুনি নিয়মিত খেলে পেটের ব্যথাতে ভুগতে হবে না। আবার এটা বুদ্ধি বিকাশেও সাহায্য করে। তারুণ্য ধরে রাখতে এবং শরীর সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে থানকুনি অনেক উপকারী। নিম্নে থানকুনির কিছু গুণাগুণ উল্লেখ করা হ’ল।-
* থানকুনির Bacoside A এবং Bacoside B উপাদান মস্তিষ্কের কোষ গঠন করতে সাহায্য করে এবং রক্তসংবহন বাড়ায়।
* স্কিনের মৃতপ্রায় কোষের জন্য থানকুনি অনেক উপকারী। থানকুনির রস মৃতপ্রায় কোষ পুনরায় সংগঠিত করতে পারে এবং শুষ্ক হওয়া থেকে বাঁচায়, যার ফলে শুষ্ক ত্বক মসৃণ হয়ে যায়।
* পেটের রোগ নিরাময় করতে থানকুনির কোন বিকল্প নেই। যে কোন পেটের ব্যথা থেকে পরিত্রাণ পেতে এটি নিয়মিত খেলে পেটের ব্যথায় আর কষ্ট ভোগ করতে হবে না।
* আলসার এবং বিভিন্ন চর্মরোগ থানকুনি দ্বারা নিরাময় করা সম্ভব। স্কিনের উজ্জলতা এবং নতুন চুল গজাতে এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
* অল্প পরিমাণ আমগাছের ছাল, আনারসের কচিপাতা ১টি, কাচা হলুদের রস, ৪/৫ টি থানকুনি গাছের শিকড়সহ ভাল করে ধুয়ে একত্রে বেটে রস করে খালি পেটে খেলে পেটের পীড়া ভাল হয়। ছোট বাচ্চাদের জন্য এটি অতি কার্যকর।
* থানকুনি চুল পড়া বন্ধ করতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
* বয়স বাড়ার ফলে নিজেকে দুর্বল অনুভূত হ’লে থানকুনির রস প্রতিদিন পান করলে তারুণ্য ধরে রাখা যায়। চেহারার সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য দুধের সাথে এক গ্লাস থানকুনি পাতার রস পান করলে লাবণ্য আরো বেড়ে যাবে।
* দাঁতের নানান রোগ থেকে মুক্তি পেতে থানকুনি পাতার বিকল্প নেই। রক্তপাত, মাড়ি ও দাঁত ব্যথার ক্ষেত্রেও সুফল পাওয়া যাবে। যদি থানকুনি পাতার রস নিয়ে পানি সহ কুলি করা হয়, দাঁতের ব্যথা অনেক কমে যাবে। থানকুনি পাতা বেটে শরীরের ফোঁড়াতে প্রলেপ দিলে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়।
* থানকুনি স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া আধা কেজি দুধে ১ পোয়া মিশ্রি ও আধা পোয়া থানকুনির পাতার রস একত্রে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ১ সপ্তাহ খেলে পেটের গ্যাস্টিক ভাল হয়।
* বেগুন/পেপের সাথে থানকুনি পাতা মিশিয়ে শুঁকতা রান্না করে প্রতিদিন ১ মাস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
* প্রতিদিন খালি পেটে ৪ চামচ থানকুনি পাতার রস ও এক চামচ মধু মিশিয়ে ৭ দিন খেলে রক্ত দূষণ ভাল হয়।
* বাচ্চাদের কথা স্পষ্ট না হ’লে ১ চামচ থানকুনির পাতার রস গরম করে কিছু দিন নিয়মিত খাওয়ালে কথা স্পষ্ট হবে।
* জ্বর ও আমাশয়ে থানকুনির পাতার রস খেলে উপকার হয়।
* প্রতিদিন সকালে থানকুনির রস ১ চামচ ও ৫/৬ ফোঁটা হলুদের রস সামান্য চিনি বা মধুর সাথে খাওয়ালে বাচ্চাদের লিভারের সমস্যা সমাধান হয়।
* কোন পুরাতন ক্ষত নিরাময় না করতে পারলে সেদ্ধ থানকুনি পাতার প্রলেপ দিলে অনেক বেশী উপকার হয়।
\ সংকলিত \